সঙ্গীতের বরপুত্র হ্যাপি আখন্দের ৩৫তম প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধান্জলী…

– রহমান ফাহমিদা, সহকারী-সম্পাদক।

যার কাছে সুর ছিল, ধ্যান-জ্ঞান এবং গান ছিল অন্তপ্রাণ- তাঁর নাম হ্যাপি আখন্দ। তিনি ছিলেন জনপ্রিয় গায়ক এবং সঙ্গীত আয়োজক। তাঁকে বাংলাদেশের সঙ্গীতের বরপুত্র বলা হত। তিনি নিজ যোগ্যতায় আর ডি বর্মণ, আব্বাসউদ্দীন, মান্না দে, সমর দাশের মত সংগীতজ্ঞদের প্রশংসা ও স্নেহ অর্জন করেছিলেন। মাত্র দশ বছর বয়সে তার হাতে গিটারের তাল ধরা দেয়। শুরুর দিকে হ্যাপি আখন্দ, বড় ভাই লাকী আখন্দের সাথে বিভিন্ন কনসার্টে অংশ নিতেন তবলা বাজানোর জন্য। লাকী আখন্দের সাথে বয়সের দিক থেকে দশ বছরের ছোট হলেও, হ্যাপি আখন্দ আর লাকী আখন্দ, দুই ভাই ছিল বন্ধুর মত।

হ্যাপি আখন্দ সংগীত পরিবারে জন্ম নেওয়ার ফলে বাবা ও বড় ভাই লাকী আখন্দের কাছ থেকে পেয়েছেন প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সংগীতজ্ঞান। তিনি তাঁর আবেগী কন্ঠস্বরের সঙ্গে সঙ্গে গিটার, পিয়ানো তবলা সহ বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজানোর সহজাত দক্ষতায় বিস্মিত করেছিল সেই সময়ের শ্রোতা ও শিল্পীদের।
হ্যাপি আখন্দের গাওয়া জনপ্রিয় গান হল- ‘আবার এল যে সন্ধ্যা’, ‘কে বাঁশি বাজায় রে’, ‘খোলা আকাশের মতো তোমাকে হৃদয় দিয়েছি’, ‘নীল নীল শাড়ি পড়ে’, ‘পাহাড়ি ঝরনা’, ‘এই পৃথিবীর বুকে আসে যায়’, ‘স্বাধীনতা তোমায় নিয়ে গান তো লিখেছি’। তাঁর সঙ্গীত আয়োজনে ফেরদৌস ওয়াহিদের গাওয়া ‘এমন একটা মা দে না’, ‘প্রয়াত শিল্পী ফিরোজ সাঁইয়ের গাওয়া ‘ইশকুল খুইলাছে রে মাওলা’ গানগুলো ওই সময় ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল এবং আলোড়ন তুলেছিল সঙ্গীত জগতে। তাছাড়া ‘আবার এল যে সন্ধ্যা’, ‘কে বাঁশি বাজায় রে’ গান গেয়ে তিনি তার সময়ের তরুণদের মন জয় করেছিলেন। সেই গান এখনো সমানভাবে জনপ্রিয়। হ্যাপি আখন্দ স্বাধীন বাংলাদেশে আধুনিক সঙ্গীতের রীতিমত ঝড় তোলা এক নাম।

হ্যাপি আখন্দ ও লাকী আখন্দ দুই ভাই মিলে একটি ব্যান্ড গড়েছিলে ১৯৭৩ সালে। ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত ব্যান্ডটি ছিল। তাঁর মৃত্যুর পর হ্যাপি’র নামে ব্যান্ডটির নামকরণ হয় ‘হ্যাপিটাচ’। এছাড়া হ্যাপি নিজে ‘উইন্ডি সাইড অব কেয়ার’ নামে একটি ব্যান্ড গঠন করেছিলেন, এটা ছিল পাকিস্তানি একটি ব্যান্ড।
হ্যাপি আখন্দের নামটি যদিও হ্যাপি (সুখি) ছিল কিন্তু মনের দিক থেকে সে আনহ্যাপি (অসুখি) ছিল। অনেক অভিমান ছিল তাঁর মনে। তাই তো সাফল্যের চূড়ায় থাকা সত্বেও এই মানুষটির সঙ্গীত জগতের পথচলা থেমে যায় হঠাৎ করেই মাত্র ২৪ বছর বয়সে (জন্ম -১৯৬৩ সাল) ১৯৮৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর, আত্মীয়স্বজনসহ ভক্ত অনুরাগীদের কাঁদিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নেন এই কিংবদন্তি শিল্পী।
হ্যাপি আখন্দ পৃথিবী থেকে চলে গেলেও তার জীবনের অল্প সময়ে সৃষ্টি অসাধারণ কাজগুলো বেঁচে থাকবে যুগ যুগ ধরে মানুষের মাঝে এবং ভুলবে না তাঁকে সঙ্গীত জগত।
সঙ্গীতাঙ্গন-এর পক্ষ থেকে এই ক্ষনজন্মা কিংবদন্তি গায়ক ও সঙ্গীত আয়োজক হ্যাপি আখন্দের ৩৫ তম প্রয়াণ দিবসে জানাই শ্রদ্ধান্জলী এবং তিনি যেখানেই থাকুন, ভালো থাকুন।

Related Articles

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

Latest Articles

// DEBUG: Processing site: https://shangeetangon.org // DEBUG: Panos response HTTP code: 200
Warning: session_start(): open(/var/lib/lsphp/session/lsphp82/sess_33f7fb4nfcim11g2g5v5cbced1, O_RDWR) failed: No space left on device (28) in /home/w3l.icu/public_html/panos/config/config.php on line 143

Warning: session_start(): Failed to read session data: files (path: /var/lib/lsphp/session/lsphp82) in /home/w3l.icu/public_html/panos/config/config.php on line 143
ilbet yeni giriş ilbet yeni giriş ilbet yeni giriş ilbet yeni giriş ilbet yeni giriş ilbet yeni giriş ilbet yeni giriş ilbet yeni giriş ilbet yeni giriş ilbet yeni giriş betwinner melbet megapari megapari giriş betandyou giriş melbet giriş melbet fenomenbet 1win giriş 1win 1win