– রহমান ফাহমিদা, সহকারী-সম্পাদক।
স্বাধীন একটি দেশ হিসাবে বাংলাদেশকে ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর স্বীকৃতি দিয়েছিল প্রতিবেশী দেশ ভারত। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় এক কোটির বেশী শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়ার পাশাপাশি যুদ্ধে সহয়তাও করেছিল ভারত। সেই থেকেই বাংলাদেশের সাথে ভারতের বন্ধুত্বের সুত্রপাত। সেই সুত্র ধরেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আবুধাবিতে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় এবং দুই বাংলার শিল্পীদের নিয়ে এক বিশাল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ৭ ডিসেম্বর (২০২১) উদযাপিত হয়েছে, বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী দিবস।
বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী দিবসের এই অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিল দু’দেশের শিল্পীদের মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পরিবেশনা। যা কিনা দর্শক শ্রোতাদের একই সাথে আনন্দিত ও আবেগ প্রবণ করে তোলে। এই অনুষ্ঠানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, উভয় দেশের কূটনীতিক এবং বাংলাদেশ ও ভারতের প্রবাসী কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত থেকে এই অনুষ্ঠানকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলেন।
এই অনুষ্ঠানে প্রথমেই উভয় দেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্ম-উৎসর্গীত বাংলাদেশ ও ভারতের বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদদের বিদেহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরাবতা পালন করা হয়। এরপর বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোঃ আবু জাফর এবং ভারতের রাষ্ট্রদূত সঞ্জয় সুধীর দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে নিজ নিজ বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে দীর্ঘ নয় মাসব্যাপি আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারত সরকার ও বন্ধুপ্রতিম ভারতের জনগনের স্বতঃস্ফূর্ত সহমর্মিতা এবং নিঃস্বার্থ সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন- বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ শহীদের সাথে মিশে গেছে ভারতের ১৮ হাজার শহীদের রক্ত, যা আমাদের স্বাধীনতাকে ত্বরান্বিত করেছে এবং দৃঢ় ভিক্তিমূল স্থাপন করেছে দু’দেশের বন্ধুত্বের।
তিনি আরও বলেন, এ বছর ভারতীয় শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী আশুগঞ্জে একটি যুদ্ধস্মারক নির্মাণ করছে। তাই ২০২১ সাল উভয় দেশের বন্ধুত্বের একটি মাইলফলক বছর হয়ে থাকবে। কেন না, বাংলাদেশ যেমন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছে তেমনি বাংলাদেশ ও ভারত উভয়দেশই তাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ৫০ বছর উপলক্ষে বিশ্বের নানা প্রান্তে মৈত্রী দিবস উদযাপন করছে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, উভয়ের বলিষ্ঠ ও গতিশীল নেতৃত্বে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও সুদূরপ্রসারী ও নতুনমাত্রা নেবে- এই আশাই ব্যক্ত করেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবু জাফর।
ভারতের রাষ্ট্রদূত সঞ্জয় সুধীর বলেন, দু’দেশের মৈত্রীর সূচনা হয়েছিল মহান মুক্তিযুদ্ধে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াইয়ের মাধ্যমে অভিন্ন আত্মত্যাগ স্বীকার করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় ভারত অবদান রাখতে গর্বিত এবং আনন্দিত।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের সাথে দ্বিপাক্ষিক কূটনীতিক সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে যে ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সম্পর্ক রচিত হয়েছিল তা ভবিষ্যতে আরও বেগবান হবে।