– মোশারফ হোসেন মুন্না।
করোনা নামের মহামারি তুমি যাও,
তুমি যাও।
একটা বিনীত অনুরোধ,
তোমার ভয়টাকে রেখে যাও।
ওগো ভয়, তোমারই হোক জয়।
তুমি নির্ভীক তরবারি,
তুমি নির্মেদ অক্ষয়।
তোমারই হোক জয়।
তোমার জন্য বন্ধ হয়েছে।
সভ্যতা নামে দূষণ।
তোমার জন্য বহুদিন পর,
আকাশে হাসছে পূষণ।
তোমার জন্য মানুষ ভুলেছে,
পুষে রাখা বিদ্বেষ ভয়।
শুধু ভয় করে দিলো বিভেদহীন এক দেশ।
কারো মুখই যাচ্ছে না দেখা,
আল্লাহ অথবা রাম।
সবার মুখই মাস্কেতে ঢাকা,
সবার কপালে ঘাম।
হাতে নাগরিক পুঞ্জির খাতা,
কাগজে চায় প্রমাণ।
এখন তারা কোথায়,
দিতে পারেন সন্ধান।
মৃত্যুর কোন দেশ তো লাগে না,
কাঁটাতার ছিঁড়ে যায়।
নগর থাকলে নাগরিক,
সে নগরকেকে বাঁচায়।
রোজ আমাদের হিংসে মন্ত্র।
শেখায় যে পুরোহিতি,
যুগ যুগ ধরে আমরা তো জানি।
তার নাম রাজনীতি।
করোনা তোমার ভয় বন্ধ।
সে মন্ত্র উচ্চারণ।
মানুষ বুঝেছে জীবন।
নেই পুরোহিত প্রয়োজন।
করোনা, তুমি যাও।
তুমি যাও শাহজাদী।
শুধু ভয়টুকু থাক।
হোক ভয়টা সাম্যবাদী।
গত ২৩ মার্চ, সোমবার নিজের ভেরিফোয়েড ফেসবুক পেইজে ‘করোনা’ নামের একটি প্রতিবাদী কবিতা লিখে প্রকাশ করেন প্রতিবাদী কন্ঠ শিল্পী নচিকেতা। সেই কবিতার আবৃত্তিও প্রকাশ করেছেন শিল্পী নিজেই। তা প্রকাশের পরপরই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। আপাতত ‘করোনা’ শিরোনামের লেখাটি কবিতা হিসেবে প্রকাশ হলেও খুব শিগগিরই এটি গান হয়ে উঠতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন নচিকেতা। তার কন্ঠে এমন অসংখ্য গান আছে যাতে তিনি প্রতিবাদী কথার বাস্তব উদাহরন তুলে ধরেছেন। সারা বিশ্বে যেই মহামারীর আক্রমনে মানুষ জন আতঙ্কিত। সেই মহামারীর প্রকৃত কারণ মানুষের কর্মকান্ড তা এই কবিতাতে ফুটে ওঠেছে।
বিশ্বজুড়ে মহামারী রূপে আবির্ভূত হয়েছে নভেল করোনা ভাইরাস। কেড়ে নিচ্ছে হাজার হাজার মানুষের প্রাণ। প্রতি মুহূর্তে মৃতের তালিকার যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন নাম। এমন অবস্থায় বিস্মিত, বিমূঢ় মানবজাতি থমকে দাঁড়িয়েছে। থেমে গেছে কলকারখানা। বন্ধ হয়ে গেছে যান চলাচল।
এমন অবস্থায় মানুষের সামনে আশা জোগাতে কাজ করছেন চিকিৎসক-গবেষকরা। এরই মধ্যে এর প্রতিষেধক আবিষ্কারে নির্ঘুম রাত কাটছে তাদের। এর উল্টো দিকও আছে। বিশ্ব থমকে যাওয়ায় দূষণ কমে আসছে। মানুষের কথিত উন্নয়নের ফলে বায়ূ কিংবা জল সর্বত্র যে দূষণের ছোঁয়া ছিল, তা যেন ধীরে ধীরে কমে আসছে। এমন অবস্থায় করোনার প্রতি আহ্বান জানিয়ে এই কবিতা লিখেছেন শিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তী। তবে সত্যি এটাই যে করোনার ভয়ে মানুষ সচেতন হয়েছে বহুলাংশে। এই ভয়টা যেন করোনার চলে যাবার পরেও থেকে যায় সেই অনুরোধ না কবিতায় করোনাকে। সবাই করোনা থেকে বেচেঁ থাকুক। ভালো থাকুক সব সময়।