– মোঃ মোশারফ হোসেন মুন্না।
কিশোর বয়স থেকেই স্বপ্ন বুনছিলেন সঙ্গীতের জাদুকর শিল্পী আইয়ুব বাচ্চু। পরিবারের তেমন কেউ গানের সঙ্গে না থাকলেও শৈশব থেকেই গানের প্রতি তাঁর ঝোঁক ছিল। আধুনিক-লোকগীতি ও ক্লাসিক্যালের পাশাপাশি শুনতেন প্রচুর ওয়েস্টার্ন গান। ব্যান্ড কিংবা গিটার- দুটোতেই তিনি ছিলেন কিংবদন্তি। তাকে বলা হয়, বাংলাদেশের ব্যান্ড সঙ্গীত এগিয়ে নেয়ার অন্যতম অগ্রপথিক। বাচ্চু মানেই উন্মাতাল ভক্তে পরিপূর্ণ গ্যালারি। অথচ মাত্র ৫৬ বছর বয়সেই সবাইকে ছেড়ে চলে গেলেন রুপালি গিটার, মায়াবি সকালের মায়া। দেশীয় ব্যান্ড সঙ্গীতের তিনি মধ্যমণি। সেই রক লিজেন্ডার এর সাথে কথা হলো রমজানের ১৪তম রোজার দিন। তবে এই বছর না। ২০১৮ সালের ১৪তম রোজার দিন। আইয়ুব বাচ্চুকে ফোন করি সঙ্গীতাঙ্গন পত্রিকা থেকে।
সঙ্গীতাঙ্গনঃ আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া। কেমন আছেন ?
আইয়ুব বাচ্চুঃ জ্বি মোশারফ, ভালো আছি। তোমরা কেমন আছো ? আহসান সবাই ভালো তো ?
সঙ্গীতাঙ্গনঃ জ্বি ভাইয়া সবাই ভালো।
আইয়ুব বাচ্চুঃ তো কি মনে করে মোশারফ ? কিছু জানতে চাও ?
সঙ্গীতাঙ্গনঃ জ্বি ভাইয়া, ঈদে কোন গান কি আপনার ভক্তের জন্য করবেন কিনা তা জানতে।
আইয়ুব বাচ্চুঃ (দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে) নাহ্ রে ভাই! গান তো কতই করছি। রমজানে আর গান নয়। এবার জীবনের একটা বড় রদ ভাঙ্গবো। আমার মনে নেই কখনো ইফতার করছি কি না। তবে এবার একটা টিভি অনুষ্ঠানের ইফতার পার্টিতে যাবো। হয়তো ছোট বেলা আব্বার সাথে নামাজ পড়া হইছে। ইফতার করা হইছে। তারপর আর কখনো এই সৌভাগ্য হইনি। তাই এবার কোন সঙ্গীত না শুধু রমজানের সম্মান দেখিয়ে শেষ করবো এই সময়টা। কে জানে আবার সামনে বছর পাবো কি না। তবে ঈদের পর কিছু কাজ করার পরিকল্পনা আছে।
এই কথাগুলো আইয়ুব বাচ্চু বলেছিলো ২০১৮ সালে। ঠিকই আজ আমাদেরকে বিদায় জানিয়ে চলে গেলেন। আমারা পারবো না আইয়ুব বাচ্চুর অবদানের কথা ভুলতে। এ রক লিজেন্ডের গড়ে তোলা ব্যান্ড এলআরবি পথচলার পার করেছে ২৭ বছর। শ্রোতাদের দিয়েছেন তিনি অসংখ্য জনপ্রিয় গান। তাঁর জনপ্রিয় গান রুপালি গিটার ফেলে সত্যি চলে গেলেন দূরের বহুদূরে। সুখের পৃথিবীতে তাকে আর করতে হল না সুখের অভিনয়।
১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বাচ্চু। সেখানেই কেটেছে কৈশোর আর তারুণ্যের দিনগুলো। তার ডাক নাম ছিল রবিন।
এক সাক্ষাৎকারে বাচ্চু বলেছিলেন, ছেলেবেলায় গান শুনতে শুনতে নিজে চেষ্টা করতে গিয়েই তার গায়ক হয়ে ওঠা। পশ্চিমা সঙ্গীতের প্রেমে পড়ে হাত দেন গিটারে। জিমি হেন্ডরিক্স, জো স্যাটরিনি, স্টিভ মুরের মতো শিল্পীদের কাজ থেকে পেয়েছেন অনুপ্রেরণা।
কলেজে পড়ার সময় বন্ধুদের নিয়ে বাচ্চু গড়ে তোলেন একটি ব্যান্ড দল। শুরুতে গোল্ডেন বয়েজ নাম দিলেও পরে বদলে রাখা হয় আগলি বয়েজ। পাড়া-মহল্লার বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে চলতো তাদের পরিবেশনা। পেশাদার ব্যান্ডশিল্পী হিসেবে বাচ্চুর ক্যারিয়ার শুরু ১৯৭৮ সালে। ব্যান্ড দলে ফিলিংসের সঙ্গে সেই সময় চট্টগ্রামের বিভিন্ন অভিজাত হোটেলে পারফর্ম করতেন তিনি। দু’বছরের মাথায় যোগ দেন জনপ্রিয় ব্যান্ড দল সোলসে। টানা ১০ বছর সোলসের লিড গিটার বাজানোর পর ১৯৯১ সালের ৫ এপ্রিল আইয়ুব বাচ্চু গড়ে তোলেন নতুন ব্যান্ড এলআরবি। সেই সময় তার সঙ্গী ছিলেন জয়, স্বপন আর এসআই টুটুল। শুরুতে এলআরবির পুরো নামটি ছিল লিটল রিভার ব্যান্ড, পরে তা বদলে নাম হয়- লাভ রানস ব্লাইন্ড। এলআরবির প্রথম কনসার্ট হয়েছিল ঢাকার একটি ক্লাবে। সেখানে ইংরেজি গানই পরিবেশন করেছিলেন তারা। কিছু দিন পর ঢাকা শিশু একাডেমিতে এক কনসার্টে প্রথমবারের মতো ক্লাব বা হোটেলের বাইরে দর্শকদের সামনে আসে এলআরবি।
১৯৯২ সালে দলের নামেই বাজারে আসে এলআরবির জোড়া এ্যালবাম এলআরবি-১ ও ২। এর পর গত ২৭ বছরে সুখ, তবুও, ঘুমন্ত শহরে, স্বপ্ন, ফেরারী মন, বিস্ময়, যুদ্ধ, স্পর্শসহ ১৪টি এ্যালবাম শ্রোতাদের সামনে এনেছে এলআরবি।
আজকের এই দিনে চলে যাওয়া বাচ্চুর জন্য দোয়া, আল্লাহ্ তাকে ভালো রাখুক।
কিংবদন্তী সঙ্গীতশিল্পী আইয়ুব বাচ্চু’র মৃত্যুবার্ষিকীতে সঙ্গীতাঙ্গন এর পরিবেশনা…
কিংবদন্তী সঙ্গীতশিল্পী আইয়ুব বাচ্চু স্মরণে…
সঙ্গীতজ্ঞ প্রফেসর রীনাত ফওজিয়া’র শ্র্দ্ধাঞ্জলি…
ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক – শিউলী ভট্টাচার্য…
It’s a pity you don’t have a donate button! I’d definitely donate to this brilliant blog!
I suppose for now i’ll settle for bookmarking and adding your RSS feed to my Google account.
I look forward to brand new updates and will talk about this blog with my
Facebook group. Talk soon!
my page; buy