– মোশারফ হোসেন মুন্না।
গিটার সুরের একটা ইমারত। গিটার হলো সঙ্গীতের একটা মূল উৎস। গিটারের সাহায্য একটা গানকে সুন্দর করা যায়। একটা কথাকে গানে রুপ দিতে পারে কেবল বাদ্যযন্ত্র আর তার মধ্যে প্রধান হলো গিটার। আধুনিক সঙ্গীতের মণিহার হলো গিটার। এই গিটার সম্পর্কে অনেকেই হয়তো জানেনা। তাই সবার অবগতির জন্য আজকের সঙ্গীতাঙ্গন এর বিষেশ প্রতিবেদন।
১। এ্যাকুয়েস্টিক গিটারঃ এইটা আমাদের সবার চেনা প্রচলিত একটি ক্লাসিকাল গিটার, যাকে এ্যাকুয়েস্টিক গিটার বলে। যেকোনো শিক্ষার্থীর উচিত এই গিটার নিয়েই হাতেখড়ি করা। এর মূল ফিচার ফ্ল্যাট বডি এবং এর তার গুলো নাইলন এবং কিছু ক্ষেত্রে স্টিলের তৈরি। এই গিটারের বিগেনার মডেলের দাম শুরু হয় ৩,৫০০ থেকে। এবং প্রফেশনাল মডেলের দাম শুরু হয় ১,০০,০০০ থেকে।
২। ইলেকট্রিক গিটারঃ এবার আসুন জেনে নেই ইলেকট্রিক গুটারের কথা। রক প্রেমীদের স্বপ্ন হল একটি ইলেকট্রিক গিটার। এর মূল ফিচার হচ্ছে সলিড বডি, যার ফলে এর সাউন্ড এ্যাকুয়েস্টিক গিটার এর থেকে ভিন্ন। এগুলির তার সম্পূর্ণ স্টিল এর তৈরি এবং এইগুলি এমন ভাবে ডিজাইন করা যে সরাসরি এমপ্লিফায়ার এর সাথে সংযুক্ত হতে পারবে। স্টিলের তারের জন্য এই গিটারটি বাজানো একটু কষ্টকর, প্রথম প্রথম হাতে খুব ব্যথা লাগে, অনেকে ব্যথার জন্যই বাজানো ছেঁড়ে দেয়। কিন্তু একবার শিখতে পারলে এর প্রেমে পরে যাবেন। এই গিটারের বিগেনার মডেলের দাম শুরু হয় ২০,০০০ থেকে। এবং প্রফেশনাল মডেলের দাম শুরু হয় ১,০০,০০০ থেকে।
৩। ইলেকট্রু এ্যাকুয়েস্টিক বা সেমি এ্যাকুয়েস্টিক গিটারঃ নাম শুনেই বুঝতে পারছেন এই গিটারটি অর্ধেক এ্যাকুয়েস্টিক এবং অর্ধেক ইলেকট্রিক। এটা গিটারের জগৎ এ সব থেকে কম দামি গিটার। যার বিগেনার মডেলের দাম শুরু হয় ৩,৫০০ থেকে। প্রফেশনাল মডেলের দাম শুরু হয় ১৫,০০০ থেকে।
৪। আর্চটপ গিটারঃ এই গিটার গুলোর উপরের অংশ ধনুকের মতো হেলানো এবং লম্বা। এই গুলি সাউন্ড সাধারণ গিটারের থেকে ভিন্ন এবং কিছুটা ভায়লিন এর মতো। সাধারণত জ্যাজ মিউজিকের ক্ষেত্রে এই গুলি ব্যাবহার করা হয়। এই গিটার এ পারদর্শী হওয়া অনেক সাধনার ব্যাপার। আমাদের দেশে খুব একটা এই গিটার পাওয়াও যায় না। ইউরোপে এটি বেশি পাওয়া যায়। এটি কোন বিগেনার গিটার না। এটির প্রফেশনাল মডেলের দাম শুরু হয় ৪,০০,০০০ থেকে ।
৫। স্টিল গিটারঃ এই গিটার সাধারণ গিটারের থেকে আলাদা এবং ব্যাতিক্রমধর্মী। অন্যান্য গিটারের মতো হাতে না নিয়ে এইটি কোলে নিয়ে বাজাতে হয়। এই সম্পূর্ণ স্টিলের তৈরি। আইয়ুব বাচ্চুর স্টুডিওতে এই গিটার আছে। এবং তিনি এটি বাজাতেন। এটাও আমাদের দেশে পাওয়া যায়না।
৬। টাচ্ গিটারঃ এইটা মডার্ন জুগের একটি আবিস্কার। এইটি সম্পূর্ণ টাচ্। কিছু মডেলে ডিজাইনের জন্য তার দেয়া থাকে, কিন্তু সেইটা শুধুমাত্র ডিজাইন।
৭। রেসুনাটর গিটারঃ এটি সাধারণ গিটারের থেকে ভিন্নধর্মী। সাধারণ গিটার গুলি তরঙ্গ ভিত্তিক, এইটাও তরঙ্গ ভিত্তিক কিন্তু এইখানে সাউন্ড গুলো অনেক ডিফারেন্ট কারণ সাউন্ডগুলি পুরো স্টিলের গোলকের ভেতর দিয়ে কম্পাঙ্ক তৈরি করে।
৮। বেজ গিটারঃ এই গিটার গুলি মিউজিকের বেস তৈরির জন্য ব্যাবহার করা হয়। এর গঠন ইলেকট্রিক গিটারের মতোনই শুধু তার গুলো মোটা এবং ঘাড়টি লম্বা যাতে এর থেকে ভালো বেজ মিউজিক উৎপন্ন করা যায়। এটি বাজানো বেশটা ইলেকট্রিক গিটারের মতো। যারা ইলেকট্রিক গিটার বাজাতে পারে তারা ১ দিনের মধ্যেই এইটা বাজাতে পারবে।
এইটা সাধারনত বিগেনারেরা ব্যাবহার করে না। বিগেনার মডেলের দাম শুরু হয় ৩০,০০০ থেকে। প্রফেশনাল মডেলের দামঃ শুরু হয় ১,০০,০০০ থেকে।
৯। মাল্টি নেক গিটারঃ এইটা এমন একটা গিটার, এর কোনো প্র্যাক্টিকাল প্রয়োগ নেই। শিল্পীরা সুরের সাথে এক্সপেরিমেন্ট এবং সাধারণ মানুষ শখের বসে এগুলো কেনে। এইটা সাধারনত ২-৬ ঘাড়ের হয়ে থাকে। খুব অল্প মানুষই এটা বাজায়। বলতে গেলে এর ব্যবহার নাইই। কিন্তু কিংবদন্তি শিল্পী এল্ভিস প্রেস্লিকে এই গিটার ব্যাবহার করে গান বাজাতে বহুবার দেখা গেছে।
আজকের প্রতিবেদনটা গিটারের ভূমিকা। পরবর্তী প্রতিবেদন হবে এই গিটার গুলো কে কে বাজাতেন এবং এর বিশ্লেষণ সহ। সেই পর্যন্ত সুস্থ থাকুন সঙ্গীতাঙ্গন এর সাথে থাকুন।