পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের মানুষটির নাম বাবা। বাবা সবচেয়ে বিশ্বাস, সবচেয়ে ভরসার মানুষ। জীবনের কঠিন সংকটে অনেক কাছের মানুষ গুলো যখন হাত গুছিয়ে নেবে তখনও যে মানুষটি দুটি হাত বাড়িয়ে পাশে দাঁড়াবেন তিনি বাবা।
বাবা মানে যার হাত ধরে প্রথম হাঁটতে শেখা, বাবা মানে সারাদিন কঠোর পরিশ্রমের পরেও হাসিমুখে বাড়ি ফেরা, বাবা মানে জীবনের প্রথম খেলার সাথী, সবচেয়ে ভাল বন্ধু, বাবা মানে যার কাঁধে চড়ে নির্ভয়ে ঘুরে বেড়ানো, বাবা মানে সব আবদার এর এক অফুরন্ত ভাণ্ডার, বাবা মানে একটি চারা গাছকে সযত্নে বৃক্ষে পরিণত করা, বাবা মানে শত শাসন এর আড়ালে এক গভীর ভালবাসা, বাবা মানে নিজের চোখের জল আড়াল করে সন্তানের মুখে হাসি ফোটানো।
বাবা মানে একটি ত্যাগের বাগান, যে বাগানে সারাজীবন ফুল ফোটে সন্তানের আনন্দের জন্য।
আজ বিশ্ব বাবা দিবস, বাবার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। পৃথিবীর অনেক দেশেই জুন মাসের তৃতীয় রবিবার এই দিবসটি পালিত হয়। পিতা এবং সন্তানের সম্পর্ক সবসময় অনেক গভীর, এক মহামায়ার রক্তের টান।
পিতা-সন্তানের সম্পর্ক অনেক যত্নশীল মমতার চিরন্তন বন্ধন।
যদিও বাবাকে ভালোবাসার জন্য কোন দিবস এর প্রয়োজন হয় না, তবু পৃথিবীর সকল স্মরণীয় দিনের মতো মতো বিশেষ একটি দিন থাকলে ক্ষতি কি ?
বিশ শতকের গোড়ার দিকে ‘বাবা দিবস’ পালন শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্রে। বিশ্বে একেকটি দেশ একেক দিন বাবা দিবসটি পালন করলেও বাংলাদেশসহ এশিয়া ও ইউরোপের অধিকাংশ দেশ জুন মাসের তৃতীয় রোববার পালন করে দিবসটি।
সন্তান সামনে এলে সব ক্লান্তি যেন ভুলে যান বাবা। সন্তানের চাওয়াই যেন তাঁর চাওয়া হয়ে ওঠে।
বাবাকেই আদর্শ মনে করে সন্তানরা। বাবা সন্তানকে শেখান, কীভাবে মাথা উঁচু করে পৃথিবীতে টিকে থাকতে হয়। বাবা মানেই যেন একটি পরম ছায়ার বটবৃক্ষ। বাবা মানে যেন মসৃণ চলার পথ। আর সন্তান যখন বাবা বলে ডাকে এই মধুর ডাকটিই বাবার বুকে লুকিয়ে থাকা সব ব্যথা ভুলিয়ে দেয়।
আমাদের জীবনে বাবাদের অবদান অপরিসীম। বাবা যে কতটা দায়িত্ববোধ নিয়ে সারাটি জীবন পৃথিবীতে টিকে থাকার জন্য সংগ্রাম করেন তা বাবা না হলে বোঝার উপায় নাই।
বাবা জীবনের অবিচ্ছিন্ন একটি অংশ সেটি বোঝানোর জন্যই মায়েদের পাশাপাশি বাবা দিবস পালন শুরু হয়। কিন্তু প্রথমে বাবা দিবস বেশ টানাপোড়েনের মধ্য দিয়েই পালিত হতো। আসলে মা দিবস নিয়ে মানুষ যতটা উৎসাহ দেখাতো, পিতৃ দিবসে মোটেও তেমনটা দেখাতো না, বরং বাবা দিবসের বিষয়টি তাদের কাছে বেশ হাস্যকরই ছিল। ধীরে ধীরে অবস্থা পাল্টায়, ১৯১৩ সালে আমেরিকান সংসদে বাবা দিবসকে ছুটির দিন ঘোষণা করার জন্য একটা বিল উত্থাপন করা হয়। ১৯২৪ সালে তৎকালীন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ক্যালভিন কুলিজ বিলটিতে পূর্ণ সমর্থন দেন। অবশেষে ১৯৬৬ সালে প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি. জনসন বাবা দিবসকে ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করেন। বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে জুন মাসের তৃতীয় রবিবার বাবা দিবস হিসেবে পালিত হয়।
বাবা সবার জীবনের আশীর্বাদ। বাবা সবসময় নিজের প্রয়োজন লুকিয়ে সন্তানের প্রয়োজনে পরিশ্রম করে যায়। বাবা সবার জীবনে শান্তির ছায়া হয়ে থাকুক সবসময়। সবার বাবার প্রতি দোয়া এবং ভালোবাসা রইলো । সকল সন্তান যেন বাবার চোখের জল মুছে বাবার বৃদ্ধ বয়সে বাবার মুখে হাসি ফোটাতে পারে এই চাওয়া আমাদের। বাবার প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি।