– কলকাতা প্রতিনিধি।
গত ২৬ জুন শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী সমবায় সমিতিতে অনুষ্ঠিত হল সঙ্গীতে, পাঠে, আলোচনায় এক বর্ণময় নজরুল-সন্ধ্যা। অনুষ্ঠানটির পরিচালনার দায়িত্বে ছিল কলকাতার স্বনামধন্য, নজরুল চর্চায় নিয়োজিত সংস্থা
ছায়ানট। ব্যবস্থাপনায় বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদ, শান্তিনিকেতন শাখা। কাজী নজরুল ইসলামের লেখা ‘বিদ্রোহী’ কবিতা প্রকাশের শতবর্ষে ছায়ানট (কলকাতা) – এর এই বিশেষ নিবেদন। ‘বিদ্রোহী’ কবিতার শতবর্ষ উদযাপনের উদ্দেশ্যে কলকাতার বুকেও প্রায় ১০টি অনুষ্ঠানের আয়েজন করে ছায়ানট। সন্ধ্যা ৬টায় অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয় ‘জয় হোক, জয় হোক, শান্তির জয় হোক, সাম্যের জয় হোক, সত্যের জয় হোক’ গানটির মধ্য দিয়ে।
সমবেত সঙ্গীতে অংশগ্রহণ করেন সোমঋতা মল্লিক, রীণা রায় এবং সুরূপা মল্লিক। এরপর পরিবেশিত হয় নারী জাগরণমূলক নজরুল-সঙ্গীত ‘জাগো নারী জাগো বহ্নি শিখা’। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক প্রণব কুমার
চ্যাটার্জী, অধ্যাপক কল্যাণ মুখোপাধ্যায়, অধ্যাপক ড. প্রহ্লাদ রায়, বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদ, শান্তিনিকেতন শাখার সম্পাদক কিশোর ভট্টাচার্য এবং প্রবীন বাচিক শিল্পী সুজন ভট্টাচার্য। অনুষ্ঠানে দ্বৈত কণ্ঠে ‘বিদ্রোহী’ কবিতা আবৃত্তি করেন তাপসী দাস এবং তাপসী হালদার। ছায়ানটের দুই শিশু শিল্পীর পরিবেশনা বিশেষভাবে নজর কাড়ে-অরণ্য স্পন্দন ভদ্র এবং আজিম মন্ডল। এছাড়াও অরিজিৎ বসু এবং পিয়ালী মিশ্র পন্ডার আবৃত্তি শ্রোতাদের মুগ্ধ করে। একক সঙ্গীত পরিবেশনায় শান্তিনিকেতন থেকে অংশগ্রহণ করেন শ্রেয়শ্রী মণ্ডল, শ্রীদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়, অরিন্দম উপাধ্যায়, শ্রেয়া দত্ত এবং মহমম্দ আফতাব উদ্দিন। বনানী চট্টোপাধ্যায়ের পরিচালনায় শান্তিনিকেতনের ভুবনডাঙার দল শ্রীময়ীর গানভাসির পরিবেশনা অসাধারণ। অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ ছিল শ্রী দর্পনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়ের পরিচালনায় পুনশ্চর শিল্পীদের কণ্ঠে কাজী নজরুল ইসলামের প্রিয় রবীন্দ্র সঙ্গীত। অনুষ্ঠান শেষ হয় ছায়ানটের সভাপতি সোমঋতার কণ্ঠে নজরুল সঙ্গীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মহাপ্রয়াণের পর নজরুল রচনা করেছিলেন ‘ঘুমাইতে দাও শ্রান্ত রবি রে’, সোমঋতার নির্বাচনে ছিল এই বিশেষ গান।
রবীন্দ্র-স্মৃতি বিজড়িত শান্তিনিকেতনে নজরুলপ্রেমীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। সমগ্র অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন অধ্যাপক তড়িৎ রায় চৌধুরী।