– মারজানা শেখ।
বাংলাদেশের একজন গানের মানুষ সুরের মানুষ ও সঙ্গীত পরিচালক আলাউদ্দিন আলী। যাকে সঙ্গীতাঙ্গন হারিয়েছে ৪ বছর হলো। ২০২০ সালের ৯ অগাস্ট বিকেলে তিনি ইহলোককে বিদায় জানিয়ে চলে যায় না ফেরার দেশে। তিনি সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে সাতবার এবং গীতিকার হিসেবে একবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
আলাউদ্দিন আলী ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ ডিসেম্বর মুন্সীগঞ্জের টংগিবাড়ী থানার বাঁশবাড়ী গ্রামের এক সাংস্কৃতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম জাবেদ আলী ও মাতা জোহরা খাতুন। আলাউদ্দিন তার পিতা ওস্তাদ জাবেদ আলী ও ছোট চাচা সাদেক আলীর কাছে প্রথম সঙ্গীত শিক্ষা নেন। ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি যন্ত্রশিল্পী হিসেবে চলচ্চিত্র জগতে আসেন এবং আলতাফ মাহমুদের সহযোগী হিসেবে যোগ দেন। এরপর তিনি প্রখ্যাত সুরকার আনোয়ার পারভেজসহ বিভিন্ন সুরকারের সহযোগী হিসেবে কাজ করেন।
আলাউদ্দিন আলী ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে সঙ্গীত পরিচালনা করে বেশ প্রশংসিত হন। তিনি গোলাপী এখন ট্রেনে, সুন্দরী, কসাই এবং যোগাযোগ চলচ্চিত্রের জন্য ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দে শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি শ্রেষ্ঠ গীতিকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও তিনি খ্যাতিমান পরিচালক গৌতম ঘোষ পরিচালিত ‘পদ্মা নদীর মাঝি চলচ্চিত্রে’ সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন। আলাউদ্দিন আলী দীর্ঘদিন ফুসফুসের প্রদাহ ও রক্তে সংক্রমণের সমস্যায় ভুগছিলেন। প্রথমে ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ৩ জুলাই তাকে ব্যাংকক নেয়া হয়েছিলো। সেখানে পরীক্ষার পর জানা যায়, তার ফুসফুসে একটি টিউমার রয়েছে। এরপর তার অন্যান্য শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি ক্যানসারের চিকিৎসাও চলছিলো। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং লাইফ সাপোর্ট দেয়া হয়। মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে তার হাত ধরে চলে যান ওপারে। আজ তার বিদায়ী দিনে সঙ্গীতাঙ্গন এর পক্ষ থেকে জানাই অশেষ সম্মান ও ভক্তি। ভালো থাকুক ওপারে।