asd
Saturday, November 23, 2024

অমর একুশের স্মরণে ভাষা সৈনিকদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা…

“আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি,
আমি কি ভুলিতে পারি।”

ভোরের শিশিরে ধুয়ে পদধূলি, আসে সেই ৫২’র স্মৃতিগুলি। একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের জনগণের গৌরবোজ্জ্বল একটি দিন। এটি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবেও সুপরিচিত। বাঙালি জনগণের ভাষা আন্দোলনের মর্মন্তুদ ও গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতিবিজড়িত একটি দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। ১৯৫২ সালের এই দিনে (৮ ফাল্গুন, ১৩৫৮) বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণে কয়েকজন তরুণ শহীদ হন। তাই এ দিনটি শহীদ দিবস হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। ২০১০ খ্রিস্টাব্দে জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়।

মাতৃভাষা বাংলার জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলেন, আবুল সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার সহ ৫২’র কতো বীর সন্তানেরা। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি তার চরম প্রকাশ ঘটে। ঐদিন সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ১৪৪ ধারা অমান্য করে রাজপথে বেরিয়ে এলে পুলিশ তাদের ওপর গুলি চালায়। এতে আবুল বরকত, আবদুল জব্বার, আবদুস সালাম, রফিক, সহ কয়েকজন ছাত্র শহীদ হোন। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি যে চেতনায় উদ্দীপিত হয়ে বাঙালিরা রক্ত দিয়ে মাতৃভাষাকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছিল, আজ তা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে স্বীকৃতি লাভ করেছে।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি, এ আমাদের অহংকার, জাতির গর্ব।
কানাডার ভ্যানকুভার শহরে বসবাসরত দুই বাঙ্গালী রফিকুল ইসলাম এবং আবদুস সালাম প্রাথমিক উদ্যোক্তা হিসেবে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণার আবেদন জানিয়েছিলেন জাতিসংঘের মহাসচিব কফি আনানের কাছে ১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে। ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দের ১৭ই নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশনে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং ২০০০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে দিবসটি জাতিসংঘের সদস্যদেশসমূহে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে। ২০১০ সালের ২১শে অক্টোবর বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৫তম অধিবেশনে এখন থেকে প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করবে জাতিসংঘ। – এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে পাস হয়েছে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের প্রস্তাবটি সাধারণ পরিষদের ৬৫তম অধিবেশনে উত্থাপন করে বাংলাদেশ। এবং ১১৩ সদস্য বিশিষ্ট জাতিসংঘের তথ্যবিষয়ক কমিটিতে প্রস্তাবটি সর্বসম্মতভাবে পাস হয়। প্রবাসী রফিকুল ইসলাম এবং আব্দুস সালাম কঠিন পরিশ্রুতি আর পরিশ্রমে ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিকভাবে পালিত হয়।
সারা বিশ্বে এখন বিভিন্ন ভাষায় আমাদের একুশের গানটিও গাওয়া হয়।
আজ এই অমর একুশের দিনে সকল ভাষা শহীদ সহ প্রবাসী এই দুই ভাইকে সঙ্গীতাঙ্গন এর পক্ষ থেকে বিনম্র শ্রদ্ধা। – সম্পাদকীয়

ওরে ভাইরে ভাই। বাংলা ভাষা আন্দোলনের প্রথম গান (১৯৪৮)।

ওরে ভাইরে ভাই…বাংলা ভাষা আন্দোলনের প্রথম গান (১৯৪৮)। কথা -আনিসুল হক চৌধুরী।সুর ও কন্ঠ -শেখ লুৎফর রহমান।ওরে ভাইরে ভাইবাংলাদেশে বাঙ্গালি আর নাইযারা ভিড় করে এই পথেঘাটেবাঙ্গাল যাদের বল,এদের স্বদেশে নিজেদের দশাকরে টলমল।বাঙ্গালি তো হিন্দুরা বাংলা ভাষা তাগোরহুজুর যা কয়, ঠিক কথা, আলবৎ হইবো জরুর,বলে বাঙ্গালি খান পাঠান ওরামীরজাফরের চাঁই।।আজব কথা —-গাজার নৌকা পাহাড় দিয়া যায়,জলে ভাসে শিলা, কিবা বানরে গীত গায়, ওরা ধানের গাছে খেজুর খোঁজেলাজে মরে যই।।(এই গানের শেষ স্তবকে সরাসরি জিন্নাহ সাহেবের উদ্দেশে বলা হয় :)শোনেন হুজুর——বাঘের জাত এই বাঙ্গালেরাজান দিতে ডরায় না তারা,তাদের দাবি বাংলা ভাষাআদায় করে নিবেই।।কথা: আনিসুল হক চৌধুরীসুর ও কন্ঠ: প্রখ‍্যাত গণসংঙ্গীত শিল্পী শেখ লুতফর রহমান।মহান বাংলা ভাষা আন্দোলন শুরুই হয়েছিল ১৯৪৮ সাল থেকে।১৯৪৮ সালের ১৯শে মার্চ পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা কায়েদে আজম মো: আলী জিন্নাহ ঢাকায় এসে ২/১ দিন পর রেসকোর্স ময়দানে এক নাগরিক সংবর্ধনার ভাষনে এক পর্যায় বলে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা একটাই এবং তা উর্দু। উর্দু হবে রাষ্ট্রভাষা। তখন কিছু ছাত্ররা এই উক্তির প্রতিবাদ জানিয়ে বসে। রাত্রে জিন্নাহ সাহেবের ছবি পর্যন্ত ছিড়ে ফেলে। মো: আলী জিন্নাহর উক্ত বক্তব‍্য এর প্রতিবাদ করে আনিসুল হক চৌধুরী এই গানটি রচনা করেন এবং শেখ লুৎফর রহমান গানটিতে সুরারোপ করে কন্ঠ দেন। এই গানটি সম্মন্ধে প্রখ‍্যাত গণসঙ্গীত শিল্পী শেখ লুৎফর রহমান তার নিজের লেখা " জীবনের গান গাই" বইয়ের ৪৬, ৪৭ ও ৪৮ পৃষ্টায় বিস্তারিত ভাবে উল্লেখ করে গেছেন। "জীবনের গান গাই" বইটির প্রকাশক: মফিদুল হক, সাহিত‍্য প্রকাশ থেকে প্রকাশিত।বাংলাদেশের গানে প্রতিবাদী চেতনা আনিসুল হক চৌধুরী প্রথম শুরু করেন।টীকা -(১) ঢাকার জাতীয় যুব সাংস্কৃতিক ফোরাম কর্তৃক প্রকাশিত ১৯৮৭-র ২১শে সংকলন ফোরাম শিরোনামের পত্রিকায় প্রকাশিত।(২) আটচল্লিশেরই আরেকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা স্মৃতি হয়ে আছে এখনো। জিন্নাহ্ বললেন উর্দুই হবে রাষ্ট্রভাষা। কিছু সুবিধাভোগী ব্যক্তি ও গোষ্ঠী এর ইন্ধন জোগালো। উর্দুর পক্ষে তখন ইনসাফ, আহাদ, নয়া জিন্দেগী এসব পত্রিকা বিকৃত খবর পরিবেশন করতে। তারা বলত বাঙালি মানেই হিন্দু। কিন্তু, এর প্রতিবাদ করেছিলেন (শেখ) লুৎফর রহমান জগন্নাথ কলেজের একটি অনুষ্ঠানে। একটি গানের মাধ্যমে। গানটি হল : 'শোনেন হুজুর, বাঘের জাত এই বাঙালেরা/জান দিতে ডরায় না/তারা তাদের দাবী বাঙলা ভাষা আদায় করে নেবে তাই' (গানটি লিখেছিলেন আনিসুল হক চৌধুরীকে দিয়ে)। [শেখ লুৎফর রহমান : এক মহিমাম্বিত শিল্পী (প্রবন্ধ), সুভাস সেনগুপ্ত পৃষ্ঠা – ৬২, সংস্কৃতি : সংগ্রাম (প্রবন্ধ সংকলন), সম্পাদনা – মোতাহার হোসেন সুবীর, প্রকাশকাল ১৫ই জানুয়ারি ১৯৯১।]Youtube Link – https://www.youtube.com/watch?v=vaz1yaQm8AM

Posted by Shangeetangon on Sunday, February 20, 2022

Related Articles

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

18,780FansLike
700SubscribersSubscribe
- Advertisement -

Latest Articles