– রহমান ফাহমিদা, সহকারী-সম্পাদক।
পৃথিবীতে অনেক মানুষ আছেন যারা, নিজেদের কাজকে নিয়ে ধ্যানে থাকেন এবং অন্য কোনো কিছু তাঁদেরকে তেমন একটা আকৃষ্ট করে না! তেমনই একজন মানুষ, জনপ্রিয় গিটারিস্ট ও সুরকার লাবু রহমান। ১৯৭৪ সাল থেকে তাঁর গিটার বাজানো শুরু। ১৯৭৭ সালে আজম খানের সাথে বাজিয়েছিলেন এবং ১৯৭৯ সালে ‘ডার্ক ফ্যাট’ নামে একটি ব্যান্ডে বাজিয়েছেন এবং ১৯৮০ সালে ‘সিম্ফনি’ ব্যান্ডের সাথে যুক্ত হয়েছিলেন। ১৯৭৯ সাল থেকে বাংলাদেশের প্রায় সব কিংবদন্তি সংগীত পরিচালকদের সাথে সেশন মিউজিশিয়ান হিসেবে কাজ করে আসছেন। বাংলাদেশের জাতীয় পর্যায়ের শিল্পীদের সাথে দেশে বিদেশে তিনি বাজিয়েছেন। ১৯৮৭ সাল থেকে ‘ফিডব্যাক’ ব্যান্ডের মূল সদস্য হয়ে ওঠেন। বর্তমানে তাঁর অনেক ছাত্রছাত্রি আছে এবং অনেকেই তাঁর কাছে শিখে গিটারকে প্রোফেশন হিসেবে নিয়েছে। আজকে ১০মে, এই জীবন্ত কিংবদন্তি গিটারিস্ট লাবু রহমানের জন্মদিন। জন্মদিন উপলক্ষে সঙ্গীতাঙ্গন থেকে তাঁর একটি সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে। একই সাথে তাঁর খুব কাছের মানুষ ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং বাংলাদেশের আরেকজন জীবন্ত কিংবদন্তি সুরকার, গীতিকার, কিবোর্ডিস্ট ও ফিডব্যাক ব্যান্ড লিডার ফুয়াদ নাসের বাবু’র কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল লাবু রহমান সম্পর্কে। সঙ্গীতাঙ্গন-এর সাথে তাঁদের দু’জনের আলাপচারিতা তুলে ধরা হল-
প্রথমেই জেনে নেই জনপ্রিয় গিটারিস্ট লাবু রহমান ভাইয়ের কথা! তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল- ছোট বেলায় তাঁর জন্মদিন কিভাবে পালন করা হত ? গত বছর এই করোনাকালীন সময়ে তাঁর জন্মদিন কিভাবে পালিত হয়েছে এবং এবার জন্মদিন নিয়ে তাঁর কোনো চিন্তাভাবনা আছে কিনা! তিনি বলেন-
এবার তেমন কোনো প্লান নেই। জন্মদিনে তেমন কিছু পালন করবো না। দেশের অবস্থা ভালো না! তাই সেরকম এখনো কোনো চিন্তাভাবনা করিনি। আর ছোট বেলায় আমার জন্মদিন খুব জাঁকজমকভাবে পালন করা হত, কারণ আমি আমি বাড়ির সবচেয়ে ছোট ছেলে।
আপনারা কয় ভাইবোন ?
আমরা এগারজন ভাইবোন। আমি সবার ছোট তাই আমার বার্থডে খুব বিশেষভাবে পালন করা হত সবসময়। আর এখন আমি বড় এবং যেহেতু মিউজিশিয়ান সেহেতু বন্ধুবান্ধব সবাই রাত ১২টায় কেক নিয়ে বার্থডে উইশ করতে আসে। গত বছর মানে করোনার আগের বছর, রাত ১২টায় সবাই কেক নিয়ে আমার বাসায় এসে হ্যাপি বার্থডের শুভেচ্ছা জানিয়ে গেছে। এটা খুব মজা পাই এইজন্য যে, এই বয়সে এখনও সবাই এসে বার্থডে পালন করে। এটা দারুণ অনুভূতি! গত বছর এভাবে হয়নি। আমার বাসার সবাই মিলে বাসায় নিজেরাই পালন করেছি। এবারও হয়তো এভাবেই পালন হবে এই লকডাউনে।
এবার জেনে নেই লাবু রহমান ভাইয়ের সবচেয়ে কাছের মানুষ এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধু, ফুয়াদ নাসের বাবু ভাইয়ের কাছ থেকে লাবু ভাইয়ের সম্পর্কে। লাবু ভাইয়ের এই জন্মদিনে তাঁর কি বলার আছে এবং মানুষ হিসেবে লাবু রহমানকে তিনি কিভাবে মূল্যায়ন করছেন! তিনি বলেন-
প্রথেমেই জন্মদিনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল। সে আমার একজন খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং ফিডব্যাক-এ জয়েন করার আগের থেকেই সে আমার বন্ধু। আমরা মিউজিক করতাম একসঙ্গে। আমরা কাছাকাছি থাকতাম। আমি থাকতাম বড় মগবাজার আর উনি থাকতেন শান্তিনগরে। আসলে, সেখান থেকেই আমাদের পরিচয় এবং বন্ধুত্ব। বলতে পারেন, দীর্ঘদিন একসাথে আছি। আমাদের দু’জনের এত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক যে, আপনার এই একটা ফোনকলে বলে শেষ করা যাবে না।
আর মানুষ হিসেবে সে খুবই ভালো একজন মানুষ। সহজ সরল প্রকৃতির মানুষ বলতে পারি! কারণ খুবই সোজাসাপ্টা মানুষ। মিউজিক নিয়েই সে পড়ে থাকেন আর অন্য কোনো রকম তাঁর ভাবনা নেই। মিউজিক নিয়েই তাঁর বেশ সময় কেটে যায়। আমি শুধু বলছি নাহ! সবাই বলবে, এই সঙ্গীতাঙ্গনের ভালো মানুষদের মধ্যে উনি একজন ভালো মানুষ তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
কত সাল থেকে আপনারা দু’জন এত ক্লোজ ?
৭৫/৭৬ থেকে হবে! তারপর তিনি দলে জয়েন করলেন ৮৬/৮৭ সালে। তার ফলে আরও বেশি ক্লোজ হয়ে গেলাম। আর এখনতো একসাথে কাজ করছি, সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছে। কাজ নিয়েও দু’জনের আলাপ আলোচনা হচ্ছে সব সময়।
সঙ্গীতাঙ্গন-এর পক্ষ থেকে জনপ্রিয় গিটারিস্ট ও সুরকার লাবু রহমান ভাইয়ের জন্য রইল জন্মদিনের অনেক অনেক শুভকামনা ও একরাশ লাল গোলাপের শুভেচ্ছা এবং আরেক জনপ্রিয় মানুষ, ফুয়াদ নাসের বাবু ভাইয়ের জন্যেও রইল সঙ্গীতাঙ্গন-এর পক্ষ থেকে অনেক অনেক শুভকামনা।