Canlı Maç İzle

Hacklink

Hacklink

Hacklink

kayaşehir escort

taksim escort

üsküdar escort

Hacklink

Marsbahis

casino kurulum

Hacklink

Hacklink

Hacklink

slot gacor

Hacklink

Hacklink

Marsbahis

Hacklink

Eros Maç Tv

hacklink

Marsbahis

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

SBOBET88

Marsbahis

Marsbahis

Hacklink

Hacklink

Marsbahis

Hacklink

bbo303

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink Panel

Hacklink

sarıyer escort

extrabet

Dedektör

grandpashabet

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

bomonti escort

Hacklink

hacklink

Hacklink

Hacklink

Marsbahis

Hacklink

Hacklink

özbek escort

slot dana

Hacklink

Hacklink panel

Hacklink

Hacklink

Marsbahis

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Buy Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

xgo88

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

slot gacor

Hacklink

Hacklink

Hacklink

Hacklink

หวยออนไลน์

Hacklink

Hacklink

Hacklink

nakitbahis

Hacklink

Hacklink satın al

Hacklink

Hacklink

download cracked software,software download,cracked software

Hacklink Panel

grandpashabet

holiganbet

betnano

sekabet

dinamobet

imajbet

casibom giriş

grandpashabet

imajbet

matbet

sekabet

matadorbet

artemisbet

betturkey

sahabet

celtabet

atlasbet

meritbet

holiganbet

ibizabet

pusulabet

betasus

casibom

Hacklink

padişahbet

Holiganbet

casival

matbet

holiganbet

sekabet

marsbahis

tempobet

galabet giriş

padişahbet

holiganbet

mavibet

matbet

betsmove

vaycasino

galabet

onwin

meritking

betorspin

betorspin

betorspin

betorspin

betorspin

megabahis

betmoon

tempobet

olabahis

betboo

betasus

betasus

betasus

cialis fiyat

marsbahis

Friday, November 28, 2025

অবিস্মরণীয় সৃষ্টির ইতিহাস তুমি…

– সালমা আক্তার।

সৃজনশীল চিন্তা সত্য, সুন্দরকে ছুঁয়ে যেতে পারে আনায়াসে, জীবন তরঙ্গে দৃষ্টির সাঁতার এক অবিস্মরণীয় খেলা, পাকা খেলোয়াড় খেলায় অংশগ্রহণ করে ভাব, চিন্তা, কর্ম পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে, এমনই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত শিল্পী, কবি, সাহিত্যিকের জীবন লিপি, বাঙালি মনীষার এক তুঙ্গীয় নিদর্শন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম। একাধারে তিনি কবি, সাহিত্যিক, সংঙ্গীতজ্ঞ, সাংবাদিক, সম্পাদক, রাজনীতিবিদ ও বীর সৈনিক। সাহিত্য, সমাজ ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে তার অবদান অপরিসীম। আপন কর্মগুনে তিনি জাতীয় কবির খ্যাতি অর্জন করেন। বিদ্রোহী দৃষ্টি ভঙ্গির কারণে তিনি বিদ্রোহী কবি নামে আখ্যায়িত হয়ে আছেন সোনার বাংলায়। তাঁর লিখুনিতে ছিল সব সময় মানুষের উপর মানুষের অত্যাচার, সামাজিক অনাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ। কখনো অগ্নিবীণা রূপে, কখনও ধূমকেতুর মত আত্মা প্রকাশ করেন তিনি।

১৮৯৯ সালে ২৫মে আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি, যেন ধরণীকে আলোকিত করতে ভূপৃষ্ঠে পা রাখা তাঁর। জন্ম দরিদ্র মুসলিম পরিবারে, প্রথম শিক্ষা শুরু হয় ধর্মীয় শিক্ষাকে কেন্দ্র করে। প্রতিনিয়ত জীবন সংগ্রামে অভিনয় করতে হয় এই মহা মানবকে, ক্ষুধা, দারিদ্র্য, আবেগ, বাস্তবতা, প্রেম, প্রনয়, বিদ্রোহী চিন্তা, সৃজনশীল দৃষ্টি আর দেশ প্রেমকে কেন্দ্র করে। জীবন্ত এই পথ চলা চির জীবন্ত হয়ে ডেকে যায় অনুসন্ধানী চোখগুলোকে, ছুঁয়ে যায় অনুরাগী মন ও মানবকূলের চাওয়া পাওয়ার দর্শন।

চৈতন্য যখন তাড়া করে ফেরে তখন কলম কথা বলে, বিবেকবোধ কখনও কখনও মানুষের আচরণ থেকে, কখনও কখনও আবেগ থেকে, কখনও কখনও বাস্তবতা থেকে কথা বলতে শিখে যায়, এমনই করে শিল্পী সাহিত্যিকের জন্ম হয়, বাস্তবিক জীবনে দেখার ওপারে দেখার শক্তি সবার জীবনে ধরা না দিলেও নজরুলের জীবনে ধরা দিয়েছিল, নজরুলের চিন্তা, চেতনা, মননে সাহিত্যের অধ্যায় আর্বিভাব ঘটে তার সংগ্রামরত জীবনের কারণে , জীবনেরর কঠিন কঠিন ধাপ পেরিয়ে তাকে আসতে হয় সংস্কৃতি প্রেমিক হয়ে। কাজী নজরুল ইসলামের ডাক নাম ছিল দুখু মিয়া, মাত্র নয় বছর বয়সে বাবাকে হারান, পিতার মৃত্যুর পর পারিবারিক অভাব-অনটনের কারণে শিক্ষা জীবন বাধাগ্রস্থ হয়, জীবন যুদ্ধে জীবিকা অর্জনের জন্য দশ বছর বয়সে কাজে নামতে হয়, বাল্য বয়সেই লোক শিল্পের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে তিনি লেটো (বাংলার রাঢ় অঞ্চলের কবিতা, গান ও নৃত্যের মিশ্র আঙ্গিক চর্চার ভ্রাম্যমাণ নাট্যদল) দলে যোগ দেন। চাচা বজলে করিম চুরুলিয়া অঞ্চলে লেটো দলের বিশিষ্ট ওস্তাদ ছিলেন। তখনকার সময়ে আরবি, ফারসি ও উর্দূ ভাষায় তার দখল ছিল। বজলে করিম মিশ্র ভাষায়ও গান রচনা করতেন। ধারণা করা হয় চাচা বজলে করিমের প্রভাবেই নজরুল লেটো দলে যোগ দেন। নিজ কর্ম ও অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি বাংলা গান এবং সংস্কৃতি সাহিত্য অধ্যায় শুরু করেন। অল্প বয়সেই তিনি নাট্যদলের জন্য বেশ কিছু লোক সংগীত রচনা করেন।
উল্লেখযোগ্য চাষার সঙ, শকুনীবধ, রাজা যুধিষ্ঠির সঙ, দাতা কর্ণ, আকবর বাদশা, কবি কালিদাস, বিদ্যাভূতুম, রাজপুত্রের গান, বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ ও মেঘনাদবদ আরও অসংখ্য রচনা। একদিকে মসজিদ, মাজার ও মক্তব জীবন, অপর দিকে লেটো দলের বিচিত্র অভিজ্ঞতা নজরুলের সাহিত্য জীবনে অনেক ধারণা ও উপাত্ত সরবরাহ করেন। লেখার কারিগরিতে তিনি কালীদেবীকে নিয়ে প্রচুর শ্যাম সঙ্গীত ও রচনা করেন। বহু লিখনি ও গায়কির মধ্যে নজরুল প্রকাশ করে হৃদয়ের আর্তনাদ ও সময়র কথা।

বাস্তবতার নিঠুর আঘাতে জর্জরিত নজরুল, বারবার জীবন যুদ্ধে যোদ্ধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন, যুদ্ধের স্বাক্ষী বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি। ১৯১০ সালে নজরুল লেটো দল ছেড়ে ছাত্র জীবনে ফিরে আসেন। আর্থিক সমস্যা তাকে বেশি দিন এখানে পড়াশোনা করতে দেয় নি। ষষ্ঠ শ্রেণির পর আবার তাকে কাজে ফিরতে হয়। যোগ দেন বাসুদেবের কবি দলে, পরে একজন খ্রিস্টান রেলওয়ে গার্ডের খানসামা এবং সবশেষে আসানসোলের চা-রুটির দোকানে রুটি বানানোর কাজ নেন। নজরুলের কবিতা ও ছড়া রচনা প্রতিভা দেখে রফিজউল্লাহ দারোগা নজরুলকে ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশালের দরিরামপুর স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি করে দেন। ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি সেনাবাহিনীতে সৈনিক হিসেবে যোগ দেন। স্কুলে অধ্যায়নকালে তিনি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের সতীশ চন্দ্র কাঞ্জিলাল, বিপ্লবী চেতনা বিশিষ্ট নিবারণচন্দ্র ঘটক, ফার্সি সাহিত্যের হাফিজ নরুন্নবী এবং সাহিত্য চর্চার নগেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় এই চার শিক্ষক দ্বারা প্রভাবিত হন। নজরুল ভেতরের কথা বলেন তার সৃষ্টি কর্ম দিয়ে, কষ্টের কথা বলেন সাহিত্য অনুশীলনের মধ্যে, প্রেমে আহ্বান করেন অমর সৃষ্টি দিয়ে।

কালের পরিক্রমায় তিনি একজন সৈনিক ও ছিলেন। সৈনিক জীবনে সহ-সৈনিকদের সাথে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র সহযোগে গদ্য পদ্য ও সংগীতের চর্চা করেন, করাচি সেনানিবাসে বসে অসংখ্য রচনা সম্পন্ন করেন, উল্লেখযোগ্য গদ্য বাউন্ডুলের আত্মকাহিনী, কবিতা মুক্তি, গল্প হেনা, ব্যথার দান, মেহের নেগার, ঘুমের ঘোরে, কবিতা সমাধি রচনা করেন। সৈনিক থাকা অবস্থায় তিনি প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেন, ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে যুদ্ধ শেষ হলে ৪৯ বেঙ্গল রেজিমেন্ট ভেঙে দেওয়া হলে তিনি সৈনিক জীবন ত্যাগ করে কলকাতায় ফিরে আসেন। বহু ঝড় জঞ্জাল পেরিয়ে নজরুল আজ জাতীয় কবি, অমর কবি, সাহিত্যিক ও সংগীত বিশেষজ্ঞ।

বহু ঘাত-প্রতিঘাত ধেয়ে ছুটে চলেন নজরুল, সাহিত্য-সাংবাদিকতা জীবনে মোসলেম ভারত, বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা, উপাসনা প্রভৃতি পত্রিকায় নজরুলের কিছু লিখা বেশ প্রশংসিত হয়। প্রশংসিত হয় লেখা উপন্যাস বাঁধন হারা, কবিতা বোধন, শাত-ইল-আরব, বাদল প্রাতের শরাব, আগমনী, খেয়া-পারের তরণী, কোরবানী ইত্যাদি। সাংবাদিকতা জীবনে তার সাথে পরিচয় ও বন্ধুত্ব গড়ে উঠে বেশ কিছু খ্যাতিমানদের সাথে কাজী মোতাহার হোসেন, মোজাম্মেল হক, কাজী আবদুল ওদুদ, মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, আফজাল হক, অতুন প্রসাদ সেন, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, নির্মলেন্দ লাহিড়ী, দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর, চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, ওস্তাদ করমতুল্লা খাঁ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী মোতাহার হোসেন। সবার সাথে মিশে তিনি সবার চিন্তা চেতনাকে স্পর্শ করতে চেষ্টা করে গেছেন। মূলত তিনি নিয়মিত সাংবাদিকতা শুরু করেন শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক পত্রিকার সম্পাদক হয়ে। ব্রাহ্মসমাজের সঙ্গীতজ্ঞ মোহিনী সেন গুপ্ত নজরুলের লেখা কয়েকটি কবিতায় সুর দিয়ে স্বরলিপিসহ পত্রিকায় প্রকাশ করেন। ১৩২৭ বঙ্গাব্দের বৈশাখ সংখ্যায় প্রথম গান প্রকাশিত হয় “বাজাও প্রভু বাজাও ঘন” শিরোনামে। নজরুল সৃষ্টির মাধ্যমে নিজেকে তুলে ধরেন, সৃষ্টি তাকে অমর করে রেখেছে, সম্মানিত করে রেখেছে।

কলমের কালি কখনও কখনও সভ্যতার বাস্তবচিত্র তুলে ধরে, তিনি বাস্তব অভিজ্ঞতা প্রকাশের তাগিদে বেতারে কাজের পাশাপাশি সাংবাদিকতার কাজও করেন। ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন, বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেন, বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে দেশ বিদেশ চিকিৎসা চলে, ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে নজরুলকে স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়। ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে নজরুলের স্বাস্থ্যের অবনতি হতে শুরু করে, জীবনের শেষ দিন গুলো কাটে ঢাকার পিজি হাসপাতালে। ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দের ১২ভাদ্র, ২৯ আগষ্ট তিনি না ফেরার দেশে চলে যান! নজরুল তাঁর একটি লিখায় লিখেছেন “মসজিদেরই পাশে আমায় কবর দিও ভাই /যেন গোরের থেকে মুয়াজ্জিনের আযান শুনতে পাই” কবির এই ইচ্ছার বিষয়টি বিবেচনা করে কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে সমাধিস্থ করা হয়। অমর লেখক নজরুল হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখ, শান্তি-বিদ্রোহ সব কিছু তুলে ধরেছেন তার লেখুনিতে, সংগীত সাধনায়, কর্মের গতি ধারায়।

নজরুলের অমর কীর্তি বিদ্রোহী কবিতা। ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে সাড়া জাগানো বিদ্রোহী কবিতা প্রকাশিত হয় শ্রোতাদের সম্মুখে! সারা ভারতের সাহিত্য সমাজে খ্যাতি অর্জন করেন নজরুল সাহিত্য চর্চার মাধ্যমে, সত্য চিত্র বিকাশের মাধ্যমে। কখনও কখনও তাকে কারাদণ্ডে দন্ডিত হতে হয় সময়ের ডাকে কলম তুলে। বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বসন্ত গীতিনাট্য গ্রন্থ উৎসর্গ করেন নজরুলের নামে। কাজী নজরুল ইসলাম জেলে বসে রচনা করেন “আজ সৃষ্টি সুখের উল্লাসে” কবিতা। কবিতা কেবলই কবিতা নয়! কবিতা অনুভূতির কথা বলে, অভিমানের কথা বলে! যন্ত্রণার কথা বলে, শান্তির কথা বলে, ধর্মের কথা বলে। শাসন, অনুশাসনের ইতিহাস হয়ে রয় লেখকের রচনাবলীতে, চিত্র কি বিচিত্র তা ফুটে উঠে কর্মের গতি ধারায়।

নজরুলের সৃষ্টি লাখো নজরুল চেতনার জন্ম দেয়, মানুষের হৃদয়ের কথা উপলব্ধি করে নজরুল অসংখ্য কবিতা রচনা করেন, সবচেয়ে সারা জাগানো কবিতা ও শিশুতোষ ছড়ার মধ্যে মধ্যে প্রলয়োল্লাস, আগমনী, খেয়া পাড়ের তরণী, শাত-ইল-আরব, বিদ্রোহী, কামাল পাশা, খুকী ও কাঠবিড়ালি, লিচু চোর ও খাঁদু দাদু উল্লেখযোগ্য। নজরুল রচনা করেন কালী দেবীকে নিয়ে অনেক শ্যামা সংগীত, রচনা করেন ইসলামী গজল, মানুষ কবিতায় তিনি লিখেছেন “পূজিছে গ্রন্থ ভন্ডের দল মূর্খরা সব শোন গ্রন্থ আনে নি মানুষ কোন”। জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে তাঁর লিখুনি, সংগীত রচনার ইতিহাস, জীবন্ত প্রতিক হয়ে আছে।

বাংলার ইতিহাসে সাম্যবাদের অগ্রদূত নজরুল। মুসলিম হয়েও চার সন্তানের নাম বাংলা, আরবি /ফারসি উভয় ভাষাতেই নামকরণ করেন, কৃষ্ণ মুহাম্মদ, অরিন্দম খালেদ(বুলবুল), কাজী সব্যসাচী ও কাজী অনিরুদ্ধ। চিন্তা চেতনায় তিনি সবার উর্ধ্বে রাখেন মানুষকে, মানবতাবোধকে, নৈতিক সত্য চিত্রকে।

সময়ের নিঠুর সত্য নজরুল তুলে ধরেন সংগীত রচনার মাধ্যমে, অবদান রেখে গেছেন বেতারে হারামণি, নবরাগমালিকা, গীতিবিচিত্রার জন্য তিনি প্রচুর গান লেখেন। গভীর সাধনায় হারানো রাগের উপর চল্লিশটি গান রচনা করেন, এসবের তাগিদে তিনি বিভিন্ন বই পড়ে জ্ঞান অর্জন করেন। উল্লেখযোগ্য নবাব আলী চৌধুরীর রচনায় “আরিফুন নাগমাত ও ফার্সি ভাষায় রচিত আমীর খসরুর বিভিন্ন বই। আর্থিক অনটন, সভ্যতার আঘাত পদে পদে তাকে আঘাত করেছে, নজরুল ক্ষান্ত হন নি, চুপসে যান নি, অক্লান্ত পরিশ্রমের সাথে সন্ধি করে তিনি সামনে এগিয়ে যান, সময়ের ডাকে, চির যুবার ডাকে। নজরুল চিন্তা, বাস্তবতাকে স্পর্শ করতে গিয়ে বারবার বিদ্রোহের জন্ম দেয়, কষ্টে আঘাতে আঘাতে জর্জরিত নজরুল সাধারণ মানুষের কথা, সৃষ্টির কথা, নির্মাণের কথা বলে যান সৃষ্ট কর্মের নাকশায়।

সৃষ্টি কথা বলে ইতিহাসের, তারুণ্যের চিত্র ফুটে ওঠে সৃজনশীলতার মাধ্যমে, নজরুল তেমন করে সৃষ্টির ইতিহাসে, সৃজনশীলতার আবীরে অংকিত হয়ে আছে। নজরুলের আহ্বান “চল্ চল্ চল্ ঊর্ধ্বগগনে বাজে মাদল” বাংলাদেশের রণসংগীত হিসাবে গৃহীত সোনার বাংলায়। অপার সৌন্দর্যের মূর্ত প্রতীক কাজী নজরুল ইসলামকে দেয়া হয় বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জাতীয় কবির মর্যাদা, ২০০৫ সালে ময়মনসিংহ জেলায় প্রতিষ্ঠিত হয় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় নামক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। স্মরণীয় এই বীরের সম্মানে রাজধানী ঢাকায় স্থাপিত হয় স্মৃতির স্মরণে নজরুল একাডেমী, বুলবুল ললিতকলা একাডেমী ও শিশু সংগঠন। সরকারি ভাবে স্থাপিত হয় গবেষণা প্রতিষ্ঠান নজরুল ইন্সটিটিউট, প্রধান সড়কের নাম রাখা হয় কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ। নজরুলের সময় চিরকালের সময়, তাঁর লিখুনি অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শুদ্ধ চিন্তা চেতনার তাগিদে রচিত হয়। সময়ের চিত্র, সভ্যতার চিত্র, সমাজ ব্যবস্থার চিত্র তিনি অকপটে তুলে ধরেন অসংখ্য লিখুনির কালির দাগে। সংগীতের মূর্ছনায় নজরুল সমাজ, সভ্যতা ও শাসন শোষণের চিত্র তুলে ধরেছেন। আহ্বান জানান সত্যি দর্শনে, বাস্তবতা নিরীক্ষণে, প্রলয়ের মধ্যে তিনি, শান্তির মধ্যে তিনি, পথ প্রদর্শকের মধ্যে তিনি শিখা হয়ে জ্বলছেন।

নিপীড়িত, লাঞ্ছিত, অবহেলিত মানুষের জন্য কবি নজরুলের কন্ঠ ছিল সোচ্চার, তার অমর সৃষ্টি ‘বিদ্রোহী’ কবিতা কবিখ্যাতিতে নাম লেখায় রাতারাতি, এছাড়া অগ্নিববীণা, বিষের বাঁশি, ভাঙার গান, চক্রবাক, দোলন চাঁপা, ছায়ানট ও মরুভাস্কর অসংখ্য কবিতা তাকে স্মরণীয় করে রাখে বাংলা সাহিত্য জগতে, জুলুম ও পরাধীনতার বিরুদ্ধে সোচ্চার কন্ঠ ছিল বরাবরই, অবিস্মরণীয় সৃষ্টির মধ্যে ছিল প্রায় চার হাজার গান। তিনি গল্প, উপন্যাস ও নাটকের দক্ষতায় ছিল অপূর্ব।

নজরুল শুধু একটি নাম নয়, নজরুল একটি অধ্যায়, নজরুল একটি ইতিহাস, কখনও আঁধার ভেদ করা আলোর মশাল, কখনও পথহারার পথের দিশা। নিজ মনোভাব সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রতি প্রেম তাঁকে অসংখ্য সম্মানে ভূষিত করে। বাংলাদেশ ও ভারতে কাজী নজরুল ইসলাম এক সত্যের আলোকবর্তিকা, ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক বাংলা সাহিত্যের সর্বোচ্চ পুরষ্কার জগন্তারিণী স্বর্ণ পদক প্রদান করা হয় তাঁকে , ১৯৬০ সালে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মভূষণে ভূষিত করা হয়। ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে ৯ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁকে সম্মান সূচক ডি. লিট উপাধিতে ভূষিত করা হয় সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিশেষ অবদানের জন্য। ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে নজরুলকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করেন বাংলাদেশ সরকার। ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে ২১ ফেব্রুয়ারিতে নজরুলকে একুশে পদকে ভূষিত করা হয়।
২০১২ সালে চরুলিয়ার কাছে আসানসোল মহানগরে কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়। চিন্তা চেতনা, মমনের মধ্যে দিয়ে সবার কাছে চির অমর হয়ে আছেন কীর্তিমান নজরুল। অসংখ্য লিখুনিতে তাঁর দর্শন ফুটে উঠেছে, লিখুনির ভাষা দিয়ে তিনি শান্তি ও বিদ্রোহী হয়ে বেঁচে ছিলেন, বেঁচে থাকবেন আজন্মকাল।

Related Articles

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

18,780FansLike
700SubscribersSubscribe
- Advertisement -

Latest Articles

betwinner melbet megapari megapari giriş betandyou giriş melbet giriş melbet fenomenbet 1win giriş 1win 1win