Friday, March 29, 2024

সবাইকে পবিত্র ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা…

ওরে হত্যা নয় আজ ‘সত্যাগ্রহ’, শক্তির উদ্বোধন ।
দ্যাখ্ কেঁপেছে ‘আরশ’ আস্‌মানে,
মন-খুনি কি রে রাশ মানে ?
ত্রাস প্রাণে ?-তবে রাস্তা নে!
প্রলয়- বিষাণ কিয়ামতে তবে বাজাবে কোন্ বোধন ?
সেকি সৃষ্টি-সংশোধন ? ওরে তাথিয়া তাথিয়া নাচে ভৈরব বাজে ডম্বরু শোন্!– ওরে হত্যা নয় আজ ‘সত্যাগ্রহ’, শক্তির উদ্বোধন।

ওরে হত্যা নয় আজ ‘সত্যাগ্রহ’, শক্তির উদ্বোধন।
মুস্‌লিম-রণ-ডঙ্কা সে,
খুন্ দেখে করে শঙ্কা কে ?
টঙ্কারে অসি ঝঙ্কারে ওরে হুঙ্কারে, ভাঙি গড়া ভীম কারা লড়ব রণ-মরণ!
ঢালে বাজ্‌বে ঝন্-ঝনন! ওরে সত্য মুক্তি স্বাধীনতা দেবে এই সে খুন-মোচন! ওরে হত্যা নয় আজ ‘সত্যাগ্রহ’, শক্তির উদ্বোধন।

ওরে হত্যা নয় আজ ‘সত্যাগ্রহ’, শক্তির উদ্বোধন।
জোর চাই আর যাচ্‌না নয়
কোরবানি-দিন আজ না ওই ?
বাজ্‌না কই ? সাজ্‌না কই ? কাজ না আজিকে জান্ মাল দিয়ে মুক্তির উদ্ধরণ ?
বল্– ‘যুঝ্‌ব জান্ ভি পণ!’ ঐ খুনের খুঁটিতে কল্যাণ-কেতু, লক্ষ্য ঐ তোরণ! আজ আল্লার নামে জান কোরবানে ঈদের পূত বোধন। ওরে হত্যা নয় আজ ‘সত্যাগ্রহ’, শক্তির উদ্বোধন।” – কাজী নজরুল ইসলাম

ইসলাম ধর্মাবলম্বিদের সবচেয়ে বড় দু’টো ধর্মীয় উৎসবের একটি। বাংলাদেশে এই উৎসবটি কুরবানির ঈদ নামে পরিচিত। ঈদুল আযহা মূলত আরবী বাক্যাংশ। এর অর্থ হলো ত্যাগের উৎসব। আসলে এটির মূল প্রতিপাদ্য
বিষয় হচ্ছে ত্যাগ করা। এ দিনটিতে মুসলমানেরা তাদের সাধ্যমত ধর্মীয় নিয়মানুযায়ী উট, গরু, দুম্বা কিংবা ছাগল কোরবানি বা জবাই দেয়।

ইসলামের বিভিন্ন বর্ননা অণুযায়ী, মহান আল্লাহ তাআলা ইসলামের নবী হযরত ইব্রাহীম(আঃ)কে স্বপ্নে তার সবচেয়ে প্রিয় বস্তুটি কুরবানী করার নির্দেশ দেন। এই আদেশ অণুযায়ী হযরত ইব্রাহিম(আঃ) তার সবচেয়ে প্রিয় পুত্র ইসমাইলকে কুরবানি করার জন্য প্রস্তুত হলে স্রষ্টা তাকে তা করতে বাধা দেন এবং পুত্রের পরিবর্তে পশু কুরবানীর নির্দেশ দেন। এই ঘটনাকে স্মরণ করে সারা বিশ্বের মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্ঠি অর্জনের জন্য প্রতি বছর এই দিবসটি পালন করে। হিজরি বর্ষপঞ্জি হিসাবে জিলহজ্জ্ব মাসের ১০ তারিখ থেকে শুরু করে ১২ তারিখ পর্যন্ত ৩ দিন ধরে ঈদুল আজহা চলে। হিজরী চান্দ্র বছরের গণনা অণুযায়ী ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহার মাঝে ২ মাস ১০ দিন ব্যবধান থাকে। দিনের হিসেবে যা সবোর্চ্চ ৭০ দিন হতে পারে।

ইসলাম মতে যার যাকাত দেয়ার সামর্থ্য আছে তাঁর ওপর ঈদুল আযহা উপলক্ষে পশু কুরবানি করা ওয়াজীব। ঈদুল আযহার দিন থেকে শুরু করে পরবর্তী দুইদিন পশু কুরবানির জন্য নির্ধারিত। বাংলাদেশের মুসলমানরা সাধারণত গরু বা খাসী কুরবানি দিয়ে থাকেন। একজন ব্যক্তি একটি গরু, মহিষ বা খাসি কুরবানি করতে পারেন। তবে গরুর বা মহিষ এর ক্ষেত্রে সর্বোচ্য ৭ ভাগে কুরবানি করা যায় অর্থাৎ ২, ৩, ৫ বা ৭ ব্যক্তি একটি গরু কুরবানিতে শরিক হতে পারেন। সাধারণত আমাদের দেশে কুরবানির মাংস তিন ভাগে ভাগ করে ১ ভাগ গরিব-দুঃস্থদের মধ্যে ১ ভাগ আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে এবং ১ ভাগ নিজেদের খাওয়ার জন্য রাখা হয়, তবে মাংস বিতরনের কোন সুস্পষ্ট হুকুম নেই কারন কুরবানীর হুকুম যবাই হওয়ার দ্বারা পালন হয়ে যায়।

কুরবানির পশুর চামড়া বিক্রির অর্থ দান করে দেয়ার নির্দেশ রয়েছে। মুসাফির বা ভ্রমঙ্কারির ওপর কুরবানি করা ওয়াজিব নয়। ঈদুল আযহার নামাজের আগে কুরবানি করা সঠিক নয়।

কুরবানির খাসীর বয়স কমপক্ষে ১ বছর হতে হবে। গরু ও মহিষের বয়স কমপক্ষে ২ বছর হতে হবে। নিজ হাতে কুরবানি করা ভাল। কুরবানি প্রাণির দক্ষিণ দিকে রেখে কিবলামুখী করে, ধারালো অস্ত্র দিয়ে ‘বিস্মিল্লাহি আল্লাহু আকবার’
বলে জবাই করা হয়।
এই প্রার্থনা করে যাই –
বনের পশু নয়, যেন মনের পশুকে কুরবানি দিয়ে সবাই খাটি মনের মানুষ হতে পারি।

Related Articles

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

18,780FansLike
700SubscribersSubscribe
- Advertisement -

Latest Articles