asd
Friday, November 22, 2024

সঙ্গীতের সবকিছুতেই আমার দুর্বলতা!- সুমন কল্যাণ…

– রহমান ফাহমিদা, সহকারী-সম্পাদক।

আজকে যাকে নিয়ে এই সাক্ষাৎকার, তিনি ছিলেন মূলত বিভিন্ন ব্যান্ডের সাথে জড়িত। নিয়তি! কখন যে কাকে কোথায় নিয়ে যায় কেউ জানে না। যার কথা বলছি তিনি হলেন একাধারে একজন জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী, সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক – সুমন কল্যাণ। সম্প্রতি সুমন কল্যাণ একটি অনুপ্রেরণা মূলক গান নিয়ে আসছেন। সেই গানের প্রসঙ্গে কথা জেনে নেয়ার আগে তাঁর সম্পর্কে কিছু কথা না বললেই নয়! সুমন কল্যাণ প্রায় দেড় যুগেরও বেশি সময় ধরে সঙ্গীত জগতে কাজ করে যাচ্ছেন, বলা যায় সে-ই ক্যাসেট-সিডি যুগ থেকে বর্তমানে ইউটিউবের যুগ পর্যন্ত একনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছেন সঙ্গীত নিয়ে। সুমন কল্যাণ চট্টগ্রামের বেনীলাল দাসগুপ্ত ও নমিতা দাসগুপ্ত দম্পতির সন্তান। ব্যান্ড মিউজিকের শহর চট্টগ্রাম তাই হয়তো ১৯৯০ সাল থেকে সুমন কল্যাণ বিভিন্ন ব্যান্ড দলের সঙ্গে কীবোর্ড বাজাতেন। তিনি সিটি বয়েজ, সফট টাচ, স্পার্ক, স্টিলার, ফিলিংস ও সোলস ব্যান্ডের সাথে দীর্ঘদিন জড়িত ছিলেন। দীর্ঘদিন কীবোর্ড বাজাতে বাজাতেই কম্পোজিশনের প্রতি তাঁর প্রবল আগ্রহ জন্মায় এবং সেই আগ্রহ থেকেই ২০০২ সালে তিনি গান, সুর ও সঙ্গীতায়োজন শুরু করেন। সুমন কল্যাণ বিষয়ভিত্তিক এবং জীবনমুখী গান নিয়েই বেশি কাজ করেছেন। সেই গানগুলোর মধ্যে আছে যেমন- গুরু আজম খান, মুক্তিযোদ্ধা বীরঙ্গনা ফেরদৌসি প্রিয়ভাষিণী, মান্না দে, রমা চৌধুরী বীরঙ্গনা, সুচিত্রা সেন, নির্মলেন্দু গুণ এবং সাভার ট্র্যাজেডির শাহিনাকে নিয়ে বিভিন্ন গান। তাছাড়া প্রয়াত চিত্রনায়ক রাজ্জাককে নিয়েও সে একটি গানের ভিডিও নির্মাণ করেছেন। পেশাগতভাবে ২০০২ সাল থেকে তিনি নিয়মিত একজন সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁর সুর ও সংগীতে গান গেয়েছেন সুবীর নন্দী, তপন চৌধুরী, কুমার বিশ্বজিৎ, ফাহমিদা নবী, সামিনা চৌধুরী, শাফিন আহমেদ, মমতাজ, বাপ্পা মজুমদারসহ এই প্রজন্মের পারভেজ, সাব্বির, রাজীব, লিজা, কিশোর, রন্টি, ঐশী সহ আরও অনেকেই। তাঁর সুর ও সংগীতে প্রথম মিক্সড অ্যালবাম ‘কাছে আসার দিন ভালবাসার দিন’ প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালের ভালোবাসা দিবসে। এই অ্যালবামে গান গেয়েছেন বাপ্পা মজুমদার, বিশিষ্ট নজরুল সঙ্গীতের শিল্পী সুধীন দাসের ছেলে নিলয় দাস ও শাহীন আহমেদ। পরবর্তীতে তিনি বিভিন্ন শিল্পীদের জন্য গানের কাজ করতে থাকেন এবং একই সাথে নিজেও বিভিন্ন ধরণের গান গাইতে থাকেন। ২০১১ সালে ‘সালাম বাংলাদেশ
সালাম’ দেশাত্ববোধক গানের অ্যালবামে সাইফুদ্দিন ইমনের কথায় এবং কুমার বিশ্বজিৎ ও সামিনা চৌধুরীর গাওয়া গানটি তাঁর ক্যারিয়ারের অন্যতম জনপ্রিয় একটি গান। এই গানটি তিনি নিজেও অবশ্য গেয়েছেন। এই অ্যালবামটিতে আরও গান গেয়েছিলেন তপন চৌধুরী ও শাফিন আহমেদ। সুমন কল্যাণের নিজের গাওয়া প্রথম একক অ্যালবাম ‘নাগরিক আকাশ’ প্রকাশিত হয় ২০১২ সালে। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে প্রকাশিত হয় ‘গানের ক্রীতদাস’ ও ‘সুইসাইড নোট’। অ্যালবাম দু’টি তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। পিএ কাজল পরিচালিত কবির বকুলের কথায় একটি সিনেমায় প্রথম সঙ্গীত পরিচালনার কাজ করেন সুমন কল্যাণ, যে গানে কণ্ঠ দিয়েছিলেন মমতাজ। বিষয়ভিত্তিক গান করার ক্ষেত্রে সুমন কল্যাণ অসাধারণ ভূমিকা রেখে চলেছেন। সাম্প্রতিক সেই রকমই একটি বিষয়ভিত্তিক অনুপ্রেরণামূলক গানের কাজ করলেন তিনি। সেই নতুন গানের প্রসঙ্গ নিয়েই শুরু হল সঙ্গীতাঙ্গন -এর পক্ষ থেকে তাঁর সাথে
আলাপচারিতা…

সম্প্রতি আপনি একটি গানে সুর করেছেন জনপ্রিয় গীতিকার কবুর বকুলের কথায় এবং গানটি গেয়েছেন কিংবদন্তি শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন। এই গানটি কি ধরনের-
এটা বাংলাদেশ পুলিশের জন্য অনুপ্রেরণামূলক একটি গান। আমি মনে করি পুলিশ জনগণের বন্ধু। এই করোনার মহামারীর সময় লকডাউনে আমরা ঘরে বসে আছি কিন্ত পুলিশ রাস্তায় বসে পাহারা দিচ্ছে। এরকম দেশের বিভিন্ন বিপর্যয়ের সময় পুলিশ সবসময়ই জনগণের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে। এই বিষয়বস্তুটাকে নিয়েই পুলিশের জন্য অনুপ্রেরণামূলক একটি গান তৈরি হয়েছে।

আপনি তো বিষয়ভিত্তিক গান নিয়েই কাজ করতে পচ্ছন্দ করেন বেশি। তাহলে রোমান্টিক বা দেশের গানের প্রতি আপনার দুর্বলতাটি কেমন-
বিষয়ভিত্তিক গান করি তবে বিষয়ভিত্তিক গানই কিন্ত দেশের গানের পর্যায় পড়ে। যেমন ধরেন, আমি ফেরদৌসি প্রিয়ভাষিণীকে নিয়ে কাজ করেছি, উনি তো একজন মুক্তিযোদ্ধা বীরঙ্গনা ছিলেন। এটা তো দেশের বিষয়ের মধ্যেই পড়ে! তাই বলতে পারেন দেশের গানের প্রতি আমার দুর্বলতা অনেক বেশি। আর রোমান্টিক গান তো করছি। এই ঈদে একটি রোমান্টিক গান ইউটিউব চ্যানেলে আসবে।

কে লিখেছেন গানটির কথা ? কোন কোম্পানি থেকে আসছে এবং কবে রিলিজ হচ্ছে-
এই গানটির কথা লিখেছেন রাফিউজ্জামান রাফি এবং সাউন্ডটেক থেকে রিলিজ হবে। এই কয়েকদিনেই হয়তো রিলিজ দিয়ে দিতাম কিন্ত কোভিট-এর কারণে লকডাউন চলছে তাই বাসা থেকে বের হতে পারছি না। ইচ্ছা আছে লকডাউন একটু সিথিল হলেই এই ঈদ উপলক্ষে গানটি রিলিজ দিয়ে দিব।

একজন সঙ্গীত শিল্পী, সুরকার, না সংগীত পরিচালক! কোন বিষয়ে প্রতি আপনার দুর্বলতা বেশি-
পুরো সঙ্গীত বিষয়ের প্রতিই আমার দুর্বলতা। সেটা গাওয়ার ক্ষেত্রে হোক, বাজনার ক্ষেত্রে হোক! সবকিছুতেই আমার দুর্বলতা।
আপনি তো ‘৯০ সাল থেকে সঙ্গীত জগতের সাথে যুক্ত আছেন। এখন আমাদের দেশের স্বাধীনতার ৫০বছর পূর্তি চলছে এবং একই সাথে স্বাধীনতার পর সঙ্গীত জগতেরও ৫০ বছর পালিত হচ্ছে। আপনি যেহেতু ক্যাসেট-সিডির যুগ থেকে ইউটিউবের যুগ পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে কাজ করছেন। এরই মাঝে সঙ্গীত জগতের তো অনেক পরিবর্তন হয়েছে, এই পরিবর্তন আপনি কিভাবে দেখছেন-
আসলে সময়ের সাথে সাথে সবকিছুরই পরিবর্তন হয়। আমি এমন একজন মিউজিসিয়ান! যে কিনা তিন যুগের মিউজিসিয়ানদের সাথে কাজ করছি। আমি সিনিয়রদের সাথে কাজ করছি, আমার সমবয়সীদের সাথে কাজ করছি এবং আমার জুনিয়রদের সাথেও কাজ করছি। তাই সময়ের সাথে সাথে সময়ের একটা পরিবর্তন হবেই।

বর্তমানে একুস্টিক ইন্সট্রুমেন্টের ব্যবহার কমে গিয়ে কম্পিউটার নির্ভর হয়ে পড়ছে বেশি, এই পরিবর্তন আপনি কিভাবে দেখছেন-
আমি নিজে একুস্টিক ইন্সট্রুমেন্ট ব্যবহারের পক্ষে। আমি পার্সোনালই যতটুকু সম্ভব একুস্টিক ইন্সট্রুমেন্ট ব্যবহার করার চেষ্টা করি। তবে হ্যাঁ, একেক জনের মিউজিকের ধারণা একেক রকম। অনেকেই এটা ব্যবহার করতে চাচ্ছে না কিন্ত চাইলেই করা যায়। আর একুস্টিক ইন্সট্রুমেন্ট গানের সাথে সঙ্গীতায়োজনে সংযোজন করার মত জানাশোনার একটা বিষয় আছে। এটা প্রোপারলি আমি কোন গানটিতে কোন যন্ত্রটি বাজাবো বা কোন সুরের সাথে, কোন তালের সাথে কোন যন্ত্র দিব ইত্যাদি নানা ব্যাপার আছে। শুধু গায়ের জোড়ে লাগিয়ে দিলেই হবে না! সব কিছু বুঝে শুনে করতে হবে। আসল কথা পরিবর্তন হবেই। সারা পৃথিবীতেই পরিবর্তন হচ্ছে শুধু বাংলাদেশেই না।

আগে তো একটি গান তৈরি করার সময় গীতিকার, সুরকার, সঙ্গীতপরিচালক গায়ক-গায়িকা একসাথে বসে একটি টিম ওয়ার্কে কাজ করতো। একটি গানের জন্য কয়েক ঘন্টা রিহার্সেল হত এখন তো তেমনটা হয় না। মনে করেন আপনি যদি একটি মিউজিক তৈরি করে ফেললেন তারপর গায়ক গায়িকা আলাদা আলাদাভাবে এসে কয়েক মিনিটে গানের ভয়েস দিয়ে চলে গেলেন! কিন্ত কথা হল, গায়ক গায়িকা সামনাসামনি বসে যে গানটি তুলবে এবং গানটি ফিল দিয়ে গাইবে, গানে তো সেই আন্তরিকতাটা থাকছে না এখন! আপনি কি মনে করেন এ বিষয়ে-
হ্যাঁ, আন্তরিকতার বড় একটা অভাব আছে! আসলে ঐ সময়টাতে মনে করেন একটা টিমওয়ার্ক করে কাজ হত। তখন একজন সুরকার বা মিউজিক কম্পোজার তো কাজ করছে, তার সাথে আর পাঁচ ছয়টা মাথা এসে একসাথে কাজ করতো তখন একটা আলাদা বিষয় হত। আর এখন তো কি বলবো! এখন অনলাইনের যুগ, টেকনোলজির যুগ। তবে টেকনোলোজির দিক দিয়ে কিন্ত আমরা অনেকদূর এগিয়ে গিয়েছি, রেকর্ডিং-ভিডিওর ক্ষেত্রে। তবে মিউজিকের ক্ষেত্রে টিমওয়ার্কের যে বিষয়গুলো তা থেকে পিছিয়ে গিয়েছি। মানুষ ভুল না করলে শুদ্ধটা শেখে না। ভুল করেই শুদ্ধটা শেখে বা তার মর্ম বুঝে। তাই আমার মনে হয়, একটা সময় গিয়ে আমরা আবার ভালো একটা পরিবেশে চলে আসব। এই ব্যাপারে আমি খুবই আশাবাদী।

আপনি যেহেতু ’৯০ দশক থেকে মানে ক্যাসেটের যুগ থেকে সঙ্গীত জগতে আছেন, তো আপনি কি সেই বিষয়টা মিস করেন না! যখন কোনো গানের নতুন অ্যালবাম বাজারে আসতো তখন আশেপাশে বাড়িতে, মার্কেটের দোকানগুলোতে অথবা রাস্তাঘাটে গানগুলো শোনা যেত এবং অনেকেরই গান মুখস্ত হয়ে যেত আর তারা গানগুলিকে মনের ভেতর ধারণ করে নিত।
এখন তো আপনি ঐ জিনিস চিন্তা করলে পাবেন না! ওই যে, সময় পাল্টিয়েছে। এখন সময়ের সাথে সাথে শুনার বিষয় দেখারও বিষয় হয়ে গেছে। আর এখন আমরা মোবাইলের মধ্যেই সবকিছু পাচ্ছি। এখন সব হিজ হিজ হুজ হুজ হয়ে গেছে। তখন আমরা একটা বিটিভি আর বেতারের ওপর নির্ভরশীল ছিলাম আর এখন তো ইন্টারন্যাশনাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে গুগুলে, ইউটিউবে সার্চ দিয়ে সবকিছু দেখতে পারছি, জানতে পারছি। পরিবর্তনের সাথে সাথে শ্রোতাদের টেস্টও চেঞ্জ হয়েছে।

আপনি তো প্রতিষ্ঠিত অনেক শিল্পীর সাথে কাজ করেছেন। আপনার কি এরকম কোনো আক্ষেপ আছে যে, আপনি এমন কোনো শিল্পীর সাথে কাজ করতে চেয়েছেন কিন্ত এখনও তা সম্ভব হয় নি-
আমি মোটামুটি বাংলাদেশের সব শিল্পীর সাথেই কাজ করেছি। যাদের সাথে কাজ করার ইচ্ছা ছিল, আমি সবার সাথেই কাজ করেছি। আমি বলবো এটা আমার সৌভাগ্য! ওই দিক থেকে আমার আক্ষেপের কোনো জায়গা নেই।

আর এরকম কোনো অতৃপ্তি আছে কি! যেমন কোনো গান গাওয়া হয়নি, সুর করা বা কম্পোজ করা হয়নি-
যেদিন আমি তৃপ্ত হয়ে যাব সেদিন তো আমার সংগীত শেষ হয়ে যাবে। অতৃপ্তি আছে বলেই তো আগাচ্ছি। কাজ করছি। নতুন কিছু চিন্তা করতে পারছি, অন্যধরণের কিছু করা যায় কিনা ভাবছি। আমি যদি বলি আমি তৃপ্ত! তাহলে তো আমার সংগীতের এখানেই সমাপ্তি।

আপনি তো অনেক ব্যান্ডের সাথে ছিলেন এবং আপনার শুরুটা ব্যান্ড মিউজিক দিয়েই। এখন কি আপনি আপনার ব্যান্ডকে মিস করেন না-
আমি মাঝখানে অনেকদিন নিজের গান গাওয়া আর মিউজিক ডিরেকশন নিয়ে অনেক ব্যস্ত ছিলাম। তবে ২০১৮ সাল থেকে আমি আবার আমার পুরনো ব্যান্ড যে ব্যান্ড নিয়ে চিটাগাং-এ কাজ করতাম, ব্যান্ডটির নাম হল ‘সফট টাচ’ সেই ব্যান্ড নিয়ে কাজ করছি। আমার সাথে সেই ব্যান্ডের পুরনো কয়েকজন সদস্য আছে। বর্তমানে করোনার কারণে কাজ বন্ধ আছে তবে আমাদের নিজস্ব একটি ইউটিউব চ্যানেল আছে, সেখানে আমরা টুকটাক করছি।

আপনার নিজের প্রচুর গানের মধ্যে আপনার কোন কোন গান ভালো লাগে, যদি বলতেন-
আমার গানগুলির মধ্যে আমার ভালো লাগে- গানের ক্রীতদাস, ছাতার কারিগর, সুইসাইড নোট’ ইত্যাদি। তাছাড়া বিষয়ভিত্তিক গানের মধ্যে অনেক গান আছে, যেগুলো ভালো লাগে।

করোনাকালীন সময় আপনার কিভাবে কাটছে-
করোনাকালীন সময় শুরুর দিকে তেমন কোনো কাজ ছিল না। এখন আস্তে আস্তে কাজ করছি। আসলে করোনার সময় এমন একটা অবস্থা! মানুষের মৌলিক চাহিদা খাদ্য, বস্র, বাসস্থান এটা ঠিক থাকলে তারপরে এন্টারটেইনমেন্ট বা বিনোদন।

আপনি কি গানের পাশাপাশি অন্য কিছু করেন!-
না, আমি কিছু করি না।

তাহলে যে বললেন, খাদ্য, বস্র, বাসস্থান! তারমানে তো আপনার এই জিনিসগুলো যোগার করার জন্য গানকেই ধরতে হচ্ছে। এটা তো তাহলে এন্টারটেইনমেন্টের কোনো বিষয় না, আপনার ক্ষেত্রে! বরং এটা ছাড়া আপনার জীবনমরণ সমস্যা বলতে পারেন।–
জী, ঠিক তাইই! আমি পরিস্থিতির সাথে সাথে বলছি আর কি। আমরা এখন ভাসমান অবস্থায় আছি। পরিস্থিতি ভালো হলে কাজকর্ম শুরু হচ্ছে। এখন যেমন লকডাউনের জন্য কাজকর্ম হচ্ছে না।

ষ্টেজ প্রোগ্রাম তো করতেন, তাই না! এখন তো সব বন্ধ। তাহলে তো অনেক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে।-
হ্যাঁ, করোনার কারণে সারা বাংলাদেশেই তো ষ্টেজ প্রোগ্রাম বন্ধ। অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে এই লাইভ মিউজিকের। শুধু ব্যান্ড না, পুরো সঙ্গীতাঙ্গনের জন্যই ক্ষতি। আমার জানা মতে, ঢাকার বাইরের প্রচুর মিউজিসিয়ান ঢাকায় থাকে এবং লাইভ মিউজিক করে জীবন নির্ভর করে। এদের অনেকেই ঢাকা ছেড়ে যে যার জায়গায় চলে গেছেন।

আপনি এখন কোথায় আছেন-
আমি এখন ঢাকায় আছি।

করোনার অবস্থা যেভাবে বেড়ে যাচ্ছে। সবাইকে সাবধানতা অবলম্বন করে থাকতে হবে।-
জী, সেজন্যেই তো বাসায় আছি স্টুডিওতে কম যাচ্ছি। সবাইকে আসতে নিষেধ করছি। নিজে বাঁচলে তারপর কাজকর্ম।

আপনার স্টুডিও কোথায়-
মগবাজার ওয়্যারলেস গেট।

তাহলে সেদিন কি ওখানে ছিলেন! যেদিন মগবাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হল-
হ্যাঁ, আমার স্টুডিওর গলির মুখেই ঐ ঘটনা।

আপনার স্টুডিওর কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি তো!-
আমাদের স্টুডিওর বিল্ডিং-এর একজন খুব বেশি ইনজিউরড হয়েছে তবে আমাদের আশেপাশের পরিচিতদের তেমন কেউ ছিল না। আমি অবশ্য দশ মিনিট পরেই ঐ রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেতাম।

হায় আল্লাহ! যাক, ভাগ্য ভালো যে আপনার কিছু হয়নি।
হুম! আসলেই ভাগ্য সেদিন ভালই ছিল।

সঙ্গীতাঙ্গন-এর পক্ষ থেকে আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল এবং আপনার নতুন কাজের জন্য আগাম অভিনন্দন। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন এবং সাবধানে থাকুন।

Related Articles

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

18,780FansLike
700SubscribersSubscribe
- Advertisement -

Latest Articles