– প্রেস রিলিজ।
বৈশাখের প্রবল প্রতাপের ভিতরেই গত ১৭ এপ্রিল, ২০২২ (রবিবার) গ্রেস কটেজে ঘরোয়া পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ‘সুজন বাসর’ এবং কলকাতার বিশিষ্ট নজরুল কেন্দ্রিক সংস্থা ‘ছায়ানট’- এর যৌথ আয়োজনে ‘বিদ্রোহী’ কবিতা-প্রকাশের শতবর্ষ উপলক্ষে এক মনোজ্ঞ অনুষ্ঠান।
কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর সৃষ্টিশীল জীবনের এক উল্লেখযোগ্য সময় (১৯২৬ থেকে ১৯২৮) সপরিবারে কাটিয়েছিলেন কৃষ্ণনগরে। প্রথমে মাস ছয়েক বন্ধু হেমন্ত কুমার সরকারের পারিবারিক আশ্রয়ে, পরে ‘গ্রেস কটেজ’ নামক এক নির্জন বাগানবাড়িতে। তাঁর ‘মৃত্যুক্ষুধা’ উপন্যাসে এই বাড়ি এবং এলাকার পরিচয় আছে। এখানেই পুত্র বুলবুলের জন্ম হয়। বাংলায় প্রথম গজল গানের সৃষ্টিও হয় এই বাড়িতে।
গ্রেস কটেজের রীতি অনুসারে ‘দুর্গম গিরি কান্তার মরু’ কোরাসে গেয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। শঙ্খশুভ্র সরকারের নেতৃত্বে এই কোরাসে সুজন বাসর এবং ছায়ানটের সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন। তার আগে কবির আবক্ষ মূর্তিতে মাল্য অর্পণ করেন ছায়ানটের কর্ণধার সোমঋতা মল্লিক। ঘরের ভিতরে নজরুলের প্রতিকৃতিতে মাল্য অর্পণ করেন কবিতা কেন্দ্রিক সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী ‘শৃন্বন্তু’র সভাপতি এবং ‘ঋদ্ধ’ পত্রিকার সম্পাদক বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী রতন কুমার ঘোষ।
![](https://shangeetangon.org/wp-content/uploads/2022/04/278587315_489219939603686_3945398754585655028_n-211x300.jpg)
বিদ্রোহী কবিতা আবৃত্তি করেন বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী আকাশ দত্ত। ছায়ানটের পক্ষে সোমঋতা মল্লিক, তন্ময় মুখোপাধ্যায়, কাকলী সেন, ইন্দ্রাণী লাহিড়ী, রীনা রায়, সুরূপা মল্লিক গান ও কবিতা পরিবেশন করেন। ছায়ানটের পক্ষ থেকে গ্রেস কটেজ তথা সুজন বাসর কর্মকর্তাদের হাতে সোমঋতা মল্লিক নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু এবং কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতিতে একটি ক্যালেন্ডার এবং একটি স্মারক উপহার তুলে দেন। সেই সঙ্গে কলকাতায় নজরুল স্মৃতি বিজড়িত ১২টি ভবনের বর্তমান ছবি দিয়ে তৈরী পোস্টকার্ডের সেট তুলে দেন।
সুজন বাসরের পক্ষে তপন কুমার বিশ্বাস, শঙ্খশুভ্র সরকার, বীথিকা মল্লিক, সুকৃতি ঘোষ প্রমুখ সঙ্গীত এবং আবৃত্তি পরিবেশনার মাধ্যমে কবির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। রতন কুমার ঘোষ তাঁর ভালো লাগার অনুভূতি প্রকাশের সাথে উল্লেখ করেন যে কৃষ্ণনগর শহরের অনেক শিক্ষিত মানুষকে গ্রেস কটেজ কোথায় জিজ্ঞাসা করলে বলতে পারছেন না। সুতরাং এর একটা উপযুক্ত প্রচার হওয়া দরকার।
নদীয়াতে নজরুল প্রসঙ্গে আলোচনা করেন গবেষক দেবনারায়ণ মোদক। নজরুল জীবনীকারদের লেখায় কৃষ্ণনগর পর্বের আলোচনা যথেষ্ট কম এবং এ বিষয়ে আরো অনুসন্ধানের প্রয়োজনীয়তা আছে বলে তিনি মনে করেন। নদী গবেষক সুপ্রতিম কর্মকার অঞ্জনা নদী সহ নজরুল সাহিত্যে যেসব নদীর উল্লেখ আছে সে বিষয়টি নিয়ে একটা পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ হওয়া দরকার বলে তিনি উল্লেখ করেন। অনুষ্ঠানে পৌরোহিত্য করেন সুজন বাসর সংস্থার সভাপতি দীপংকর দাস। সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সম্পাদক ইনাস উদ্দীন।