– সুব্রত মণ্ডল সৃজন।
আমরা তো কত রকম মানুষই দেখি, দেখি কত রকম শিল্পী, দেখি শিল্পীর শিল্প! আজ আমরা জানবো একজন গুণী শিল্পী ও তার জীবন ও বর্তমান জীবন সম্পর্কে।
বাংলাদেশের যশোরে জন্ম নেয়া মরিয়ম বেগম মারিয়া একজন কণ্ঠশিল্পী এবং বিভিন্ন টেলিভিশনের অনুষ্ঠান প্রযোজক। সেইসাথে রয়েছে তার আরও পরিচয়। বর্তমানে তিনি মারিয়া নামেই সঙ্গীতাঙ্গনে পরিচিত। পরিবারে তার মা সুরেলা কন্ঠে গান করতেন, সেই সুবাদে বলা চলে গানের হাতেখড়ি তার মায়ের কাছেই। পরে মা শিশু মারিয়াকে ভর্তি করিয়ে দেন বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, যশোর শাখায়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী থেকে কৃতিত্বের সাথে নজরুল ও উচ্চাঙ্গসংগীতের উপর বিশেষ প্রশিক্ষণ সম্পাদন করেন মারিয়া।
মারিয়ার প্রথম সংগীত শিক্ষক ওস্তাদ লিয়াকত আলী খান। এরপর নিজেকে আরও সমৃদ্ধ করেন ওস্তাদ শাহ মোহাম্মদ মোর্শেদ ও মোশাররফ হোসেনের সান্নিধ্যে।
এরপর তিনি তার প্রতিভার স্বীকৃতি স্বরূপ পেয়েছেন বেশ পুরস্কার। যার মধ্যে জাতীয় শিশু পুরস্কার-১৯৯১, চাঁদেরহাট উৎসব শিশু পুরস্কার (রবীন্দ্রসংগীতের প্রথম স্থান)। ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী থেকে নজরুল সঙ্গীতে জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন মারিয়া। এছাড়াও অ্যালায়েন্স ফ্রান্সিস ডি গ্যালারিতে সঙ্গীত পরিবেশন করে বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি।
মারিয়া বেশ কিছুদিন যাবৎ দেশের বাইরে (আমেরিকা) অবস্থান করছেন সেখানে তিনি কি করছেন ? কেমন আছেন ?
মারিয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন,
নিউ ইয়র্কে বেশ কিছু কনসার্টে আমি সঙ্গীত পরিবেশন করেছি তার মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য-বাংলাদেশ কনভেনশন ২০২১, মেরিল্যান্ডে ‘বাংলাদেশ উৎসব’ ২০২১, ‘ফিরে দেখা বৈশাখ’ ফ্রেন্ডস এন্ড ফ্যামিলির আয়োজনে ওয়াশিংটন ভার্জিনিয়াতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
পরবর্তী কাজের কথা স্বরূপ বলেন,
সামনে আমার বেশ কিছু নতুন গান রিলিজ হবে ২০২২-এ সেগুলোর মধ্যে-
১. আবার এসেছে রাত
গীতিকার: জামাল রেজা
সুর ও সংগীত: রুপতনু শর্মা
২. যখন আমি একা
গীতিকার: সাখাওয়াত হোসেন মারুফ
সুর ও সংগীত: প্রয়াতঃ তরুণ জনপ্রিয় সংগীতপরিচালক বর্ণ চক্রবর্তী…
এই গানটি নিউইয়র্কে মিউজিক ভিডিওর কাজ চলছে। সম্ভাবনা রয়েছে ধ্রুব মিউজিক এর ব্যানারে রিলিজ হওয়ার।
৩. বাজাও বাজাও ছন্দ তোমার
গীতিকার: লুৎফর হাসান
সুর ও সংগীত: শান সায়েখ
এছাড়াও শান সায়েখ ও আমার দশটি ফোক গানের ম্যাশাপ বের হবে। এটি শ্রোতাদের জন্য একটা চমক থাকবে বলে জানান মারিয়া।
সামনে বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠান রয়েছে তার মধ্যে ওয়াশিংটন ডিসিতে রয়েছে বঙ্গবন্ধু শতবর্ষ পূর্তি এবং বাংলাদেশের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠান।
সঙ্গীত পরিবেশনায় থাকবেন তিনি, বাদশা বুলবুল ও রথীন্দ্রনাথ রায়।
বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান রয়েছে ব্রুকলীনে। আগামী ২রা জানুয়ারিতে রয়েছে আমার একক সঙ্গীতানুষ্ঠান। অনুষ্ঠানটি হবে নিউইয়র্ক জ্যাকসন হাইট জইশ সেন্টারে।
শিল্পী মারিয়া যে বাংলা গান দেশ ও দেশের বাইরের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলেছেন তা বলার আর অবকাশ রাখে না।
শিল্পী মারিয়ার একটা বিশেষ কথা যেটা বলতেই হয়, সমাজের সুবিধাবঞ্চিত অবহেলিত অনাথ শিশু কিশোরদের জন্য গান করতে পেরে আমি সত্যিই আনন্দিত। ভবিষ্যতেও এ ধরনের সামাজিক কর্মকান্ডে আমি আমার ব্যক্তিগত উদ্যোগে গান করতে চাই। বর্তমান সময়ের সুস্থ সঙ্গীত ধারাকে লালন করে শিল্পানুরাগী ও সঙ্গীত পিপাসুদের প্রাণের তৃষ্ণা মেটাতে আমার এই কর্মপ্রয়াস। যা পূর্বের ন্যায় ভবিষ্যতেও শ্রোতাদের মন জয় করবে বলে আশা করি।
সঙ্গীতাঙ্গন এর পক্ষ থেকে শিল্পী মারিয়ার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা, ভালো কাটুক তার প্রবাস জীবন, ভালো কাটুক তার সংগীতের ভুবন, বাংলা সংগীতের আরো প্রসার হোক তার হাত ধরে।