– রবিউল আউয়াল।
তোমার এক ফোটা রক্তের ঋণ,
আজো আমি অশ্রুহীন
চোখে কেঁদে যাই অবিরাম
দিতে পারিনি-পারিনি আমি,
তোমার স্বপ্নের দাম।
ঘুমাও তুমি-জাতির পিতা
লাল সবুজের পতাকাতে
মিশে আছো প্রাণের নেতা।
আগষ্ট মাসে এমনই কথামালায় সাজানো সময়ের প্রতিশ্রুতিশীল কন্ঠশিল্পী হাবিব মোস্তফার রক্তের ঋন শিরোনামের গান। গানের কথা ও সুর করেছেন হাবীব মোস্তফা নিজেই এবং সঙ্গীত পরিচালনা করেন অনু মোস্তাফিজ।
গানটি নিয়ে হাবিব মোস্তফা বলেন, রক্তের ঋণ গানের পিছনে কিছু কথা না বললেই নয়। ২০১৫ সালের শেষের দিকে রাজেশ ঘোষ ও প্রদীপ সাহা দাদার আবিষ্কার ‘সুমন খান’ নামের সুপার মেলোডিয়াস-দরাজ কণ্ঠের একজন শিল্পীর সাথে আমার পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে তার ব্যক্তিগত ভালোবাসা থেকে তিনি আমাকে শেখ মুজিবুর রহমানের উপর একটি গান লিখতে বলেন।
এক বসায় সাধারণ প্রেমের গান রচনা করা আর ‘বঙ্গবন্ধুকে’ নিয়ে গান লেখা এক কথা নয়। স্বাধীনতার সূর্যকে ছিনিয়ে আনা উন্নত শিরের এক সত্তাকে নিয়ে লিখতে হলে তাঁকে জানতে হবে, তাঁর বিদ্রোহী চেতনা হৃদয়ে ধারণ করতে হবে। কারণ আমার কাছে তিনি শুধু একজন রাজনৈতিক ব্যক্তির নাম নয়, তিনি গোটা জাতির মুক্তির সনদ দাতা। তাই শেখ মুজিবের জীবনী পাঠে মনযোগী হলাম। ক্লান্ত হয়ে অবশেষে বুঝতে পারলাম ‘বঙ্গবন্ধু’ নামের মহাসমুদ্র পাড়ি দেয়া এক জীবনে সম্ভব নয়। অগত্যা তাঁর জীবনে ঘটে যাওয়া পনেরো আগস্টের নির্মমতাকে মূল উপজীব্য করে ‘রক্তের ঋণ’ শিরোনামের একটি কবিতা লিখে তাতে সুর করলাম, মিউজিক করলেন শ্রদ্ধেয় অণু মোস্তাফিজ ভাই। পরবর্তীতে সুমন খানের শারীরিক অসুস্থতা ও পেশাগত ব্যস্ততার কারণে গানটি প্রায় দুই বছর অণু ভাইয়ের পিসিতে সংরক্ষিত ছিল।
২০১৮ সালের জুলাই মাস।
অণু ভাইকে বললাম, ‘রক্তের ঋণ’ গানটি পুরোপুরি রেডি করেন, আমি ইনভেস্ট করব এবং নিজে গাইব, নিজের সৃষ্টিকে এভাবে অন্ধকারে ফেলে রাখতে পারবোনা। কথা শুনে অণু ভাই হেসে বললেন – গানতো সব সময় টাকার জন্য করিনা,বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গান করবেন, এখানে টাকা পয়সার কথা আসছে কেন ?
অবশেষে নাটকীয়ভাবে হাজী তুহিন নামের একজন তরুণ ‘মুজিবপ্রেমী’ বিনাশর্তে পাশে এসে দাঁড়ালেন। ধান্ধাবিহীন কোনো কাজ জগতে টাকার জন্য আটকে থাকেনা-প্রমানীত হল: সময়ের শ্রেষ্ঠ কবিয়াল অর্জুন বিশ্বাস দাদা ও মেধাবী পরিচালক পলাশ খানকে সাথে পেয়ে কাজটি সম্পন্ন হল ভালভাবেই।
অনুরাগী-ভক্ত শ্রোতাদের প্রতি অনুরোধ, এই গান দিয়ে কেউ আমাকে রাজনৈতিক দাঁড়িপাল্লায় ওজন করতে যাবেন না, কারণ ‘স্রষ্টাপ্রেম’র বাইরে সূফিদের অন্য কোনো দর্শন থাকেনা, থাকতে নেই। গানটি শ্রোতাদের ভাল লাগবে আমার বিশ্বাস।
গানটি সুরঞ্জলির ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত হয়েছে।