– শাহরিয়ার খান সাকিব।
বন্দি খাঁচায় পোষা ময়না, খাঁচার ভেতরে থেকে ভালো করে আকাশটাকেও দেখতে পারেনা। তার বন্দি ঘরে পৃথিবীটা খুবই ছোট। অন্য পাখিরা যখন গাছের ডালে মুক্ত কন্ঠে গান করে। এ ডাল থেকে অন্য ডালে উড়ে বেড়ায়। তখন খাঁচার ভেতরে থাকা পাখিটির মন ছোট হয়ে যায়। কষ্ট পায় তখন, যখন পাখা থাকার পরেও উড়তে পারে না। মানুষও আজ সেই বন্দি পাখির মতই অসহায়, নিরব হয়ে বন্দি পাখির মত কাটাতে হচ্ছে জীবনের মূল্যবান সময়গুলো। বিভিন্ন মানুষ বিভিন্নভাবে লকডাউন এর কঠিন মূর্হুত পার করছেন। আসুন জানি সঙ্গীত ভূবনের জনপ্রিয় গায়কদের লকডাউন এর সময়গুলো কিভাবে কাটাচ্ছে!
আসিফ আকবরঃ বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় গায়ক আসিফ আকবর। শুরু থেকে আজ পর্যন্ত সমান জনপ্রিয়তায় টিকে আছেন তিনি। করোনার এই কঠিন সময়ে বিভিন্ন সময়ে নিজের ফেসবুকের মাধ্যেমে মানুষকে সচেতন করে যাচ্ছেন। তবে ব্যাক্তিগত জীবনে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হচ্ছে বলে অনেকাটাই বন্দি মনে হচ্ছে নিজেকে। তিনি বলেন নিজে আগে সচেতন হয়ে পরে অন্যকে সচেতন হবার জন্য বলতে পারি। তাই আমি নিজেকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রেখেছি। সবাইকে থাকার অনুরোধ করি। বাস্তবিকপক্ষে মানুষ চিড়িয়াখানার প্রাণীদের মতো বন্দি থাকতে পারেনা। সময়টা খুবই লম্বা হয়ে যাচ্ছে। তারপরও কিছু করার নেই নিজেকে নিরাপদ রাখতে হবে।
মনির খানঃ জীবনটা কেটেছে গানের সাথে। এখনও আছি। বর্তমান সময়টাতে বিনোদন মন থেকেই আসেনা। এখন নিজেকে বাঁচিয়ে রাখা। নিজেকে নিরাপদ রাখাই প্রধান কাজ। দেশের মানুষকে সচেতন করতে হবে। সবাই আমরা সচেতন হলে হয়তো করোনার সর্বনাশা থাবা থেকে রক্ষা পেতে পারি। হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা একেকটা দিন যেনো একেকটা মাসের মতো মনে হচ্ছে। ঘরে থেকে থেকে নিজেকে একঘেঁয়ে করে ফেলছি। তারপরও থাকতে হবে। নিজের ভালোর জন্য। পরিবারের ভালোর জন্য। দেশের ভালোর জন্য। সবাই করোনা থেকে মুক্ত থাকুক। সুস্থ থাকুক।
ইমরান মাহমুদুলঃ আমরা গানের মানুষ। সব সময় গান নিয়ে ব্যাস্ত থাকি। করোনার জন্য এখন তেমন কিছু হয়ে ওঠছেনা। কিছুদিন আগে করোনার মধ্যেই একটি গানের কাজ করেছি। ওপার বাংলা আর এপার বাংলা, দুই বাংলার শিল্পীদের নিয়ে। গানটি করোনা নিয়েই ছিলো। তাছাড়াও কিছু কিছু গানের কাজ করেছি কোরোনাকে সামনে রেখে। যদিও অন্য সময়ের মতো করে না। নিজের বাসায় থেকেই করতে হচ্ছে গানের কাজ। দীর্ঘ তিন মাস ধরে হোম কোয়ারেন্টাইনে আছি। এখন যেনো বাহিরের মুক্ত পরিবেশটি ভুলে যাচ্ছি। তারপরও থাকতে হবে সবার কথা ভেবেই। নিজেদের ভালোর জন্য। হয়তো এই সময়টা থাকবেনা। একদিন ঠিক হয়ে যাবে। সবাই নিরাপদে থাকুক ভালো থাকুক।
বাপ্পা মজুমদারঃ ‘লকডাউন ঢাকা’ শিরোনামে একটি গান করেছি। যা আমার ইউটিউব চ্যানেলে গত ৪দিন আগে রিলিজ দিয়েছি। গানটির কথা, সুর ও সঙ্গীতায়োজন আমারই করা। সত্যি বলতে গানটির জন্ম হলো এই বোবা শহরটাকে দেখে। শহরের এই চেহারা আমি অন্তত কখনও ভাবিনি। যেমন ভাবিনি আমার মতো অসংখ্য শিল্পী-মিউজিশিয়ান দিনের পর দিন ঘরে পড়ে থাকবে। জানি না, সামনে আমাদের জন্য কেমন দিন অপেক্ষা করছে। প্রত্যাশাতো করি, স্বাভাবিক জীবনে দ্রুত ফেরার। আশা করি আমরা আবার আগের জীবনে ফিরে যেতে পারবো। বন্দি থাকতে কারোরই আর ভালো লাগছে না। মূহুর্তগুলো খুবই নিষ্ঠুর আচরণ করছে মনে হয়। তারপর কষ্ট হলেও থাকতে হবে এভাবেই কিছু করার নেই।
রফিকুল আলমঃ বর্তমান সময়টা নিয়ে কিছু বলার ভাষা নেই। সময়টা খুবই কষ্টের। নিজেকে বাঁচাতে, পরিবারকে বাঁচাতে বাসায়ই থাকতে হচ্ছে। সব মিলে কঠিন সময়। হয়তো একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে। সেই আশাতেই থাকতে হবে।
আব্দুল হাদীঃ করোনা একটি ভাইরাস। এটা মহামারি আকারে সারা পৃথিবীতে দেখা দিয়েছে। যে যেভাবেই আছি সে ভাবেই ভালো থাকতে হবে। আল্লাহ হয়তো সব আবার আগের মতো ঠিক করে দিবে। সবার জন্য দোয়া করি ভালো থাকুক দেশবাসী। নিজের জন্যও দোয়া চাই।
করোনা একটি দূর্যোগ। এই মূর্হুতে সবাইকে সচেতন হতে হবে। নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। স্বাস্থবিধি মেনে চললে হয়তো নিজেকে, নিজের পরিবারকে ভালো রাখতে পারবো। সবাইকে সঙ্গীতাঙ্গন এর পক্ষ থেকে শুভ কামনা জানাই।
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন নিরাপদে থাকুন। নিজেকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখুন।