asd
Monday, November 4, 2024

আজ ঐতিহাসিক গণহত্যা দিবস…

– মোহাম্মদ আমিন আলীফ।

১৯৭১ সাল ২৫শে মার্চ দিনটি ছিল বৃহস্পতিবার। বাংলা ইতিহাসে এক ভয়াবহ রাত। প্রতিদিনের মতো সেদিনও সবাই নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত, নিজ স্বপ্নে মগ্ন। সেইদিন যে বুকেতে ভালোবাসা আর আশার খেলা চলছিল সেই বুকেতে হঠাৎ একটি গুলি এসে সব আশা ধুলোয় মিশিয়ে দেয়। বাংলা আকাশে বাতাসে ভেসে উঠে ক্রন্দন ধ্বনি। শুরু হয় বড় নিষ্ঠুর, নির্মম হত্যালীলা। ১৯৭১সালে ২৫শে মার্চ থেকে শুরু হওয়া পাকিস্তানী সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত পরিকল্পিত গণহত্যা, যার মধ্যমে তারা ১৯৭১ এর মার্চ ও এর পূর্ববর্তী সময়ে সংঘটিত বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে দমন করতে চেয়েছিল। এই গণহত্যা ছিল পশ্চিম পাকিস্তানী শাসকদের আদেশে পরিচালিত,যা ১৯৭০ এর নভেম্বরে সংঘটিত অপারেশন এর পরবর্তি অণুষঙ্গ। অপারেশনটির আসল উদ্দেশ্য ছিল ২৬ মার্চ এর মধ্যে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান এর (বর্তমান বাংলাদেশ) সব বড় বড় শহর দখল করে নেয়া এবং রাজনৈতিক ও সামরিক বিরোধীদের এক মাসের ভেতর নিশ্চিহ্ন করে দেয়া।

বাঙ্গালীরা নিজের মাতৃভূমিকে রক্ষা করতে তখন পাল্টা প্রতিরোধ সৃষ্টি করে, যা পাকিস্তানী পরিকল্পনাকারীদের ধারণার বাইরে ছিল। মে এর মাঝামাঝি সময়ে সকল বড় বড় শহরের পতন ঘটার মধ্যে দিয়ে অপারেশন সার্চলাইটের প্রধান অংশ শেষ হয়। এই সামরিক আক্রমণ ১৯৭১ সালের গণহত্যাকে ত্বরান্বিত করে। এই গণহত্যা বাঙ্গালীদের বাক্রুদ্ধ করে তোলে যে কারণে পাকিস্তান সেনবাহিনীর বাঙ্গালি সেনাপতি ও সৈনিকেরা বিদ্রোহ ঘোষণা করে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষিত হয় এবং বহু মানুষকে শরণার্থীরূপে ভারতে আশ্রয় নিতে হয়। এই ভয়াবহ গণহত্যা ১৯৭১ এর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সূত্রপাত ঘটায় এবং বাঙালিরা দখলদারী পাকিস্তানী বাহিনীকে বিতারিত করার সংগ্রামে লিপ্ত হয়। পরিণতিতে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই ডিসেম্বর ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ কমান্ড “মিত্র বাহিনী” এর কাছে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর বিনাশর্তে আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়।
সরকার সহ সকল দেশপ্রেমী এই দিনটিকে গণহত্যা দিবস হিসেবে বিশ্বের দরবারে তোলে ধরার চেষ্টা করছেন, উনাদের এই প্রচেষ্টা যেন যথা মর্যাদায় সফল হয়। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সূত্রে জানা গেছে, গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ের লক্ষে একটি আন্তর্জাতিক আইনি পরামর্শক সংস্থা নিয়োগের বিষয়টি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। সংস্থাটির সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে, বিষয়টি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তোলাটা কার্যকর হবে, নাকি তা জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে তোলা হবে নাকি নেদারল্যান্ডসের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে যাওয়াটা ফলপ্রসু হবে।

আমরা দীর্ঘ নয়টি মাসে ত্রিশ লক্ষাধিক লাশের বিনিময়ে একটি বাংলাদেশ পাই।
অনেক ত্যাগ আর স্বজন হারানোর দেশ এই বাংলাদেশ যার প্রতিটি কনায় মিশে আছে শহীদের রক্ত।
আজ এই দিনে সকল শহীদের আত্মার শান্তিকামনা করি।

অলংকরন – গোলাম সাকলাইন।

Related Articles

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

18,780FansLike
700SubscribersSubscribe
- Advertisement -

Latest Articles