asd

এটা আমার দ্বিতীয় জীবন – লীনু বিল্লাহ…

– মোঃ মোশারফ হোসেন মুন্না।

সঙ্গীতাঙ্গন এর প্রথম আধুনিক গানের একক সঙ্গীত সন্ধ্যা শেষ হলো কনসার্ট ফর লীনু বিল্লাহ। আলো ঝলমলে সন্ধ্যায় সঙ্গীত প্রেমী বিশিষ্ট জনের পদচারনায় মুখরিত হয়েছিল গতকাল ১০ই নভেম্বর জাতীয় যাদুঘরে। কথায় আছে পুরানা চাউল ভাতে বারে। ঠিক তেমন কথার বাস্তব উদাহরণ গতকালের সঙ্গীতানুষ্ঠানে মিললো। ১৯৭১ এর বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সঙ্গীত শিল্পী লীনু বিল্লাহ সেই প্রমাণ। গানের মাধুর্য্যে আর ভাব বিনিময় সবটা দিয়ে গান পরিবেশন করেছেন তিনি। বলা যায় গতকালের সঙ্গীত হলো লীনু বিল্লাহ এর মুখের কথার বাস্তব উদাহরণ। তিনি বলেন আমার কাছে গান হলো সবচেয়ে বড় ঔষধ। আর তার কথার প্রমাণ দিলেন তার নবযুবকীয় গানে। তার গানের কন্ঠ এখনো এত সুরেলা যে একটি শ্রোতাও জায়গা হারিয়ে ফেলার ভয়ে বসার স্থান ত্যাগ করেনি। কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনের এক বিন্দু জায়গা খালি ছিল না দাড়ানোর মত।

হাসতে হাসতে মঞ্চে আগমন করলেন শিল্পী লীনু বিল্লাহ একের পর এক পরিবেশন করেন তার গান। গানের ফাঁকে ফাঁকে বলে নেন গানের কিছু প্রসঙ্গের কথা। এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সুনামধন্য দুই গুণী সঙ্গীতজ্ঞ আলাউদ্দিন আলী ও শেখ সাদী খান। এসময় আদি ও বর্তমান স্মৃতির স্মৃতিচারণা করেন তারা। আলাউদ্দিন আলী ও শেখ সাদী খানের সাথে লীনু বিল্লাহ এর বাল্য জীবনের চরম মুহূর্তের কিছু কথাও আনন্দ আর হাসি খুশির মাঝে ভাগ বসান।
আলাউদ্দিন আলী বলেন সত্যিই আজ খুব ভালো লাগছে লীনুর সঙ্গীত সন্ধ্যায় আসতে পেরে। সঙ্গীতাঙ্গনকে এমন একটি অনুষ্ঠান করার জন্য অনেক ধন্যবাদ। লীনু আমার বাল্যকালের বন্ধু। এক সময় সে তবলা বাজাতো। সেখান থেকে সে গানের শিক্ষাটা নিয়ে তার পর গান শুরু করে বলা যায় একজন গায়কের যে গুন গুলো থাকার কথা তা তার ভেতরে ষোলো আনাই আছে। লীনুকে ধন্যবাদ দিয়ে আর কৃতজ্ঞতা জানানোর কিছু নেই তবুও বেস্ট অফ লাক লীনু। তার শেষ জীবনে গানে ফেরার কিছু সমালোচনা নিয়ে কথা বললেন শেখ সাদী খান। তিনি বলেন আমি জানি ও বিশ্বাস করি সব কাজের একটা প্রেরণা প্রয়োজন হয়। শেষ বয়সে এসে লীনু যে গান গাওয়া শুরু করলো গ্রান্টেড আমি এর পেছনে পুরো অবদান তার সুযোগ্য জীবন সঙ্গিনী গীতি বিল্লাহ। সত্যিই লীনু খুব ভালো গায়। তারপর এতো শ্রোতা দেখে বলা যায় লীনুকে ভালোবাসে বলেই আজ এতো দর্শক সমাগম। আমি আজ খুবই আবেগপ্লুত যে লীনুকে ভালোবেসে তার আগের সেই ভক্তরা সহ নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা চলে এসেছে। লীনুর জন্য দোয়া সে যাতে এভাবেই গেয়ে যেতে পারে অন্তিম সময় পর্যন্ত। এমনিতেও সে এখন টিভি ও স্টেজ শোতে পারফর্ম করে আশা করি ভবিষৎও করবে। লিনু বিল্লাহ প্রসঙ্গক্রমে কিছু বলতে দিলে সে জানায় আসলে এটা আমার “সেকেন্ড লাইফ” ভাগ্যের সফল চেষ্টায় আজ আমি এখানে আছি না হলে তো সেই ৭১রেই শেষ হয়ে যেতাম। আমি সবাইকে আমার কাছে পেয়ে সত্যিই খুব খুশী। সবাইকে আমার অন্তর ভরা ভালোবাসা জানাই। সেই সাথে একজনের কথা না বললেই নয় আর সেটা হলো সঙ্গীতাঙ্গন এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সম্পাদক আহসানুল হক। এটা আমাকে নিয়ে তাদের প্রথম একক অনুষ্ঠান যা আমাকে দিয়ে সে শুরু করেছে। এজন্য আমি কৃতজ্ঞ সঙ্গীতাঙ্গন এর প্রতি।

এ সময় সঙ্গীতান এর প্রধান সম্পাদককে মঞ্চে এসে কিছু বলার জন্য অনুরোধ জানালে তিনি বলেন আমি কাজে বিশ্বাসী। আমার পত্রিকার জয় গান আমি করবো না আর করতে চাইও না। সঙ্গীত নিয়ে আমাদের পত্রিকার যদি কোন অবদান থেকে থাকে তা হলে আপনারাই তার গুনকীর্তন করবেন। আমি শুধু একটা কথাই বলতে চাই আর সেটা হলো সবাই সঙ্গীত পাগল এখানে যারা আছেন। আমাদের সঙ্গীতাঙ্গন এর কাজের যথাযথ মূল্যায়ন করবেন সঙ্গীতের প্রেম অন্তরে লালন করবেন। সবাইকে সঙ্গীতাঙ্গন এর পক্ষ থেকে লাল গোলাপ শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। সবাই সীমাহীন আনন্দ নিয়ে হল ত্যাগ করেন মন যেনো এখানেই লিনু বিল্লাহর গানে আটকে গেছে মনে হয়।

তার পরিবেশনার গানের তালিকাঃ

১। আমার বাংলা মা তোর
২। দূরের বন্ধু তুমি কাছে এসে
৩। অন্তর আমার করলাম নোঙর
৪। যেভাবেই বাঁচি বেঁচেতো আছি
৫। পিছু ডাকে কিছু স্মৃতি
৬। বড় ক্লান্তি নিয়ে
৭। অন্য জীবন অনন্য মন
৮। দুরে চলে পেলে
৯। গীতি কেমন আছ
১০। কেন দেরী করিলে বন্ধু
১১। আমার নাটাই হাতে রইলো
১২। তোরে লইয়া বিবাগী হইয়া
১৩। যতদিন বেঁচে আছি
১৪। ঝিরিঝিরি বাতাস কাঁদে

Related Articles

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

Latest Articles