Sunday, April 21, 2024

বাংলাদেশের ৫০ বছর পূর্তি বিজয় দিবসে, সঙ্গীত জগতের সকলের প্রতি বিজয়ের শুভেচ্ছা…

– রহমান ফাহমিদা, সহকারী সম্পাদক।

বাংলাদেশের ৫০ বছর পূর্তি বিজয় দিবস পালন করা হচ্ছে বাংলাদেশ সহ বিশ্বের নানা দেশে। এই বিজয় ছিনিয়ে আনার জন্য দেশের আনাচে কানাচে থেকে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল অসংখ্য মানুষ! আর তাঁদেরকে যুদ্ধ ক্ষেত্রে উৎসাহিত ও অনুপ্রেরণার দেয়ার জন্য নেপথ্যে কাজ করে যাচ্ছিল সাংস্কৃতিক কর্মিরা। যা আমরা দেখতে পাই ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধে, অনুপ্রেরণার মূল উৎস ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে রচিত গণসঙ্গীত। গণ জাগরণের এই সঙ্গীত রচনা ও পরিবেশনায় সে সময় অসামান্য অবদান যারা রেখেছিলেন তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন বাংলাদেশের বহু সঙ্গীত রচয়িতা, সুরকার-গীতিকার ও শিল্পীবৃন্দ।

সেই সময়ের আবেগ আর উদ্দীপনার ঢেউ তখন স্পর্শ করেছিল প্রতিবেশী দেশ ভারতের বহু মানুষকেও। বিশেষ করে ওপার বাংলার সংগীত জগতকেও ব্যাপকভাবে উদ্বুদ্ধ করেছিল ‘৭১ এর স্বাধীনতার যুদ্ধ এবং সেই সময় রচিত হয়েছিল অসাধারণ কিছু গান। যা কিনা পরবর্তি প্রজন্মের মনেও রেখাপাত করেছে।
মুক্তি যুদ্ধের চেতনাকে উদ্দীপ্ত রেখেছিল যেসব দেশাত্মবোধক গান, সেইসব গানের বাণী আর সুরে যেমন ছিল সাহসের কথা, যুদ্ধ জয়ের সম্ভাবনার মন্ত্র, তেমনি ছিল দেশমাতৃকের মুক্তির জন্য আকুতি। এসব গান সমানভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ রেখেছিল মুক্তিযোদ্ধাদের এবং পাশাপাশি অবরুদ্ধ জনগণেকে। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের উত্তাল দিনগুলিতে প্রেরণার উৎস হিসাবে একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল ওপার বাংলায় গঠিত স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে যে গানগুলি মুক্তিযোদ্ধা ও জনগণকে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিল সেই কালজয়ী গানগুলি হ’ল – মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি, তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দিব রে, নোঙর তোলো তোলো, পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে’- এমন সব গান মুক্তিযোদ্ধাদের মনে লালন করিয়েছিল যে, মা মাটি দেশ আমাদের জীবনের ভিত্তি।
দীর্ঘ ৫০ বছর হয়ে গেল। ‘জয় বাংলা বাংলার জয়, সালাম সালাম হাজার সালাম- এর মত গানগুলি এখনো আমাদের দেশের ইতিহাসের ধারক বলা চলে।
তবে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সুরকার, গীতিকার এবং শিল্পীদের আক্ষেপ যে, বর্তমান প্রজন্মের কাছে এই সব গানের তাৎপর্যের কথা সঠিকভাবে পৌঁছাচ্ছে না।
আশা করি বিজয় দিবসের এই ৫০ বছরের পদার্পণের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সুরকার, গীতিকার ও শিল্পীদের আক্ষেপগুলো সক্রিয় হবে এবং এই গানগুলো নতুন প্রজন্মের কাছে তাৎপর্যপূর্ণরূপে পৌঁছে যাবে। মনে রাখতে হবে, দেশের যে কোনো বিপর্যয়ে সাংস্কৃতিক কর্মীরা ঝাঁপিয়ে পড়ে তাদের কন্ঠ ও মেধাকে কাজে লাগিয়ে। তাই যারা এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন এবং যারা বর্তমানে আছেন, তাঁদেরকে সর্বদা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করতে হবে। শুধুমাত্র স্মরণ করলেই হবে না! দিতে হবে তাঁদের প্রাপ্য সম্মান।
“সঙ্গীতাঙ্গন”-এর পক্ষ থেকে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সেই সকল শিল্পীবৃন্দ সহ বর্তমানে যারা সঙ্গীত জগতে জড়িত আছেন, সকলকে বাংলাদেশের ৫০ বছর পূর্তি বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা, অভিনন্দন ও শুভকামনা জানাচ্ছি।

Related Articles

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

18,780FansLike
700SubscribersSubscribe
- Advertisement -

Latest Articles