– শাহরিয়ার খান সাকিব।
আমেরিকায় নিরস্ত্র একজন কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করার পর, একজন পুলিশ অফিসার হাঁটু দিয়ে তার গলা চেপে ধরে। আর ঐ ব্যক্তির মৃত্যু হয়। মিনিয়াপোলিস অঙ্গরাজ্যের একটি রেস্তোরাঁয় নিরাপত্তাকর্মী হিসাবে কাজ করতেন ৪৬/৪৭ বছর বয়স্ক জর্জ ফ্লয়েড। ২৫শে মে সন্ধ্যায় সন্দেহভাজন একটি প্রতারণার ব্যাপারে কল পেয়ে পুলিশ তাকে ধরে। একজন প্রত্যক্ষদর্শীর তোলা ১০ মিনিটের ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় জর্জ ফ্লয়েড নি:শ্বাস না নিতে পেরে কাতরাচ্ছেন এবং বারবার একজন শ্বেতাঙ্গ পুলিশ অফিসারকে বলছেন, “আমি নি:শ্বাস নিতে পারছি না”। এই খবর ছড়িয়ে পরার পর লকডাউন উপেক্ষা করে রাজপথে নেমে আসে মানুষ। যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা রাজ্যের সেই জর্জ ফ্লয়েডকে নিয়ে গাইলেন বাংলাদেশের ফকির আলমগীর।
কী আমার বর্ণ ?
কী আমার ধর্ম,?
আমি কৃষ্ণাঙ্গ নাকি শ্বেতাঙ্গ ?
থাকবে কেন এই বৈষম্য,
আমি মানুষ, মানুষ হয়েই জন্ম-
এমন কথায় সাজানো গানটি লিখেছেন কবির বকুল। তার সঙ্গে যৌথভাবে কথাগুলোতে সুর দিয়েছেন ফকির আলমগীর। সঙ্গীতায়োজনে ছিলেন অনু মুস্তাফিজ। ৭ জুন রাতে গানটি রেকর্ড করা হয় পুরান ঢাকার একটি স্টুডিওতে। ফকির আলমগীর বলেন, গেল সপ্তাহ বিশেষ এই গানের বিষয়ে কথা হচ্ছিল গীতিকবি কবির বকুলের সাথে। বকুলকে ফ্লয়েডকে নিয়ে দ্রুত একটা গান লিখে দিতে বললে তিনি চট করে এই গানটি লিখে দেন। আমি বললাম যে গানে গানে আমাদেরও এই প্রতিবাদে শামিল হওয়া দরকার। রাতেই লিখে পাঠিয়ে দিলো গানটি। ফোনে ফোনে সুরও করে ফেললাম দু’জনে। তারপর গানটি রেকর্ড করে ফেললাম। রেকর্ডিং শেষে এখন চলছে এর মিক্সিং ও ভিডিও নির্মাণ প্রক্রিয়া। ভিডিওতে স্থান পাবে ঐতিহাসিক কিছু পুরনো ফুটেজ। শুধু তা-ই নয়, গানটি প্রকাশ করা হবে আন্তর্জাতিক একাধিক প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে। জর্জ ফ্লয়েডের ঘটনাটি সারা পৃথিবীকে নাড়িয়ে দিয়েছে। তার জন্য আমি নিজেও ব্যথা অনুভব করছি। প্রথম দিন থেকেই মনে হচ্ছিলো এটার প্রতিবাদ করা দরকার। গান বানানো দরকার। ঘরবন্দি থেকে ছটফট করছিলাম। অবশেষে বকুলকে পেলাম। ও দ্রুত সময়ের মধ্যে গানটা লিখে দেওয়ায় কাজটা সহজ হয়ে গেলো। গণজাগরণের জন্য নিবেদিতপ্রাণ এই গানের ফকির আলমগীর জানান, গানটি প্রকাশের জন্য এরইমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে তার সঙ্গে অনেকেই যোগাযোগ করেছেন। যার মধ্যে অন্যতম যুক্তরাষ্ট্রের নামকরা অনুষ্ঠান আয়োজক আলমগীর খান আলম। ফকির আলমগীর বলেন, দেশের অনেকেই গানটি প্রকাশের আগ্রহ দেখিয়েছেন। কিন্তু আমি চাই দেশের পাশাপাশি বিদেশী মাধ্যমেও এটি প্রকাশ হোক। সেসব বিষয়ে আলাপ চলছে। আশা করছি এ সপ্তাহের মধ্যে গানটি সবাইকে শোনাতে পারবো। সবার জন্য শুভ কামনা। ভালো থাকুন সবাই।
প্রতিবাদী এই কন্ঠ যোদ্ধার জন্য সঙ্গীতাঙ্গন এর পক্ষ থেকে জানাই শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। ভালো থাকুক তিনি। ভালো থাকুক তার প্রতিবাদী কন্ঠ। শুভ কামনা সব সময়।