– রহমান ফাহমিদা।
এই পৃথিবীতে জন্ম নিয়েছেন তো অনেক মানব মানবী! তাঁদের মধ্য থেকে অনেকেই নিজ নিজ কাজের ক্ষেত্রে প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেছেন এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে আজীবন বা আমরণ সম্মানীত হয়েছেন। তবে কেউ কেউ অনবদ্য কিছু সৃষ্টি করেও লোক চক্ষুর আড়ালেই রয়ে গেছেন। পায়নি কোনো রাষ্ট্রীয় মর্যাদা এবং তেমনই ভাবে প্রচারিত হয়নি তাঁদের নাম। সঙ্গীতাঙ্গন সবসময়ই এই সকল গুণীজনকে সকলের সামনে নিবেদন করার সংকল্পবদ্ধ। তাই সেই সংকল্পের ধারাবাহিকতায় আজকে এমন একজনকে নিয়ে হাজির হয়েছি যার অনবদ্য সুরে গান গেয়ে, কোনো কোনো শিল্পী ঐ গানেই নিজের একটি পরিচয় বহন করছেন সঙ্গীত ভুবনে। তবে দুঃখের বিষয়! একটি গানের মূল যে বিষয় কথা ও সুর, সেই গীতিকার বা সুরকারের কথা গান করার সময় অনেক শিল্পীই বলেন না। সেই রকম একজন শ্রদ্ধেয় জনপ্রিয় সুরকার ও সঙ্গীতপরিচালক মোঃ শাহনেওয়াজ। যার অনবদ্য সুর করা গানে অনেক শিল্পী পরিচিতি পেয়েছেন তবে কেউ কেউ ওনার নামটি বলার প্রয়োজনবোধ করেন নি! সাক্ষাৎকার নেয়ার সময় সেই দুঃখকষ্ট এবং কিছু না পাওয়ার আক্ষেপ ফুটে উঠেছে তাঁর অবচেতন মনে। তিনি কেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব-এর
ছেলে শেখ কামালকে পিতার সাথে তুলনা করেছেন, সেই কথা আমরা তাঁর কাছ থেকে নেয়া সাক্ষাৎকারের মাধ্যমেই জানতে পারব। তবে সরাসরি সাক্ষাৎকার পর্বে যাওয়ার আগে তাঁর সম্পর্কে কিছু কথা না লিখে পারছি না! কারণ তাঁর সম্পর্কে জানার আছে অনেক কিছু যা অনেকেই জানেন না।
![](https://shangeetangon.org/wp-content/uploads/2021/03/160375556_219278966598659_4287188035599150431_n.jpg)
জনপ্রিয় সঙ্গীত পরিচালক ও সুরকার মোঃ শাহনেওয়াজ প্রথমে তবলায় তালিম নেন মিলন সেনের কাছে তারপর তাঁর ভাইয়েদের কাছে থেকে। তাঁর বড় দুই ভাই খুব নামকরা বাজিয়ে, একজন গোলাম মুর্তজা সেতার বাজান এবং অন্যজন শাহজাহান তবলাবাদক। ওস্তাদ আয়েত আলী খানের কাছেও কিছুদিন তালিম নেন তিনি। সুরকার সুবল দাশের কাছেও তিনি তালিম নেন। ১৯৬৪ সালে জন্মস্থান কুমিল্লার ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ঢাকায় এসে মিউজিক কলেজে তবলার শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৬৬ সাল থেকে আলাউদ্দিন অর্কেস্ট্রার অসংখ্য ছবিতে তবলা সংগত করেছেন তিনি। সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক মোঃ শাহনেওয়াজ একাধারে রেডিও ও বাংলাদেশ টেলিভিশনে কাজ করেছেন। তিনি অজস্র সুর করেছেন। তাঁর কাজের মধ্যে সুর সাগর, সুর বিতান, ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ও বিশেষ বিশেষ দিনের সঙ্গীতানুষ্ঠানের সুর করেছেন। তাছাড়া তিনি ঈদের আনন্দ মেলা, হীরামন, এ মাসের সঙ্গীতানুষ্ঠানসহ
প্রচুর টিভি নাটকের আবহ সঙ্গীত করেছেন। আবদুল্লাহ-আল-মামুন প্রযোজিত বিদেশে প্রথম বিটিভি প্রদর্শিত ‘তৃষ্ণায়’ নাটকটির আবহ সঙ্গীতও তিনি করেছেন। ১৯৮২ সালে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ফুটবলের যে মনোজ্ঞ টাইটেল মিউজিক ‘ESPANA 82’বাজত, এটির রচয়িতা ছিলেন তিনি। তাছাড়া বালাদেশের প্রথম যে দু’জন শিল্পীর (ফিরোজা বেগম ও আসিফ খান) লংপ্লে এইচএমভি থেকে বের হয়, সেই দুটি লংপ্লের সুর ও সঙ্গীত পরিচালকের ভূমিকা রাখেন তিনি। এছাড়াও জার্মান থেকে হিটস অফ ‘৮২ শিরোনামে শিল্পী আপেল মাহমুদ-এর একটি লং প্লে বের হয়, সেটির পাঁচ/ছয়টি গানের সুর তিনি করেছেন। শিল্পী নাশিদ কামালের গাওয়া লংপ্লে’র সুর ও সঙ্গীত পরিচালনাও তিনি করেছেন। এছাড়া শিল্পপতি শফি আহম্মেদের তত্ত্বাবধানে শিল্পী লতিফা চৌধুরীর গাওয়া, ‘তোমার সুখের লাগি ও এক নয়নে হয় না কান্দন’ শিরোনামে তাঁর সুর ও সঙ্গীত পরিচালনায় সিডি ও ক্যাসেট বের হয়েছে। এগুলো ছাড়াও তাঁর প্রচুর সুর করা গানের অডিও ক্যাসেট বের হয়েছে।
![](https://shangeetangon.org/wp-content/uploads/2021/03/159036663_350782206259893_2895022519799206960_n-300x220.jpg)
৮০’র দশকের প্রথম দিকে প্রয়াত চলচ্চিত্র পরিচালক দীলিপ সোম ‘সুখের মিলন’ চলচ্চিত্রের গল্পের কাজ শুরু করেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনের সে সময়ের ব্যস্ত সুরকার মোঃ শাহনেওয়াজকে তিনি স্ক্রিপ্ট দিয়ে তাঁর জন্য গান তৈরি করতে বলেন। ত্রিভুজ প্রেমের গল্পে, গানটি নায়ক ফারুক ও সেই ছবির এক নায়িকা সুলতানা হায়দারের উপর চিত্রায়িত হয়েছিল। সুরকার শাহনেওয়াজের সুরে এবং প্রয়াত গীতিকার নজরুল ইসলাম বাবুর কথায়, ‘জীবনে যা চেয়েছি, পেয়েছি আমি…’ গানটি গেয়েছিলেন সাবিনা ইয়াসমিন এবং গানটিতে লিপ্সিং করেছিলেন সেই ছবির এক নায়িকা এবং নৃত্যশিল্পী সুলতানা হায়দার। ১৯৮৪ সালে ছবিটি রিলিজ হয়।
![](https://shangeetangon.org/wp-content/uploads/2021/03/158666402_263127828613012_7645008203065050377_n-224x300.jpg)
সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক মোঃ শাহনেওয়াজ বাংলাদেশ টেলিভিশনে মিউজিক ডিরেক্টর হিসেবে রিটায়ার্ড করেছেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনে তিনিই প্রথম মিউজিশিয়ান হিসেবে, মিউজিক ডিরেক্টর ছিলেন এবং তিনি প্রথম থেকেই বিশেষ গ্রেডে ছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনে সুরকার মোঃ শাহনেওয়াজ ময়না, স্বাধীন ও স্বদেশ নামের তিন সন্তানের জনক এবং তাঁর স্ত্রী অনামিকা শাহনেওয়াজ একজন নৃত্য শিল্পী ছিলেন। ১৯৬৮ সালে তিনি সারা পূর্ব পাকিস্তানে প্রতিযোগিতায় নৃত্যে দ্বিতীয় হয়েছিলেন।
এবার জনপ্রিয় সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক মোঃ শাহনেওয়াজ-এর সাথে সঙ্গীতাঙ্গন এর পক্ষ থেকে নেয়া সাক্ষাৎকারটি সকলের জন্য উপস্থাপন করা হ’ল-
সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক কিছুদিন অসুস্থ ছিলেন। তিনি কেমন আছেন এবং তাঁর সুর করা গান গেয়ে অনেক শিল্পী জনপ্রিয়তার শীর্ষ শিখরে অবস্থান করছেন, তারা তাঁকে দেখতে এসেছিলেন কিনা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন-
আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি। না, কেউ আমাকে দেখতে আসেননি কারণ আমি কাউকে বলিনি, আমি যে অসুস্থ ছিলাম! তাঁরাও নিজ থেকে যোগাযোগ করেননি।
![](https://shangeetangon.org/wp-content/uploads/2021/03/103811160_686179635501013_1230168754083538158_n-267x300.jpg)
যারা আপনার সুর করা গান গেয়ে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন, এখন কি তাঁরা আপনার সাথে যোগাযোগ করেন-
নাহ! শিল্পী যারা আছেন এবং যারা গান গায়, একটা গান হওয়া পর্যন্ত তারা গীতিকার আর সুরকারের সাথে সম্পর্ক রাখে। তারপর গানটি হয়ে গেলে আর সম্পর্ক রাখে না আমাদের সাথে। এমনকি, এই যে টেলিভিশনে এত গান প্রচার হয়েছে! কোনো শিল্পীর দ্বারা কখনো কি বলা হয়েছে, গানটির গীতিকার বা সুরকার অমুক ? কিছুই বলে নাই। কিন্তু দেখেন, একটি গানের পেছনে মেইন অবদান একজন গীতিকার আর সুরকারের। কারণ গীতিকার আর সুরকার গানটি তৈরি না করলে তো শিল্পীরা গানটি গাইতে পারে না। অথচ একজন গীতিকার আর সুরকার যে কোনো সময় যে কোনো আর্টিস্ট দিয়ে গান করাতে পারে। আমাদের দেশের বেশীর ভাগ শিল্পী এটা মানতে চায়না বা বলে না। যখন একটি গান হয়ে যায় এবং সে জনপ্রিয়তা পেয়ে যায় ঐ গানের মাধ্যমে, তখন সে মনে করে গানটির পুরো কৃতিত্ব তার। এটা খুবই দুঃখজনক! তাই এ নিয়ে আর মন্তব্য করতে চাই না।
![](https://shangeetangon.org/wp-content/uploads/2021/03/160164783_1624800804389229_1443830548340996575_n-300x204.jpg)
আপনার কি কোনো আক্ষেপ আছে যে, আপনি কোনো গানে এমন সুর করতে চান কিন্তু এখনো করতে পারেননি! অথচ সেই সুর আপনার মনে ঘুরপাক খাচ্ছে!-
আমার মনের মত ভাল সুর তো এখনো করতে পারিনি এবং সেইরকম লেখা গানও পাইনি। তাই মনের মত ভাল সুর করতে পারিনি। তাছাড়া আমার ক্ষমতাতো একফোঁটা সুঁইয়ের মত। কাজেই আমি তো সুর নিয়ে চিন্তা করি কিন্তু সেই সুর তো আমি করতে পারিনি।
![](https://shangeetangon.org/wp-content/uploads/2021/03/157682606_1127546447688329_1641304747147120458_n-300x217.jpg)
আপনার এমন কোনো চিন্তা ভাবনা কি আছে যে, আপনার গান গুলো সংরক্ষিত করা জন্য কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করার বা আপানার ছেলেদের বলেছেন, গানগুলো সংগ্রহ করে রাখার জন্যে যেন পরবর্তী প্রজন্মের সুরকার বা সঙ্গীত পরিচালক আপনার গানগুলোকে পাথেয় করে তাদের কাজ করতে পারেন-
আমার দুই ছেলে। বড় ছেলে স্বাধীন বেতারে আছে। আমার ছোট ছেলে স্বদেশ রেডিসন হোটেলে একজন ডাইরেক্টর হিসেবে আছে। ওরা ওদের নিজেদের মত করে ইউটিউবে বা অন্যভাবে আমার সুর করা গানগুলো সংগ্রহ করার ব্যবস্থা করছে।
![](https://shangeetangon.org/wp-content/uploads/2021/03/104653101_662714650950583_1115657495531674219_n-1-300x204.jpg)
তাঁর সুর করা গান নিয়ে কোনো দুঃখবোধ আছে কিনা জানতে চাওয়া হলে তিনি দুঃখ করে বলেন-
কি বলবো বোন! আসলে দুঃখ এটাই আমরা যারা সুরকার বা গীতিকার, আমাদের তেমন মূল্যায়ন অনেক শিল্পীই করে না। কেউ কেউ বলেন। তবে শ্রদ্ধেয় এমন শিল্পী আছেন, তাঁরা গীতিকার বা সুরকারের নাম বলেন না। যেমন আমার সুর করা এবং গীতিকার নজরুল ইসলাম বাবুর লেখা গান এমনও শিল্পী গেয়েছেন কিন্তু আমাদের কারো নামও কখনো বলে না। মনে করেন, এই গানটি জনপ্রিয় হয়েছে এবং সে গেয়েছে তাই গানটি তার! এটা খুবই দুঃখজনক!
আমি তাই কোনো অনুষ্ঠানে যাইও না এবং আমাকে তাঁরা খবরও দেয় না।
![](https://shangeetangon.org/wp-content/uploads/2021/03/160159229_133784108661441_4545106119513011485_n-259x300.jpg)
কিন্তু আপনাকে দেখলাম যে, সুরকার ও সঙ্গীতপরিচালকদের সমন্বয়ে গঠিত সংগঠন ‘মিউজিক কম্পোজার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’ -এর উপদেষ্টা হিসেবে রাখা হয়েছে। এই সংগঠন সম্পর্কে আপনার কি মতামত-
এই সংগঠন তো খুব ভাল। এই সংগঠনে সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক শেখ সাদী খানকে আহবাহক করে ১১ সদস্যের কমিটি চুড়ান্ত করা হয়েছে। নকীব খান, আনিসুর রমান তনু, ফরিদ আহমেদ, ফোয়াদ নাসের বাবু, রিপন খান, শওকত আলী ইমন, পার্থ বড়ুয়া, এস আই টুটুল, পার্থ মজুমদার ও বাপ্পা মজুমদার, ওরা খুব ভাল কাজ করছে। আমরা আছি তিন জন উপদেষ্টা হিসেবে। একজন তো মারা গেলেন! আলী হোসেন। এখন আমি আর আলম খান আছি আর কি! এই সংগঠনের মুল বক্তব্য একটাই, সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালকদের মূল্যায়ন করা এবং তাঁদের সুবিধা অসুবিধা দেখা।
আপনার সুর করা খুব জনপ্রিয় গান, ‘দুই ভুবনে দুই বাসিন্দা বন্ধু চিরকাল, রেললাইন বহে সমান্তরাল…’ গানটি সম্পর্কে কিছু বলুন-
![](https://shangeetangon.org/wp-content/uploads/2021/03/104017567_726892068098493_6136025245823562241_n-300x210.jpg)
এই গানটি লিখেছেন প্রয়াত গীতিকার নজরুল ইসলাম বাবু আর আমার সুর করা গান। যে শিল্পী এই গান গেয়ে জনপ্রিয় হয়েছেন, সে তো কখনও গীতিকার বা সুরকারের নাম বলেন নাহ! সে ভাবে এটা তারই গান। কাজেই এটা নিয়ে দুঃখ করে লাভ নেই। আমাদের এসব সয়ে গেছে। আমি অবশ্য এখন রেডিও’র গান করি অন্য কোথায়ও গান করিনা। আমিতো টেলিভিশনে চাকরি করতাম তবে টেলিভিশন থেকে রিটায়ার্ড করার পর আর যাই নাই। টিভির পরিবেশ আর আগের মত নাই। তারা এখন আর আমাকে ডাকেও না আর আমিও যাই না। দুঃখ করিনা কারণ এটাই আমাদের দেশের নিয়ম।
![](https://shangeetangon.org/wp-content/uploads/2021/03/158749128_2798720450378246_7198140203021213163_n-206x300.jpg)
আপনি জাতীয় পর্যায়ে কোনো পুরস্কার পেয়েছেন কি!-
জাতীয় পর্যায়ে কোনো পুরস্কার পাইনি। কারণ আমি তো অত বড় মাপের মিউজিক ডিরেক্টর না। আমি একটি গান করেছি, ‘একটি বজ্র কণ্ঠ থেকে স্বাধীনতার উত্থান, একটি আঙ্গুল উঠানো মানেই যুদ্ধ জয়ের গান’। এটাই তো একটি ইতিহাস! আমার দুঃখ লাগে, আপনি বলেন! আমি কি আপনার কাছে গিয়ে বলবো, আমাকে একটা গান দেন!
আপনি তো শেখ মুজিবের জন্ম শতবার্ষিকীর জন্য একটি থিম সং করেছেন-
হ্যাঁ, ঐটা মুক্তিযুদ্ধের ৭১-এর ছেলেমেয়েদের নিয়ে করেছি।
আপনাকে ১৯৭২ সালের একটি ঘটনা বলি, ১৯৭১ সালে আমাদের বাংলাদেশের সব শিল্পীদের তো ব্লাকলিস্টেড বা কাল তালিকাভুক্ত করেছিল। ১৯৭২ সালে আমি তখন তবলা বাজাতাম। টিএসসিতে যত অনুষ্ঠান হত, আমি সব অনুষ্ঠানে তবলা বাজাতাম। অনুষ্ঠানগুলো শেখ কামালের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত হত। যাই হোক, কামাল সাহেবের এক বন্ধু ছিল, মিজানুর রহমান মিজান নামে, সে মারা গেছেন। সেই মিজান এসে আমাকে বলল, দোস্ত! আমরা একটা কাজ করতে পারি! কামাল সাহেবকে বলে যত শিল্পী আছে সবাইকে নিয়ে একটা প্রোগ্রাম করতে পারি। ব্লাকলিস্টেড থেকে সবার নামটা এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে তুলে দেই। আমি বললাম, সেটা তো ভাল কথা। কামাল সাহেবকে বলার পর উনি বললেন, ইয়েস! আমাদের কোনো শিল্পী ব্লাকলিস্টেড নাহ! ১৯৭২ সালের প্রথম দিকে কামাল সাহেব বললেন, সব আটিস্টদের খবর দেন। তখন আমি আর মিজান ফেরদৌসি রহমান, সাবিনা ইয়াসমিন থেকে শুরু
করে সব আটিস্টদের খবর দিলাম। রুনা লায়লা সেই সময় প্রথম বাংলাদেশে এসেছেন। কামাল সাহেব নিজে তাঁর বাসায় গিয়ে তাঁকে নিয়ে আসলেন। রুনা লায়লা আমাকে বললেন, শাহনেওয়াজ সাহেব আমি তো হারমোনিয়াম বাজিয়ে গান গাই না। তখন আমি ফিরোজ সাঁইকে বল্লাম, তুই তো তবলা বাজাতে পারিস! তুই তবলা বাঁজা আর আমি হারমোনিয়াম বাজাচ্ছি। সব শিল্পীদের নিয়ে শেখ কামাল সাহেব অনুষ্ঠান করলেন। সবাইকে পেমেন্ট দিয়েছেন এবং অনেক সম্মান করেছেন। অনুষ্ঠানটি তখন আলোড়ন তুলেছিল। শিল্পীদের নিয়ে তিনি যে এতকিছু করলেন! এখন অনেকেই বড় বড় কথা বলেন কিন্তু শেখ কামাল সাহেবের কথা বলেন না। তিনিই প্রথম রুনা লায়লাকে নিয়ে আসেন। শেখ কামাল সাহেব অনেক বড় মনের মানুষ ছিলেন, বাপের(বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব) মতই ছিলেন।
![](https://shangeetangon.org/wp-content/uploads/2021/03/104864051_2997836156999591_602699224150006033_n-300x235.jpg)
বর্তমানে আপনি কি নতুনদের নিয়ে কোনো কাজ করছেন!-
হ্যাঁ,করেছি। বেতার থেকে গত সপ্তাহে গান করে দিতে বলেছে, দু’জন নতুন শিল্পীর গান করে দিয়েছি।
এই মুহূর্তে আপনার যে সকল স্মৃতি মনে পড়ছে তা বলুন। স্মৃতিগুলো হতে পারে কোনো অনুষ্ঠান, কোনো গান বা শিল্পীদের নিয়ে-
![](https://shangeetangon.org/wp-content/uploads/2021/03/159238156_464361364813766_2172041188298171000_n-300x272.jpg)
আমাদের টেলিভিশনে একটা অনুষ্ঠান হত, কথা ও সুর নামে। অনুষ্ঠানটি প্রযোজনা করতেন জিয়া আনসারী। আমি জিয়া আনসারী ভাইকে বললাম, জিয়া ভাই, সুর ও বাণী হবে! কথা ও সুর দিলেন কেন ? জিয়া ভাই বললেন, এ্যাই বোকা! যেটা বুঝিস না, সেটা নিয়ে কথা বলবি না। আমি বললাম, কি রকম! জিয়া ভাই আমাকে বললেন, এই যে আমি কথা বলতেছি, তুই তো শুনতাছোস! আমি বললাম, হ্যাঁ, তো! স্কুলে গিয়ে কি লিখেছিস ? অ আ ও, লিখোস নাই? তাই লেখা বা কথা ও সুর। আমি গীতিকার আর তুই সুরকার। দু’জনের ঝগড়াঝাটিতে হয় গান। গীতিকার বলে, কি সুর করছেন ? হয় নাই। আর সুরকার বলে, কি গান লিখছেন ? সুর মিলে নাই, কিছুই তো হয় নাই। এইভাবে দুইজনের বলাবলির পর একটা গান হয়। এই গান রামশ্যাম যদুমদু গায়। গীতিকার আর সুরকার হইল বৃক্ষ। এই বৃক্ষ যদি না হইত তাহলে পাতাগুলো পড়ত না আর উইড়াও যাইতনা, কেউই জানতও না। কাজেই আমাদের শিল্পীরা একটা গান গাওয়ার পর সব পেয়ে গেছে মনে করে। তখন ভাব দেখায় এভাবে, আপনি কে ? গীতিকার। ধুর! আপনি কে ? সুরকার। ধুর! যে গান একজন কবি যে এতটা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে লিখে এবং সুরকার সুর সৃষ্টি করে, তার মূল্যায়ন হয় না।
![](https://shangeetangon.org/wp-content/uploads/2021/03/103954984_933123050483728_2945324334298808768_n-300x197.jpg)
কবি শামসুর রাহমান, আমাকে একটি গান দিয়েছিলেন। গানটি তপন চৌধুরী গেয়েছিল। গানটির কথা ছিল, ‘যখন তোমার সঙ্গে আমার হল দেখা, লেকের পাড়ে সঙ্গোপনে…’। গানটি যখন অনইয়ারে যায় তখন কবি আমাকে ফোন করে বলেন, শাহনেওয়াজ সাহেব নাকি! আমি বলি, জী, কে বলছেন ? উনি বলেন, আমি তো একজন অত্যন্ত ক্ষুদ্র লোক! আমার নাম কবি শামসুর রাহমান। আমি বলি, স্যার, স্যার আসসালামালাইকুম। উনি তখন বললেন, আপনি তো আমাকে কল করলেন না, তাই আমিই করলাম। উনি আমাকে খুব স্নেহ করতেন। উনি বললেন, আপনি একটা সুন্দর গান করেছেন, আর আমাকে ধন্যবাদও দিলেন না। আমি বললাম, স্যার, আমি তো আপনার নাম্বার জানি না! তারপর উনি বললেন, আপনার কি গানটি ভালো লেগেছে ? আমি বললাম খুব ভালো লেগেছে। উনি বললেন, তপন গানটি গেয়েছে, আমি খুব খুশি হয়েছি এবং আমি শুনলাম গানটি। খুব ভাল হয়েছে। আমি দোয়া করি আপনি আরও ভাল ভাল কাজ করুন। কবির এই দোয়া, আমার জন্য অনেক বিশাল পাওয়া ছিল। তাহলে! আপনিই বলেন, আমি কেন গানের জন্য লোকের কাছে যাব ?
![](https://shangeetangon.org/wp-content/uploads/2021/03/159948287_1191161534651578_7842540328250521327_n-300x260.jpg)
শিল্পীদের কথা বলতে গেলে, প্রথমেই বলবো শাহনাজ রহমতউল্লাহ’র কথা। সে অনেক ভালো শিল্পী ছিল। সে সবসময় অন্যদের বলতো, ওনার নাম শাহনেওয়াজ আর আমার নাম শাহনাজ। শাহনাজ রহমতউল্লাহ্র গানের জন্য পাগল ছিলাম আমি। উনি নেই! তা ভেবে খুব দুঃখ লাগে।
![](https://shangeetangon.org/wp-content/uploads/2021/03/82980636_2318236981816849_1954642415082192543_n-300x259.jpg)
শিল্পী রুনা লায়লা আর সাবিনা ইয়াসমিন অনেক ব্যস্ত মানুষ। তবে যখনই গানের জন্য দরকার হয়, তখনি ওনাদেরকে আমি গানের জন্য বলি এবং উনারা আমাকে সময় দেন। আমি সাবিনাকে রোজী বলি। ওর ডাক নাম রোজী। ওকে আমি ছোটবেলা থেকে চিনি। রুনা লায়লাকে, ম্যাডাম বলি। তবে উনাদের যখনই গান গাইতে ডেকেছি তখনই উনারা ১০/১৫ মিনিট আগেই এসে পড়েছেন। কেউ বলতে পারবেনা, উনারা টাইমের পরে আসে। শাহনাজ রহমতউল্লাহ প্রাণ দিয়ে গান করতেন। তারপর সাবিনা ও রুনা লায়লা, তারা তো এক একটি দিগপাল। তাদের গান খুবই ভাল লাগে। তাঁদের সম্পর্কে আমার কিছু বলার নাই। তারা যখন গান করতেন তখন তো স্টুডিওতে গান করতেন নাহ! তাঁরা সুরকারের বাসায় গিয়ে গান শিখে আসতেন। এখনকার শিল্পীদের তো সময় নেই! সঙ্গীত একটি গুরু বিদ্যা সঙ্গীত। গুরুর কাছে গান শিখতে যেতে হয়! এখন কি কেউ গান শিখতে তেমন একটা, গুরুর কাছে যায় ? যায় না। তাদের সময় নেই।
![](https://shangeetangon.org/wp-content/uploads/2021/03/159422431_2932772603618935_3481034488460593767_n-300x239.jpg)
মরমী শিল্পী আব্দুল আলীম আর আমি পাকিস্তানে একই মিউজিক কলেজে ছিলাম। আমি না গেলে আলীম ভাইয়ের ফাংশনে গান গাওয়া হতো না। উনি গান গাইতেন আর আমি তবলা বাজাতাম। উনি আমাকে খুব সুন্দর করে ডাকতেন! বলতেন, শাহনেওয়াজ সাহেব, ৭টার সময় আপনার ট্রেন ফুলবাড়িয়া রেলস্টেশন থেকে। আমি আসতাম তবলা নিয়ে আর উনিও চলে আসতেন রেলস্টেশনে। তারপর দু’জন ট্রেনে উঠে চলে যেতাম অনুষ্ঠানে। এইরকম প্রচুর অনুষ্ঠান করেছি তাঁর সাথে। তার সাথে খুব ভালো সম্পর্ক ছিল আমার।
আরেকজন ছিলেন, গীতিকার নুরুজ্জামান শেখ। আমি যদি কোনো সময় বলতাম, মন ভালো না! কোনো কাজ ভালো লাগছেনে। এই গানবাজনা করে কি হবে ? উনি তখন বলতেন শাহনেওয়াজ সাহেব, ‘দুঃখরা কখনো একা আসে না, সাথে করে নিয়ে আসে কান্নার সুর!’ সেই সুরে ভরে আছে আমার এই বুক।
![](https://shangeetangon.org/wp-content/uploads/2021/03/159766826_917116549085844_763298491571886240_n-300x226.jpg)
আমি কখনো কাউকে তোষামোদ করতে পারি না! আমরা যখন টিএসসিতে অনেকে গানবাজনা করতাম, আলতাফ মাহমুদ, অজিত রায়, আব্দুল জব্বার এবং আরও অনেকে গান গাইত আর আমি তবলা বাজাতাম। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে অন্যান্য অনেক শিল্পীদের সাথে তবলা বাজিয়েছি। অনেক মজা করেছি। তখন জীবনটা অনেক ভাল ছিল, সুন্দর ছিল। এখন আর তেমন নাই! তখন আসাদুজ্জামান নূর কাঁধে একটি ব্যাগ ঝুলিয়ে টিএসসিতে আসতেন। ১৯৭১ সালের আগে থেকেই তাঁর সাথে আমার প্রায় ৫০ বছরের সম্পর্ক! কিন্তু তিনি সংস্কৃতিমন্ত্রী হবার পর আমি তাঁকে মাত্র দু’দিন ফোন করেছিলাম তারপর আর করিনি। তাঁর সাথে আমার খুব ভাল সম্পর্ক ছিল।
![](https://shangeetangon.org/wp-content/uploads/2021/03/160103627_1844967302321704_7327763053755762914_n-218x300.jpg)
আপনার সুর করা গানে কোন কোন শিল্পী গান করেছেন এবং নতুন সুরকার আর সঙ্গীত পরিচালকদের জন্য আপনার কি কিছু বলার আছে-
বাংলাদেশের বর্তমান সময়ের সব বিখ্যাত শিল্পীই আমার সুর করা গান করেছেন। এমনকি, বর্তমান প্রজন্মের অনেক শিল্পী এই দলে আছেন। নতুনদের জন্য আমার দরজা সবসময়ই খোলা। ওরা কেউ আগ্রহ নিয়ে আসলে আমি আমার ক্ষুদ্র প্রয়াশে তাঁদের সাধ্যমত শেখানোর চেষ্টা করবো। নতুনরা তো এদেশের সম্পদ। তারা অনেকেই ভাল করছে। এ প্রজন্মের যারা সুর করছে তারা অনেকেই ভাল ভাল গান উপহার দিচ্ছে।
এই ভয়াবহ করোনাকালীন সময় আপনি কিভাবে কাটাচ্ছেন ?
আমি ভোরে ফজরের নামাজ পড়ে ঘরের মধ্যেই হাটাহাটি করি। তারপর আমার একটা প্রিয় গান আছে রবীন্দ্রনাথের ‘মঙ্গল দীপ জ্বেলে অন্ধকারে দুচোখ আলোয় ভরো প্রভু’ এবং আব্দুল আলীম ভাইয়ের ‘দুয়ারে আইসাছে পালকী’ গান দুটি শুনি। এখনো শ্যামল মিত্র, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, মান্না দে তাঁদের গান শুনি। তাছাড়া করোনাকালীন সময়ে যতটুকু সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত তা করেই চলছি।
আপনি দীর্ঘজীবী হউন এবং আরও সুন্দর সুন্দর গান ও সুর দর্শক শ্রোতাদের উপহার দিন এই কামনা করছি। আপনার ও আপনার পরিবারের জন্য সঙ্গীতাঙ্গন এর পক্ষ থেকে রইল অনেক অনেক শুভকামনা।
আপনার ও সঙ্গীতাঙ্গন এর জন্যেও আমার পক্ষ থেকে রইল অনেক অনেক শুভকামনা।
জনপ্রিয় সুরকার ও সঙ্গীতপরিচালক শাহনেওয়াজ-এর অজস্র সুর করা গানের মধ্য থেকে কিছু জনপ্রিয় আধুনিক ও দেশের গানের তালিকা দেয়া হ’ল-
আধুনিক গান-
১/ দুই ভুবনে দুই বাসিন্দা বন্ধু চিরকাল, রেললাইন বহে সমান্তরাল – শিল্পী-দিলরুবা খান। গীতিকার – নজরুল ইসলাম বাবু।
২/ চাঁদের পালকি চড়ে আসল সবার ঘরে খুশীর ঈদ, বল ঈদ মোবারক – শিল্পী – সৈয়দ আব্দুল হাদী। গীতিকার – নজরুল ইসলাম বাবু।
৩/ আজী এ খুশীর দিনে তোমাকে জানাই আভিনন্দন – শিল্পী – রুনা লায়লা। গীতিকার – নজরুল ইসলাম বাবু।
৪/ দেখা হয় তবুও এমনি কপাল মনের আড়াল হই না – শিল্পী – হুমায়ুন ফরিদী। গীতিকার – নজরুল ইসলাম বাবু।
৫/ জীবনানন্দ হয়ে সংসারে আজও আমি – শিল্পী-নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরী। গীতিকার – শওকত ওসমান।
৬/ এক ফোটা বিষ আজ আমায় – শিল্পী-নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরী। গীতিকার – ওসমান শওকত বাবু।
৭/ এক নয়নে কান্দে না তো দুই নয়নে কান্দে – শিল্পী – মলয় কুমার গাঙ্গুলী/বিপুল ভট্টাচার্য। গীতিকার – আহমেদ ইউসুফ সাবের।
৮/ বন্ধুরে তোর মন পাইলাম না – শিল্পী – শাহনাজ রহমতউল্লাহ। গীতিকার – নুরুজ্জামান শেখ।
৯/ আশা ছিল মনে মনে, প্রেম করিব তোমার সনে – শিল্পী-রফিকুল আলম। গীতিকার – নুরুজ্জামান শেখ।
১০/ তুমি কি সেই তুমি নেই, তাই তো পাইনা সাড়া – শিল্পী – শাহনাজ রহমতউল্লাহ। গীতিকার – সুব্রত সেন গুপ্ত।
১১/ চোখ দেখি মুখ দেখি সুন্দর লাগে, অন্তর দেখি কি করে – শিল্পী – রুনা লায়লা। গীতিকার – নুরুজ্জামান শেখ।
১২/ নিল খামে যে দিন প্রথম চিঠি এসেছিল – শিল্পী-শাহনাজ রহমতউল্লাহ। গীতিকার – সুব্রত সেন গুপ্ত।
১৩/ সবাই তো শাহজাহান হতে চায় – শিল্পী – সুবীর নন্দী। গীতিকার – আজিজুর রহমান আজিজ।
১৪/ খাঁচায় ময়না পাখি – শিল্পী-আবিদা সুলতানা। গীতিকার – আজিজুর রমান আজিজ।
১৫/ তোমার দুই চোখ যে চমকে ছিল আমার দুই চোখে এসে – শিল্পী – লতিফা চৌধুরী। গীতিকার – নজরুল ইসলাম বাবু।
১৬/ ও গো কৃষ্ণচূড়া তুমি কখন হয়েছ লাল – শিল্পী – রওশন আরা মোস্তাফিজ। গীতিকার – নজরুল ইসলাম বাবু।
১৭/ আমি কেন লালন হইলাম না, কেন হাসন হইলাম না – শিল্পী – নাশিদ কামাল। গীতিকার – মুসা আহমেদ।
১৮/ রাত্রি করে ঘরে এলে, মা আমাকে বলে সারাদিন তুই কোথায় ছিলে – শিল্পী – আপেল মাহমুদ। গীতিকার – আব্দুল হাই আল হাদী।
১৯/ এখন অনেক রাত চোখে নেই ঘুম – শিল্পী – সুবীর নন্দী। গীতিকার – ওদুদ নেওয়াজ।
২০/ স্বপনের চেয়ে সুন্দর কিছু নয় – শিল্পী – শাহানাজ রহমতউল্লাহ। গীতিকার – নুরুজ্জামান শেখ।
২১/ আমি আসলাম ফিরে আসলাম – শিল্পী – জাফর ইকবাল। গীতিকার – মনিরুজ্জামান মনির।
২২/ দেখব জসীমউদ্দিনের সুজন বাঁধিয়ার ঘাট – শিল্পী-আবিদা সুলতানা। গীতিকার – মনিরুজ্জামান মনির।
২৩/ ফুলের সুবাস পাই কাছে আছ তাই – শিল্পী – নাশিদ কামাল। গীতিকার – আহমেদ ইউসুফ সাবের।
২৪/ সুখ পাখি তুই আসলি এত পরে – শিল্পী – সৈয়দ আব্দুল হাদী। গীতিকার – ওসমান শওকত বাবু।
২৫/ আমার দুই নয়নে থাকো তুমি বইয়া নদীর জল – শিল্পী – কিরণ চন্দ্র রায়। গীতিকার – নজরুল ইসলাম বাবু।
২৬/ বুখারা সামার খান্দ কন কাজে হাত দেব না – শিল্পী – সৈয়দ আব্দুল হাদী। গীতিকার – ওসমান শওকত বাবু।
২৭/ চাপা ডাঙার বউ হব না, মনের আর কব না – শিল্পী – নাশিদ কামাল। গীতিকার – ওসমান শওকত বাবু।
২৮/হাজার দুয়ারে ঘর আমি চাইনি – শিল্পী – নাশিদ কামাল। গীতিকার – ওসমান শওকত বাবু।
২৯/বন্ধুরে তুমি রইলা কত দূরে – শিল্পী – নাশিদ কামাল। গীতিকার – ওসমান শওকত বাবু।
৩০/ হে তুই কি বসবি বউ কিছু সময় – শিল্পী-সৈয়দ আব্দুল হাদী। গীতিকার – ওসমান শওকত বাবু।
৩১/ একটি বিজ্ঞাপন আমি দেখেছি তোমার কাছে চাকরি দিবে – শিল্পী – সুবীর নন্দী। গীতিকার – ওসমান শওকত বাবু।
৩২/ তোমার পুরনো দুটি চোখে – শিল্পী – প্রবাল চৌধুরী। গীতিকার – সুব্রত সেন গুপ্ত।
৩৩/ এ রাত যদি হয় মধুচন্দ্রিমার – শিল্পী – প্রবাল চৌধুরী। গীতিকার – সুব্রত সেন গুপ্ত।
৩৪/ তুমি বিশ্বাসের পাহাড়ে ঝর্ণা – শিল্পী – রফিকুল আলম। গীতিকার – শহিদুল্লাহ ফরায়জী।
৩৫/ কদমকুচি পর সমাচার লিখিয়াছেন – শিল্পী – তারেক/জুবায়ের। গীতিকার – ওসমান শওকত বাবু।
৩৬/ আমরা যে তোর পাগল ছেলে – শিল্পী – তারেক/জুবায়ের। গীতিকার – লোকমান হোসেন ফকির।
৩৭/ সুখে সংজ্ঞা কি যদি আমি জানতাম – শিল্পী – ফাহমিদা নবী। গীতিকার – ওসমান শওকত বাবু।
দেশের গান-
১/ সোনা মুখি সুই দিয়ে সেলাই করা কাজ সামাল করে রেখ – শিল্পী – শাহনাজ রহমতউল্লাহ্। গীতিকার – ওসমান শওকত বাবু।
২/ যখন প্রাণ পাখি ছাড়িয়া যাবে – শিল্পী – মলয় কুমার গাঙ্গুলি। গীতিকার – নুরুজ্জামান শেখ।
৩/ মধু মতিরে আমার – শিল্পী-আসফ খান। গীতিকার – লোকমান হোসেন ফকির.
৪/ আশেপাশে গাঁও গ্রাম আমার – শিল্পী – সম্পা রেজা। গীতিকার – নুরুজ্জামান শেখ।
৫/ রোদের দুপুরে পোড়া – শিল্পী – মনির খান। গীতিকার – নুরুজ্জামান শেখ।
৬/ সবুজের মত এই মনটা আমার – শিল্পী – আসফ খান। গীতিকার – ওসমান শওকত বাবু।
৭/ এক গল্প মহাকাব্য আমি বাংলাদেশকে বলবো – শিল্পী – সৈয়দ আব্দুল হাদী। গীতিকার – ওসমান শওকত বাবু।
৮/ পাখির নাম দোয়েল ফুলের নাম শাপলা – শিল্পী – খুরশীদ আলম। গীতিকার – মনিরুজ্জামান মনির।
৯/ আমি যেতে চাই বাংলার মানুষের কাছে – শিল্পী – সৈয়দ আব্দুল হাদী। গীতিকার – হোসেন মোহাম্মদ এরশাদ।
১০/ একটি বজ্রকন্ঠ থেকে বাঙালীর উত্থান, একটি আঙ্গুল উঠানো মানে যুদ্ধ জয়ের গান – শিল্পী – মুহাম্মদ আব্দুল জব্বার ও সুবীর নন্দী। গীতিকার – ওসমান শওকত বাবু।
১১/ আমি আর কার চোখ নিয়ে দেখব তোমাকে ওগো জন্মভূমি – শিল্পী – শাহনাজ রহমতউল্লাহ। গীতিকার – নুরুজ্জামান শেখ।
১২/ উনিশ বিষ সাল ১৭ই মার্চ টংগী পাড়ায় জন্ম নিলেন শেখ মুজিব – শিল্পী – মুহাম্মদ আব্দুল জব্বার। গীতিকার – ফজলুল হক খান।
১৩/ রূপসী বাংলা কেন ভাসে – শিল্পী – সুলতানা চৌধুরী। গীতিকার – ফজলুল হক খান।
১৪/ না যাইও না, যাইও বন্দে – শিল্পী – বেবী নাজনিন। গীতিকার – ওসমান শওকত বাবু।
১৫/ আমার সোনার চাঁদ ফরহাদ মারা গেছে মুক্তি যুদ্ধে শুনেছি যখন – শিল্পী – শিমুল ইউসুফ। গীতিকার – আবিদুর রহমান।