– সুব্রত মণ্ডল সৃজন।
বয়স যখন সাড়ে তিন বছর মূলত তখন থেকেই আমার গান শেখা শুরু হয়। পিতার (অসীম মজুমদার) উৎসাহই সব থেকে বেশি ছিল আমার গানের প্রতি। ঠাকুর দাদা গ্রামে গ্রামে ফোঁক গান করতেন। সেখান থেকেই গানের প্রতি একটা ভালবাসা তৈরি হয়। আমিও গুন গুন করে গান গাই। আমার বাবা গান গাইতে পারে না কিন্তু ভালো একজন শ্রোতা। বাবার উৎসাহে, ঠাকুরদাদার প্রচেষ্টায় আমাকে শ্রদ্ধেয় (স্বর্গীয়) অজিত রায়ের কাছে গানের ভুবনে হাতে খড়ি হয়। তখন সারগাম, ছোটদের ছড়া গান এসব শিখতাম। কথাগুলো একজন আদর্শ উচ্চাঙ্গসঙ্গীত শিল্পীর। নাম তার শোভন মজুমদার। গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া থানার পাথরঘাটা গ্রামে।
আজ আমরা জানবো গায়ক শোভন মজুমদারের সঙ্গীতশিল্পী হবার পিছনের কথা।
তখন বাংলাদেশ রেডিওতে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের নিয়মিত একটা অনুষ্ঠান হতো। আমি ছোট হলেও সেই অনুষ্ঠানটা নিয়ম করে উপভোগ করতাম, শুনতাম মন দিয়ে। আর তা থেকেই উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের প্রতি আলাদা রকম ভালো লাগা সৃষ্টি হয়। তাছাড়াও বাবা প্রায় সবসময়ই সতীনাথ মুখোপাধ্যায়, মান্না দে এদের গান ক্যাসেটে বাজাতো। সেগুলো শুনতে শুনতে এসব গানের প্রতি ভালোবাসাটা আরো বেড়ে গেল। আর এসব গান শুনে শুনেই আমার বড় হওয়া। কথাগুলো শিল্পী শোভন মজুমদারের।
তারপরে গানের জন্য শিল্পী নকুল কুমার বিশ্বাসের ভাই শিল্পী অর্জুন কুমার বিশ্বাসের কাছে তিনি বেশ কিছুদিন গান শেখেন। তারপর ভর্তি হন ‘বুলবুল ললিতকলা একাডেমীতে’ নজরুল বিভাগে। সেখানে ভর্তি হবার পর চার বছরের সার্টিফিকেট কোর্স সম্পন্ন করেন। তারপর ভর্তি হন উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত বিভাগে। আর সেখানেই সাক্ষাৎ হয় যাকে তিনি পরম গুরু বলে মনে করেন, যার দর্শনে জীবনের মোড় ঘুরে যায়, ঘুরে যায় তার সঙ্গীত জীবনের মোর, তিনি হলেন, শ্রী পূর্ণ চন্দ্র মণ্ডল। শোভন মজুমদার বলেন, উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতকে সঠিকভাবে চিনিয়ে দেওয়া, শিখিয়ে দেওয়া, হাতে ধরে ধরে শেখানো এবং পথচলা সম্পূর্ণই আমার এই পরম গুরুর কৃপা ভিন্ন আর কিছুই নয়।
তিনি আরো বলেন, দেখা যায় আমাদের দেশে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে খুব কমই আছেন যারা সঙ্গীতের এই বিভাগে কাজ করেন। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, মানুষ সহজে যেটা পায় সেটাকেই সহজে গ্রহণ করে নেয় কিন্তু এই উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতটা একটা বড় মাপের সাধনা, যাতে অনেক কষ্ট, অনেক শ্রম দিতে হয়, যে কারণে এই বিভাগে অনেকেই আসতে চান না। কিন্তু সঙ্গীতের এই বিভাগটি আমার মনের ভিতরে আলাদা রকম একটা রেখাপাত তৈরী করেছে। যে কারণে আমি একেই জীবনের সঙ্গী করি।
বর্তমানেও তিনি তার পরমগুরু শ্রী পূর্ণ চন্দ্র মণ্ডলের কাছেই উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের তালিম নিচ্ছেন এবং ২০১৮ সাল থেকে তিনি ‘সরকারি সংগীত কলেজে’ অধ্যয়ন করছেন।
সঙ্গীতশিল্পী শোভন মজুমদার বলেন, যার কথা না বললে বলা যেন অসম্পূর্ণ থেকে যায়, আমার জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে যিনি রয়েছেন, এক কথায় বলা যায়-সঙ্গীতাঙ্গনে বিচরণের ক্ষেত্রে যিনি আমার পথ প্রদর্শক হিসেবে কাজ করছেন তিনি হলেন শ্রদ্ধেয় উর্বি সোম, যার প্রচেষ্টায় আমার জীবনের গতি আরো বেড়ে যায়…।
ভক্ত-শ্রোতা তথা সকলের কাছে তিনি এই প্রার্থনা করেন যে, সকলের আশীর্বাদ নিয়ে যেন আমি বেঁচে থাকতে পারি এবং সঙ্গীত নিয়ে আমার অনেক বড় স্বপ্ন আছে এবং সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য সকলের আশীর্বাদ প্রার্থনা করছি।
সবার কাছে এটাই প্রার্থনা সবাই যেন আমাকে প্রাণ খুলে আশীর্বাদ করেন। মানুষের আশীর্বাদ থাকলে আমি লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো বলে মনে করি।
সঙ্গীতশিল্পী শোভন মজুমদারের ভক্ত-শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় সঙ্গীতাঙ্গন পত্রিকার ফেসবুক লাইভে একক সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সবাইকে আহ্বান ও আমন্ত্রণ জানিয়ে সঙ্গীতশিল্পী শোভন মজুমদারের জন্য ও তার ভক্ত-শ্রোতাদের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল সঙ্গীতাঙ্গন এর পক্ষ থেকে। ভিডিওটি লাইভ দেখতে এই পেইজের সাথে থাকুন, এখানে লাইভ প্রচারিত হবে অথবা আপনার ফেসবুকে Shangeetangon সার্চ করে আমাদের পেইজের সাথে থাকুন অথবা নীচের লিংকটিতে কপি করুন। ধন্যবাদ।
www.facebook.com/shangeetangon