ও মন রমজান ঐ রোজার শেষে
এলো খুশির ঈদ
তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে
শোন আসমানী তাগিদ।
আজ পবিত্র ঈদুল ফিতর।
মুসলমানদের বড় ধর্মীয় উৎসব এবং মহা আনন্দের দিন। সারা মাস সিয়াম সাধনার পর আজ সকল মুসলমান মহান করুণাময় আল্লাহ্র দরবারে পবিত্র ঈদগাহে দাঁড়াবেন এবং ঈদুল ফিতরের নামাজ পড়ে আল্লাহ্র নিকট নাজাতের জন্য প্রার্থনা করবেন।
মুমিন রোজাদারদের জন্য বড় আনন্দের দিন ঈদুল ফিতর। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের দুটো সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবের একটি। ধর্মীয় পরিভাষায় একে ইয়াউমুল জাএজ (অর্থঃ পুরস্কারের দিবস) হিসেবেও বর্ণনা করা হয়েছে। দীর্ঘ এক মাস রোযা রাখা বা সিয়াম সাধনার পর মুসলমানেরা এই দিনটি ধর্মীয় কর্তব্যপালনসহ খুব আনন্দর সাথে পালন করে থাকে।
ঈদুল ফিতরের নামাজের পর হাতে হাত রাখে কোলাকুলি করে সব মুসলমান সকল বিবাদ ভুলে আপন হয়ে যায়। সকল সংশয় ভুলে সবাই এই দিনে আনন্দ-বেদনা ভাগাভাগি করে নেয়।
হিজরি বর্ষপঞ্জী অণুসারে রমজান মাসের শেষে শাওয়াল মাসের ১ তারিখে ঈদুল ফিতর উৎসব পালন করা হয়। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে রমজানের সমাপ্তিতে শাওয়ালের প্রারম্ভ গণনা করা হয়। ঈদের আগের রাতটিকে ইসলামী পরিভাষায় লাইলাতুল জায়জা (অর্থ: পুরস্কার রজনী) এবং চলতি ভাষায় “চাঁদ রাত” বলা হয়। শাওয়াল মাসের চাঁদ অর্থাৎ সূর্যাস্তে একফালি নতুন চাঁদ দেখা গেলে পরদিন ঈদ হয়, এই কথা থেকেই চাঁদ রাত কথাটির উদ্ভব।
ঈদের চাঁদ স্বচক্ষে দেখে তবেই ঈদের ঘোষণা দেয়া ইসলামী বিধান। আধুনিক কালে অনেক দেশে গাণিতিক হিসাবে ঈদের দিন নির্ধারিত হলেও বাংলাদেশে ঈদের দিন নির্ধারিত হয় দেশের কোথাও না-কোথাও চাঁদ দর্শনের ওপর ভিত্তি করে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সিদ্ধান্ত অণুসারে। দেশের কোনো স্থানে স্থানীয় ভাবে চাঁদ দেখা গেলে যথাযথ প্রমাণ সাপেক্ষে ঈদের দিন ঠিক করা হয়। মুসলমানদের জন্য ঈদের পূর্বে পুরো রমজান মাস রোজা রাখা হলেও ঈদের দিনে রোজা রাখা নিষিদ্ধ বা হারাম।
সারা বিশ্বের মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব হচ্ছে ঈদুল ফিতর। এ পবিত্র দিনটি অনাবিল আনন্দ-উল্লাসের মধ্য দিয়ে উদ্যাপিত হয়। ঈদুল ফিতরকে আমরা রোজা ভাঙার আনন্দ উত্সবও বলতে পারি। রোজাদারদের জন্য ঈদুল ফিতর মহা সুখের দিন।
ঈদের খুশির এক অন্যতম উপকরণ হচ্ছে ঈদের দুই রাকায়াত ওয়াজিব নামাজ।
সারা বিশ্বের মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর অনাবিল আনন্দ-উল্লাসের মধ্য দিয়ে উদ্যাপিত হয়। ‘ঈদ’ মুসলিম উম্মাহর জাতীয় উৎসব। ঈদুল ফিতরের দিন প্রতিটি মুসলমান নারী-পুরুষের জীবনে অশেষ তাৎপর্য ও মহিমায় অনন্য। ঈদুল ফিতর প্রতিবছর ধরণিতে এক অনন্য-বৈভব বিলাতে ফিরে আসে। রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস রমজানের সিয়াম সাধনার শেষে শাওয়ালের চাঁদ নিয়ে আসে পরম আনন্দ ও খুশির ঈদের আগমনী বার্তা। সিয়াম পালনের দ্বারা রোজাদার যে পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতার সৌকর্য দ্বারা অভিষিক্ত হন, ইসলামের যে আত্মশুদ্ধি, সংযম, ত্যাগ-তিতিক্ষা, দানশীলতা, উদারতা, ক্ষমা, মহানুভবতা, সাম্যবাদিতা ও মনুষ্যত্বের গুণাবলি দ্বারা বিকশিত হোন। এ দিন যে আনন্দধারা প্রবাহিত হয়, তা অফুরন্ত পুণ্যময়তা দ্বারা পরিপূর্ণ। শাওয়ালের চাঁদটি দেখামাত্র বেতার-টেলিভিশন ও পাড়া-মহল্লার মসজিদের মাইকে ঘোষিত হয় ঈদের আগমনী বার্তা।
সুদীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর ঈদ প্রতিটি মুসলমানের ঘরে নিয়ে আসে আনন্দের সওগাত। ঈদগাহে কোলাকুলি সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি, ভালোবাসার বন্ধনে সবাইকে নতুন করে আবদ্ধ করে। ঈদ এমন এক নির্মল আনন্দের আয়োজন, যেখানে মানুষ আত্মশুদ্ধির আনন্দে পরস্পরের মেলবন্ধনে ঐক্যবদ্ধ হয় এবং আনন্দ সমভাগাভাগি করে। মাহে রমজানের রোজার মাধ্যমে নিজেদের অতীত জীবনের সব পাপ-পঙ্কিলতা থেকে মুক্ত হওয়ার অনুভূতি ধারণ করেই পরিপূর্ণতা লাভ করে ঈদের আনন্দ।
এবং এই দিনে যাকাত, ফিতরা দেওয়ার কঠিন আদেশ রয়েছে ইসলামী বিধানে।
ধনী-গরিব সবাই সবার সুখদুঃখের সাথী হয়ে শুধু ঈদের দিনে নয় সবসময় যেন মুসলিম পরিচয়ে, মানুষের পরিচয়ে একসাথে এক সমাজে বাঁচতে পারি এই প্রার্থনা আমাদের। মহান আল্লাহ্ সবাইকে কবুল করুক। সবাইকে ঈদ মোবারক।