asd
Monday, November 25, 2024

সুবীর নন্দী একজন অসাধারণ সংগীত বিশেষজ্ঞ ছিলেন – বেহালাবাদক সুনীল চন্দ্র দাস…

– কবি ও সাহিত্যিক রহমান ফাহমিদা।

বেহালা বা ভায়োলিন এমন একটি বাদ্যযন্ত্র, যা ধনুক তন্তুর সম্মিলনে সুর সৃষ্টি করে। বেহালা প্রায় সব ধরনের সংগীতের সঙ্গেই ব্যবহৃত হয়। এই বাদ্যযন্ত্রটি মূলত পাশ্চাত্যের অন্যতম যন্ত্র হলেও, বাংলাদেশে এর বিপুল জনপ্রিয়তার সঙ্গে গ্রামের ঐতিহ্যবাহী সংগীতের আসর থেকে শুরু করে নাগরিক পরিমণ্ডলের আসরে এমনভাবে আত্তীকৃত হয়েছে যে, এটি বাংলাদেশের নিজস্ব বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে একাকার হয়ে মিশে গেছে। আমাদের দেশে এমন একজন বেহালাবাদক আছেন যিনি কিনা প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে একাধারে বাজিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশসহ বিদেশেও তাঁর বেহালার সুর সবার মনকে মুগ্ধ করেছে। তিনি হলেন জনপ্রিয় বেহালাবাদক সুনীল চন্দ্র দাস। অনেকের গানের সাথেই তাঁর অনবদ্য বেহালার সুর সঙ্গ দিয়ে গানটিকে মোহনীয় করে তুলেছেন। তাই সঙ্গীতাঙ্গনের পক্ষ থেকে তাঁর কাছে কিংবদন্তি শিল্পী সুবীর নন্দীর সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি সঙ্গীতাঙ্গনকে বলেন –

সুনীল চন্দ্র দাস – আমার সাথে সুবীর নন্দীর তেমন কোনো আন্তরিক সম্পর্ক ছিলনা। তাই তাঁর সাথে আমার উল্লেখযোগ্য তেমন কোনো স্মৃতি নেই। তবে সে মাঝে মধ্যে আমাকে সিনিয়র মিউজিসিয়ান হিসেবে ভাল ভাল অনুষ্ঠান হলে কল করতেন। তখন অনুষ্ঠান করতাম তাঁর সঙ্গে এবং অনুষ্ঠান শেষ হলে চলে আসতাম তারপর আর তাঁর সাথে তেমন একটা যোগাযোগ হতোনা। এছাড়া উনিতো নিজেই একজন সেলফ সাফিসিঅ্যান্ট মিউজিসিয়ান ছিলেন। হারমোনিয়াম খুব ভাল বাজাতেন। উনি যাকে পছন্দ করতেন তাঁকে নিতেন তাঁর গানের সাথে সঙ্গ দেয়ার জন্য। ওনার কোনো ফিক্সড মিউজিসিয়ান ছিল না। উনি যখন যাকে তাঁর গানের সাথে প্রয়োজন মনে করতেন তখন তাঁকেই ডাকতেন। আমার সাথে তাঁর যোগাযোগ কম হওয়ার কারণে তেমন কোনো স্মৃতি মনে পড়ছেনা।

সঙ্গীতাঙ্গন – বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় শিল্পী হিসেবে সুবীর নন্দীকে কিভাবে দেখছেন ?
সুনীল চন্দ্র দাস – শিল্পী হিসেবে তিনিতো একজন উচ্চমানের সঙ্গীত শিল্পী এবং ক্লাসিক্যালের সাথে তাঁর ছিল খুবই আত্মিক সম্পর্ক। যার কারণে উনি সব ধরনের গানেই পারদর্শী ছিলেন। তিনি একজন সঙ্গীত বিশেষজ্ঞও ছিলেন বলা যায়। সঙ্গীত নিয়ে উনি গবেষণাও করতেন। কোথায় কি করলে গানটি কেমন হবে, কোথায় কোন সুর দিলে গানটি ভালো লাগবে, এসব নিয়ে ভাবতেন কারণ সে নিজেও অনেক গানের সুর দিয়েছেন। সেই গানে নিজে ভয়েস দিয়েছেন এবং অনেক ডুয়েট গানও করেছেন। তিনি অনেক কাজ করেছেন এবং তাঁর অনেক হিট গানও আছে। তাঁর সব গানের সাথে আমি না থাকলেও তাঁর সম্পর্কে কিছু কিছু তো জানি। একজন ভালো শিল্পীর সম্পর্কে দূরে থাকলেও অনেক কিছু জানা যায়।

সঙ্গীতাঙ্গন – এবার আপনার কাজ সম্পর্কে যদি কিছু বলতেন ?
সুনীল চন্দ্র দাস – আমার একটি সিডি আছে রবীন্দ্র সঙ্গীতের। সিডিটির নাম ‘আমারও পরানো যাহা চায়’ মিউজিকের সাথে বেহালার সুরে বাজিয়েছি। এ কাজটি আমিই একমাত্র করেছি আর কেউ করেনি। এটা করেছি ২০১৫-এর শেষে। এখনো হয়তো মার্কেটে খোঁজ করলে পাওয়া যাবে। তাছাড়া বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কাজ করছি সেই সাথে বিভিন্ন টিভিতে শিল্পীদের সাথে লাইভ প্রোগ্রাম করছি।

সঙ্গীতাঙ্গন – আপনি যে রবীন্দ্র সঙ্গীত নিয়ে সিডি বের করেছেন, পরবর্তীতে কি অন্য ধারার কোনো গান নিয়ে এইরকম কাজ করার ইচ্ছা আছে ?
সুনীল চন্দ্র দাস – হ্যাঁ, এরকম প্ল্যান তো আছে। দেশাত্ববোধক গানের মোটামুটি আট দশটি গান সিলেকশন করে রেখেছি। ঐ গানগুলি নিয়ে একটি সিডি প্রকাশের চিন্তাভাবনা আছে। খুব তাড়াতাড়ি কাজটি শেষ করবো আশা রাখি।

সঙ্গীতাঙ্গন – আপনার সাথে কথা বলে অনেক ভালো লাগলো। সময় দেয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। সঙ্গীতাঙ্গনের পক্ষ থেকে আমি রহমান ফাহমিদা আপনার দীর্ঘায়ু কামনা করছি সেই সাথে আমাদের নতুন নতুন সুর উপহার দিবেন এবং আপনার কাজ নিয়ে আরও অনেক দূর যাবেন, এই আশা নিয়ে আজকের মত বিদায় জানাচ্ছি। শুভকামনা রইল।
সুনীল চন্দ্র দাস – সঙ্গীতাঙ্গন ও আপনার জন্যেও রইল অনেক অনেক শুভকামনা।

Related Articles

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

18,780FansLike
700SubscribersSubscribe
- Advertisement -

Latest Articles