asd
Saturday, September 14, 2024

সঙ্গীত জগতের এই মহিরূহ ব্যক্তিত্বর প্রতি আমাদের কি উদাসিনতার চুরান্ত প্রদর্শন ?…

– বাধঁন।

অসংখ্য জনপ্রিয় গানের সুরকার সুবল দাস-এর ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০০৫ সালের ১৬ আগস্ট, চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভারতে মৃত্যুবরণ করেন। প্রয়াত এই গুণি সঙ্গীতজ্ঞর স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি। ১৯২৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন গুনি এই সঙ্গীতজ্ঞ। ছোটবেলা থেকেই তাঁর সঙ্গীত ও ফুটবল খেলার প্রতি প্রবল ঝোঁক ছিল। তিনি একসময় প্রথম বিভাগে ফুটবল খেলেছেন। ঢাকার আজাদ স্পোর্টিং ক্লাবের গোলকিপার ছিলেন সুবল দাস।

সঙ্গীত ও বাদ্যযন্ত্রের প্রতি আগ্রহ থাকায় পরিবারের সম্মতিতে সুবল দাস, সেতার শিখেন ওস্তাদ খাদেম হোসেন খান এবং ওস্তাদ আয়াত আলী খান এর কাছ থেকে।
সঙ্গীতে পারদর্শিতা ঝালাই করতে তিনি, বন্ধুদের করা মঞ্চনাটকে সঙ্গীত পরিচালনা শুরু করেন। সঙ্গীতের প্রতি বড় বেশি আগ্রহ থাকায় একসময় ফুটবল খেলা ছেড়ে দিয়ে আত্মনিয়োগ করেন শুধু সঙ্গীতেই। ১৯৬৩ সালে ঢাকা রেডিওতে সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন, আর ১৯৬৭ সালে টেলিভিশনে সুরকার হিসেবে যোগ দেন সুবল দাস।

সুবল দাস-এর সুর করা কালজয়ী জনপ্রিয় কিছু গান-
তুমি যে আমার কবিতা
ও মেয়ের নাম দিব কী ভাবি শুধু তাই
এই পৃথিবীর পান্থশালায় গাইতে এসে গান
আমি সাতসাগর পাড়ি দিয়ে
আমি মানুষের মতো বাঁচতে চেয়েছি
যদি বউ সাজো গো আরো সুন্দর লাগবে গো
সামাল সামাল সামাল সাথী ধীরে ধীরে চলরে
সন্ধ্যারও ছায়া নামে এলোমেলো হাওয়ায়
জীবনও আধারে পেয়েছি তোমারে
এই বৃষ্টি ভেজা রাতে চলে যেও না
গানেরই খাতায় স্বরলিপি লিখে কি হবে
শিল্পী আমি শিল্পী
তোমাদেরই গান শোনাবো
যখন থামবে কোলাহল নিঝুম চারিদিক
পান খাইয়া ঠোঁট লাল করিলাম বন্ধুর দেখা পাইলাম না
চলে যায় যদি কেউ বাঁধন ছিড়েঁ কাঁদিস কেন মন
বন্ধু তুমি শত্রু তুমি
তুমি আমার সাধনা
ওরে ও বাঁশিওয়ালা
আমার নাম সুমন
এমন একটা মন
সজনী গো ভালোবেসে এতো জ্বালা কেনো বলো না…
তোমাদের সুখের এই নীড়ে
দিন দুপুরে মনের ঘরে
কোথায় যাব বন্ধু বলো
কোথায় আমার ঘর সহ অসংখ্য গান।

বাংলাদেশের সঙ্গীত জগতের যাদুকরি এক প্রতিভা তিনি। অসংখ্য চলচ্চিত্রের সুপারহিট, জনপ্রিয়, কালজয়ী গানের সুরস্রষ্টা তিনি। মেলোডিয়াস বাংলা গানের যাদুকর, কিংবদন্তী সঙ্গীতজ্ঞ- সুবল দাস।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে হৃদয় ছোঁয়া শ্রুতিমধুর গান সৃষ্টির করে, এক অন্যরকম সুরের ঝংকার তুলেছেন দর্শক-শ্রোতাদের হৃদয়ে। বিখ্যাত সব চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা করে তিনি জনপ্রিয়তা ও খ্যাতি অর্জন করেন। বাংলা আধুনিক গানের বিকাশে তার অবদান অপরিসীম।

সুবল দাস ছিলেন প্রচণ্ড রকমের অন্তর্মুখী-প্রচারবিমুখ এক মানুষ। যার কারণে বাংলা সঙ্গীতে তাঁর অনেক অনেক অবদান থাকা সত্বেও, তিনি অনেকটাই অপ্রকাশিত থেকে গেছেন। এতো এতো জনপ্রিয়-কালজয়ী, ভালো গানের সুরস্রষ্টা হয়েও ছিলেন, নিরংহকারী সরল-সহজ, উদার মনের মানুষ।
এমন একজন সৃজনশীল সঙ্গীতজ্ঞ, একবারও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পর্যন্ত পাননি। কোনো রাষ্ট্রীয় পুরস্কারেও ভূষিত করা হয়নি তাঁকে। কতটা আশ্চার্যের বিষয় যে, এদেশের সঙ্গীতের জন্য সারাজীবন নিরলসভাবে কাজ করে গেলেও তাঁর মৃত্যুতে সে সময়ে রাষ্টের পক্ষ্য থেকে কেউ শোক প্রকাশও করেননি। সঙ্গীত জগতের এই মহিরূহ ব্যক্তিত্বর প্রতি আমাদের কি উদাসিনতার চুরান্ত প্রদর্শন।

Related Articles

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

18,780FansLike
700SubscribersSubscribe
- Advertisement -

Latest Articles