– রহমান ফাহমিদা, সহকারী-সম্পাদক।
‘বিদ্রোহীকবি কাজী নজরুল’
সবার অত্যন্ত প্রিয় বিদ্রোহীকবি কাজী নজরুল
ভালো লাগে আমার কবির লম্বা বাবড়ীচুল।
চোখ দুটো যেন আগুনের শিখা! শুধুই জ্বল জ্বল করে,
লিখেছে সে শেকল ভাঙ্গার গান, থেকেছেন কারাগারে।
বিদ্রোহ ফুটে উঠেছে কবিতা আর তাঁর গানে
সীমাবদ্ধ রাখেনি সে বিদ্রোহকে কাগজে কলমে,
নিজেও থেকেছেন সে বিদ্রোহীরবেশে যুদ্ধের ময়দানে।
শিশুকাল ছিল তাঁর সখ্যতা দুঃখকে সাথে নিয়া
তাইতো নাম দিয়েছিল মা বাবা আদরের দুখু মিয়া।
তাঁর ঝুলিতে আছে কতইনা প্রেমের মধুর গান আর কবিতা
সুর ও ছন্দে নার্গিস, লাইলী আর নুরজাহানের রূপের মুগ্ধতা।
পড়েছি তাঁর কবিতায় শৈশবের ঘটনা শখের লিচু চুরির
গড়ে তুলেছে বন্ধুত্ব সে কবিতায় শিশু আর কাঠবেড়ালীর।
ছেলেকে হারিয়ে সে অনেক শোকে লিখেছেন বুলবুল
হামদ্ আর নাতে তাঁর ফুটে উঠেছে আল্লাহ্ ও রসুল।
সাহিত্যের সকল শাখায় তাঁর প্রতিভা বিকাশ পায়
জানিনা কোন ভুলে একদিন সে বাক্যহারা হয়ে যায়!
আমি তাঁকে ভালোবেসে করেনি তো কোনো ভুল
সে যে সবার প্রিয় বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল।…
আমি আমার এই কবিতাটি উৎসর্গ করলাম জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২২তম জন্মবার্ষিকীতে, সঙ্গীতাঙ্গন এর পক্ষ থেকে। আজ(১১জ্যৈষ্ঠ,২৫মে২০২১)বাঙালির আবেগ, অনুভূতিতে জড়িয়ে থাকা চির বিদ্রোহী ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মদিন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২সালে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে ঢাকায় নিয়ে এসে রাষ্ট্রীয়ভাবে তাঁর জন্মদিন পালন করেন। এটাই ছিল বাংলাদেশে তাঁর সর্বপ্রথম জন্মদিন পালন। স্বাধীন বাংলার পবিত্র মাটিতে স্বাধীনতা সংগ্রামের চারণকবি বিদ্রোহী কাজী নজরুল ইসলামের জন্মদিবস পালিত হচ্ছে এটা ছিল সেদিন খুব আনন্দ ও অত্যন্ত গর্বের বিষয়।
গত বছর জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মদিনের দিনটি ছিল, ঈদের দিন। কিন্ত করোনার ভয়াবহতার কারণে প্রতি বছর যেভাবে উদযাপন করা হয় তেমনভাবে উদযাপন করা হয় নাই। তাই বলে তো জাতীয় কবির জন্মদিন পালন হবে না, তাতো হয় না! সেই কারণে নানান ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠান পালন করা হয়। এবারও হয়তো করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে উন্মুক্তস্থানে কোনো অনুষ্ঠান সেভাবেই পালন করা হবে না। যে কবি মুক্ত বাতাসে অত্যাচার নিপীড়নের কথা বলে গিয়েছেন, সেই কবিকে তাঁর জন্মদিনে স্মরণ করতে হচ্ছে কোয়ারেন্টাইনে।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম অগ্রনী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ ও দার্শনিক যিনি বাংলা কাব্যে অগ্রগামী ভূমিকা রাখার পাশাপাশি প্রগতিশীল প্রণোদনার জন্য সর্বাধিক পরিচিত। তিনি বাংলা সাহিত্য, সমাজ ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব হিসেবে উল্লেখযোগ্য। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ- এই দুই বাংলাতেই তাঁর কবিতা ও গান সমানভাবে সমাদৃত। দুই বাংলাতেই প্রতি বছর তাঁর জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপিত হয়ে থাকে। তাঁর কবিতায় বিদ্রোহী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তাঁকে বিদ্রোহী কবি নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তাঁর কবিতা আর গানের মূল বিষয়বস্তু ছিল মানুষের ওপর মানুষের অত্যাচার এবং সামাজিক অনাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ। অগ্নিবীণা হাতে তাঁর প্রবেশ, ধূমকেতুর মতো তাঁর প্রকাশ।
সংগীত জগতে কাজী নজরুল ইসলামের অবদান বিশাল, যা পরিমাপ করা যায় না। তা থেকে কিছুটা আলোকপাত না করলেই নয়! কাজী নজরুল ইসলাম ১৯২৮ সালে গ্রামোফোন কোম্পানির সঙ্গে, ১৯২৯ সালে বেতার ও মঞ্চের সঙ্গে এবং ১৯৩৪ সালে চলচ্চিত্রের সাথে যুক্ত হন। ১৯২৮ থেকে ১৯৩২ সাল পর্যন্ত তিনি এইচ.এম.ভি গ্রামোফোন কোম্পানির সঙ্গে সঙ্গীত রচয়িতা ও প্রশিক্ষকরূপে যুক্ত ছিলেন। এইচ.এম.ভিতে নজরুলের প্রশিক্ষণে রেকর্ডকৃত তাঁর দুটিগান ‘ভুলি কেমনে’ ও ‘এত জল ও কাজল চোখে’ গেয়েছিলেন আঙ্গুরবালা। নজরুলের নিজের প্রথম রেকর্ড ছিল স্বরচিত ‘নারী’ কবিতার আবৃত্তি। নজরুল কলকাতা বেতার থেকে প্রথম অনুষ্ঠান প্রচার করেন ১৯২৯ সালের ১২ নভেম্বর সান্ধ্য অধিবেশনে। ১৯২৯ সালে মনোমোহন থিয়েটারে প্রথম মঞ্চস্থ শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ‘রক্ত কমল’ নাটকের জন্য নজরুল গান রচনা ও সুর সংযোজন করেন। শচিন্দ্রনাথ ওই নাটকটি নজরুলকে উৎসর্গ করেন। ১৯৩০ সালে মঞ্চস্থ মন্মন্থ রায়ের চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী নাটক ‘কারাগার’ -এ নজরুলের ৮টি গান ছিল। নাটকটি একটানা ১৮ রজনী মঞ্চস্থ হওয়ার পর সরকার নিষিদ্ধ করে। ১৯২৯ সালের ১০ ডিসেম্বর কলকাতার এলবার্ট হলে বাঙালিদের পক্ষ থেকে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে এক বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তাতে সভাপতিত্ব করেন আচার্য প্রফুল্ল রায়, অভিনন্দন পত্র পাঠ করেন ব্যারিস্টার এস ওয়াজেদ আলী, শুভেচ্ছা ভাষণ দেন বিশিষ্ট রাজনীতিক সুভাষচন্দ্র বসু (নেতাজী) এবং রায়বাহাদুর জলধর সেন। কবিকে সোনার দোয়াত-কলম উপহার দেওয়া হয়। এ সম্বর্ধনা সভায় সুভাষচন্দ্র বসু বলেছিলেন, ‘আমরা যখন যুদ্দ ক্ষেত্রে যাব তখন নজরুলের যুদ্ধের গান গাওয়া হবে!
আমরা যখন কারাগারে যাব তখনও তাঁর গান গাইব’। ১৯৩২-৩৩ সাল একবছর নজরুল এইচ.এম.ভি ছেড়ে মেগাফোন রেকর্ড কোম্পানির সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। এ কোম্পানির রেকর্ড করা প্রথম দুটি নজরুল সঙ্গীত ছিল ধীরেন দাসের গাওয়া। ‘জয় বাণী বিদ্যায়িণী’ ও ‘লক্ষী মা তুই’। ১৯৩৩ সালে নজরুল এক্সক্লুসিভ কম্পোজার হিসেবে এইচ এম ভিতে পুনরায় যোগদান করেন। এসময় তাঁর অনেক গান রেকর্ড হয়। রেকর্ড, বেতার ও মঞ্চের পর নজরুল ১৯৩৪ সালে চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত হন। তিনি প্রথম যে ছায়াছবির জন্য কাজ করেন সেটি ছিল গিরিশচন্দ্র ঘোষের কাহিনী ‘ভক্ত ধ্রুব’ (১৯৩৪)। এ ছায়াছবির পরিচালনা, সঙ্গীত রচনা, সুর সংযোজন ও পরিচালনা এবং নারদের ভূমিকায় অভিনয় ও নারদের চারতি গানের প্লেব্যাক নজরুল নিজেই করেন। ছবির ১৮টি গানের মধ্যে ১৭টি গানের রচয়িতা ও সুরকার ছিলেন নজরুল। ১৯৩৯ সালের অক্টোবর মাস থেকে নজরুল কলকাতা বেতারের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত হন এবং তাঁর তত্ত্বাবধানে অনেক মূল্যবান সঙ্গীতানুষ্ঠান প্রচারিত হয়। অনুষ্ঠানগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ‘হারমণি’, ‘মেল-মিলন’ ও ‘নবরাগ মালিকা’। ১৯৩৯ থেকে ১৯৪২ সালের মধ্যে নজরুল বিশিষ্ট সঙ্গীতজ্ঞ সুরেশচন্দ্র চক্রবর্তীর সহযোগিতায় কলকাতা বেতার থেকে অনেক রাগভিত্তিক ব্যতিক্রমধর্মী সঙ্গীতানুষ্ঠান পরিবেশন করেন, যা ছিল নজরুলের সঙ্গীতজীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ১৯৩৯ সালে নজরুল বেতারের সঙ্গে বিশেষভাবে জড়িত থাকলেও এইচ.এম.ভি, মেগাফোন, টুইন ছাড়াই কলম্বিয়া, হিন্দুস্থান, সেনোলা, পাইওনিয়ার, ভিয়েলোফোন প্রভৃতি থেকেও নজরুল সঙ্গীতের রেকর্ড প্রকাশিত হয়। নজরুল প্রায় ৩০০০ গান রচনা করেছিলেন এবং অধিকাংশ গানে নিজেই সুরারোপ করেছিলেন, যেগুলো এখন ‘নজরুল গীতি’ নামে বিশেষভাবে জনপ্রিয়। গজল, রাগপ্রধান, কাব্যগীতি, উদ্দীপকগান, শ্যামা সঙ্গীত, ইসলামী গান, বহুবিচিত্র ধরণের গান তিনি রচনা করেছেন।
তাঁর সাহিত্যকর্মে প্রাধান্য পেয়েছে ভালোবাসা, মুক্তি ও বিদ্রোহ। ধর্মীয় লিঙ্গভেদের বিরুদ্ধেও তিনি লিখেছেন। বাংলা কাব্যে তিনি এক নতুন ধারার জন্ম দেন। তিনি কখনোই মাথা নত করেননি, লোভ-লালসা, খ্যাতি, অর্থবিত্ত ও বৈভবের কাছে। ‘চির উন্নত মম শির’ বলে আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। তিনি জগত্তারিণী স্বর্ণপদক লাভ করেন (১৯৪৫), একুশে পদক লাভ করেন(১৯৭৬), স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন (১৯৭৭)এবং পদ্মভূষণ সম্মানে সন্মানিত হন। অধ্যাপক শিবনারায়ণ রায় বলেছেন ‘একহাজার বছরের বাংলা সাহিত্যে তাঁর মত অসাম্প্রদায়িক কবি আর দেখা যায়নি। তাঁর পরিচয় ছিল মানুষ হিসাবে’। যে রবীন্দ্রনাথ বাংলা সাহিত্যে একটা নতুন যুগের জন্ম দিয়েছিলেন বলে বলা হয়, সেই রবীন্দ্রনাথের জীবদ্দশাতেই কাজী নজরুল ইসলাম বাংলা সাহিত্যে আরেকটা যুগের সূচনা করেছিলেন।
নবযুগে সাংবাদিকতার পাশাপাশি নজরুল বেতারে কাজ করছিলেন। এমন সময়ই অর্থাৎ ১৯৪২ সালে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি পিক্স ডিজিজে আক্রান্ত হন। এতে তিনি বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেন। ১৯৪২ সালের শেষের দিকে তিনি মানসিক ভারসাম্যও হারিয়ে ফেলেন। এর ফলে আমৃত্যু তাঁকে সাহিত্যকর্ম থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে হয়। ১৯৭২ সালের ২৪মে তারিখে ভারত সরকারের অনুমতিক্রমে কবি নজরুলকে স্বপরিবারে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান এক্ষেত্রে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কবির বাকি জীবন বাংলাদেশেই কাটে। ১৯৭৬ সালে নজরুলকে স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করা হয় এবং একই বছরের ২১শে ফেব্রুয়ারিতে তাঁকে একুশে পদকে ভূষিত করা হয়। পরে তাঁকে জাতীয় কবি হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এরপর যথেস্ট চিকিৎসা সত্ত্বেও নজরুলের স্বাস্থ্যের বিশেষ কোনো উন্নতি হয়নি। ১৯৭৪ সালে কবির সবচেয়ে ছোট ছেলে এবং বিখ্যাত গীটারবাদক কাজী অনিরুদ্ধ মৃত্যুবরণ করে। ১৯৭৬ সালে নজরুলের স্বাস্থ্যেরও অবনতি হতে শুরু করে। জীবনের শেষ দিনগুলো কাটে ঢাকার পিজি হাসপাতালে। ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট তারিখে তিনি
মৃত্যুবরণ করেন। নজরুল তাঁর একটি গানে লিখেছেন, ‘মসজিদেরই পাশে আমায় কবর দিও ভাই/যেন গোরে থেকে মুয়াজ্জিনের আযান শুনতে পাই’… কবির এই ইচ্ছার বিষয়টি বিবেচনা করে কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে সমাধিস্থ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং সে অনুযায়ী তাঁর সমাধি রচিত হয়। তিনি জন্মেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের এক দরিদ্র পরিবারে দুখু মিয়া হয়ে আর মৃত্যুকালে তিনি ছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় কবি। মাঝে ৭৭ বছর জুড়ে ছিল সৃষ্টি ও সৃজনশীলতার এক বিশাল ইতিহাস।
বিশ্বব্যাপী কবির জন্মদিন পালন করা হয়ে থাকে মহাসমারোহে। গত বছর ১২১তম বছরের জন্মদিনে চেনা ছবিটা যেভাবে বদলে গিয়েছিল হয়তো এবার ১২২তম জন্মবার্ষিকীও ঐ বছরের মত লকডাউনের মধ্যে আটকিয়ে যাবে! তবে মানুষের কবিগুরুর প্রতি আবেগ-ভালোবাসা থাকবে একই। সোশ্যাল মিডিয়ার পাতায় উপচে পড়বে জাতীয় কবির জন্মদিন শুভেচ্ছাবার্তা, অনলাইনে অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়েই কবি স্মরণে সামিল হবে আপামর বাঙালি ও নজরুল সংগীতের শিল্পীকুশলী। ‘সঙ্গীতাঙ্গন’ও ১২২তম নজরুল জয়ন্তীকে মাথায় রেখে, জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অনলাইনে আয়োজন করেছে বিশেষ সঙ্গীতায়োজনের। এই প্রতিবেদনের সাথেই জড়িত থাকুন সরাসরি অনুষ্ঠান উপভোগের করতে। সঙ্গীতাঙ্গন এর পক্ষ থেকে বিদ্রোহী কবি ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রতি রইল অসীম শ্রদ্ধা।
বিদ্রোহী কাজী নজরুল ইসলামের ১২২তম জন্মজয়ন্তীতে সঙ্গীতাঙ্গন এর নিবেদন…
তারিখ – ২৫শে মে বিকেল ৫টা থেকে ১০টা পর্যন্ত।
সঙ্গীত পরিবেশনা করছেন-
সালাউদ্দিন আহমেদ
মিতালি সরকার
বিজন মিস্ত্রী
রুমা হোসেন
শাহীনা আকতার পাপিয়া
সোমঋতা মল্লিক
আপনাদের সবাইকে আমন্ত্রণ…