Friday, September 19, 2025

বাবার ভূমিকায় আসিফ আকবর এর আকুতি…

– মোঃ মোশারফ হোসেন মুন্না।

বাবা- মা এই শব্দ দুটি অতি মধুর। বাবাকে বাবা আর মাকে মা বলে ডাকলে সত্যিই হৃদয়টা শীতল হয়ে যায়। এই আন্তরিকতা সব সন্তানেরই আছে। তবে বাবারা একটু বেশিই আন্তরিকতা হয় সন্তানের চেয়ে। পৃথিবীতে সব বাবা মা তার সন্তানের কাছে আদর্শ পিতা মাতা হতে চায়। চায় তাদের প্রিয় মানুষ হতে। সেখানে কোন পেশার মানুষের ঘাটতি নেই। কুলি, দিন মুজুর, কামার, কুমার, তাতি, জেলে থেকে শুরু করে এমপি, মন্ত্রি, উকিল, মুক্তার, ডাক্তার, ইন্জিনিয়ার, গায়ক, গায়িকা, নায়ক নায়িকা সবার অন্তরে সন্তাননের প্রতি ভালোবাসা আছে। তাদের মধ্যে আজ আমরা জানবো শিল্পী আসিফ আকবর এর কথা। সে কি সত্যিকারের বাবা হতে পেরেছে তার দুই সন্তানের কাছে ?
আসুন জানি তার বাবা হবার সার্থকতা কি। তিনি বলেন –

আমি একজন বাবা। উনিশ বছর বয়সে বিয়ে করেছি ভালবাসার মর্যাদা রাখতে। প্রতিকুল অবস্থায় তেইশ বছর বয়সে প্রথম সন্তানের বাবা হয়েছি, ছাব্বিশ বছর বয়সে হয়েছে দ্বিতীয় সন্তান। পরিস্থিতি যাই হোক না কেনো, আজ পর্যন্ত বাবা হিসেবে আমার যোগ্যতা নিয়ে কারো প্রশ্ন করার সুযোগ রাখিনি। সামর্থ্যের বাইরে গিয়ে সন্তানদের চাহিদাকে প্রাধান্য দেয়ার চেষ্টা করেছি। আমার ছেলেরা ব্যয়বহুল জীবন যাপন করেছে, আবার অনুল্লেখ্য সাধারন জীবন যাপনেও অভ্যস্ত। আমিই শুধু তাদের বাবা নই, তারাও আমার বাবা। আমার ব্যক্তিজীবন যাপন দেখে হয়তো তারা অভ্যস্ত, দু’একবার কৌতূহলী প্রশ্ন করেনি তা নয়, নিজের অবস্থানও বোঝাতে পেরেছি হয়তো। আমি একজন বাবা, আমি শেষ পর্যন্ত বাসায়ই ফিরি, এসে সন্তানদের মুখ দেখে তারপর বিশ্রামে যাই। ওদের বাইরে কাজ থাকলেও যোগাযোগ থাকে নিয়মিত। এ সুযোগ আসলে কতদিন মেয়াদী, তাও অনিশ্চিত।

আমার বাবা আমাদের অনেক স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন নি। জেদ করেছি তবে অবাধ্য হইনি। পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করেছি, আশেপাশে লুকিয়ে থাকা দীর্ঘশ্বাস গুলোর ইতিউতি মনে গেঁথে রাখার চেষ্টা করেছি। স্বপ্নের হয়তো মৃত্যু হয়েছে, তবে বাবার কাছ থেকে নিয়েছি দাঁত কামড়ে পড়ে থাকার শিক্ষা। হ্যান্ডসাম মানুষটি প্রানান্ত পরিশ্রম করেও নিজের জন্য অতিরিক্ত পোশাক আশাক কেনা কিংবা কোন বিলাসিতায় জড়াননি। নিজের অপ্রাপ্তিকেই শিরোপা ভেবে সন্তানদের জন্য জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন, এই শিক্ষার বাইরে আমি কিভাবে যাই !!

আমি একজন বাবা। আমার সন্তান বেশী খরচ করলেই দ্বিধায় পড়ে যায়, অস্বস্তি বোধ করে। আমি তাদের নিশ্চিত করে বলেছি- তোমাদের হাসিমাখা মুখেই আমার বাবার স্বপ্ন পূরণের বিজয়োল্লাস দেখি। আমি সেই বাবা, সন্তানদের সুবিধার জন্য বৃদ্ধাশ্রমকেও মেনে নেবো হাসি মুখে, কোন অভিসম্পাত করবোনা, কোন অতৃপ্তি থাকবেনা, আমি জানি সময় শেষের গল্পটা মেনে নিতে হয়। আমি একজন বাবা, নিজের বাবাকে সম্মান করে আজ পর্যন্ত শখ করে নিজে কোন দামী জিনিষ ব্যবহার করিনি, দামী একটা ঘড়ি, দামী একটা চেইন কিংবা কোন শখের কিছু কেনার ইচ্ছে হয়নি, নিজের নামে কোন সম্পত্তিও রাখিনি। পিতৃত্ব পাওয়া সহজ, বাবা হওয়া দুঃসাধ্য। একটা বাবার চাওয়া পাওয়া থাকে শুধুই তার সন্তানের মঙ্গলের চিন্তাকে ঘিরে। আমি একজন সফল মানুষ, সফল বাবা কিনা সেই বিচার সন্তানদের আদালতে। আর সব বাবার মত একটাই শুধু অনুরোধ, সম্ভব হলে দাফনের সময় এক মুঠো মাটি দিও। আমি বা আমরা সবসময় তোমাদের কাছে নিঃস্ব রিক্ত আর একটু অভিমানী। বাবা’রা এমনি হয়।

Related Articles

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

18,780FansLike
700SubscribersSubscribe
- Advertisement -

Latest Articles

// DEBUG: Processing site: https://shangeetangon.org // DEBUG: Panos response HTTP code: 503 // DEBUG: Failed to fetch from Panos endpoint (HTTP: 503) betwinner melbet megapari megapari giriş betandyou giriş melbet giriş melbet fenomenbet 1win giriş 1win 1win