– মোশারফ হোসেন মুন্না।
মাইকেল জ্যাকসন কি সত্যিই পেডোফিল ছিলেন ? ২০০৫ সালের মামলায় সাক্ষ্যপ্রমাণ হিসেবে যে সব ফটো ইত্যাদি পেশ করা হয়েছিল, তা থেকে এমন মনে হওয়া সম্ভব৷ জ্যাকসনের পরিবারের সদস্যরা অবশ্য তা অস্বীকার করছেন।
দৃশ্যত মাইকেল জ্যাকসনের কাছে পর্নোগ্রাফি, জীবজন্তুদের উপর নিপীড়ন, স্যাডো-ম্যাসোকিজম আর শিশুদের উপর অত্যাচার সংক্রান্ত মিডিয়ার এক বিশাল সংগ্রহ ছিল। এ খবর দিয়েছে রাডার অনলাইন নামের এক এন্টারটেনমেন্ট ম্যাগাজিন৷ ওয়েবসাইটটিতে সান্টা বারবারা কাউন্টি শেরিফ-এর ডিপার্টমেন্টের নথিপত্রের উল্লেখ করা হয়েছে। এই সব নথিপত্র নাকি ২০০৫ সালে জ্যাকসনের বিরুদ্ধে শিশু নিপীড়ন মামলার শুনানিতে পেশ করা হয়েছিল। পরে সেই নথিপত্র আর প্রকাশ করা হয়নি।
পুলিশ বিভাগের এক তদন্তকারী নাকি রাডার অনলাইনকে বলেছেন যে, এই নথিপত্র থেকে জ্যাকসনের এক অন্ধকার ও ভীতিকর ছবি ফুটে ওঠে।….এই সব নথিপত্র জ্যাকসনকে একজন সুনিপুণ, মাদক ও যৌনতায় আসক্ত শিকারি হিসেবে তুলে ধরে, যিনি পশুহত্যার রক্তাক্ত, যৌন উদ্দীপনাময় ছবি ও প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে বিকৃত যৌন সম্পর্কের ছবি দেখিয়ে শিশুদের নিজের বশে আনতেন। ২০০৯ সালের ২৫শে জুন ‘কিং অফ পপ’ মাইকেল জ্যাকসনের মৃত্যুসংবাদ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। অথচ তার ঠিক কিছুদিন আগেই ‘দিস ইজ ইট’ নামের বেশ কয়েকটি কনসার্ট করার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। পপ সঙ্গীতের ইতিহাসে জ্যাকসন সূচনা করেছিলেন এক নতুন অধ্যায়। সারা জীবনে ৭৫ কোটিরও বেশি এ্যালবাম বিক্রি হয় তাঁর। ২০০৫ সালের তদন্ত চলার সময় নাকি লিখিত কাগজপত্র, দিনপঞ্জি, ফটো, অডিওটেপ ও ৮০টির বেশি ভিডিও রেকর্ডিং বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। জ্যাকসনের বিরুদ্ধে শিশু নিপীড়নের অভিযোগ এনেছিল গ্যাভিন আর্ভিজো নামের এক ১৩ বছরের কিশোর। ১৪ সপ্তাহ ধরে শুনানি চলার পর জ্যাকসনের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
জ্যাকসনের এস্টেট ও পরিবার রাডার অনলাইনের রিপোর্টের তীব্র সমালোচনা করেছেন। যারা এখনও এভাবে ‘নোংরা ইন্টারনেট ক্লিক-এর টোপ ফেলে’ মাইকেলের নাম থেকে পয়সা বের করার চেষ্টা করছে, তারা ভুলে যাচ্ছে যে জুরি ১৪টি অভিযোগের প্রত্যেকটি অভিযোগে জ্যাকসনকে নির্দোষ সাব্যস্ত করেছিল – জ্যাকসনের এস্টেটের তরফ থেকে একটি বিবৃতিতে বলা হয়।
ভারতের জাতীয় ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশের অর্ধেকেরও বেশি বাচ্চা যৌন নিগ্রহের শিকার। তবে সবচেয়ে ভয়ংকর সত্য হলো, নাবালিকা বা শিশুর ওপর যৌন হেনস্থার ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটছে পরিবারের মধ্যে, পরিবারেরই কোনো মানসিক বিকারগ্রস্ত সদস্যের হাতে। তাই সে সব ঘটনা পুলিশের কাছে পৌঁছাচ্ছে না, হচ্ছে না কোনো ডাইরি অথবা মামলা। ৯ বছর আগে ২৫শে জুন, বিংশ শতাব্দির সাড়া জাগানো সঙ্গীত তারকা ‘দ্য কিং অফ পপ’ মাইকেল জ্যাকসন চির বিদায় নেন। পপ সঙ্গীতের ইতিহাসে তিনি সূচনা করেছিলেন এক নতুন অধ্যায়। শিল্পীর চেতনা শুধু গভীর নয়, হয় গভীরতর। মাইকেল জ্যাকসন কেন তাঁর সন্তানদের মুখোশ পরতে বাধ্য করতেন তা বোঝা গেল জ্যাকসনের মৃত্যুর অনেক দিন পরে। সেটা বুঝেছে জ্যাকসনের কিশোরী কন্যা প্যারিস।
মাইকেল জ্যাকসন মারা গেছেন প্রায় ১১ বছর। জীবনের শেষ কয়েকটা দিন তিনি যে বাড়িতে কাটিয়েছেন সেখানকার বেশ কিছু জিনিসপত্র নিলামে উঠছিল। ১২-১২-২০১১ সালে। বেভারলি হিলসে এই নিলাম হয়। এর মধ্য ছিল পেইন্টিংস, ফার্নিচার আর অলংকার। তার জন্মবার্ষিকীতে তার স্মৃতিচারণায় সঙ্গীতাঙ্গন।