যতদূর যেখানেই মানুষ থাকেন না কেন মাতৃভূমির শিকড়ের টান থাকবেই হৃদয়ে।
আমাদের এই চিরসবুজ বাংলার রূপ, বাংলা মায়ের মুখ কি কখনো ভোলা যায় ?
বাংলাদেশের সংস্কৃতি এবং বাংলার উৎসব এর আনন্দের দিনগুলি আমাদের মনে করিয়ে দেয় আমি একজন বাংলাদেশী, কত সুন্দর আমাদের দেশ।
তাই প্রবাস জীবনেও তাঁরা ভুলে যায়নি বাংলা মাসের প্রথম দিন, পহেলা বৈশাখ।
অনেক পরিশ্রম করে অনেক আনন্দ করে সবাইকে নিয়ে তারা পালন করেছেন পহেলা বৈশাখ, সবাইকে জানিয়েছেন নববর্ষ এর শুভেচ্ছা।
২রা বৈশাখ ২০২৪ এর বৈশাখী অনুষ্ঠান। ইংরেজি ১৫ই এপ্রিল ২০১৭ তারিখে সুইজারল্যান্ডের বাংলাদেশী প্রবাসীরা এবং অতিথিদের নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে জেনেভায় অনুষ্ঠিত হয় অতি আকাঙ্ক্ষিত বৈশাখী অনুষ্ঠান, যার উপস্থাপনা শুরু করেন শাহাদাত হোসেন। সুইজের বিভিন্ন শহর থেকে আসা বাংলাদেশী ও বিদেশী অতিথিবৃন্দদের ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মধ্যে দিয়ে উপস্থাপনা শুরু হয়। এবং অনুরোধ করা হয় অতিথিবৃন্দদের শুরু থেকে শেষ অবদি অনুষ্ঠান উপভোগ করার। এবং সাথে সাথে বাংলা নববর্ষকে আরো রঙিন করে তুলতে অনুষ্ঠান সূচী সবার সামনে তুলে ধরা হয়। জানিয়ে দেন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে থাকছে গান, মিউজিক, কবিতা আর নৃত্যানুষ্ঠান এবং সাথে থাকছে আকর্ষণীয় লটারি খেলা, থাকছে নারীদের বালিশ পাছ খেলা, পাশাপাশি চলবে শিশুদের মিউজিক্যাল চেয়ার খেলা।
প্রবাস জীবনে বাংলা বর্ষবরণ এ যেন জীবনের এক মহা উন্মুক্ত সুখ।
বৈশাখ উদযাপনে দেশী স্বাদে বৈশাখী খাবার খেয়ে রাত ৮ টার পর অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়। মুগ্ধতায় ভরাছিল জেনেভা বাংলা পাঠশালার মিষ্টি শিশুদের গান এবং নৃত্য, পাশাপাশি ছিলো শিশুদের অভিভাবকদের কণ্ঠ সঙ্গীত। সঙ্গীত সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন, জনাব রিয়াজুল হক ফরহাদ। নৃত্য পরিচালনায় করেছেন ফারানা এবং আরিনুল। সেই আনন্দের সন্ধ্যায় উপস্থিত ছিলেন বাঙালি জাতির গর্ব, বিশ্বে নন্দিত আমাদের সকলের প্রিয় জনাব ইউসুফ আলি খান। যিনি তার অত্যন্ত নিপুন হাতের বাজানো তবলার ধুন দিয়ে সবাইকে নিয়ে যান এক সুরেলি জগতে।
এক পর্যায় তার সাথে ছিলো ফারানা হকের নিপুন হাঁতে বাজান বেহালার এক আকর্ষণীয় যুগলবন্দী ।
শুধু তাই নয় বৈশাখী আনন্দ অনুষ্ঠানে সুরেলি কণ্ঠে সুরের মায়ায় সবার মন ভরিয়ে দিতে সাথে ছিলো শ্রীমতি মহামায়া শিল এবং তাঁর সুযোগ্য পুত্রদয় জশী এবং কৃষ্ণা শিল ।
বৈশাখ উদযাপনে আগত সবাই আনন্দের সাথে স্বাগত জানায় জনাব ইউসুফ আলি খান, শ্রীমতি মহামায়া শিল এবং তাঁর সুযোগ্য পুত্রদ্বয় জশী এবং কৃষ্ণা শিলকে ।
বাংলা নববর্ষ উদযাপনে সবাই মিলে চেষ্টা করেছেন আপন ভূমির, আপন দেশের সংস্কৃতি সবার সামনে তুলে ধরতে। প্রবাসীরা বৈশাখী পালন করেন, সঙ্গীত, নৃত্য,মজার খেলা এবং ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মাধ্যমে। অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন, শাহাদত, সরনা ও টুকু।
তাদের বৈশাখী অনুষ্ঠানের আয়োজনে ছিলো-
১। গান – ‘এসো হে বৈশাখ’ অংশ গ্রহণে ছিলেন তান, নিতু, সিয়াম, আফসারা, দিলারা, অধিরা, সারাহ, তুষ্ট, সাছা, শুনিস্কা, ইতি মনি, মেহ নাজ মুক্তি, জয়, কৃষ্ণা, শাহদাত। সঙ্গীত পরিচালনায় ছিলেন শ্রদ্ধেয় রিয়াজুল হক ফরহাদ।
২। কবিতা আবৃতি করেন সবার আদরের ছোট শিশু নোয়েমি।
৩। একক সঙ্গীত : – শিল্পী তান রবীন্দ্র সঙ্গীত।
৪। জেনেভা বাংলা পাঠশালার সকল শিশুদের কণ্ঠে কিছু সমবেত সঙ্গীত ও সোনা ব্যাঙ, ধিতাং ধিতাং।
৫। নৃত্য – ফারানা।
৬। একক সঙ্গীত : – শিল্পী শাহদাত – আজ এই বৃষ্টির, চেনা চেনা।
৭ একটি দ্বৈত কণ্ঠের গান শিল্পী তান এবং রেয়াজ ‘আয় খুকু আয়’।
৮। কবিতা আবৃতি করেন লিপি ।
৯। সঙ্গীত পরিবেশন করেন জনাব রিয়াজুল হক – একদিন বাঙালি ছিলাম রে।
১০। সঙ্গীত পরিবেশন করেন, ইতি, মনি এবং মেহ নাজ মুক্তি।
১১। কবিতা আবৃতি করেন, মি. কুদরতে এলাহি।
১২। নৃত্য- ফারানা, নিতু, ছাসা, আরিন।
১৩। একক কণ্ঠের গান শিল্পী নজরুল মোল্লা ।
১৪। একটি সমবেত কণ্ঠের গান শিল্পী তান, এতি মনি, মুক্তি এবং রেয়াজ – আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম।
১৫। ভায়োলিন – ফারানা, তবলা – ইউসুফ আলী খান, জসী এবং আরিনুল।
অনেক চমৎকার ভাবে সাজিয়েছিলেন নববর্ষের আয়োজন।
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত সবাই বৈশাখ উদযাপন এর আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞ জানান। তাদের পরিশ্রম এবং এমন সুন্দর উদ্যোগ সত্যি প্রমাণ করে দেয় হৃদয়ে গভীর দেশপ্রেম। আমাদের পক্ষ থেকেও সকল আয়োজকদের প্রতি ভালোবাসা এবং শুভকামনা। এই বৈশাখের মাস হইতে জীবনের প্রতিটি দিন যেন তাদের সুন্দর এবং সুখের হয়।
অলংকরন – গোলাম সাকলাইন…