asd
Friday, December 6, 2024

একটি গানের জন্মকথা ‘গীতি কেমন আছো’ – লীনু বিল্লাহ…

প্রিয় পাঠক,
অভিনন্দন এবং ভালোবাসা নিবেদন করছি আপনাদের প্রতি। সঙ্গীতাঙ্গন এর উদ্দেশ্য সবসময়ই দেশের সকল সুরকার, গীতিকার, শিল্পী এবং সব ধরনের মিউজিসিয়ানদের পাশে থেকে আমাদের দেশীয় সঙ্গীতকে অনেক দুর এগিয়ে দুর নিয়ে যেতে। আমরা চাই সঙ্গীতাঙ্গন এর মাধ্যমে যেকোনো গানের আসল স্রষ্টা সম্পর্কে জানুক। এ জন্য আমরা সব সময় আপনাদের সহযোগীতা কামনা করছি।
কারণ দেশের একাধিক চ্যানেলে এ প্রজন্মের শিল্পীরা গানটির স্রষ্টাদের নাম না বলতে পেরে সংগ্রহ বলে থাকেন। এতে গানের মূল স্রষ্টা ব্যথিত হোন, এমন অনেক অভিযোগ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। তাই একটি গানের মূল স্রষ্টাকে পাঠকদের সামনে তুলে ধরতে আমরা বহুদিন ধরেই কাজ করে যাচ্ছি, শুধুমাত্র সঙ্গীতকে ভালোবেসে। এবারের বিষয় ‘একটি গানের পিছনের গল্প’ আমাদের অনেক প্রিয় একজন সঙ্গীতপ্রেমী ভাই জনাব মীর শাহ্‌নেওয়াজ সঙ্গীতাঙ্গন এর মাধ্যমে জানাবেন আমাদের প্রিয় গানের পিছনের গল্প। এবং দেশের বরেণ্য সকল শ্রদ্ধাভাজন শিল্পীগন আপনারাও নিজ দায়িত্বে সঙ্গীতাঙ্গনের মাধ্যমে জানাতে পারেন আপনার নিজ সৃষ্টি অথবা আপনার প্রিয় গানের গল্প। এতে আর এ প্রজন্মের শিল্পীরা ভুল করবেন না গানের স্রষ্টাকে চিনতে।
আসুন সবাই গানের সঠিক ইতিহাস জানতে একতা গড়ি। – সম্পাদক

– আরিফুল ইসলাম রনি…

কিছু গান মন ছুঁয়ে যায় বারবার, কিছু কন্ঠের মধুর ধ্বনিতে মনে পড়ে যায় সোনালি সেই গানের দিনের কথা। সত্তর দশকে স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে জন্ম হয় অসংখ্য রুচিশীল বিশুদ্ধ গান। যার মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় একটি গান ‘গীতি কেমন আছো’।
সেই সময় একমাত্র বেতার এবং টেলিভিশনই ছিলো শ্রোতাদের গান শোনার মাধ্যম। গ্রামের মানুষ এক বাড়ি থেকে আরেক বাড়ি গিয়ে বসে থাকতো একটি গান শোনার জন্য, একটি গান দেখার জন্য। বিদুৎ এবং মিডিয়ার সংকটে সব শ্রোতারা সরাসরি গান দেখতে বা শোনতে পেতো না। কিন্তু মুখে মুখে ছড়িয়ে গেছে কত গানের বানী। মানুষ গলা ছেড়ে গান করতো, এভাবে ভাল গান গুলো ছড়িয়ে যেতো। ‘গীতি কেমন আছো’ সত্তর দশকের শেষে ১৯৭৭ সালের একটি তুমুল জনপ্রিয় গান। এবং দেশের বিখ্যাত সঙ্গীত পরিচালক আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল এর প্রথম সুরকরা গান।

শ্রদ্ধেয় গানটি লিখেছেন এস এম হেদায়েত। এবং গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন শ্রদ্ধেয় লীনু বিল্লাহ। লীনু বিল্লাহ দেশের ভাগ্যবান একজন সঙ্গীতশিল্পী। দেশের বিখ্যাত সুর সম্রাট আলাউদ্দিন আলী এবং আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল দুইজনেরই জীবনের প্রথম সুর করা গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি।

লিনু বিল্লাহ জানান, তখন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল বাংলাদেশ টেলিভিশনে গীটার বাজাতেন; অনেক ভাল গীটার বাজায় সে। আমি ভাবলাম একটি গান করবো নামের উপর।
কিন্তু কার নাম দেবো ?
আমার স্ত্রীকে বললাম একটি গানে তোমার নাম ব্যবহার করতে চাই।
স্ত্রী রাজী হলো, তার অনুমতি নিয়েই প্রতিভাবান গীতিকবি এস. এম. হেদায়েত লিখলেন –

“গীতি কেমন আছো
বলো কোথায় আছো
আমার পাশে থাকো আজ

এই মন মানে না যে, মানে না যে কোন বাঁধা
এই চোখে লাগে কেন, লাগে কেন এতো ধাঁধা।।
গীতি কেমন আছো
বলো কোথায় আছো
আমার পাশে থাকো আজ

এই গান থেমে যাবে, থেমে যাবে তুমি ছাড়া
এই ভুল ভেঙ্গে যাবে, ভেঙ্গে যাবে দাও সাড়া।।
গীতি কেমন আছো
বলো কোথায় আছো
আমার পাশে থাকো আজ।”

এমন সুন্দর কথায় উপর আহমেদ ইমতিয়াজ এর সুর শ্রোতাদের মনে ঠাই পেলো।
১৯৭৭ সালে বিটিভি (বাংলাদেশ টেলিভিশন) এর জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইষ্টি কুটুম’ এ গানটি প্রচার হয়। এরপর থেকে সবার (সেই প্রজন্ম) মুখে মুখে গানটি শোনা যেতো সেই যে একটি আবেগ ‘গীতি কেমন আছো, বলো কোথায় আছো’ মানুষের যেন মনের কথা হয়ে গেলো।

কিছু গানের কথা অমর হয়ে থাকে এভাবেই।
লীনু বিল্লার মধুর কণ্ঠে এখনো সুর হয়ে ফিরে আসে আর খোঁজে বেড়ায় প্রাণের গীতিকে।
এখনো শ্রোতারা জানতা চায় প্রাণের মানুষটা কেমন আছে ‘গীতি’ কেমন আছো ?

Related Articles

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

18,780FansLike
700SubscribersSubscribe
- Advertisement -

Latest Articles