– সালমা আক্তার।
নন্দিত কণ্ঠশিল্পী সুবীর নন্দী ৪০ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে বাংলার সংগীতাঙ্গনকে উপহার দিয়েছেন হৃদয়গ্রাহী আড়াই হাজারেরও বেশি গান। রেডিও, টেলিভিশন, চলচ্চিত্রে অডিও জগতে চমকপ্রদ গান নিয়মিত উপহার দিয়ে যাচ্ছেন, সুরের খেয়ায় ভাসানো প্রাণ আজ নিয়তীর ঝড়ের সাথে পাঞ্জা লড়ছে!
চলচ্চিত্রে তিনি প্রথম গান করেন ১৯৭৬ সালে “সূর্য গ্রহণ” চলচ্চিত্রে। প্রথম একক এ্যালবাম ১৯৮১ সালে প্রকাশিত হয় “সুবীর নন্দীর গান” শিরোনামের এ্যালবামে।
চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। আর চলতি বছরে সংগীতে অবদানের জন্য সুবীর নন্দী পান দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদক। শ্রোতা মহলে তিনি উপহার দিয়েছেন প্রেম পিয়াসি শত শত গান, পাহাড়ের কান্না দেখে তোমরা তাকে ঝর্ণা বল, বন্ধু হতে চেয়ে তোমার, যদি মরণের পরে কেউ প্রশ্ন করে, তুমি এমনই জাল পেতেছ সংসারে, অসংখ্য গান তিনি গেয়েছেন মনের আনন্দে, মনের চাওয়ার তাগিদে, শ্রোতাদের ভালোলাগা, ভালোবাসা কুড়াতে। অনুসন্ধানী এ মন কালক্রমে পৌঁছে গেছেন গান প্রেমী প্রতি অন্তরে। ভাগ্যের খেলায় দেশ বরেণ্য গুণী পলে পলে লড়াই করছেন জীবন ও মৃত্যুর সাথে!
দেশবরেণ্য সুবীর নন্দী রবিবার (১৪ এপ্রিল) রাত থেকে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় একই দিন রাত ১০টার দিকে তাকে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়। অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকলে রাত ১১টার দিকে শিল্পীকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
শিল্পীর ঘনিষ্ঠ স্বজন জানিয়েছেন রবিবার রাতে সুবীর নন্দীকে সিএমএইচের জরুরি বিভাগে নেওয়ার পর রাত ১১টার দিকে হার্ট অ্যাটাক হয় তার। এরপর দ্রুত লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয় নন্দিত শিল্পীকে।
জরুরি বিভাগে আনার আগেই হার্ট অ্যাটাক হলে সুবীর নন্দী আর ফেরানো যেতো না সৌভাগ্যক্রমে তার আগেই হাসপাতালে আনা হয়েছে।
লাইফ সাপোর্টে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ৭২ ঘণ্টা অবজারভেশনে রাখা হবে। এর আগে কিছু বলা যাবে না।
সুবীর নন্দীর মেয়ে ফাল্গুনী জানান, শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সিলেটে একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন তারা। অনুষ্ঠান শেষ করে রবিবার (১৪ এপ্রিল) রাতে বাবা-মাকে নিয়ে সিলেট থেকে ঢাকায় ফিরছিলেন ট্রেনে, রাত ৯টা নাগাদ উত্তরার কাছাকাছি আসতেই হঠাৎ সুবীর নন্দীর শারীরিক অবস্থা খারাপ হয়ে যায়, পরে ক্যান্টনমেন্ট এলাকার তৃপ্তি করের সহযোগিতায় ট্রেন থেকে নামিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে করে সিএমএইচে দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয়। দীর্ঘদিন ধরেই কিডনির অসুখে ভুগছেন সুবীর নন্দী, ল্যাব এইড হাসপাতালে নিয়মিত ডায়ালাইসিস করান তিনি। কিডনি ছাড়াও বার্ধক্যজনিত নানা রোগও জায়গা করে নিয়েছে দেহে! আমরা এই উজ্জ্বল নক্ষত্রের জীবনের চমক ফিরে আসার জন্য প্রার্থনা করি, সেই সাথে দোয়া কামনা করি দেশবাসী ও সংগীতাঙ্গনের সকল অনুরাগীদের।