– মোশারফ হোসেন মুন্না।
সুর, তাল, লয় এই তিন মিলিয়ে মনের ভাব প্রকাশ করাকেই গান বলা হয়। এ গুলোর মধ্যে পালাগান ও কিচ্ছা-কাহিনী বাংলার লোকসঙ্গীতের জনপ্রিয় ধারা হিসেবে তার অস্তিত্ব দৃঢ়ভাবে বজায় রেখেছিল। ফরিদপুরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলাতে এই কিচ্ছাপালা ছিল চোঁখে পড়ার মত। কিন্তু কালের পরিক্রমায় এই কিচ্ছাপালা দিন দিন তার জৌলুস হারাচ্ছে সাংস্কৃতিক পরিমন্ডল থেকে।
জানা যায়, গুরুশিষ্য, গুণাইবিবি, রহিম-রূপবাণ, মহুয়াসুন্দরী, নারী-পুরুষ, কমলার বনবাস প্রভৃত পালাগানের সৃষ্টি বাংলার ঐতিহ্যবাহী জেলা ফরিদপুরে। এ অঞ্চলের মানুষের ফসল ঘরে তুলার পর সারা নদী-নালা, খাল-বিল ভরে যায় পানিতে। বর্ষায় কোন কাজ না থাকায় জেলার বিভিন্ন উপজেলাতে মানুষেরা হয়ে যায় আবেগপূর্ণ। সেই আবেগকে কেন্দ্র করেই জেলার বিভিন্ন এলাকায় কিচ্ছা পালার জমজমাট আসর বসত। শুধু তাই নয় জারি, সারি, ঘাটু গানেরও বসত বিরাট আসর। বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ সকলে মিলে শ্রবণ করত এই কিচ্ছা পালা। কিন্তু কালের পরিক্রমায় এখন তা হারিয়ে যেতে বসেছে। ডিজিটাল যুগে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে বিলুপ্তপ্রায় গ্রামাঞ্চলের লোকসংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখার দাবী সাধারণ মানুষের। এদিকে কিচ্ছাপালা আগের মত এখন আর অনুষ্ঠিত হয়না। কিন্তু এই লোকজ সংস্কৃতিকে ধরে রাখার কথা বলেন বয়াতিরা। কিন্তু কে ধরবে তার হাল ? বর্তমানে ডিজিটাল সংস্কৃতির এই যুগে বিলুপ্তপ্রায় বাংলার লোকসংস্কৃতি তৃণমূল পর্যায় থেকে শুরু করে এগুলোকে ধরে রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন বিভিন্ন শিল্পীগোষ্ঠীর বয়াতি ও বাউলগণ।
আমরা কি পেয়ে কি হারালাম ? আমরা যাকে দিয়ে যা পেলাম, তাহলো ভাই এর মুখ দেখতে গিয়ে মা হারালাম। এমনই মন্তব্য করেন বাউল কিচ্ছা কাহিনির শিল্পী গন। এক সময় গ্রামীন জীবনের রস ছিলো এই গানে। আজ কোথায় হারিয়ে গেলো। আজ তো সেই আগের মতো শুনিনা রহিম রুপবানের গানের সুর। আজ তো আর শুনা যায় না ভাউয়াইয়া, ভাটিয়ালী গান। তবে কি শিকর গুলো ছাড়াই আজ বৃক্ষ বেচে থাকতে পারার মতো সক্ষমতা তৈরি করে ফেলেছে? আজ কি আর গুনাই বিবির গান শুনে কাঁদার মানুষ নাই ? প্রশ্ন রইলো দেশ ও দশের কাছে। আমরা সব ভুলে গেলেও দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ভুলতে পারিনা। তাহলে যে মাতৃহারা সন্তানের মতো হয়ে যাবো।
আসুন আমরা ফিরিয়ে আনি আমাদের অতীত জীবনের রসালো বিনোদনকে। সঙ্গীতাঙ্গন সঙ্গীতের প্রতিটি শাখার প্রতিটি বিষয় নিয়ে ভাবে। তাদের কথা সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে চায়। আমাদের সাথে আপনারাও বলেন দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি বিনোদনের ভাবমূর্তি তাতেই ঠিকে আছি আমরা ও আমাদের প্রযুক্তি। সঙ্গীতাঙ্গন এর পক্ষ থেকে জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও নতুন বছরের শুভেচ্ছা শুভ নববর্ষ।