– শাহরিয়ার খান সাকিব।
আমি ভালোবাসি গান
এ গানই হলো প্রাণ,
সবাই তো একদিন ছেড়ে যাবে
থাকবে গানই অম্লান।
আমি ভালোবাসি গান।।।।।
এ গানের কথা আর সুরের মাঝে
ভালোবাসা লুকানো স্মৃতির ভাঝে
কত হাসি কান্না কত ঘটনা
লুকিয়ে আছে কত ব্যাথা বেদনা
সবাই তো ভুলে গেছে মনে রাখেনি
গানই মনে রেখেছে শুধু তার নাম।
আমি ভালোবাসি গান।।।।
কত গানের কথা বুকে দেয় বল
কত সুরে মুছে দেয় চোখেরি জল
কত গান আমাদের বাঁচতে শেখায়
দেখো হাজারো কষ্টে হাসতে শেখায়।
পৃথিবী একদিন ভুলে যাবে আমাকে
সেদিন থাকবেনা আমার এ দেহে প্রাণ।
আমি ভালোবাসি গান।।।।
মনীষীদের বাণী “মানুষ বাচেঁ তার কর্মের মাঝে, বয়সের মাঝে নয়” সত্যিই ঠিক তাই। কর্মের জন্যই মানুষ মরে যাবার পরও মানুষের মাঝে বেঁচে থাকতে পারে হাজার বছর। পৃথিবীর বুকে কত মানুষ এলো, আবার চলেও গেলো। কিন্তু কত জনকে আমরা মনে রেখেছি। কিন্তু যাদের মনে রাখতে হয়েছে তাদের ভুলতে চাইলেও ভুলতে পারবোনা। তাদের কর্মই আমাদের মনে করিয়ে দিবে। আমরা বাঙ্গালী। আমাদের সংস্কৃতি বাংলা। আমাদের বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করার পর থেকে আজ পর্যন্ত কত গানের মানুষ এসেছে, আবার চলে গেছে। কিন্তু সবাইকে আমরা কি মনে করি ? আমরা অনেককে ভুলে গেছি। তাদের নামটাও আমাদের মনে নেই। কিন্তু সে যে গান রেখে গেছে। সে যে সুর রেখে গেছে, সে যে গানের ছন্দ রেখে গেছে তা কিন্তু কেউ ভুলে যাইনি। গানের কথা মনে হলেই আমরা গান শুনি। কিন্তু কে গাইলো, কে সুর করলো, কে কথা লিখলো কাউকে খুঁজিনা খোঁজার প্রয়োজন মনে করিনা। কিন্তু গানের মাঝে তিনি বেচেঁ আছেন। বেচেঁ আছে তার নাম। তাই মানুষ গানকে ভালোবাসে। গানের সাথে মিশে যায়। গানকে করে সঙ্গী। তাই গানের সাথে মিশে থাকার প্রয়াস দিন দিন বেড়েই চলেছে মানুষের অন্তরে।
আজ সঙ্গীতাঙ্গন এর প্রতিবেদনে এক প্রতিবাদী ও বাস্তব ধর্মীয় সঙ্গীতের মানুষের সাথে আপনাদের পরিচিত করবো। নাম রাজীব ইসলাম। ছোট বেলা থেকেই গানের নেশা মাথায় চেপে বসেছে। তার বাবা একজন শিল্পী ছিলেন। অসাধারণ ছিলো গানের গলা। বাপকা বেটা সিপাহিকা ঘোড়া। গানের টান মনে বাসা বেঁধে যায় অল্প বসেই। তিনি সঙ্গীতাঙ্গন এর নাথে আলাপকালে বলেন, আমি যখন ষষ্ট শ্রেণীতে পড়ি তখন একটা গিটার কিনে বাজানো শিখতে থাকি। যখন আমি এস এস সি পাশ করি তখন ‘ইমোশন’ নামে একটা ব্যান্ড করি। সেটা ১০ বছর চেলেছিলো। তিনি বলেন, ঐ ব্যান্ড থেকে ‘সঙ্গ দোষ’ নামে একটা এ্যালবাম বের হয়ে ছিলো। সঙ্গীতের প্রেম মানুষকে কতটা বিমহিত করে তা রাজিবকে দেখলে বোঝা যায়। তিনি অল্প সময়ের মধ্যে সঙ্গীতের সাথে এতো বেশি জড়িয়ে গেছেন যা তাকে একদিন নিয়ে যাবে সঙ্গীতের কিংবদন্তী প্রেমিকের মর্যাদায়। রাজিব বলেন, আমি দূর্বীণ নামক ব্যান্ডের ফাউন্ডার।
আমি আমার জীবনে লাকী আখন্দের সাথে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। উনার সাথে কাজ করেছি। আসা যাওয়া ছিলো। রাজীব একদিন বাংলাদেশের বাংলা সঙ্গীতের পথিকৃৎ হবে বলে বিশ্বাস করি। কেন নয়, রাজিব অনেক ভালো গান লেখে, সুর করে, নিজে নিজে কম্পোজিশনও করেন। অনেক গান এ পর্যন্ত তিনি নিজের লেখা, সুর ও কম্পোজিশনে রিলিজ হয়েছে। তার লেখা, সুর করা একটি জনপ্রিয় গান ‘আমার পুরোনো ঢাকা’ যে গানে তিনি নিজেই কন্ঠ দিয়েছেন। গানটি রিলিজ হয়েছে সিডি চয়েস থেকে। তার গান অনেক শিল্পীরাই গেয়েছেন। দিনাত জাহান মুন্নি তার লেখা একটি গান করেছেন ‘নিঝুম এ রাতে’। তিনি বলেন আমি আমার আইডল হিসেবে জেমস, আইয়ুব বাচ্চুকে অনুসরণ করি। তিনি বলেন আমার একটা ব্যান্ড আছে যার নাম ‘জয়োগান’ তবে সেখান থেকে কোন এ্যালবাম বের হয়নি। অনেক শো করেছি ঐ ব্যান্ড থেকে। সামনে এ্যালবাম করবো। এখন বর্তমানে জি- সিরিজ থেকে একটা গান রিলিজ হবে, আমি আর প্রমি করবো গানটি।
তবে তিনি একটা মজার কথা শেয়ার করেছেন আমাদের সাথে, অনেকের কাছেই তার কথা মজার হবে। আর সেটা হলো তিনি একটা অনলাইন ব্যান্ড তৈরি করেছেন। ভাবছেন অনলাইন ব্যান্ড আবার কি ? হ্যাঁ এধরনের বাংলাদেশে ছিলোনা। এখন আছে কারণ রাজিব করেছে। যদিও বিদেশে এই ধরণের অনলাইন ব্যান্ড আছে। তবে বাংলাদেশে রাজিবের হাত ধরেই এই নতুন আঙ্গিকের ব্যান্ড তৈরি হলো। করোনাকালীন সময়ে যখন লকডাউনে বন্ধিদশা চলছিলো তখন এই ব্যান্ডের সৃষ্টি।
এই ব্যান্ডে ড্রামার হলো সৌরভ ধ্রুব। সরদ বাজান তানিম হায়াত খান রাজিত। বেইজ গিটার বাজান মাজফুজ রহমান। আর রাজিব গিটারিস্ট এবং কম্পোজিশন করেন। তিনি ব্যান্ড সম্পর্কে কিছু নতুন কথা বলেছেন। আর তাহলো এখানে সবাই গান করবে। যার কন্ঠ ভালো সেই গাইতে পারে। তার চেয়ে আশ্চর্যকথা হলো এই ব্যান্ডের সব ধরণের কাজ হয় মোবাইলের মাধ্যমে। রেকর্ডিং, ভিডিও, কম্পোজিশন ও মিউজিক। একেক জন একেক জায়গা থেকে মোবাইলের মাধ্যেমে রেকর্ডিং করে পাঠালে রাজিব তা একসাথে করে গানটি সম্পূর্ণ করেন। তিনি বলেন আমরা এর মধ্যে ৫টি গান রিলিজ করেছি, এবং অনেক সাড়া পেয়েছি। তার মধ্যে একটি গান করেছেন সারেগামাপা এর দেবজানি আচারিয়া। একটি গানে কন্ঠ দিয়েছেন প্রমি। আরেকটি গান করেন কলকাতার দেবদানি সরকার। বাংলাদেশ থেকে তনিমা একটা গানে কন্ঠ দিয়েছন। আমরা আজম খানের ‘পাপড়ি’ গানটি কভার করেছি। আর এই ব্যান্ডের কাজই হচ্ছে জনপ্রিয় গান কভার করা। সবাই চিন্তা করছেন ব্যান্ড সম্পর্কে এতকিছু বলছি কিন্তু ব্যান্ডের নাম বলিনি। ব্যান্ডের নাম বিওন্ড দ্যা বরডার (beyond the border) রাজিবের সম্পর্কে যাই শুনলাম আশা করি আমাদের সবার ভালো লাগলো। আরো একটা ভালো লাগার কথা শেয়ার করি আপনাদের সাথে। আর তা হলো তিনি কলকাতার নচিকেতার মত প্রতিবাদী গান করেন। বাস্তবমুখী গান করাটা বাংলাদেশে নেই। তবে রাজিব সেখানে আছেন। তিনি অনেক প্রতিবাদী গান করেছেন। তারমধ্যে জনপ্রিয় একটা গান যা সমসাময়িক বিষয় করোনার সময় রিলিজ হওয়া করোনা নিয়ে গান। গানটির শিরোনাম ‘এ দ্বায় কোন জীবাণুর নয়’ গানটি প্রচুর সাড়া মিলেছে। তা ছাড়া তিনি গেয়েছেন- শহিদ আজাদের মা, আমাদেরওতো আছে মা, তা ছাড়া ১৭ই মার্চের জন্য ‘মুজিব তোমার চেতনা’ শিরোনামে অন্যরকম একটা গান তিনি লিখেছেন। এবং তা সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে। সব মিলিয়ে রাজিব এবং তার কাজ সত্যিই সঙ্গীতের বড় জায়গা দখল করে নিবে।