– হৃদয় হাসান।
আর জি কর হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসককে নারকীয়ভাবে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় উত্তাল গোটা দেশ। বিদ্রোহের আগুন কলকাতার গণ্ডি ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়ছে দিল্লি, লখনউ, চেন্নাই-সহ দেশের সর্বত্র। এই ইস্যুতে দিকে দিকে প্রতিবাদ, মিছিল থেকে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা সংবাদমাধ্যমে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে বিশিষ্টজনেরা।
১৪ আগস্ট, স্বাধীনতা দিবসের আগের রাতে মেয়েদের পথে নামার আর্জি জানান প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনী রিমঝিম, সেই ডাকে সাড়া দিয়েছেন বাংলা বিনোদন দুনিয়ার খ্যাতনামীরা। তবে এই সবের মাঝেই ফেসবুকে কড়া অবস্থান শহর খ্যাত অনিন্দ্যর।
সঙ্গীতশিল্পী অনিন্দ্য বসু শুরু থেকেই আরজি কর ইস্যুতে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব। এদিন সকালে হাইকোর্টে মুখ পুড়েছে রাজ্য সরকারের। মঙ্গলবার দুপুরে সঙ্গীত শিল্পী ফেসবুকে নাম না করেই বাংলার বুদ্ধিজীবিদের একাংশ, তথা ‘বিদ্রোহী গায়ক’ এবং ‘সহানুভূতিশীল কবি’-কে আক্রমণ করেন!
তিনি লেখেন, ‘বুদ্ধিজীবিরা’ চুপ ‘বিদ্রোহী’ গায়করা ? কিম্বা ভীষণ’ সহানুভূতিশীল’কবি ?! বাদবাকী ‘শিল্পী’রা ? আপনারা মৃত…জানেন?’ হুঁশিয়ারি দিয়ে অনিন্দ্য আরও লেখেন, ‘কালকে আপনার ঘরেও এই বিপদ ঘটতে পারে…ভেবেছেন ? তখন আপনিও ‘ড্যারাং ড্যারাং’ সমেত ‘খবর’!!! যান…পয়সা, অ্যাওয়ার্ড, নাম, যশ, প্রতিপত্তি, বিদেশ ভ্রমণ…সব কামিয়ে নিন…তারপর কোথায় যে যাবেন! মরবেন আপনিও, আমিও… শিরদাঁড়া সোজা রেখে বিদায় নেবো’।
নিজের পোস্টে কারুর নাম উল্লেখ করেননি অনিন্দ্য়। তবে ‘বিদ্রোহী গায়ক’ বলতে সদ্য় ‘মহানায়ক সম্মান’-এ ভূষিত নচিকেতাকেই ইঙ্গিত করেছেন অনিন্দ্য, তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি অনুরাগীরদের। একজন লেখেন, ‘হ্যাঁ, বিদ্রোহী গায়ক মহানায়ক নচিকেতা কোথায় ? আরেকজন লেখেন, পরের বছরও যাতে আরেকটা মহানায়ক সম্মান পায়, তাই মুখ বন্ধ করে আছে।
‘নিয়তিচক্রে আমি পুরুষ’ এই কথা বলেও অভয়ার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছেন অনিন্দ্য। তাঁর কলম চলছে অবিরাম। অপর এক কবিতায় অনিন্দ্য লেখেন, ‘…আছি লজ্জায়, শুধু চাপা ভয়, কাজ করছে! ভাবি শঙ্কায় ঘরে মেয়েগুলো বড় হচ্ছে…’।
আরজি করের ঘটনায় একা কোনও একজন জড়িত থাকতে পারে না, এই দাবিই করে আসছেন আন্দোলনকারী। এদিকে পুলিশ দাবি করছিল, শুধুমাত্র সঞ্জয় রায়ই নাকি এই ঘটনা ঘটিয়েছে। সে নাকি স্বীকারও করেছে দোষ। তবে গতকাল সোদপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়ে পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল বললেন, যদি একাধিক ব্যক্তি জড়িত থাকে তাহলে ৪-৫ দিনে ধরা পড়বে। তাঁর কথায়, এখন আর ‘কোনও সম্ভাবনাই উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না।’ ওদিকে আরজি কর থেকে ইস্তফা দেওয়া অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে ন্যাশন্যাল
মেডিক্যালের অধ্যক্ষ করায় ক্ষুব্ধ সেখানকার চিকিৎসকরা।
এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করে সন্দীপ ঘোষকে ছুটিতে যাওয়ার পরামর্শ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী ১৫ দিনের জন্য ছুটির আবেদন জানিয়েছেন সন্দীপ।