– মোশারফ হোসেন মুন্না।
সব গান যে আমাদের ভাল লাগে এমনটা নয়। কিছু ভাল লাগে, কিছু লাগেনা। যেমন, আপনি যখন আপনার প্রেমিক প্রেমিকার কথা ভাবেন, তখন আপনার রোমান্টিক গান ভাল লাগবে। অর্থাৎ, গান আমাদের অবস্থার সাথে সম্পর্কিত। দুঃখের সময় যেমন ডিজে টাইপ গান কারোরই ভাল লাগেনা, তেমনি কোন পার্টিতে রবীন্দ্র সঙ্গীতও কারো ভাল লাগেনা। অর্থাৎ, যে গান আমাদের মনের অবস্থাটা সবচেয়ে সুন্দরভাবে ব্যক্ত করে, আমরা সে গানই পছন্দ করি।
প্রত্যেকের জীবনে প্রায়শই এমনটা হয় যে, তারা হয়তো কোন গান শুনেছেন, আর সারাদিন সেটা তাদের কানে বাজছে। সারাদিন নিজের অজান্তেই আপনি সেই গানটা গুনগুন করে গাইতেই থাকেন। সেটা আর মগজ থেকে বেরোতে চায় না।
এমন ঘটনা পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের ক্ষেত্রেই হয়। কোন একটি গান হয়তো শোনার সাথে সাথেই সেটা স্মৃতিতে গেঁথে যায়।
এই গানের ধুন বা সুর এতোটাই আকর্ষণীয় যে কখন ওই গানটা মুখে ফুটে বেরিয়ে আসে সেটা আপনি খেয়ালও করেন না। তাহলে আদর্শ গান তো সেটাই। যা আমার অনিচ্ছায় মুখ থেকে বেরিয়ে আসে। গুন গুন করে গাইতে চায়। কয়েক-ঘণ্টা অবধি, আবার অনেকের ক্ষেত্রে সারাদিন জুড়ে ওই গানটি মাথায় বাজতেই থাকে। বারবার ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করেও যেন লাভ হয় না। কেন এই গানগুলো আমাদের এতোটা প্রভাবিত করে ? যেসব গানের মেলোডি বা সুরের গঠন খুব সহজ-সরল, অর্থাৎ যে গানগুলোর তাল-লয় অথবা সুরের উত্থান-পতনের একটি সাধারণ প্যাটার্ন থাকে, সেগুলো আমাদের মস্তিষ্ক সহজেই গেঁথে নেয়। এই বিষয়টিকে সঙ্গীতের ভাষায় বলা হয় “মেলোডিক আর্কস”। অর্থাৎ একটা সুরের বৃত্তে বাঁধা পড়া। শিশুদের নার্সারি রাইম বা ছড়া গানগুলো মেলোডিক আর্কসের একটা উৎকৃষ্ট উদাহরণ হতে পারে। যেমন “টুইঙ্কল, টুইঙ্কল, লিটল স্টার”, এই রাইমটি ছেলে বুড়ো সবারই মনে আছে। কারণ এর সুরের গাঁথুনি খুব সাবলীল।
একইভাবে বিভিন্ন পপ গান বা পুরোনো কোন ক্লাসিক্যাল গান এই মেলোডিক আর্কসের বৈশিষ্ট্য যুক্ত হতে পারে। চলুন আমরা মন ভালো করার গান শুনি।
মন খারাপের সময়ে আপন হয়ে যাওয়া ৩০টি বাংলা গান।
১. আমার পথচলা (আর্টসেল) – একজন নি:সঙ্গ যুবকের মনের জমে থাকা অনেক কষ্টের কথা বলে যায় এই গান।
২. অনন্যা (জেমস) – ‘অনন্যা’ নামের এক মেয়ের জন্য একলা বসে থেকে আর্তনাদ করা এক যুবকের গান এটি। দরকার হলে ‘অনন্যা’ নামটির জায়গায় নিজের মনের কোন নাম দিয়ে দিতে পারেন।
৩. এত কষ্ট কেনো ভালোবাসায় (হাসান) – বিশ্বাস করুন আমার কাছে হাসানের এই একটি গান অসাধারণ লাগে। প্রিয় মানুষকে হারিয়ে খুব কষ্টে বুকফাটা চিৎকার করে গেয়ে উঠা একটি গান।
৪. চলো বদলে যাই (আইয়ুব বাচ্চু) – সেই মেয়েটি অনেক অচেনা লাগছে আজ। তারপরও কেন বুঝছে তুমি ছাড়া আমি খুব অসহায়।
৫. ধূসর সময় (আর্টসেল) – মেয়েটিকে নিয়ে ছেলেটি অনেক স্বপ্ন দেখেছিলো। সেই ভেঙ্গে যাওয়া স্বপ্নের স্মৃতিচারণ করে যাচ্ছে আজ।
৬. দু:খ-বিলাস (আর্টসেল) – চলে গেলে সেই প্রেমিকার ভালোবাসা কি আর ফিরে পাওয়া যায় ?? তারপরও সেই খুঁজে যাওয়া।
৭. হতেও পারে এই দেখা শেষ দেখা (জেমস) – হতে পারে ছেলেটি খুব কষ্ট পেয়ে কিছু একটা করতে যাচ্ছে। হয়তো শেষ সময়ে শেষ দেখা করতে এসে নিজের শেষ গানটি গেয়ে যাচ্ছে।
৮. ঘুম (অর্থহীন) – নির্ঘুম রাত কাটে এখন। অনেক কথা মনে পড়ে যায় রাতে একলা একলা। সেই না বলা কথাগুলো এখন বলে যাচ্ছি আমি।
৯. ঘুমিয়ে গেছে সবাই (এস.আই.টুটুল) – ঘুমিয়ে গেছে পৃথিবীর সব মানুষ। একজন এখন শুধুই একলা জেগে আছে। অনেক কিছু মনে পড়ছে এই রাতে। তার সেই কষ্টের অনেক কথা।
১০. হাসিমুখ (শিরোনামহীন) – আর কখনো তাকে পাওয়া হবে না। কিন্তু মনে একটা আশা ছেলেটির মেয়েটি হয়তো পথে চেয়ে থাকতে পারে তার জন্য। তাই সে এখন একলা হেটে চলছে বহুদূরের পথে।
১১. যত দূরে (ওয়ারফেজ) – সে চলে গেলেও ছেলেটি হঠাৎ হঠাৎ করে নিজের ছায়া হিসেবে তাকে দেখতে পায় এখনো। তাই তো মেয়েটিকে বলে যাচ্ছে তুমি আমার থেকে যতদুরেই চলে যাওনা কেন তুমি সবসময় আমারই রবে।
১২. নিকষ কালো এই আধারে (পেপার রেইম) – শুনেছি এই গানটির পিছনে খুব সত্য করুণ একটি ইতিহাস আছে। মেয়েটি চলে গেছে অনেক একা ফেলে। কিন্তু ছেলেটি এখনও ভুলেনি কিছু। তার বিশ্বাস মেয়েটি অবশ্যই ফিরে আসবে তার কাছে একসময়।
১৩. অবাক ভালোবাসা (ওয়ারফেজ) – ভালোবাসা হারিয়ে গেলে তখন মনে হয় সেটিকে একেবারেই অন্যরকম মনে হয়। অবাক ভালোবাসা তখন মনে হয় একেই বলে।
১৪. আকাশ কাঁদে বাতাস কাঁদে (আইয়ুব বাচ্চু) – প্রচন্ড দু:খ এই মনে। সেই সময়ে মনে হচ্ছে সবকিছু কাঁদছে আমার সাথে। তারপরও তোমাকে খুঁজে চলছি।
১৫. আজ আমার মন ভালো নেই (সানি জুবায়ের) – আজ আমার মনটা ভালো নেই। বিশ্বাস করো তুমি আজ আমার মনটা একেবারেই ভালো নেই।
১৬. এখনো অনেক রাত (আইয়ুব বাচ্চু) – অনেক রাত হয়ে আছে এখন। খোলা জানালার পাশে বসে শুধু তোমার স্মৃতি ভেবে নেয়ার সময় এখন।
১৭. এই বৃষ্টি ভেজা রাতে (আর্টসেল) – প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছে এই রাতের বেলা। মনটা ভালো নেই আমার। শুধুই তোমার কথা মনে পড়ছে এখন আমার।
১৮. এপিটাফ (অর্থহীন) – আবারো সেই বৃষ্টির দিন আজ। মনের ক্যানভাসে থাকা তোমার ছবিটা আজ ভেসে উঠেছে। আবার অনেক পড়ছে তোমাকে।
১৯. ফেরারি এই মনটা আমার (আইয়ুব বাচ্চু) – মনকে অনেক বুঝিয়েছি তুমি আর আসবে না। কিন্তু আমার এই মনটা যেন কিছুতেই তা মানছে না।
২০. হৃদয়হীনা (মাইলস) – একবারে সত্যি কথা। মেয়েরা আসলেই হৃদয়হীনা। তারপরও কেন মন তাদের জন্য কেঁদে যাচ্ছে ?? তাদের কি কখনো আমার কথা মনে পড়ে ?
২১. যেদিন বন্ধু চলে যাবো (জেমস) – জানি তুমি শুনছো না। তারপরও বলছি একটি ছেলে চলে যেতে পারে যেকোন দিন। মনে রেখো সে শুধু তোমাকেই ভালোবাসতো।
২২. তুমি আমার ঘুম (সৈনিক) – তুমি আমার সব মনের কথা। কিন্তু তোমার কথা আমি একেবারেই ভাবছি না। কিন্তু বিশ্বাস করো তুমিই আমার সব।
২৩. এতটা ভালোবাসি (রিকল) – সময় এখন নিঝুম রাত। সবকিছু একেবারেই নিশ্চুপ হয়ে আছে। আমি শুধু জেগে রয়েছি তোমাকে কিছু বলার জন্য।
২৪. সাগর ও একটি ছেলে (অর্থহীন) – সাগরের পাশে রয়েছে একটি ছেলে। সেই ছেলেটির মনে অনেক কথা জমে আছে একটি মেয়ের জন্য। চোখে পানি নিয়েই সে বলার চেষ্টা করতো সেই কথাগুলো।
২৫. সুনীল-বরুণা (মাহাদী) – তুমি নিজেকেই যাই ভাবো না কেন মেয়ে…তোমার যাই হয়ে যাও না কেন আমি তোমার পাশেই আছি সবসময়। আমাকে তুমি কখনো ভুলতে পারবে না।
২৬. স্বরলতার প্রতিমা (খালিদ) – একটি কারণে শুধুই আমার নিজের গান এটা। কিছু বলতে ইচ্ছে করছে না তাই।
২৭. তারা ভরা রাতে (আইয়ুব বাচ্চু) – তারা ভরা রাত ছিলো সেদিন। বিশ্বাস করো অনেক চেষ্টা করেছি আমি। কিন্তু তোমাকে আমি সেদিন বুঝাতে পারিনি আমার কথা।
২৮. তোমার জন্য (অর্ণব) – তোমাকে ভেবেই আমার সবকিছু। তোমার জন্যই আমার এই গান।
২৯. ভালোবেসে চলে যেও না (জেমস) – তুমি চলে গেলে। কিন্তু যানতে না তুমি ভালোবেসে চলে যেতে হয় না কখনো। তুমি জানতে না কথাটা।