asd
Friday, November 22, 2024

মৃত্যুতেও অমর হয়ে থাকবে তুমি…

– মোঃ মোশারফ হোসেন।

রাষ্ট ভাষা বাংলা, সেই অধিকার আদায়ের দাবির মিছিল থেকে শুরু করে ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের মিছিল, দুই ইতিহাসের দৃশ্যমান সাক্ষ্য বহন করেন যিনি, গায়ে গুলি লেগেও বেঁচে ফিরলেন যিনি। কলমের লিখনিতে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা, সম্মান ও ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন যিনি। তিনি হলেন আমাদের ভাষা আন্দোলনের চিরজীবি গানের লেখক, বরিশালের রত্ন আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী। যার মেধায় মেধাবী হয়ে চির অম্লান হয়ে গেছে ভাষা আন্দলনের ইতিহাস। যিনি লিখেছিলেন, “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভূলিতে পারি”।

যেই দরদ ভরা হৃদয় দিয়ে তিনি গানটি রচনা করেছেন, আজতো তিনিই আমাদের সবার মধ্যখান থেকে হারিয়ে গেলেন চিরদিনের জন্য।
এখন আমাদের মনের দরদ ও তার বিয়োগান্তে গেয়ে ওঠে –
‘যাকে মারতে পারেনি একুশের গুলিতে
ছিলো ৭১রের মিছিলে,
ভাষার গানকে যে করেছে অম্লান বিশ্বের ইতিহাসে
আমরা কি করে ভূলিতে পারি তারে।

হয়তো ভূলে যাবোনা। হয়তো ভুলে যেতে পারবে না কেউ। প্রতিটি প্রাণে যতদিন এই গানটি থাকবে, ততদিন বেঁচে রবে আব্দুল গাফফার চৌধুরী। বাংলাদেশের ইতিহাসের পালা বদলের সাক্ষী গাফফার চৌধুরী। তিনি ছিলেন
একাত্তরের মুজিবনগর সরকারের মুখপত্র সাপ্তাহিক জয়বাংলার নির্বাহী সম্পাদক। ১৯৭৪ সাল থেকে লন্ডনে বসবাস করতেন তিনি। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার পক্ষে লিখনি ছিলো অবিরাম। বিদেশে থেকেও ঢাকার পত্রিকাগুলোতে তিনি যেমন রাজনৈতিক ধারাভাষ্য আর সমকালীন বিষয় নিয়ে একের পর এক নিবন্ধ লিখে গেছেন, তেমনি লিখেছেন কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক, স্মৃতিকথা ও প্রবন্ধ।

গত বৃহস্পতিবার ভোরে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে একটি হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন মাননীয় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাষ্ট্রপতির শোক বার্তায় বলেছেন, কালজয়ী গান ও লেখনীর মাধ্যমে প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে চির অম্লান হয়ে থাকবেন আবদুল গাফফার চৌধুরী। প্রধানমন্ত্রী তার শোকবার্তায় বলেন, আবদুল গাফফার চৌধুরী তার মেধা-কর্ম ও লেখনীতে এই দেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রেখেছেন। তিনি বাঙালির অসাম্প্রদায়িক মননকে ধারণ করে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়কে সমর্থন করে জাতির সামনে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে আমৃত্যু কাজ করে গেছেন। ডায়াবেটিস ও কিডনি রোগে আক্রান্ত গাফ্ফার চৌধুরীকে মাস দুই আগে লন্ডনের নর্থ উইক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি হাসপাতালে থাকা অবস্থাতেই এপ্রিলে মারা যান তার মেয়ে বিনীতা চৌধুরী। গাফফার চৌধুরীর চার মেয়ে এবং এক ছেলের মধ্যে বিনীতা ছিলেন তৃতীয়। বাবার সাথেই তিনি লন্ডনে থাকতেন, এবং তার দেখাশোনা করতেন। লন্ডনেরই হাসপাতালে শেষ নিঃস্বাস ত্যাগ করেন বাবা আব্দুল গাফফার চৌধুরী। সঙ্গীতাঙ্গন এর পক্ষ থেকে গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।

Related Articles

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

18,780FansLike
700SubscribersSubscribe
- Advertisement -

Latest Articles