– গান মানব।
দোতারা বলতে একটি বাঙ্গালীয়ানার স্বাধ পাওয়া যায়। এমন খুব কম বাঙ্গালী পাওয়া যাবে যারা দোতারা-র সাথে পরিচিত নন।
প্রথম এই বাংলা থেকেই দোতারা-র উৎপত্তি হয়। বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও বিহারে এর ব্যাপক প্রচলন হয়। মূলতঃ ১৫০০- ১৬০০ শতাব্দী থেকে বাউলদের মাধ্যমেই এর প্রচলন এবং প্রসার শুরু হয় এবং আজও হচ্ছে। তাই ‘বাউল’ এবং ‘ভাওয়াইয়া’ গানে এর ব্যাপক ব্যাবহার হয় এবং এর সুমধুর সুর মানুষকে আদিকাল থেকেই মোহিত করে এসেছে। কানাই লাল শিল এদেশে দোতারা-র প্রসারে অনবদ্য অবদান রাখেন এবং তারপর তার ছেলে অবিনাস শিল এর ধারা অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যান।
দোতারা -তে ২/৪/৫ টি তার (স্ট্রিং) থাকে। যদিও গানের সাথে বাজানোর সময় এর দু’টি প্রধান ‘তার’ এর উপর নির্ভর করে বাজানো হয়। প্রধানতঃ ‘নিম গাছের কাঠ দিয়ে দোতারা-র মূল বডি তৈরী করা হয় যা দেখতে গোলাকৃতির হয়ে থাকে। অন্যান্য গাছের শক্ত কাঠ দিয়েও তৈরী করা যায়। আর এর ‘ফিংগারবোর্ড’ টি ‘স্টিল’ অথবা ‘ব্র্যাশ (পিতল)’ এর তৈরী হয়। আর মেইন বডির কিছু অংশ চামড়া দ্বারা মোড়ানো থাকে। দোতারা-র মাথাটি ‘ময়ূর’ এর মাথার আকৃতিতে বানানো হয় এবং সাথে আরো অনেক কারুকার্য থাকে।
‘দোতারা’ আমাদের দেশের ঐতিহ্য, ইদানিং ‘বাউল ঘরানা’ ছাড়াও সঙ্গীতের অন্যান্য ঘরানাতে এর ব্যাপক ব্যাবহার লক্ষ্য করা যায়।
এদেশীয় বাদ্যযন্ত্রটির সংরক্ষন এবং প্রসার আমাদের-ই দায়িত্ব।