– মোঃ মোশারফ হোসেন মুন্না।
রহিম নেওয়াজ পরিচালিত মনের মত বউ ছবির একটি গান ‘একি সোনার আলোয়’। এ গানের শিল্পী সাবিনা ইয়াসমীন তার জীবনের স্মৃতিচারণায় মজার একটা ঘটনা বলেন। তিনি বলেন এ গানটি তো একটি ইতিহাস। আমার জীবনে যত অনুষ্ঠান করেছি, প্রায় সবগুলোতেই এ গানটি আমাকে গাইতেই হয়। প্রথম এই গানটি যখন আমি গাই, তখন আমার বয়স অনেক কম। ইতিমধ্যেই খান আতাউর রহমান, আলতাফ মাহমুদের সুরে আমি চলচ্চিত্রে বেশ কিছু গান গেয়ে ফেলেছি। গানের অনেকগুলো বিষয় এই দু’জনার কাছ থেকে আমি শিখেছি। বিশেষ করে আতা ভাইয়ের কাছে শিখেছি শব্দের উচ্চারণ, গায়কি-এগুলো। ‘একি সোনার আলোয়’ গানটি লাইভ রেকর্ডিং, এফডিসিতে করা। আমার এখনো স্পষ্ট মনে আছে, গানটি গেয়ে যখন আমি বেরিয়ে এলাম, তখন আতা ভাই কেঁদে ফেললেন। তাঁর কান্না দেখে আমিও কেঁদে ফেলি। কাঁদতে কাঁদতে বলি, আমি বোধ হয় ভালো গাইতে পারিনি।
তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন, “রোজী তুই অসাধারণ গেয়েছিস”। রোজী ছিল আমার ডাকনাম। ছবিতে গানটি দুবার ব্যবহার করা হয়। একবার সুচন্দার লিপে, একবার সুলতানা জামানের লিপে। তবে এই গানের পেছনে যে ঘটনাটা কেউ জানে না, সেটাই বলি। গানটি গাওয়ার কয়েক দিন পর আবার এফডিসিতে গিয়েছি অন্য একটি ছবির গান গাইতে। পাশেই তখন এই গানটির শুটিং হচ্ছিল। হঠাৎ আমাকে সেখানে ডেকে নিয়ে গেলেন আতা ভাই। বললেন, গানটির যন্ত্রানুষঙ্গে পিয়ানোর যে পিস আছে, সেটা ছবিতে আমাকেই বাজাতে হবে। শুনে আমি তো অবাক। বললাম, আমি তো পিয়ানো বাজাই না। তিনি বললেন, ‘ছবির নায়িকা গানের শিল্পী নয়, সে বাজালে রিয়েলিস্টিক মনে হবে না। বরং তুই বাজালেই সত্যিকারের মনে হবে।’ আমি আতা ভাইয়ের কথা ফেলতে পারলাম না। তখন আমার দুটো হাত মেকআপ করানো হলো। ছবির ধারাবাহিকতার জন্য নায়িকা সুলতানা জামানের আঙুল থেকে আংটি খুলে আমার আঙুলে পরানো হলো। এবং আমার পিয়ানো বাজানো ধারণ করা হলো। ছবিতে পিয়ানো বাজাতে দর্শক যে দুটি হাত দেখেন, তা আমারই। এই বিষয়টা আমার একটি নতুন অভিজ্ঞতা। খুব এনজয় করেছিলাম সেই মুহুর্তটা। কিন্তু আজ তো আতা ভাই নেই, দোয়া করি তিনি স্বর্গীয় হোক। নতুন একটি মজার ঘটনা আমাদের শেয়ার করার জন্য শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিনকে ধন্যবাদ জানাই। তার জন্য শুভ কামনা। আরো ভাল ভাল গান আমাদের সবাইকে উপহার দেবেন আশা রাখি।