– সালমা আক্তার।
সময় ও স্রোতের মতো জীবন হারিয়ে যাচ্ছে, করোনা নামক ভাইরাসে আক্রমনে! চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম শব্দসৈনিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, শ্রদ্ধেয় ইন্দ্রমোহন রাজবংশী!
মরমী শিল্পী, শ্রদ্ধেয় আব্দুল আলীম-এর প্রয়াণের পর যার কন্ঠে লোকসঙ্গীত মানুষের অন্তর ছুঁয়ে গেছে, তিনি আমাদের ইন্দ্র মোহন রাজবংশী।
হাসপাতালে ভর্তির হবার পর থেকেই তিনি আইসিইউতে ছিলেন। তিনি করোনাভাইরাসের পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপেও ভুগছিলেন। গতকাল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আনা হয় চিকিৎসার জন্য, মরণ ঘাতক করোনা ভাইরাস ফুসফুসে মারাত্মক ভাবে প্রভাব ফেলে, অবশেষে জাগতিক মায়া ত্যাগ করে আজ বুধবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে ওপারে চলে যেতে হয় মরমী শিল্পীকে। তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
সঙ্গীতশিল্পী ফকির আলমগীর বলেন, আজ বুধবার বিকাল চারটায় ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়া হবে রাজারবাগ কালী মন্দির মহাশ্মশানে তারপর সেখানে তার শেষকৃত্যের করা হবে।
ইন্দ্রমোহন রাজবংশী চলচ্চিত্রে প্লেব্যাকে গান গাওয়ার মধ্য দিয়ে ১৯৬৭ সালে ‘চেনা অচেনা’ চলচ্চিত্রে তাঁর পদার্পন শুরু করেন।
শ্রদ্ধেয় ইন্দ্রমোহন রাজবংশীকে ২০১৮ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন সঙ্গীতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য। ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা দিতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে গান পরিবেশ করেন ইন্দ্রমোহন রাজবংশী। তিনি ছিলেন বাংলাদেশ লোকসংগীত পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা। লোকসঙ্গীত বিভাগের প্রধান হিসেবে সংগীত কলেজেও দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। লোকগান সংগ্রহ করে গবেষণায় যুক্ত থাকার পাশাপাশি তিনি ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালী, জারি, সারি, মুর্শিদি গান চর্চা করে এসেছেন।
সঙ্গীতাঙ্গন পরিবারের পক্ষ থেকে আত্মার শান্তি প্রার্থনা করছি। সদা হাস্যজ্বল এই বীর মুক্তিযোদ্ধা’র প্রতি সবার গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি ঢেকে থাক! ভালো থাকুক ওপারে তিনি।