Canlı Maç İzle

Hacklink

Hacklink

Hacklink

kayaşehir escort

taksim escort

üsküdar escort

Hacklink

Marsbahis

casino kurulum

Hacklink

Hacklink

Hacklink

slot gacor

Hacklink

Hacklink

Marsbahis

Hacklink

Eros Maç Tv

hacklink

Marsbahis

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

SBOBET88

Marsbahis

Marsbahis

Hacklink

Hacklink

Marsbahis

Hacklink

bbo303

Hacklink

Hacklink

Hacklink Panel

Hacklink

sarıyer escort

extrabet

Grandpashabet | Grandpashabet Rulet Masaları | Grandpashabet Giriş

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

bomonti escort

Hacklink

hacklink

Hacklink

Hacklink

Marsbahis

Hacklink

Hacklink

özbek escort

algototo

Hacklink

Hacklink panel

Hacklink

Hacklink

Marsbahis

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Buy Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

xgo88

Hacklink

Hacklink

slot gacor

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

หวยออนไลน์

Hacklink

Hacklink

Hacklink

nakitbahis

Hacklink

Hacklink satın al

Hacklink

download cracked software,software download,cracked software

Hacklink Panel

Hacklink

jokerbet

betorspin

betorspin

betorspin

betorspin

betorspin

cialis fiyat

Hacklink

polobet

casibom giriş

betwoon

casibom

jojobet

sekabet giriş

vaycasino

alobet

prensbet

betcio giriş

betist

betist

betist

betist

adapazarı escort

sakarya escort

istanbul mobilyacı

betasus

serdivan escort

casibom giriş

trendbet

jojobet

steroid satın al

mavibet

hititbet

hititbet giriş

trendbet

vdcasino

casibom giriş

bahiscasino

bahiscasino giriş

bahiscasino.com

pusulabet

jojobet

sahabet

iptv satın al

pusulabet

pusulabet giriş

polobet

casibom

holiganbet güncel

Jojobet

galabet

serdivan escort

vdcasino

artemisbet

deneme bonusu veren siteler 2025

betasus giriş

bets10

Betpas

Betpas

Betpas giriş

matbet

주소모음 사이트

中文

Just desire to say your article is as astonishing. The clarity in your post is simply spectacular and i can assume you are an expert on this subject. Well with your permission let me to grab your feed to keep up to date with forthcoming post.

infaz izle ölüm

Drunk porn

casino weeds drugs porn casinoper casibom canabis türk ifşa türk porno uyuşturucu infaz ölüm katil darkweb

中文

marsbahis

vdcasino

Hacklink

betcio

livebahis

grandpashabet

betpark

alobet

alobet

meritking

alobet

maksibet giriş

hit botu

request hit botu

mecidiyeköy escort

holiganbet

dnmbns veren siteler

hititbet

hititbet giriş

sweet bonanza oyna

Streameast

grandpashabet

Yakabet

primebahis

primebahis giriş

setrabet

betoffice

sakarya escort bayan

deneme bonusu veren yeni siteler

deneme bonusu veren yeni siteler

casibom giriş

Marsbahis

alfabahis

diyetisyen

selçuksports

sapanca escort bayan

onwin

bahiscasino

Matbet

betcio

vdcasino

betkolik

padişahbet

betsmove giriş

mavibet giriş

galabet giriş

vaycasino giriş

padişahbet giriş

kavbet giriş

onwin

enbet

betoffice

matadorbet

grandpashabet

galabet

betasus

imajbet

matbet

bahislion

artemisbet

holiganbet güncel giriş

nisanbet

sekabet

betebet

betebet

atlasbet

imajbet

vdcasino

galabet giriş

celtabet

betticket

pusulabet

vaycasino

hiltonbet

meritking giriş

meritking giriş

meritking

nitrobahis

meritking

padişahbet

deneme bonusu veren yeni siteler

meritking

meritking

meritking

meritking giriş

marsbahis giriş

marsbahis

sekabet

sekabet giriş

vdcasino giriş

betturkey

casinoroyal

ankara escort

tarafbet

ankara escort

queenbet

Meritking giriş

ankara escort

asyabahis

rokubet

truvabet

dinamobet

maksibet

Restbet

Restbet güncel giriş

Marsbahis

casibom

hititbet

casibom

holiganbet

marsbahis

Matbet

meritking

Sunday, December 7, 2025

সঙ্গীত জগত-এর ৫০বছর পূর্তিতে, সঙ্গীত জগতের মানুষের প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তি – ৫ম পর্ব…

– রহমান ফাহমিদা, সহকারী-সম্পাদক।

সঙ্গীত বিষয়ক পত্রিকা ‘সঙ্গীতাঙ্গন’-এর কাজই হল সঙ্গীত জগতের বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষের সুখ-দুঃখ এবং তাঁদের কাজের মূল্যায়ন করা। কাউকে হেয় প্রতিপন্ন করা ‘সঙ্গীতাঙ্গন’-এর কাজ নয়! প্রবীণদের কাজগুলি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা এবং নবীনদেরকে তাঁদের কাজ নিয়ে উৎসাহিত করাই ‘সঙ্গীতাঙ্গন’-এর উদ্দেশ্য। তাইতো ‘সঙ্গীতাঙ্গন’ শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করে সঙ্গীত জগতের সেই সকল শ্রদ্ধেয় মানুষদের যারা পৃথিবী’র মায়া ছেড়ে চলে গেছেন না ফেরার দেশে। অথচ রেখে গেছেন তাঁদের সুনিপুণ কর্ম। সঙ্গীতজগতের বিশিষ্টজনদের জন্মদিনে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাতেও ‘সঙ্গীতাঙ্গন’ কার্পণ্য করে না। তেমনই কারো শোকদিবসে শোকপ্রকাশেও পিছপা হয় না ‘সঙ্গীতাঙ্গন’।
সর্বদা সঙ্গীত জগতের মানুষদের খোঁজখবর রাখাও ‘সঙ্গীতাঙ্গন’-এর একটি লক্ষ্য। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরবর্তী, সঙ্গীতজগত-এর ৫০বছর পূর্তি উপলক্ষে ‘সঙ্গীতাঙ্গন’ সঙ্গীত জগতের সকল ক্ষেত্রের মানুষদের নিয়ে আয়োজন করেছেন কয়েকটি বিশেষ পর্ব। যেখানে থাকবে সঙ্গীত জগতের এই ৫০ বছরে বিভিন্ন পরিবর্তনের কথা এবং সঙ্গীত জগতের বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষদের প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তির কথা!

সঙ্গীত জগতের অনেকের সাথে কথা বলে অনেক কথা জেনেছি। যেমন-কেউ অনেক জনপ্রিয় কাজ করেও সঙ্গীত জগত থেকে পায়নি তেমন কিছুই। তেমনই আবার কারো প্রাপ্তিটা পেতে দেরি হয়েছে ঠিকই কিন্তু প্রাপ্তির মূল্যায়ন পান নি তেমন। কারো মনে যেমন প্রাপ্তির তৃপ্তি আছে তবে কিছুটা আক্ষেপও আছে মনমত কাজ করতে না পারার এবং এই সঙ্গীত জগতের যুগের সাথে তাল মিলিয়ে পরিবর্তনের কথা নিয়েও অনেকে বলেছেন! ইত্যাদি নানান বিষয় ফুটে উঠেছে তাঁদের কথায়। সঙ্গীত জগতের যে সকল প্রবীণ-নবীন গীতিকার, সুরকার ও সঙ্গীতপরিচালক, যন্ত্রশিল্পী, কণ্ঠশিল্পী এবং ব্যান্ড শিল্পীগণ সঙ্গীতাঙ্গন-এর এই আয়োজনে থেকে সহযোগিতা করছেন সকলের জন্য রইল আন্তরিক শুভকামনা ও একরাশ লাল গোলাপের শুভেচ্ছা।
বিঃদ্রঃ- ধারাবাহিকভাবে চলবে এই বিশেষ আয়োজন এবং এখানে যাদের সাথে আগে পরে কথা হয়েছে সেভাবেই পর্যায়ক্রমে থাকবে সাক্ষাৎকারগুলো।

সঙ্গীতাঙ্গন -এর এই বিশেষ আয়োজনে আজকের পর্বে আছেন সঙ্গীত জগতের চারজন বিশিষ্ট ব্যক্তি। তাঁদের সাথে কথা হয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরবর্তী, সঙ্গীত জগতের এই ৫০বছর পূর্তিতে সঙ্গীত জগতের পরিবর্তন নিয়ে এবং সঙ্গীত জগতে পদার্পণ করার পর থেকে তাঁদের প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তি কি ছিল তা নিয়ে। তাঁদের কথাতেই জেনে নেই সেই সম্পর্কে –
গীতিকার শহীদুল্লাহ ফরায়জী – জীবনমুখী বাংলা গান লিখে সব শ্রেনী পেশার মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন দেশের বরেণ্য গীতিকবি শহিদুল্লাহ ফরায়জী। চার দশকেরও অধিক সময় ধরে নিরন্তন লিখে চলেছেন মর্মস্পর্শী গান। চলচ্চিত্র কিংবা অডিও অ্যালবামের গানে যার জাদুকরী স্পর্শ তাঁকে সঙ্গীতাঙ্গনে দেশজোড়া খ্যাতি এনে দিয়েছে। তিনি যখন সপ্তম শ্রেনীতে পড়তেন তখন থেকেই নিজের জানা বা অজানাতে হোক গান লেখার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। বাংলাদেশ টেলিভিশনে ১৯৯০ সালের ৪ আগস্ট তাঁর লেখা প্রথম গান প্রচার হয়। ‘তুমি বিশ্বাসের পাহাড়ে ঝর্ণা কেটে গেছ চলে’ শিরোনামের এ গানে কণ্ঠ দিয়েছিলেন শিল্পী রফিকুল আলম। একই দিনে তাঁর লেখা আরও একটি গান প্রচার হয়। ‘নিন্দুকেরা যতই আমায় মন্দ বলুক’ শিরোনামের এ গানে কণ্ঠ দিয়েছিলেন শিল্পী শাম্মী আখতার। এ দু’টি গানের সুর দিয়েছিলেন মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ। তাঁর সঙ্গীত জীবনের পথচলা শুরু হয় সুরকার শাহনেওয়াজের হাত ধরেই। ১৯৫৮ সালে ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর উপজেলার বকশিমুল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। হাছন রাজা, লালন ফকির, আব্দুল করিমের মতো অনেকের হাতে প্রাণ পাওয়া দর্শন নির্ভর
আধ্যাত্মিক ও দেহতাত্ত্বিক গানে নতুনত্ব এনেছেন তিনি। প্রয়াত সঙ্গীত শিল্পী বারী সিদ্দিকীর প্রথম অ্যালবামের শিরোনাম ‘দুঃখ রইল মনে’-এর সবগান লিখেছেন প্রখ্যাত গীতিকবি শহীদুল্লাহ ফরায়জী। বারী সিদ্দিকীর গাওয়া মোট গানের ১৬০টির মধ্যে ৮০টির গীতিকার তিনি। এছাড়া এই গীতিকার ও সুরকার-শিল্পীর জুটির জনপ্রিয় হওয়া গানগুলির মধ্যে রয়েছে- ছোট্ট একটা মাটির ঘর, কেউ আসে না নিতে খবর, চন্দ্র সূর্য যত বড়, আমার দুঃখ তার সমান, আমার মন্দ স্বভাব জেনেও তুমি কেন চাইলে আমারে, এক মুঠো মাটির মালিকানা, আমি নাকি মন পড়ানো কয়লার ব্যাপারি। বারী সিদ্দিকী আর শহীদুল্লাহ ফরায়জী ছিলেন অন্তরঙ্গ বন্ধু। বারী সিদ্দিকী ছাড়াও শহীদুল্লাহ ফরায়জীর লেখা গান গেয়েছেন দেশি বিদেশী অনেক শিল্পী যেমন- শিল্পী রুনা লায়লা, সাবিনা ইয়াসমিন, রফিকুল আলম, শাম্মী আখতার, এন্ড্রু কিশোর, মনির খান, বেবী নাজনীন, ডলি শায়ন্তনী, আলম আরা মিনু, আসিফ আকবরসহ অনেকেই। এছাড়া ভারতের শিল্পী অলকা ইয়াগনিক, কুমার সানু, মিতালী মুখার্জী প্রমুখ। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর, সঙ্গীত জগতের ৫০ বছর পূর্তিতে সঙ্গীত জগতের কি ধরণের পরিবর্তন হয়েছে এবং সঙ্গীত জগতে পদার্পণ করার পর থেকে তাঁর প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তির কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন-
আমি মনে করি না সংগীত জগতের কোন মৌলিক পরিবর্তন হয়েছে। এমনকি গত ৫০বছরে গানের মূল বৈশিষ্ট্যেরও কোন পরিবর্তন হয় নি। সংগীতের সুর বৈচিত্র্যের ধারা আগেও ছিল এখনও বিদ্যমান। বাংলা গানে সবসময় নতুন সুরের ধারা অনুসন্ধান করেছে এখনো হচ্ছে। অনেক ধারার সাথে অনেক অনুষঙ্গ যোগ হয়েছে নতুন ব্যঞ্জনা সৃষ্টি হচ্ছে। গান নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা আগেও হয়েছে এখন হচ্ছে ভবিষ্যতেও হবে। বিভিন্ন ফিউশন হচ্ছে বিভিন্ন ঢঙে গাওয়া হচ্ছে এগুলি প্রবাহমান। তবে গান শোনার মাধ্যম পরিবর্তন হয়েছে অনেক। আগে শুধুমাত্র রেডিও-টিভিতে এবং অডিও ক্যাসেটে গান শোনা যেত। এখন অফুরন্ত ডিজিটাল মাধ্যম আছে যেখানে ইচ্ছা করলে যে কারো গান যেকোন মুহুর্তে শোনা যায়। বাংলা গান যেহেতু ব্যাপ্তি এবং বৈচিত্র্যে ভরপুর তাই বাংলা গান নিয়ে কোন পরিসরেই আলোচনার পরিসমাপ্তি ঘটানো সম্ভব নয়। সমাজ দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে, সমাজের মনন ভিন্ন মাত্রায় উন্নীত হচ্ছে, সংস্কৃতিতে নতুন উপাদান যুক্ত হচ্ছে, নতুন নতুন প্রযুক্তি সম্পৃত্ত হচ্ছে, উৎসবের পরিমান বাড়ছে, ফলে শিল্পসাহিত্যের ক্ষেত্রেও ধীরে ধীরে একটা পরিবর্তন সূচীত হচ্ছে। শুধু আমাদের খেয়াল রাখতে হবে শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি জীবনকে উচ্চতর জীবনবোধে প্রভাবিত করছে কিনা, নৈতিক প্রণোদনা দিচ্ছে কিনা, মানুষকে ‘মানুষ’ ও ‘মানবিক’ হওয়ার তাগিদ দিচ্ছে কিনা ? মনুষ্যত্বকে সর্বদাই সঙ্গোপনে লালন করতে হয়। চাওয়া পাওয়া নিয়ে সর্বক্ষণ ব্যতিব্যস্ত থাকলে সংস্কৃতি চর্চা হয় না। মানুষের মন জমিতে ভালোবাসার চাষ করা, মনের অন্ধকার বিতাড়িত করা সহজ কাজ নয়। আর যদি দৃষ্টান্ত স্থাপন করা না গেলো, নৈতিকতার উচ্চতম জায়গা স্পর্শ করা না গেলো তাহলে সংস্কৃতি চর্চা করে জীবনের পানপাত্রে কি সঞ্চয় হলো ? অন্যায় বা অনাচারের কবলে নিজেকে সমপর্ন করে মহৎ কিছু সৃষ্টি করা যায় না। সহজে গীতিকার বা জনপ্রিয় হওয়ার প্রবণতা সৃষ্টিশীল কাজে অনুসরণীয় নয়। আত্মজ্ঞান অর্জন ছাড়া, আত্মশুদ্ধি ছাড়া জীবন সমুদ্রে মন্থন করা ছাড়া বড় মাপের গীতিকার হওয়া সম্ভব নয়। আর জনপ্রিয়তা খুবই ক্ষণস্থায়ী। পৃথিবীর সব জনপ্রিয়তা একটি শস্যদানার ভিতর ভরে রাখা যায়। জনপ্রিয়তার মোহ অনেক বড় অর্জনকেও ধ্বংস করে ফেলে। বাংলা গানের মূল বৈশিষ্ট হচ্ছে বাণী নির্ভর। সুতরাং প্রচণ্ড নিরবতার ভিতর প্রতিটি প্রহর প্রতিটি মাস নিরন্তর প্রস্তুতি নিতে হয় নতুন সঙ্গীত নির্মাণের জন্য। জাগতিক সত্য উদ্ভাবনের মহতি চিন্তায় নিজেদেরকে বিনিয়োগ করতে হয়, প্রেমের কাছে নিজেকে সমর্পণ করতে হয়। তাহলেই সংগীতের দিগন্তে তারকার উজ্জ্বল আলোর বিচ্ছুরণ ঘটবে।

আর প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির মামলা কোনদিন মীমাংসা হবার নয়। সংগীত জগতে পদার্পণ করেছিলাম অনেক আগে। কিন্ত রেডিও-টিভিতে গান শুরু করি ১৯৯০ সালে। আর আমার গীতিকার হওয়া সম্ভব হয়েছে প্রখ্যাত সুরকার মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ ভাইয়ের প্রণোদনায়। আমার প্রথম গানে শাহনেওয়াজ ভাই সুর দিয়ে আমার গানের তরী ভাসিয়ে ছিলেন। শাহনেওয়াজ ভাই সহযোগিতা না করলে চিরকালের জন্য গান থেকে হয়তো আমাকে বিদায় নিতে হতো।
৩০ বছরের সঙ্গীত জগতে অনেক ঘটনার জন্ম হয়েছে আবার বিস্মৃত হয়েছি কিন্ত এই একমাত্র সত্য আমার জীবদ্দশায় কোনোদিন আড়াল হবে না। গীতিকার হওয়ার সুবাদে প্রচুর মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি, প্রশংসা শুনেছি এসব স্মৃতি বিলীন হবার নয়। কিন্ত গান লিখতে গিয়ে জীবনের মাধুর্য অনুসন্ধান করেছি। জীবনের দায় নির্ধারণ করতে চেয়েছি। জীবনের আনন্দ পরখ করতে চেয়েছি এবং স্বর্গরাজ্যের ঠিকানা যোগাড় করতে চেয়েছি কিন্ত সকল ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছি। বিশ্বব্রহ্মাণ্ড অসীম অনন্ত কিন্ত আমরা সে রহস্য বিন্দুমাত্র উপলব্ধি করতে পারি না। তারপর আমরা অহংকারবশত অন্যকে তাচ্ছিল্য করে ফেলছি, কারো প্রতি অপরিসীম অবজ্ঞা প্রদর্শন করছি, কারো সাথে ভয়ঙ্কর আচরণ করে ফেলেছি, অন্ধকারচ্ছন্ন স্বার্থপরতায় মুগ্ধ হয়ে পড়েছি। জীবন যে ঐশ্বরিক দান তা অবহেলায় অপচয় করে ফেলেছি। মাতৃগর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হলাম আর মৃত্তিকার গর্ভে ফিরে যাব শুধু এইটুকু তো জীবনের
পরিসীমা নয়। চিরন্তন সত্যের সাধনায় নিজেকে নিয়োজিত করতে হয়। জীবনে আলোকজ্জ্বল পথ উদঘাটন করতে হয়। নিজেকেই সে পথের উদ্বোধন করতে হয়। অনেক পথ হেঁটে এবং চোখের জল ঝরিয়ে জীবনের কিছু অর্জন করতে হয়। আমি আমার জীবননীতি কিভাবে নির্ধারণ করেছি, জীবনের ক্ষুদ্রতর কোন কিছু অর্জন করতে পেরেছি কিনা, ঐশ্বরিক মহিমা আমাকে ধরা দিয়েছে কি না তাও আমি এই বিবরণে অন্তর্ভুক্ত করতে পারছি না। আমার ভিতরে যে ঐশ্বর্যের অভাব, ভিতরে যে প্রতিহিংসাপরায়ন,কলুষিত এইজন্য আমি কোন লজ্জা অনুভব করছি না। জীবনকে যে মহিমান্বিত করতে হয়, মহৎপ্রাণ এর আলোয় আলোকিত করতে হয় তা আমার আয়ত্তের বাইরে।
আমার ভিতর কবে পরম সত্যের আগমন ঘটবে তা জানা নেই। লজ্জার মহত্বে বিনয়ী হওয়ার মত আমার কোন সম্পদ নেই। কিন্ত আমি সব সময় চেয়েছি জীবনকে পরখ করতে। আমি চেয়েছিলাম জীবনের পরিব্রাজক হতে, তীর্থযাত্রী হতে। আত্মিক চেতনায় আমি আকুল থাকতে চেয়েছি, মহান স্রষ্টার করুনার বশবর্তী হয়ে কীর্তিমান হতে চেয়েছি। সূর্য বা বজ্রপাতের আলোয় নয়-বিবেকের আলোয় দেখতে চেয়েছি জগতকে। সর্বভূতে আমার প্রেম বিতরণ করতে চেয়েছি। আমি মানুষকে অপরিসীম ভালোবাসতে পারি। এই ভালোবাসতে পারাটাই পৃথিবীর সেরা পুরস্কার। এটা সোনার সিংহাসনের চেয়েও দামি। এটাই বড় দান। আমার এমন কোন গান নেই, আমার এমন কোন কীর্তি নেই যা দীর্ঘদিন সমাজে নিদর্শন হয়ে থাকবে। জগতের জন্য আমার আত্মবলিদান এর সুযোগ নেই। জগতের বহু প্রলোভনে আমি সে সুযোগ হেলায় হারিয়েছি। আমার সংকীর্ণতা আমার অজ্ঞতা থেকে নিজেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুযোগও আমার নেই। জীবনের এই মর্মান্তিক পরিস্থিতির জন্য আমার অনেক পরিতাপ হয়। অনুতাপের অসহনীয় যন্ত্রণাও অহরহ মোকাবেলা করতে হয়। আমি প্রস্তরখণ্ডকে অপ্রয়োজন মনে করে ছুঁড়ে ফেলেছি কিন্ত প্রস্তরখণ্ড যে ভিত্তিপ্রস্তর হতে পারে সেটা ভেবে দেখি নি। জীবন এবং জীবন ভাবনার সাথে অতলস্পর্শী গহ্বরের ব্যবধান। প্রেমের বেদীতে জীবন উৎসর্গ করার সুযোগও হাতছাড়া হয়েছে। যেখানে জীবনের সামগ্রিকতা বুঝতে পারিনি, জীবনের মৌলিক সত্য আবিষ্কার করতে পারিনি সেখানে প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির হিসাব করা খুবই মর্মান্তিক। সব মানুষের মৃত্যুই সন্নিকটে, আমারও। নির্বাপিত হবে জীবন প্রদীপ।চির অতৃপ্ত পার্থিব জীবনের অবসান ঘটবে। আমার সকল স্মৃতি সকল কীর্তির বিলুপ্ত ঘটবে। আমীন।

গীতিকার গোলাম মোরশেদ – গীতিকার গোলাম মোরশেদ সঙ্গীত জগতে পদার্পণ করেছেন প্রখ্যাত সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক ও গায়ক লাকী আখন্দের হাত ধরে ১৯৯৮ সালে। তাঁর লেখা এবং লাকী আখন্দ এর সুর করা প্রথম গানের কথা ছিল ‘ভালোবেসে ভুল ছিল যত, তোমাকে ততোখানি ভুলে যাওয়া হলোনা আমার’। গানটির শিল্পী ছিলেন সামিনা চৌধুরী। এই গানটি করার পর থেকে শ্রদ্ধেয় লাকী আখন্দের অনুরোধে তিনি আর গান লেখা থেকে সরে দাঁড়ান নি। তারপর সাউন্ডটেক ব্যানার থেকে বের হয় ‘বিতৃষ্ণা জীবন আমার’ নামে একটি অ্যালবাম। এই ‘বিতৃষ্ণা জীবন আমার’ অ্যালবামটি ছিল ব্যান্ড ও আধুনিক গানের মিশ্র অ্যালবাম। এই অ্যালবামের সবগুলো গান ছিল তাঁর লেখা এবং লাকী আখন্দের সুর করা। এই অ্যালবামে জনপ্রিয় গায়ক জেমস, আইয়ুব বাচ্চু, হাসান, কুমার বিশ্বজিৎ, তপন চৌধুরী ও সামিনা চৌধুরী কণ্ঠ দেন। তাঁর লেখা বহু গানের সুর করেছেন লাকী আখন্দ। বর্তমানে তিনি বিষয় ভিত্তিক গানই বেশি লিখছেন। সঙ্গীত জগতের ৫০ বছর পূর্তিতে সঙ্গীত জগতের পরিবর্তন ও তাঁর প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তির কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন –
প্রাপ্তির বিষয়টা হচ্ছে আমার আবেগ আর অনুভূতি থেকে আমি লিখে যাচ্ছি, সেটাই আমার ভালোলাগা আর সেটাই আমার প্রাপ্তি। আর যেটা হচ্ছে আমি যা ফিল করি! আমার লেখার মধ্যে পরিবর্তন আসছে। চিন্তা ভাবনারও পরিবর্তন আসছে। আমি এখনকার জেনারেশনের গান শুনি। ওদের কাজগুলো দেখি। সেখানে আমার গানের আবেগ বা ছোঁয়া পাই, সেটা আমার এক ধরনের নতুন প্রাপ্তি। আর কি! আমার দুর্বলতা হচ্ছে ক্লাসিকেল। ক্লাসিকেলের ওপর কাজ করছি তো! আর যদি বলেন প্রাপ্তি মানেই পুরস্কার! প্রথমত সেটা নিয়ে আমি ভাবি না। দ্বিতীয় হচ্ছে যে, সেই পুরস্কারের দেখা আমি পাই নি। বাট, আমি যেটা সবচেয়ে বড় পুরস্কার ভাবি এবং আমি সবসময়ই ভাবি!
তা হলো, আরও যদি ভালো গান লিখতে পারি। আরও যদি মানুষের কাছে যেতে পারি। আরও যদি মানুষের কথা বলতে পারি। সেটাই আমার পুরস্কার, সেটাই আমার প্রাপ্তি। আমি একজন পজিটিভ মানুষ। চলুক লেখা, আমি লিখছি যতখানি ঠিক ততখানি। এখন যে অবস্থা! প্রচুর সময় দেয়া দরকার। সেই সময় আমি পাইনা যেহেতু আমি ব্যবসা করি। তাই অফিসের কাজেই ব্যস্ত থাকতে হয় বেশী। তাই যখনই সময় পাই তখনই কিছু না কিছু লিখে রাখি। হ্যাঁ, যুগ পরিবর্তনশীল। পঞ্চাশ বছর আগে যারা লিখেছেন বা ত্রিশ বছর আগে যারা লিখেছেন তাঁদের মধ্যে আংশিক পরিবর্তন হয়েছে, এটাই স্বাভাবিক। একেক সময় একেক জন আসবেন। তখন এসেছিলেন- লাকী ভাই, আলাউদ্দিন আলী, কাওসার আহমেদ, রফিকুজ্জামান সাহেবসহ অনেকেই। আমি বিশ্বাস করি ভাল গান তখন ছিল, এখনও ভাল গান আছে। তবে এত বেশী গান হচ্ছে যে, কোনটা ভাল গান কোনটা ভাল গান না বা গানের মানের পর্যায়ে
পড়ে না! এটা বিচার করার সেই সময়টা অনেকেরই হয় না। তারপরেও ভাল গান হচ্ছে। ভাল কম্পোজিশন হচ্ছে। অনেক ইন্সট্রুমেন্ট যোগ হয়েছে। সেটাকে আমি পজিটিভ ওয়েতে দেখব। তবে আমার একটি আক্ষেপ বলতে পারি যেমন, বাংলা গান যা ধারণ করে সেটা হল ইন্ডিয়ান ক্লাসিক। সেই ক্লাসিকের জায়গাটায় আমরা অনেকখানি দুর্বল। আমার সবসময় মনে হয় এই জায়গাটা কি করে ঠিক করবো ? কারণ আমাদের দেশে তেমন ওস্তাদ নেই।
কর্তৃপক্ষকে এদিকে দৃষ্টি দেয়া উচিত। তুলনা করছি না! তবে বলবো, ওপার বাংলার ক্লাসিকের জায়গাটা অনেক পক্ত। আমরা যদি সুযোগ পাই আমরাও তাঁদের চেয়ে ভালো করবো নিশ্চয়ই। আমাদের সুযোগ পেতে হবে। সেই জায়গাটা যদি একটু ভালো হত! এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত। আমি মনে করি প্রত্যেক লেখকের আলাদা স্বকীয়তা আছে। সবাই সব গান লিখতে পারে না। আমিও হয়তো লিখতে পারিনি অনেক গান। প্রতিটি গীতিকারের মধ্যে বিভিন্ন কবিদের লেখার প্রভাব থাকে। যেমন আমার কিছু ভালো লাগা আছে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নজরুল ইসলাম, জসিম উদ্দিন, জীবননান্দ দাশের প্রতি। তাঁদের লেখা আমার ভালো লাগে। আমি তাঁদের অনুসরণ করি তা বলবো না। আমার ৮০/৯০ দশকের অনেকের গান যেমন ভালো লাগে তেমনই এখনকার অনেকেরই গান ভালো লাগে। কারো নাম আলাদা করে বলতে চাচ্ছি না। আমি বলবো, আগে যেমন ভালো গান হয়েছে তেমনই এখনও যুগের পরিবর্তনশীল ধারায় নতুন নতুন অনেক ভাল গান হচ্ছে। এখনো অনেক ভাল ভাল শিল্পী, গীতিকার, সুরকারও আসছে। এখন সারা পৃথিবীতে ইয়াংরাই জয় করে আছে, বলতে পারেন।

গীতিকার কবির বকুল – কবির বকুল বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় গীতিকার। তিনি ১৯৬৬সালের ২১শে নভেম্বর চাঁদপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮৬ সাল থেকে কবিতা, গান লেখালেখির সাথে জড়িত। ১৯৮৮ সালে তিনি প্রথম ১৩টি গান লিখে শিল্পী তপন চৌধুরীকে দেন। সেখান থেকে দু’টি গান দুটি অ্যালবামে আসে। প্রথম গান ছিল ‘কাল সারা রাত তোমারই কাকন যেন মনে মনে রিনিঝিনি বেজেছে’ এই গানটির গায়ক ছিলেন আইয়ুব বাচ্চু। দ্বিতীয় গানটি ছিল ‘পথে যেতে যেতে খুঁজেছি তোমায়’ এই গানটির গায়ক ছিলেন শিল্পী নাসিম আলী খান। তিনি ১৯৯৪ সালে ‘অগ্নি সন্তান’ চলচ্চিত্রে প্রথম গান লিখেন এবং এ গানের জন্য বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতির পুরস্কার, শ্রেষ্ঠ গীতিকারের মনোনয়ন পেয়েছিলেন। এরপর তিনি ৮ শতাধিক ছায়াছবির গান লিখেছেন এবং সব মিলিয়ে প্রায় পাঁচ হাজাররের বেশি গান লিখেছেন তিনি। চলচ্চিত্র আর বিভিন্ন অ্যালবাম মিলিয়ে তাঁর লেখা অসংখ্য জনপ্রিয় গান রয়েছে। এপার বাংলা এবং ওপার বাংলার বহু শিল্পী তাঁর গান গেয়েছেন এবং দেশের বড় বড় সুরকারদের সাথে তিনি কাজ করেছেন। গীতিকার কবির বকুলের ঝুলিতে পুরস্কারের সংখ্যাটাও কম নয়। যেমন- জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০০৮, ২০০৯, ২০১০, ২০১৩ এবং ২০১৮। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস) পুরস্কার, ১৯৯৮, ২০০৬, ২০১৩। বাংলাদেশ প্রযোজক সমিতি পুরস্কার, ২০০১। বিনোদন বিচিত্রা পুরস্কার ২০০৯। সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক এ্যাওয়ার্ড ২০০৪। ঢালিউড এ্যাওয়ার্ড, নিউইয়র্ক ২০১৫। চ্যানেল এস (যুক্তরাজ্য) এ্যাওয়ার্ড ২০১০। রোটারি ক্লাব, চাঁদপুর আজীবন সম্মাননা ২০১৪। টেলিভিশন রিপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ট্রাব) পুরস্কার, সেরা গীতিকার ২০১৮। গীতিকার কবির বকুল গান লেখার পাশাপাশি সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত আছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরবর্তী সঙ্গীত জগতের ৫০ বছর পূর্তিতে সঙ্গীত জগতের পরিবর্তন ও তাঁর প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন –
প্রথমত আমরা ত্রিশ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে এই স্বাধীনতা অর্জন করেছি। এই স্বাধীনতার জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে আমাদের। এই স্বাধীনতা অর্জনের ক্ষেত্রে কিন্ত সঙ্গীত-এর একটি বিরাট ভূমিকা ছিল। কারণ সকল মানুষকে জাগ্রত করার জন্য সঙ্গীত একটি বিরাট ভূমিকা পালন করেছে, বিশেষ করে শিল্পীরা। আপনি ‘৫২ থেকে যদি দেখেন, দেখবেন প্রত্যেকটা আন্দোলন এবং বিদ্রোহে কিন্ত গণসংগীত মানুষকে উজ্জীবিত করেছে বিভিন্নভাবে। আমরা তা ‘৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে দেখেছি, ‘৭০-এ দেখেছি। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের এবং আমাদেরকে অনেক গান উজ্জীবিত করেছে। স্বাধীনবাংলা বেতার কেন্দ্রের কথা যদি বলি! তখন মুক্তিযুদ্ধে সঙ্গীতের একটা বিরাট ভূমিকা ছিল। সেই ধারাবাহিকতায় আমরা আজ ৫০ বছরে এসে পা রেখেছি। বিবর্তনে তো অনেক কিছুর পরিবর্তন হয়। প্রত্যেকটা ক্রান্তিকালে কিন্ত সঙ্গীত মানুষকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। সেটা বন্যা হক, বিপর্যয় হোক। দেখবেন যে, গানই মানুষকে অনুপ্রেরণা দিয়েছে এবং মানুষকে সাহস যুগিয়েছে। যেমন আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের মানসিকভাবে প্রস্তুত হওয়ার সাহস যুগিয়েছে এই গান। সেটা একটা ব্যাপার! আরেকটা হলো যেটা বলবো যে, আমাদের ‘৬০দশকের গানের যে একটা ধারা ছিল সময়ের পরিবর্তনে এক সময় চেঞ্জ হতে হতে এখন এমন একটা পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে তা হল, এখন তো নতুন প্রজন্মের যুগ। তাই এখনকার ছেলেমেয়েরা যে ধরণের গান পছন্দ করে সেই ধরণের গানে চলে গেছে। আগের সেই মেলোডিয়াস হচ্ছে তবে ধারাটা অন্যরকম। আগের গানগুলো ছিল গল্প নির্ভর তাই এখনও চিরসবুজ সে গানগুলো। এই গানগুলোর ধারা থেকে এখন আমরা একটু অন্যদিকে চলে গেছি। এখনকার গানগুলোর সম্পর্কে অনেকেই বলেন বা অভিযোগ করেন যে, এখনকার গান এক কান দিয়ে ঢুকে অন্য কান দিয়ে বেড়িয়ে যায়, যা হৃদয়ে এসে জায়গা করে নিতে পারছে না। আসলে যেটা হয়েছে যে, এখন একটা অস্থির সময় যাচ্ছে। হাতের কাছে অনেক সুবিধা। রিমোটের সাহায্যে সারাবিশ্ব মানুষ দেখছে। মানুষ এক জায়গায় স্থির থাকছে না। আগে তো একটা মাধ্যমেই আমরা গান শুনতাম। সেজন্য ঐ গানগুলো এখনও আমাদের হৃদয়ের মাঝে দাগ কেটে আছে। একসময় আমরা দেখলাম, অ্যালবামের যুগ আসলো। আমরা অডিও ক্যাসেট কিনে ১২টি গান শুনতাম। সেটা ছিল ক্যাসেটের যুগ। তারপর সিডি আসলো, সিডিতেও আমরা ১২টি গান শুনতাম। ১২টি গানের মধ্যে হয়তো দু’তিনটা গান ভাল হয়েছে বা একটা গানই সুপারহিট হয়ে গেছে তার ফলে শিল্পীও জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এখন সেই সিডির যুগও শেষ হয়ে গেছে। এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। এখন একজন শিল্পীকে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে নিজেকে প্রমাণ করতে হয় যে, সে ভাল কিছু গান করছেন। সেই জন্য ভাল কিছু করছে তা প্রমাণ করার জন্য তাকে এখন নানান রকম বা নতুন কিছু করতে হয়। তাই আগে যে শোনার ব্যাপারটা ছিল, সেই শোনার ব্যাপারটা নেই! দেখার ব্যাপার হয়ে গেছে। তাই গানটাকে মিউজিক ভিডিওর আকারে বা গানচিত্রের আকারে তৈরি করে তারপর মানুষের চোখের দৃষ্টিতে আগে লাগিয়ে তারপরে সেই সুরটা যদি ভাল হয়, সেই সুরটাকে হৃদয়ে বসানো যায় কিনা! সেই রকম একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে কিন্ত এখন যাচ্ছে। যার জন্য এখনও অনেক ভাল শিল্পী আছেন কিন্ত যেহেতু জায়গাটা সংকুচিত হয়ে গেছে, এখন আগের মত সেই অ্যালবাম সিডিও নেই যে, ১০টা গান শুনে একটা গান হিট হয়ে গেল! যার জন্য এখনকার শিল্পীদের বা নতুন শিল্পীদের বেরিয়ে আসা একটা কঠিন ব্যাপার হয়ে গেছে। আমি যে জন্য নতুন শিল্পীদের, সুরকারদের এবং গীতিকারদের ব্যাপারে খুবই চিন্তিত!
তারা কিভাবে তাদের প্রতিভাকে বিকশিত করবেন এবং মানুষকে বোঝাবেন যে, তারা ভাল লিখছেন, ভাল সুর করছেন ও ভাল গাইছেন। তাদের জন্য এটা প্রমাণ করার ব্যাপারটা খুবই কঠিন। এই জায়গায় আমাদের সকলের বড় একটা ভূমিকা থাকা উচিত। আমরা যদি ভাল গানগুলো বেশি বেশি শুনি তাহলে কোন না কোনোভাবে ভাল গান উঠে আসবে। আমি সবসময়ই আশাবাদীর দলে, নৈরাশ্যবাদীর দলে নই। আমি মনে করি সময়টা ঘুরে ফিরে কিন্ত সেই পুরনো জায়গায় ফিরে যায়। দেখবেন, এখন যেমন একটা অস্থির সময় চলছে এই সময়টা পেরিয়ে আমরা আবার ভাল সময় ফিরে আসব। সারা বিশ্বেই এই অস্থিরতা চলছে। আগে যেমন আমরা ভাল ভাল ইংরেজি গান, হিন্দি গান পেতাম এবং বাংলা গান তো ছিলই, দেখা গেছে সময়ের কারণে এখন আর সবজায়গায় এই ব্যাপারটা নেই। আগের মত আমরা তেমন একটা গান শুনছি না বরং একটি অস্থির সময় কাটাচ্ছি। তবে এটা কেটে যাবে, সকালে যেমন সূর্য ওঠে আর সন্ধ্যাবেলায় অস্ত যায়, গানও এমনই ব্যাপার। এখন হয়তো সঙ্গীত জগতে অস্তকালীন সময় যাচ্ছে, আবার সকাল হবে, সূর্য উদয় হবে। আমি সেই প্রত্যাশায় আছি এবং বিশ্বাস করি এরকম যে, আবার
আমাদের সেই বাংলা গানের স্বর্ণযুগ ফিরে আসবে।
প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির কথা বলতে গেলে বলতে হয়, আমি ১৯৮৮ সাল থেকে গান লিখছি। প্রায় তেত্রিশ বছর হয়ে গেল! আসলে আমার যা প্রত্যাশা ছিল তারচেয়ে আমার প্রাপ্তি অনেক বেশি। যার জন্য আমার কোনো অপূর্ণতা নেই। আমি মনে করি আমি সবদিক দিয়েই পূর্ণ মানে আমার কোনো অপূর্ণতা নেই। এমনকি আমার কোনো হতাশাও নেই। আমি চাওয়ার চেয়ে অনেক বেশি পেয়েছি। তাই আমি সবার কাছে দোয়া চাই যে, আমি যেন আরও ভাল কাজ করে যেতে পারি। আরেকটা কথা আপনাকে বলি তা হল, আমি খুব সৌভাগ্যবান একজন গীতিকবি বাংলাদেশের। সৌভাগ্যবান নিজেকে বলি এভাবে যে, আমি সত্য সাহা, সুবল দাশ, আলম খান, আলাউদ্দিন আলী, শেখ সাদী খান, আলী হোসেন ও আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল এর মত বড় বড় সুরকারদের সঙ্গে কাজ করার একমাত্র সৌভাগ্য আমার হয়েছে। আমার সমসাময়িক কারো এঁদের সকলের সাথে কাজ করার সৌভাগ্য হয় নি। এটা একটা আরেকটা হল, আমার সৌভাগ্য হয়েছে আশা ভোঁসলে, রাহাত ফতেহ আলী খান, বাপ্পি লাহিড়ী, অমিত কুমার, জো জো, সুনিদী চৌহান, সান, রাঘব চট্টোপাধ্যায়, উশা উত্থাপ এর মত বিখ্যাত শিল্পীদের গান করার। বিশেষ করে
আশা ভোঁসলে ও রাহাত ফতেহ আলী খান এর গানের কথা উল্লেখ না করলেই নয়! রাহাত ফতেহ আলী খান প্রথম যে বাংলা গান করেছেন, সেটা আমার লেখা গান এবং আশা ভোঁসলে ৮৭ বছর বয়সে এসে যে বাংলা গান গেয়েছেন, সেই গান আমার লেখা এবং আমাদের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী রুনা লায়লার সুর করা গান। ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর এই গানটির রেকর্ডিং হয় বোম্বেতে। রেকর্ডিং এর সময় আমিও বোম্বেতে ছিলাম। এটা আমার জন্য বিশাল এক প্রাপ্তি।

গীতিকার জিয়াউদ্দিন আলম – সম্প্রতিকালের জনপ্রিয় গীতিকার জিয়াউদ্দিন আলম মিডিয়াতে যাত্রা শুরু করেছিলেন ফটো সাংবাদিক হিসেবে। ২০১৪ সালে প্রথম গীতিকার হিসেবে সঙ্গীত জগতে পদার্পণ করেন তিনি। সময়ের সাথে সাথে তিনি তার প্রতিভার বিকাশ ঘটিয়েছেন বিভিন্ন ক্ষেত্রে। বর্তমানে আজ তিনি সফল নাট্য নির্মাতা, গীতিকার, সুরকার ও চিত্র সাংবাদিক। জিয়াউদ্দিন আলম ২০১৪ সাল থেকে নিয়মিত গান লিখে চলেছেন। তার অডিও অ্যালবাম আছে এ পর্যন্ত- তিনটি একক অ্যালবাম ‘কিছু ভালোবাসা’, ‘কিছু প্রত্যাশা’, ও ‘কিছু স্বপ্ন’। আছে দশটি মিক্স অ্যালবাম। প্রায় ৩০০টির ওপরে গান লিখেছেন এবং ১৫০টির বেশি গানে সুর করেছেন তিনি। এই গানগুলির মধ্যে তিনটি দেশের গান এবং টি-টুয়েন্টি ও টি-টুয়েন্টি ওয়ার্ল্ড কাপ এর গানও রয়েছে। এছাড়া তিনি অনেকগুলো চলচ্চিত্রের গান লিখেছেন। তিনি নতুনদের নিয়ে কাজ করতে ভালবাসেন। নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের মধ্যে তাঁর গানে কণ্ঠ দিয়েছেন যারা তাঁরা হলেন- প্রিতম হাসানের গান নিয়ে প্রথম অভিষেক হয় জিয়াউদ্দিন আলমের প্রথম গানের অ্যালবামে। বিয়ের পর সালমা আবার কামব্যাক করে তাঁর হাত ধরেই। অন্যদের মধ্যে প্রত্যয়, নির্ঝর, কর্নিয়া, সুমি, ইবরার টিপু, এফএ সুমন, শহীদ, ঐশী, মাহতিম শাকিব, হ্যাপি আফরিন, শাওন গানওয়ালা, উপমা প্রমুখ। তাছাড়া তাঁর একটি গানের ভিডিও হয়েছে ২৬জন সেলিব্রেটি শিল্পীদের নিয়ে। বাংলাদেশের সঙ্গীত জগতের ৫০বছর পূর্তিতে গীতিকার জিয়াউদ্দিন আলমের সঙ্গীত জগতে চলার পথ যদিও ততটা দীর্ঘ নয়! তবুও জেনে নেই তাঁর কাছ থেকে সঙ্গীত জগতে তাঁর প্রাপ্তি অপ্রাপ্তি কথা এবং বর্তমান সময়ে সঙ্গীত জগতের পরিস্থিতি সম্পর্কে-
গীতিকার হিসেবে আমার অভিষেক হয় ২০১৪ সালে। আমার প্রথম অ্যালবাম ছিল ‘কিছু ভালোবাসা’। ১৫টি গান একই অ্যালবামে ছিল। সেখানে অনেক শিল্পীর ভালোবাসাই পেয়েছি। সেই অ্যালবামটি প্রকাশ হয়েছে লেজার ভিশন থেকে। এরপর থেকে আমি একের পর এক অ্যালবাম করেছি। এরপর থেকে আর থেমে থাকিনি। সেই থেকে কিছু স্বপ্ন, কিছু প্রত্যাশা পুরণ হতে হতে অনেকগুলো গান হয়ে গেছে। প্রায় ৩০০ ওপরে আমার লেখা গান এবং ১০০ ওপরে আমার সুর করা গান আছে। সঙ্গীত জগতে প্রথমে গীতিকার হিসেবে পরবর্তীতে সুরকার হিসেবে আবির্ভূত হই। চলচ্চিত্রেও অনেক গান করেছি। তাই বলতে পারেন সঙ্গীত জগতে আমার অনেক অনেক প্রাপ্তি। জীবনে আমি কখনোই ভাবিনি, আমি গান লিখব। ঐ যে বলে না! যেদিকে হাওয়া সেদিকে ছাতা। সেইই রকমই একটা ঘটনা ঘটেছে আমার জীবনে। আমি প্রচুর গান শুনতাম। আমি ঘুমাতাম গান শুনে। গান না শুনলে আমার ঘুম আসতো না। আমি ফ্যান ছিলাম আসিফ আকবর, রবি চৌধুরী এবং এসডি রুবেলের। আমি এক সময় অডিও আর্টে আড্ডা দিতাম। আমার আরেকটি ব্যাককগ্রাউন্ড আছে, তা হয়তো আপনি জানেন না! আমি ছিলাম ফোটো সাংবাদিক।
এখন একটি অনলাইন পত্রিকায় কাজ করি। আমার শুরুটা ছিল বিনোদন বিচিত্রা থেকে। তারপর ইত্তেফাক এবং আমাদের সময় পত্রিকায় কাজ করেছি। এইভাবে ফোটো সাংবাদিকতা করতে করতেই পুরো ইন্ডাস্ট্রি আমাকে চিনে ফেলে। সঙ্গীত জগতে আমার অপ্রাপ্তির কিছু নাই। আমি অনেক পেয়েছি যা আমি চিন্তাও করি নাই। আমি যখন গান লেখা শুরু করলাম এবং এরেঞ্জ করলাম, তখন ভাবলাম এভাবে হতেও পারে আবার নাও হতে পারে। আমাকে তো অন্য কেউ ডাকবে না! তাই নিজে নিজেই সুর করলাম। সুর করার পর দেখা গেল, গানটি নিজের হয়ে গেল! আমি কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক সুরকার না। সা রে গা মা শিখে বা মিউজিক শিখে আসি নাই। গান শুনে শুনে এসেছি। আমি বলবো প্রত্যেকটি মানুষই শিল্পী। তার নিজের অজান্তেই প্রচুর গান গায় এবং নিজে নিজেই সুরের সৃষ্টি করে। একজন গীতিকার যে কোনো সুরের ওপর গান লিখে। আমি বলবো সাংবাদিকতার কারণেই মিডিয়া জগতে চলে আসছি। আমার ক্যামেরা হল আমার বড় মাধ্যম সবার সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ করে দেয়ার ক্ষেত্রে। আমার ক্যামেরার কারণে শত্রু হলেও আমার প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি হয়েছে। ক্যামেরা হল আমার বড় প্রাপ্তি। আমার সামনে পরিকল্পনা হল, আমি ভাল ভাল গান লিখে যেতে চাই, সুর করতে চাই। আর যারা ভাল গান করেন তাঁদের গান করতে চাই। আমি নতুন্দের দিয়ে গান গাওয়াতে চাই। আমি বড় বা সিনিয়র শিল্পীদের দিয়ে গান গাওয়ালে আমি বড় হয়ে গেলাম! সেটা আমি ভাবি না। যে বড় শিল্পী, সে গাইলে আমার গানগুলো সম্মুখে আসবে না। এক কোনায় পড়ে থাকবে কারণ তাঁর অসংখ্য হিট গান আছে। আমি চাই নতুনদেরর গান দিতে কারণ একটা গান হলেও দশ বছর পর শ্রোতাদের মুখে থাকবে এবং জনপ্রিয়তা পাবে। এখন হয়তো ওভাবে হচ্ছে না! তবে দশ বিশ বছর পর ঐ শিল্পীর মৌলিক গান থাকবে, যে গান দিয়ে শিল্পী পরিচিতি পাবে আর আমার গানটিও হিট হবে। আপনি দেখবেন, কিছু গান আছে অনেক বছর পর জনপ্রিয়তা পেয়েছে! যেমন ধরেন ফোক গান। ফোক গান এখন হিট কিন্তু যখন গানগুলি বের হয়েছিল পাটুয়াটুলি থেকে তখন জনপ্রিয় অনেক শিল্পী বলতো ঐগুলো তো পাটুয়াটুলির গান। আর এখন ঐ গানগুলিরই রিমেক করতেছে অনেকে। শাহ আব্দুল করিমের নাম একটা সময় আমরা শুনি নাই। হাবিব যখন রিমেক করলো! তখন থেকে শাহ আব্দুল করিম একজন বিশাল মানুষ হয়ে গেল। ঐ জায়গাগুলোতে যাওয়ার জন্য একটা সময় লাগে। তাই এখনকার নতুন শিল্পীদের সময় দিতে হবে। একজন শিল্পী গান করলো, একটা সময় হিট হল, আরেকটা সময় হলো না! অথচ একজন জনপ্রিয় শিল্পী একটা গান খারাপ গাইলেও লাইমলাইটে চলে আসে। সঙ্গীত জগতে আমার ক্যারিয়ারের পাঁচ/সাত বছরে আরেকটি বড় প্রাপ্তি, গীতিকবি সংঘ-এর সদস্য হওয়া। তাছাড়া আমার তো অসংখ্য গান আছে এই পর্যন্ত! সেই কারণে আল্লাহ’র রহমতে আমি খুব খুশি। আমি আরও ভাল ভাল গান লিখতে চাই। এখন গান লিখতে গেলে নিজের জায়গা থেকে মনে হয়, আগের গানগুলি কোনো গানই না। অতৃপ্তিটা থেকেই যায়। এই করোনাকালীন সময় ইন্ডাস্ট্রিতে ধ্বস নেমেছে। বিভিন্ন কোম্পানিগুলো গানের
চেয়ে নাটক বেশী করছে। তারপরেও টুকটাক গান করতেছি, নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য গান করতেছি। এখন গানের পরিস্থিতি খুবই বাজে অবস্থায় আছে। কোনো আয় রোজগার নেই। সাত আট মাস ধরে এক কোম্পানিতে গান আটকিয়ে আছে। ইউটিউবেও তেমন কোনো ভিউ হচ্ছে না। এদিকে আবার গত মাস থেকে ইউটিউবে ট্যাক্স কেটে নিচ্ছে। অর্থাৎ আমাদের গানের অবস্থা খুবই করুণ এবং নাজুক অবস্থাতে আছে। জানি না ভবিষ্যতে কি হবে!

Related Articles

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

18,780FansLike
700SubscribersSubscribe
- Advertisement -

Latest Articles

betwinner melbet megapari megapari giriş betandyou giriş melbet giriş melbet fenomenbet 1win giriş 1win 1win