Friday, April 19, 2024

অবশ্যই জন্মদিনে মাকে অনেক মনে করি! – স্বনামধন্য কণ্ঠশিল্পী আবিদা সুলতানা…

– কবি ও কথাসাহিত্যিক রহমান ফাহমিদা।

আজকে স্বনামধন্য কণ্ঠশিল্পী আবিদা সুলতানার জন্মদিন। বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলার একটি সংস্কৃতিমনা পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। আধুনিক গান এবং চলচ্চিত্রের প্লেব্যাকের জন্য তিনি বিখ্যাত। জন্মদিনের সুত্রধরে সঙ্গীতাঙ্গনের পক্ষ থেকে সুরেলা কণ্ঠের অধিকারী এই শিল্পীর একটি সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়। সেই সাক্ষাৎকারে তাঁর ছোটবেলার জন্মদিনের আয়োজন থেকে শুরু করে বর্তমান জন্মদিনের আয়োজনের অনেক মজার মজার ঘটনা তিনি শেয়ার করেছেন।

আজকে আপনার জন্মদিন! তাই জন্মদিনের শুভেচ্ছা দিয়ে শুরু করছি। ছোটবেলায় আপনার জন্মদিনটি কিভাবে পালন করা হতো ?

ছোটবেলায় খুব সুন্দরভাবে জন্মদিনটি পালন করা হতো। মা অনেক কিছু রান্না করতেন। সকাল থেকেই স্কুলে না যাওয়ার চেষ্টা করতাম কিন্তু মায়ের বকা খেয়ে স্কুলে যেতে হতো। আর তখন তেমন কোনো গেস্ট আসতোনা। আমরা তো অনেকগুলো ভাইবোন ছিলাম এবং সবাই ছোট ছিলাম তাই আমরা নিজেরাই অনেক মজা করতাম। বিকেলবেলা আব্বা গান করতেন। মা অনেক কিছু রান্না করতেন। কেক কাটা হত। আবার অনেক সময় বাইরে বেড়াতে যেতাম।

স্কুলের বান্ধবীদের নিয়ে জন্মদিন পালন করতেন না!

নাহ! আমরা তো সাত ভাইবোন ছিলাম তাই নিজেরাই মজা করতাম একসাথে মিলে, স্কুলের বান্ধবীদের তেমন দরকার হতোনা। তবে যখন কলেজে উঠলাম তখন যেটা করতাম তাহলো, আমি তখন থেকেই গান করতাম ফলে তখন আমার নিজেরই ইনকাম সোর্স ছিল। তাই কলেজে উঠার পর আমি আমার জন্মদিনের সকালবেলায় কলেজ থেকে বান্ধবীদের নিয়ে চলে যেতাম বাইরে এবং বাইরে গিয়ে খাওয়াদাওয়া করতাম। পরে রাতে বাসায় এসে দেখতাম মা অনেককিছু রান্নাবান্না করেছে এবং দু’একজন গেস্ট এসেছে তবে তেমন কিছু হতোনা।

আর বিয়ের পর আপনার জন্মদিনটি কিভাবে পালন করা হতো ? রফিকুল আলম ভাইতো আপনার প্রতি অনেক বেশী আন্তরিক! সে কিভাবে আপনার জন্মদিনটি পালন করেন ?

হা হা হা তা ঠিক! ও অনেক আন্তরিক। বিয়ের পরে থেকে আমার জন্মদিনটি অনেক বেশী জাঁকজমকভাবেই হয় তবে ইদানীং আরও বেশী হয় কারণ ভাইবোনরা তো এখন যার যার সংসারে আছে। ছেলেমেয়েরা বড় হয়ে গেছে। জামাই বউ যারা যারা আছে সবাই মিলে রাতেরবেলা চলে আসে অথবা আমরা সবাই মিলে বাইরে কোথাও খেতে যাই। কেক কাটা হয়, সবাই মিলে মজা করি। তাছাড়া সবাই যেহেতু জানে আমার জন্মদিন কবে! তাই আমার আর বলার প্রয়োজন হয় না হা হা হা।

আপনার কাছে জন্মদিনের কোন জিনিসটা বেশী ভালো লাগে ? আপনার জন্মদিনে সবাই আসছে এবং নানান রকম গিফট দিচ্ছে!

না না, আমার কাছে খুব লজ্জা লাগে আমাকে কেউ গিফট দিলে।

জন্মদিনের সকালবেলায় বাবা মাকে ফিল করেন নিশ্চয়ই!

হ্যাঁ, অবশ্যই ফিল করি। আর মা’তো কয়েক বছর আগেও ছিলেন। বছর পাঁচেক হল মা আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন! মা চলে যাওয়ার আগে সব কিছু মা’ই করতেন। অবশ্যই মাকে অনেক ফিল করি। এখন সবচেয়ে ভালো লাগে যে আমার ছেলে আর আমার হাসব্যান্ড মিলে সকাল থেকে এটা করছে, ওটা করছে, আবার আমি গেলে চুপ হয়ে যাচ্ছে। ওদের হাবভাব দেখে মনে হয় কি যেন হচ্ছে! কিন্তু ওরা আমার কাছে কি যেন হাইড করছে। আমি বুঝতে পারি কিছু একটা হচ্ছে! তা জেনেও আমি না বুঝার ভান করে চলে আসি হা হা হা।

তার মানে ঐ মজাটা আপনি নেন!

হ্যাঁ, তবে ওদের বুঝতে দেইনা। আবার দেখা যায় রাত বারটার সময় অনেক ফোন কল আসে, অনেক ম্যাসেজ আসে, অনেক ফুল আসে, কেক আসে কিন্তু ওরা আমাকে জানতে দিচ্ছেনা। ওরা জানে যে,আমি জানি। আবার আমিও বুঝতে পারছি ওরা কি করছে কিন্তু কেউ কাউকে জানতে দিচ্ছিনা। এটাও একটা মজা!

আচ্ছা আপু, ভাইয়া কি আপনার জন্মদিনে আপনাকে দু’তিন লাইন গান গেয়ে শোনায় না ?

না, না, না ওগুলো সিনেমায় হয়! বাস্তবে হয় না, হা হা হা।

ভাইয়া তো জানি অনেক মজার মজার রান্না করেন।

হ্যাঁ, রান্না ওর খুব প্রিয় একটা সাবজেক্ট! মাঝে মাঝেই রান্না ঘরে ঢুকে যায়। তখন আমি খুব বিরক্ত হই কিন্তু তারপরেও ও রান্না করে।

এবারের জন্মদিনের ব্যাপারে আপনি কি কোনো ডাউট করতে পেরেছেন! আপনার ছেলে আর ভাইয়া কি কিছু করবে ?

নাহ! ওরকমভাবে কিছু করা হবেনা যেহেতু একটি খারাপ সময় দিয়ে যাচ্ছি, নিজেদের কাজ নিজেরাই করতে হচ্ছে তাই ভাইবোনরা কাছে থাকলেও একত্রে হতে পারবো না। বাসার সবাই মিলে উদযাপন করছি।

জন্মদিনের কোনো স্মৃতি মনে পরে ?

আমার জন্মদিনে একজন আসতেন সবসময়। সে হলেন সঙ্গীত পরিচালক সত্য সাহা। তিনি আমার আর রফিকুল আলমের জন্মদিনে সকাল সাতটার সময় বৌদিকে নিয়ে, ফুল নিয়ে চলে আসতেন। উনি তো এখন নেই!

তাঁকে অনেক মিস করছেন বোঝা যাচ্ছে।

হ্যাঁ, ভীষণভাবে মিস করি।

এখনকার পরিবেশে কিভাবে সময় কাটাচ্ছেন ?

খুব খারাপ সময় কাটাচ্ছি, চারিদিক থেকে শুধু খারাপ খবর পাই। তাই মনটা খারাপই থাকে। আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ্ যে কয়দিন বাঁচিয়ে রাখবেন, বেঁচে থাকতে হবে। বাসায় বসে বিভিন্ন লাইভে অংশ নিচ্ছি। কখনো দেখা গেছে আমি একরুমে, ছেলে আর এক রুমে, তোমাদের ভাই আর এক রুমে লাইভ করছেন। এভাবেই দিন চলে যাচ্ছে।

আপু, আপনার জন্মদিনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন রইল সঙ্গীতাঙ্গন এর পক্ষ থেকে। আপনি আমাদের আরও অনেক নতুন নতুন গান উপহার দিবেন এবং এই শুভকামনা রইলো।

আপনাকে ও সঙ্গীতাঙ্গনকে জানাই অনেক ধন্যবাদ।

Related Articles

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

18,780FansLike
700SubscribersSubscribe
- Advertisement -

Latest Articles