প্রিয় পাঠক,
অভিনন্দন এবং ভালোবাসা নিবেদন করছি আপনাদের প্রতি। সঙ্গীতাঙ্গন এর উদ্দেশ্য সবসময়ই দেশের সকল সুরকার, গীতিকার, শিল্পী এবং সব ধরনের মিউজিসিয়ানদের পাশে থেকে আমাদের দেশীয় সঙ্গীতকে অনেক দুর এগিয়ে দুর নিয়ে যেতে। আমরা চাই সঙ্গীতাঙ্গন এর মাধ্যমে যেকোনো গানের আসল স্রষ্টা সম্পর্কে জানুক। এ জন্য আমরা সব সময় আপনাদের সহযোগীতা কামনা করছি।
কারণ দেশের একাধিক চ্যানেলে এ প্রজন্মের শিল্পীরা গানটির স্রষ্টাদের নাম না বলতে পেরে সংগ্রহ বলে থাকেন। এতে গানের মূল স্রষ্টা ব্যথিত হোন, এমন অনেক অভিযোগ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। তাই একটি গানের মূল স্রষ্টাকে পাঠকদের সামনে তুলে ধরতে আমরা বহুদিন ধরেই কাজ করে যাচ্ছি, শুধুমাত্র সঙ্গীতকে ভালোবেসে। এবারের বিষয় ‘একটি গানের পিছনের গল্প’ আমাদের অনেক প্রিয় একজন সঙ্গীতপ্রেমী ভাই জনাব মীর শাহ্নেওয়াজ সঙ্গীতাঙ্গন এর মাধ্যমে জানাবেন আমাদের প্রিয় গানের পিছনের গল্প। এবং দেশের বরেণ্য সকল শ্রদ্ধাভাজন শিল্পীগন আপনারাও নিজ দায়িত্বে সঙ্গীতাঙ্গনের মাধ্যমে জানাতে পারেন আপনার নিজ সৃষ্টি অথবা আপনার প্রিয় গানের গল্প। এতে আর এ প্রজন্মের শিল্পীরা ভুল করবেন না গানের স্রষ্টাকে চিনতে।
আসুন সবাই গানের সঠিক ইতিহাস জানতে একতা গড়ি। – সম্পাদক
– তথ্য সংগ্রহে মীর শাহ্নেওয়াজ…
শিল্পীঃ এন্ড্রু কিশোর
সুরকারঃ আলম খান
গীতিকারঃ মনিরুজ্জামান মনির
ছবিঃ নাগ পূর্ণিমা
সুরকার আলম খান বলছেন গানের পিছনের গল্প।
‘তুমি যেখানে আমি সেখানে, সে কি জানো না’ গানটি নাগ পূর্ণিমা ফোক ফ্যান্টাসি ছবির। কিন্তু পরিচালক ও প্রযোজক মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা বললেন, ‘আমি একটা রক গান করতে চাই এ ছবিতে।’ সিকোয়েন্স শুনে বললাম, রক গান ছবির সঙ্গে ম্যাচ করবে না, এটি তো সাপের ছবি। তিনি বললেন, ‘আপনি ম্যাচ করাতে পারবেন বলেই তো গানটা করতে চেয়েছি।’ গীতিকার মনিরুজ্জামান মনির সেখানে উপস্থিত ছিলেন, তিনি বললেন, ‘ছবির পেক্ষাপট অনুযায়ী একটা লাইন পেয়েছি; “তুমি যেখানে আমি সেখানে সে কি জানো না”।’ মুখটা তখনই সুর করি। অন্তরার সুর পরে করা। এক্সপেরিমেন্ট করে ‘তুমি যেখানে আমি সেখানে’ গানটিতে ওয়েস্টার্ন রিদম, ড্রাম সেট দিয়ে অন্য রকম ইফেক্ট দিয়ে ব্যাকআপ তৈরি করে, খুব সিম্পল বাঁশি দিয়ে মিউজিকটি দিলাম।
বেশ চড়া সুর হলেও গানটি এন্ড্রু কিশোরকে দিয়ে গাওয়াতে হয়। কারণ, ছবির নায়ক সোহেল রানার লিপে প্রতিটি গানই ছিল এন্ড্রু কিশোরের কণ্ঠে। তাই গানটি যখন কিশোর তুলতে এল, তখন শুনেই বলল, সুরের একটি পর্দা নামিয়ে দিলে তাঁর জন্য গাইতে আরাম হয়। কিন্তু সোহেল রানা কিছুতেই রাজি নন। তিনি বললেন, চড়া সুরেই গাইতে হবে। শেষ পর্যন্ত ওই অকটেভেই কিশোরকে গাইতে হয়। শিল্পী এন্ড্রু কিশোর বলেন, প্রায় ৩০টি টেক দেওয়ার পর গানটি ‘ওকে’ হয়। কিন্তু এতবার গাওয়ার ফলে গলা ব্যথা হয়ে যায়। গানটি গাওয়ার পর শিল্পী এন্ড্রু কিশোরের গলা বসে যায়। সাত দিন সে আর কোনো গান গাইতে পারেনি।
চিন্তা করলাম, সারা জীবন তো খালি ছবির গল্পের ভেতরেই থাকি, সাপের গীত থাকে, তেমন মিউজিক দিতে হয়। তখন তাঁর সঙ্গে আলোচনা করলাম। তিনি বললেন, আমি তো এক্সপেরিমেন্টে রাজি। বললাম, পুরো রক কাট দেব। গানটির ভেতর নতুনত্ব দিয়ে এই বেরিয়ে গেলাম। বহু গানে এমন চেষ্টা করেছি, সাকসেসফুল হয়েছি। -আলম খান…
অলংকরন – গোলাম সাকলাইন…