– রহমান ফাহমিদা, সহকারী-সম্পাদক।
এপার বাংলা এবং ওপার বাংলায় যখন চারিদিকে সরস্বতি পূজার উৎসবে সরস্বতি বন্দনা চলছে তখন ‘সুরের সরস্বতি’ সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর চিকিৎসকদের সকল চেষ্টা ব্যর্থ করে এবং কোটি কোটি ভক্ত অনুরাগীদের প্রার্থনাকে বিফলে পরিণত করে চলে গেলেন পরপারে। ভারতের কোকিলকণ্ঠী, ৯২ বছর বয়সে তিনি না-ফেরার দেশে চলে গেলেন। যতটুকু জানা যায়, লতা মঙ্গেশকরের মৃত্যু কোভিড পরবর্তী জটিলতার কারণেই হয়েছে। আজকে ভারতীয় সময় সকাল ৮.১২ মিনিটে প্রয়াত হন লতা মঙ্গেশকর।
কোভিট আক্রান্ত হয়ে প্রায় ২৮ দিন তিনি মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। জানুয়ারি মাসের শুরু থেকেই মুম্বাইয়ের এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন বর্ষীয়ান এই গায়িকা। করোনা ও নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে গত ৮ই জানুয়ারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন লতা মঙ্গেশকর। করোনা মুক্ত হলেও গতকাল (শনিবার) তাঁর শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হয়, ফলে আবার তাঁকে ভেন্টিলেশনেও দেয়া হয়েছিল তবুও শেষ রক্ষা হল না!
১৯২৯ সালে ইন্দোরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এই কিংবদন্তি গায়িকা। সঙ্গীত জগতের অবিসংবাদী সম্রাজ্ঞী হওয়ার আগে শিশু অভিনয় শিল্পী হিসেবে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ শুরু করেছিলেন এই কিংবদন্তি সঙ্গীত শিল্পী। ১৯৪২ সালে মারাঠি ছবির সৌজন্যে প্রথম গান রেকর্ড করেন তিনি। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয় নি তাঁকে। কিংবদন্তি শিল্পী লতা মঙ্গেশকরের সুরেলা কন্ঠের জাদুতে বুঁদ হয়ে আছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম।
সাত দশকের দীর্ঘ কেরিয়ারে ত্রিশ হাজারের বেশি গান রেকর্ড করেছেন তিনি। ২০০১ সালে তাঁকে ভারতের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ‘ভারত রত্নে’ ভূষিত করা হয়েছে। এর আগে ‘পদ্মভূষণ’, ‘পদ্মবিভূষণ’- এর মত নাগরিক সম্মানও দেওয়া হয়েছে লতা মঙ্গেশকরকে। চলচ্চিত্র জগতের সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘দাদা সাহেব ফালক’ দ্বারাও সম্মানিত হয়েছেন তিনি।
যুগ যুগ ধরে কিংবদন্তি সঙ্গীত শিল্পী লতা মঙ্গেশকর বেঁচে থাকবেন মানুষের হৃদয়ে। কারণ লতা মঙ্গেশকরের মত শিল্পী পৃথিবীতে একবারই আসে, তাঁর তুলনা সে নিজেই।
সঙ্গীতাঙ্গন-এর পক্ষ থেকে জানাই এই কিংবদন্তি সঙ্গীত শিল্পীর প্রতি অসীম শ্রদ্ধা। তিনি যেখানেই থাকুন, ভালো থাকুন। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করছি।