– সুব্রত মণ্ডল সৃজন।
সঙ্গীতাঙ্গন এর বিশেষ আয়োজন একক সংগীতসন্ধ্যায় আজ আপনাদের সাথে আছেন কণ্ঠশিল্পী বারি দেওয়ান হৃদয়। যিনি বিডি হৃদয় নামেই বেশি পরিচিত। সংগীতের নানা দিক নিয়ে কথা বলবেন এবং সঙ্গীত পরিবেশন করবেন তিনি। চলুন তার কাছ থেকেই জেনে নেই তার জীবনে কথা আর শুনি তার গান।
প্রথমেই পারিবারিক পরিচয় জানতে চাইলে তিনি জানান, তার জন্ম ৩ এপ্রিল, ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দ। পিতা: মৃত নূর মোহাম্মদ দেওয়ান, মাতা: মৃত সাহিদা বেগম। গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইল। পড়াশোনা থেকে শুরু করে কর্মজীবনে ঢাকাতেই।
বিডি হৃদয় মূলত একজন কণ্ঠশিল্পী। পাশাপাশি একজন পিয়ানোবাদক, একজন সুরকার, একজন মিউজিক ডিরেকটর। মূলত গানের শুরু খুব ছোটবেলা থেকেই সময়টা তখন তৃতীয় শ্রেণি। তখন থেকেই তিনি গানের প্রতি ঝোঁক এবং স্কুলেও গান গাইতেন। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিকভাবে অষ্টম/নবম শ্রেণী থেকে তাঁর গানে হাতেখড়ি হয় ওস্তাদ নারায়ণ চক্রবর্তীর কাছে। পরবর্তীতে প্রথম দিক থেকেই তিনি ‘খেলাঘরে’ গান করতেন ঢাকার ডেমরা অবস্থিত, সেখানে টিপু ভাই গান শেখাতেন। এরপর, ওস্তাদে দেলোয়ার হোসেনের কাছ থেকে প্রায় ৩/৪ বছর গান শিখেছেন। ‘ছায়ানট’সহ আরো অনেক ওস্তাদের কাছেও তিনি সঙ্গীত এর বিভিন্ন দিক তালিম নেন। তাদের মধ্যে ওস্তাদ সালাউদ্দিন আহমেদ, নয়ন দে, লাকী আখন্দ প্রমুখ।
এরপর তিনি আরো জানান, ওয়েস্টার্ন মিউজিক এর উপরও কোর্স করেছেন কোরিয়ান ইনস্টিটিউট (কেডিএবি), ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল মিউজিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে। সেখানে পিয়ানো গিটার ইত্যাদি বাজানো শেখা হয়।
জেসন ইউনের কাছ থেকে পিয়ানো বাজানোর হাতেখড়ি হয়। জেসন ইউন একজন কোরিয়ান কিন্তু আমেরিকা থেকে মিউজিক কম্পোজিশন এর উপর পিএইচডি অর্জনকারী। পিয়ানোসহ অন্যান্য বাদ্যযন্ত্র আয়ত্ব করা হয় কেডিএবি থেকে। পিয়ানো বাঁজাতে তার ভালো লাগে, পিয়ানোসহ ওয়েস্টার্ন ইনস্ট্রুমেন্ট শিখেছেন ২০১০ সাল থেকে ৬/৭ বছর।
তিনি জানান তার সুরে এবং মিউজিকে বেশ কিছু গান করেছেন এবং কাজও চালিয়ে যাচ্ছেন। কথা প্রসঙ্গে তিনি জানান, তার পরিবারের কেউ সংগীতের সাথে জড়িত ছিলেন না। যখন তিনি সংগীত ভালোবেসে সংগীতের সাথে জড়িয়ে পড়লেন তখন তাকে পরিবার থেকে তেমনভাবে কোন সাপোর্ট করেনি আবার গান করতে তাকে কেউ বাঁধাও দেয়নি কিন্তু তিনি তার সঙ্গীত থেকে কখনো সরে আসেননি।
মূলত কোন ধরনের গান বেশি করা হয় ? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, মূলত বলতে গেলে আমার বেসিকটা নজরুল সঙ্গীত এর উপরে কিন্তু আমি পপ টাইপের আধুনিক গান গুলোই বেশি করে থাকি, বলতে গেলে মর্ডান টাইপের বাংলা গান।
তার কণ্ঠের গান হিসেবে ‘সাদা মেঘের পালক’ (২০১২) নামের একটি অ্যালবামসহ বেশ কিছু গান রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম ‘আমাদের স্বপ্ন লাল সবুজের’ শিরোনামের গানটির কথা লিখেছেন কাজরী তিথি জামান এবং সুর ও কণ্ঠ দিয়েছেন বিডি হৃদয়।
কন্ঠশিল্পী বারী দেওয়ান হৃদয় জানান,
বর্তমানে তিনি গান নিয়ে বেশ কিছু কাজ করছেন এবং তিনটি মৌলিক গানের কাজ প্রায় সম্পন্ন করেছেন যা শীঘ্রই প্রকাশ পাবে তার নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল থেকে। যা ২০২১ সালে নতুন বছর উপলক্ষে তার প্রকাশিতব্য ইউটিউব চ্যানেলেই প্রকাশ করবেন বলেন।
সঙ্গীত জীবনের অনুপ্রেরণা হিসেবে কে বা কারা আছেন বা কেউ আছেন কিনা ? এই সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সত্যি কথা বলতে গেলে আমার এই জীবনে আমার অনুপ্রেরণা আমি নিজেই। যেহেতু আমার পরিবারের কেউ সংগীতের সাথে জড়িত ছিলেন না তাই নিজের অনুপ্রেরণা থেকেই আমার এই সঙ্গীত জীবনে প্রবেশ। তবে শেষের দিকে মা আমাকে অনেক সাপোর্ট দিয়েছেন। পরে মাও চাইতেন যে আমার স্বপ্ন পূরণ হোক, আশপাশের সবাই যখন বাহবা দিচ্ছে সেগুলো দেখে মাও আমাকে একটু ভিন্ন রকম ভাবেই প্রেরণা দিতে শুরু করে। দেখতাম মা ভোরবেলা ডেকে রেওয়াজ করতে বলতো, গরম পানি করে দিত ইত্যাদি। বলা যায় মা নিজের থেকেই আমাকে একটা সংগীতের পরিবেশ তৈরি করে দিতেন, তাই প্রেরণা হিসেবে মায়ের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। এছাড়া আমার সঙ্গীতগুরুসহ শ্রোতামন্ডলীদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।
কণ্ঠশিল্পী বারী দেওয়ান হৃদয় বর্তমানে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলের একজন গ্র্যান্ড পিয়ানো বাদক হিসেবে কর্মরত আছেন।
সবাইকে ভালোবাসা ও তার শুভেচ্ছা জানিয়ে ‘সঙ্গীতাঙ্গন’কে ধন্যবাদ জানান। এবং ‘সঙ্গীতাঙ্গন’ এর পক্ষ থেকেও রইলো শিল্পীসহ সবার প্রতি সঙ্গীতীয় ভালোবাসা।
আজ ১৯ নভেম্বর ২০২০ বৃহস্পতিবার, রাত ৯টায়…সঙ্গীতাঙ্গন পত্রিকা আয়োজিত একক সঙ্গীত সন্ধ্যা’য়…আপনাদের গান ও পিয়ানো’তে মাতিয়ে রাখবেন তরুন প্রতিভাবান কণ্ঠশিল্পী বারী দেওয়ান হৃদয়…আপনাদের সবাইকে আমন্ত্রন…সংস্কৃতি ও সঙ্গীতাঙ্গন এর সাথে থাকুন…