– মোঃ মোশারফ হোসেন মুন্না।
ভালবাসা আর সাধনা দিয়ে যিনি আমাদের বাংলা সঙ্গীতকে সঙ্গীতের এই অসময়েও সারা পৃথিবীর সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন তিনি শওকত আলী ইমন। তার প্রতিভার আলোয়, সুরের আলোয় আলোকিত এখন সুরের ভুবন। গত কয়েক বছরে বাংলা চলচ্চিত্রের বাণিজ্যিক এবং সফল গানের সঙ্গীত পরিচালক শওকত আলী ইমন।
আজ আমাদের প্রিয় সঙ্গীতপরিচালক শওকত আলী ইমন এর শুভ জন্মদিন।
শওকত আলী ইমনের জন্মস্থান ঢাকায়। কিন্তু পৈতৃক নিবাস মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইরে। সঙ্গীত জীবনটা বলতে গেলে উত্তরাধীকার সূত্রে পাওয়া। মা মুসলিমা বেগম ছিলেন জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী। তার দুই বোন আবিদা সুলতানা ও রেবেকা সুলতানা বাংলাদেশের স্বনামধন্য সঙ্গীত শিল্পী। দেশে-বিদেশে সব জায়গায় শওকত আলী ইমনের জনপ্রিয়তা আকাশ চুম্বি। লক্ষ ভক্তের নয়ন মণি সঙ্গীত পরিচালক ইমন।
জন্মদিন উপলক্ষ্যে তার সাথে কথা হলো সঙ্গীতাঙ্গনের। জন্মদিন বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জন্মদিন এখন আর করিনা। আর এখন করোনা মহামারির সময়ে সারা বিশ্ব ভারাক্রান্ত। এক সময় ছোটবেলা করতাম। এখন শুধু বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে আড্ডা দেই। খাওয়া দাওয়া করি আর এসবেই আমি আনন্দ খুজে পাই। জানতে চাইলাম জন্মদিনে কেউ যখন শুভেচ্ছা জানায় তখন কেমন অনুভুতি হয়? সে বিষয়ে ইমন হেসে দিয়ে বলেন যে, দেশ বিদেশে আমার কোটি কোটি ভক্ত। তারা আমাকে ফোন করে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানায়। তখন আমার মনে হয় যে দর্শক আমাকে ভালোবাসে। সবচাইতে ভালো লাগে জন্মদিনের এই বিষয়টা। আর বন্ধুদের নিয়ে বাইরে খাওয়া-দাওয়া এটাও বেশ ভালো লাগে। সঙ্গীত জগতে পর্দাপন কিভাবে? জবাবে বলেন আমার পুরো পরিবার সঙ্গীত জগতের মানুষ। সেই সুত্রে আমিও এক সময় রক্তের টানে সঙ্গীতের একজন হয়ে যাই।
সুরকার, গীতিকার ও সঙ্গীত পরিচালক আবার গায়করূপেও নাম আছে তার। ২০০৮ সালে গায়ক হিসেবে ‘এখনো খুঁজি’ একটি এ্যালবামে কন্ঠ দেন তিনি। এই এ্যালবামের সুরকার, গীতিকার, সঙ্গীত পরিচালক শওকত আলী ইমন নিজেই। তিনি জানান যে এই পর্যন্ত প্রায় ৪০০টি চলচ্চিত্রের গানে কাজ আমি করেছি। ৪০০ চলচ্চিত্রে গান হবে প্রায় ২৫০০ মতো। এবং সলো গান করেছি প্রায় ৪০০০-৪৫০০ মতো। সুনামধন্য এই অলরাউন্ডার সঙ্গীত পরিচালক ইমন সঙ্গীত জীবনের যাত্রা শুরু করেছিলেন ১৯৯৬ সালের রুটি চলচ্চিত্রের মাধ্যেমে। সেই চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালক ছিল ইমন। মাঝখানে ৪-৫ বছর চলচ্চিত্রের অস্বাভাবিক পরিস্থিতির কারণে তার সঙ্গীত পরিচালনা বন্ধ রাখেন। কিন্তু সুষ্ঠ ধারার চলচ্চিত্র যখন ফিরে আসে তখন ২০০৭ সাল। ‘এক টাকার বউ’ চলচ্চিত্রের মাধ্যেমে ধুমধামে কাজ শুরু করেন ইমন। জানা যায় তার সুরে কন্ঠ দিয়ে সঙ্গীত জীবন শুরু করেছেন জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী আসিফ আকবর, দিনাত জাহান মুন্নি, তাসিফ সহ আরো অনেকে। ইন্ডিয়াতেও আছে তার অনেক জনপ্রিয়তা। কলকাতায় ১২টি চলচ্চিত্রের কাজ করেছেন ইমন। সেখানে তার গানে কন্ঠ দিয়েছেন জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী কুমার শানু, অলকা ইয়াগনিক, সাধনা সরগম, বাবুল সুপ্রিয়, সনু নিগম,শান সহ অনেকে। এছাড়াও ২০১৩ সালে শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে পুরুস্কারে ভূষিত হন পূর্ণদৈর্ঘ ‘প্রেম কাহিনী’ চলচ্চিত্রে। তার সঙ্গীতে সুরে, ও গানে মুক্তি প্রাপ্ত কিছু উল্ল্যেখ্য যোগ্যো চলচ্চিত্র হলো রুটি, লাঠি, মগের মুল্লুক, গুন্ডা নাম্বার ওয়ান, মনে পড়ে তোমাকে, বিচ্ছু বাহিনী, মাটির ফুল, হীরা আমার নাম, অনেক দামে কেনা, মিসডকল, বিগ ব্রাদার, গেইম, ওয়ার্নিং, ব্ল্যাক মানি, লাভ ম্যারেজ, আশিকি, অগ্নি ২, অ্যাকশন জেসমিন, লাভ স্টেশন, কিস্তিমাত, অল্প অল্প প্রেমের গল্প, স্বপ্ন যে তুই, আই ডোন্ট কেয়ার, হিরো দা সুপারস্টার, তোকে ভালোবাসতেই হবে, তবুও ভালোবাসি, নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, অন্যরকম ভালোবাসা, ভালোবাসা জিন্দাবাদ, রোমিও, ডন নাম্বার ওয়ান, মোস্ট ওয়েলকাম, সে আমার মন কেড়েছে, কোটি টাকার প্রেম, পরাণ যায় জলিয়ারে, টাকার চেয়ে প্রেম বড়, রাস্তার ছেলে, শুভ বিবাহ, বলবো কথা বাসর ঘরে, আমার জান আমার প্রাণ, ১ টাকার বউ ও পূর্ণদৈর্ঘ প্রেম কাহিনী সহ আরো অনেক চলচ্চিত্র। এই সফল মানুষটির জন্য সঙ্গীতাঙ্গনের পক্ষথেকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা শুভ জন্মদিন।