– সুব্রত মণ্ডল সৃজন।
‘সঙ্গীতাঙ্গন’ এর নিয়মিত সাপ্তাহিক আয়োজন একক সঙ্গীত সন্ধ্যায় আজ থাকছেন আমাদের প্রিয় সঙ্গীতশিল্পী, যিনি একাধারে একজন কণ্ঠশিল্পী, একজন সুরকার, সব মিলিয়ে তিনি একজন সঙ্গীতশিল্পী। আপনারা ‘সঙ্গীতাঙ্গন’ এর সাথেই থাকুন আর উপভোগ করুন আজকের সঙ্গীতশিল্পী মীর মাসুমের একক সঙ্গীত সন্ধ্যা।
সঙ্গীতের শুরুটা কিভাবে হয়েছিলো ? জানতে চাইলে তার থেকে জানা যায়-
গানের শুরু হয়েছিল খুব ছোটবেলা থেকেই।
চতুর্থ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার জন্য তার বাবা তাকে উপহার হিসেবে হারমোনিয়াম এবং তবলা গিফট করেছিলেন।
তার বাবা একজন সরকারি কর্মকর্তা থাকায় বিভিন্ন জায়গাতে আমাদের বসবাস করতে হয়। তেমনি মাদারীপুরের শিবচরে যখন তারা অবস্থান করেন তখন শিবচর শিল্পকলা একাডেমিতে ভর্তি হন এবং সেখান তার যিনি সংগীতগুরু অর্থাৎ প্রথম সংগীতগুরু তিনি হলেন শিব শংকর দাস। উনার কাছেই তার গানের হাতেখড়ি হয় ১৯৯০ সালে।
তারপর তারা চলে আসেন নারায়নগঞ্জ জেলার আড়াইহাজারে, সেখানে তার ওস্তাদ শ্রী হরিমোহন দেবনাথ । তিনি নরসিংদী শিল্পকলার একাডেমির উচ্চাঙ্গ সংগীত শিক্ষক। তার কাছে শিল্পী মীর মাসুম এখনো তালিম নিচ্ছেন, যার শুরুটা হয়েছিল ১৯৯৪ সালে।
গানের জগৎ সম্পর্কে তিনি বলেন,-
আমি মোটামুটি প্রায় সব ধরণের গানই করি। সব ধরনের মিউজিকই আমি করে থাকি। কারণ মূলত আমি একজন মিউজিশিয়ান হতে চেয়েছি তাই মিউজিক এর বিভিন্ন দিক, বিভিন্ন ধরনের মিউজিক নিয়েই কাজ করতে হয়। সেজন্যই মিউজিকের সকল দিক নিয়েই কাজ করতে ভালোবাসি। আবার যেহেতু আমি কিবোর্ড বাজাই সেজন্য উচ্চাঙ্গ সংগীত সহ অন্যান্য দিকেও জানা থাকলে বাজানোর সুবিধা হয়। এ যাবৎ কালে প্রায় তিন হাজার বাংলা গানে তিনি মিউজিক বাজিয়েছেন। শুধু তাই নয় নিজের সুরেও আছে প্রায় দুইশত গান। যার মধ্যে ইফতেখার সুজনের কথায় এবং তার সুর ও সংগীতে, রেশমি মির্জার কন্ঠে ‘নিন্দুকের মুখে পড়ুক ছাই’ শিরোনামে গানটি জনপ্রিয়তা পায়।
তিনি আরো বলেন, আমি চেষ্টা করলে যে কারো জন্য যেকোনো ধরনের গান তৈরি করতে পারি। ঈগল মিউজিকের ব্যানারে ‘বাবু খাইছো’ শিরোনামে তার ছোট ভাইয়ের জন্য তিনি একটি গান করেছেন যেটা বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
শাহ্ সিমেন্ট এর সৌজন্যে সম্প্রতি তিনি একটি গান করেছেন ‘চলো সচেতন হই চলো এগিয়ে যাই’ শিরোনামে। ‘করোনা’ যখন বাংলাদেশে প্রথম আঘাত হানে তখন তিনি স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে যে গানটি করেছিলেন ‘আমরা সবাই স্বাস্থ্যকর্মী’ গানটি গেয়েছিলেন এস আই টুটুল। এছাড়াও তারা করোনার মধ্যে বেশ কিছু গান করেছেন বলে জানান।
বর্তমানে তিনি গান নিয়েই ব্যস্ত সময় পার করছেন। আহমেদ রাজিবের সুরে দুটি গানের কাজ চলছে ‘মন পাখি’ ও ‘হারিয়ে গিয়েছি’।
গান নিয়ে তার ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে আমি আরো বেশ কিছু গান করে যেতে চাই, সব ধরনের গান করতে চাই। শুধু এক ধরনের গান নিয়েই কাজ করতে চাইনা। আর আমার দুই ছেলে আছে তাদেরকেও মিউজিক শিখিয়ে যেতে চাই, যাতে ওরাও ভবিষ্যতে মিউজিক নিয়ে ভালো কাজ করতে পারে। যাতে পড়ালেখা এবং সংস্কৃতির সাথে থেকে সংস্কৃতি চর্চা করতে পারে।
তিনি আরো বলেন, মানুষ সংস্কৃতির সাথে না থেকে সংস্কৃতি থেকে দূরে থাকার কারণে আমাদের সমাজে বিভিন্ন ধরনের অসঙ্গতি দেখা দিয়েছে।
অবশেষে তিনি বলেন ‘সোলস’ ব্যান্ডের সাথে ১৭ বছর যাবৎ কাজ করছেন এবং যতদিন তিনি থাকবেন আর যতদিন ‘সোলস’ থাকবে একে-অপরে এক হয়েই থাকবেন এই প্রত্যাশা।
আর যারা গান শোনেন তারা গানকে ভালোবেসেই গান শোনেন, গানকে ভালবাসেন, গানের মানুষদেরকেও ভালোবাসেন। তবে বলতে চাই যারা গান শোনেন না তাদেরকে। যারা গান শোনেন না তাদেরকে বলব আপনারাও গান শুনুন, গানকে ভালবাসুন, শিল্পী ও শিল্পকে ভালবাসুন, সংস্কৃতিকে ভালবাসুন এবং সংস্কৃতির সাথে থাকুন।
তিনি বলেন, শিল্পীদের মনে অনেক কষ্ট থাকে। ছোট্ট একটা ভুলের জন্য তাদেরকে শুনতে হয় অনেক কথা! সইতে হয় অনেক গঞ্জনা! আমরাও চাই ভাল কিছু করতে, ভালো কিছু উপহার দিতে।
সবাই ভালো থাকুক সকলের জন্য রইল শুভকামনা।
সঙ্গীতশিল্পী মীর মাসুমসহ সকলের জন্য সঙ্গীতাঙ্গন এর পক্ষ থেকে রইল শুভ কামনা।