asd
Thursday, November 21, 2024

বোলান গানের অজানা তথ্য…

– মোশারফ হোসেন মুন্না।

বোলান গান বা বোলান হল প্রধানত পশ্চিমবঙ্গের লোকগান তথা বাংলার এক প্রাচীন লোকগান। বোলান গান বাংলার লোকস্কৃতির একট অনন্য অবদান। এক সময় বীরভূম, নদিয়া, বর্ধমান, মুর্শিদাবাদের বিস্তীর্ণ এলাকায় বোলান গান প্রচলিত ছিল। বিশিষ্ট লোক সংস্কৃতি গবেষক ওয়াকিল আহমেদ তাঁর ‘বাংলার লোকস্কৃতি’ বইতে লিখেছেন, বোলান গান বাঁধা হয় পালার আকারে। এতে লঘু, গুরু উভয় বিষয়েরই স্থান আছে। গুরু বিষয় খণ্ডগীতি, আর লঘু বিষয় রঙপাঁচালি নামে পরিচিত। এখানে একটি দল যখন গায়, অন্য দল ধুয়া দেয়। এ ভাবেই এগিয়ে চলে বোলান।

তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাংলার বেশির ভাগ লোকোগান, যেমন- ভাদু, আলকাপ প্রভৃতি লোকশিল্পের মতোই বোলানের ঐতিহ্যও ফিকে হয়ে এসেছে। বঙ্গীয় শব্দকোষ থেকে জানা যায় ‘বোলান’ শব্দের অর্থ সম্ভাষণ বা প্রবচন। মতান্তরে ‘বুলা’ বা ভ্রমণ থেকেও বোলান গানের উৎপত্তি হতে পারে বলে মনে করেন একদল লোক গবেষক। বাংলায় তুর্কি আক্রমণের পর থেকে শিবের গাজন উপলক্ষে বোলান গান গাওয়া শুরু হয়। বোলান গানের মূলত ৪টি প্রকার— দাঁড় বোলান, পালা বোলান, সখী বোলান ও শ্মশান বোলান। বোলান গান একটি দল হিসাবে গাওয়া হয়। এই গান ঢোল এর বাজনার তালে গাওয়া হয়। ঢোল বাদকরা ঢোল বাজায় আর দলপতি গান করে। অনেক সময় এই গানের সঙ্গে নৃত্য শিল্পী থাকে যারা গানের তালে তালে নৃত্য করে। দলপতির সঙ্গে সহযোগিরাও গান করে। সহযোগিদের গান গাওয়াকে বলা হয় ধৌয়া তোলা। বোলানগান সামাজিন ও পৌরানিক বা দেবদেবীদের নিয়ে পালা আকারে উপস্থাপন করা হয়। পালা বাদার জন্য একজন থাকেন প্রতিটি দলে। দুর্গা ও শিবের বোলান পালা বেশ জনপ্রীয়। গাজনের অনুষ্ঠানে বোলান গান হিসাবে বোলান গান গাওয়া হয়।
আসরের শুরুতে গুরু বন্দনা করে বোলান গাইতে পছন্দ করেন নদিয়ার বোলান শিল্পীরা।
‘গুরুর নাম প্রহ্লাদ পাটনি
কৃষ্ণপুরে বাড়ি,
তাঁর চরণ স্মরণ করে
দেশবিদেশে ঘুরি।
নদিয়া জেলার অন্তর্গত
কৃষ্ণগঞ্জ থানা,
ডাকঘর হয় শিবনিবাস
এই তাঁর ঠিকানা।’

Related Articles

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

18,780FansLike
700SubscribersSubscribe
- Advertisement -

Latest Articles