– মোশারফ হোসেন মুন্না।
কোভিড-১৯ যা করোনা ভাইরাস নামে পরিচিত-সাম্প্রতিক সময়ে গণমাধ্যমের শিরোনামে প্রাধান্য বিস্তার করেছে। এশিয়ার বিভিন্ন অংশ এবং এর বাইরেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এই ভাইরাস। সাধারণ সতর্কতা অবলম্বন করে আপনি এই ভাইরাসটির সংক্রমণ ও বিস্তারের ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারেন।
করোনা ভাইরাস থেকে নিরাপদ থাকুন –
শ্বাসতন্ত্রের অন্যান্য অসুস্থতার মতো এই ভাইরাসের ক্ষেত্রেও সর্দি, কাশি, গলা ব্যথা এবং জ্বরসহ হালকা লক্ষণ দেখা দিতে পারে। কিছু মানুষের জন্য এই ভাইরাসের সংক্রমণ মারাত্মক হতে পারে। এর ফলে নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট এবং অর্গান বিপর্যয়ের মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। তবে খুব কম ক্ষেত্রেই এই রোগ মারাত্মক হয়। এই ভাইরাস সংক্রমণের ফলে বয়স্ক ও আগে থেকে অসুস্থ ব্যক্তিদের মারাত্মকভাবে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি বেশি। করোনা ভাইরাসসহ অন্যান্য রোগের বিস্তার সীমিত পর্যায়ে রাখতে মেডিক্যাল মাস্ক সাহায্য করে। তবে এটার ব্যবহারই এককভাবে সংক্রমণ হ্রাস করতে যথেষ্ঠ নয়। নিয়মিত হাত ধোয়া এবং সম্ভাব্য সংক্রমিত ব্যক্তির সাথে মেলামেশা না করা এই ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি কমানোর সর্বোত্তম উপায়। করোনা আতঙ্কে ঘরে ঘরে সংবাদপত্র রাখতে ভয় পাচ্ছেন অনেকেই। কারণ, পত্রিকা ছাপার কাগজ আসে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া কিংবা ভারত থেকে। নিউজপ্রিন্টের রোল পড়ে থাকে মাটিতে। ছাপানো পত্রিকা হকাররা মাটিতে ফেলে রাখেন। অনেকেই সর্দি ঝেড়ে পত্রিকা ধরেন। এসব কারণেই পত্রিকাকে অনেকেই ভাবছেন জীবাণুর বাহক হিসেবে। যে যেভাবে পারছেন এই ভাইরাস থেকে নিজে বাচঁতে ও অন্যদের বাচাঁতে চেষ্ঠা করে যাচ্ছেন। তার মধ্যে বাদ পড়েনি সংস্কৃতি অঙ্গনের শিল্পীরাও। এটা বর্তমান বিশ্বের বিশ্ব সেরা আতঙ্ক। ইতোমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ১০জন করোনা রোগী পাওয়া গেছে। এর মধ্যে তিনজন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। তবে পুরো দেশের মানুষই এখন করোনার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাস্ক পরে ভাইরাসের সংক্রমণ কিছুটা ঠেকানো যায়। তাই দেশে মাস্কের কৃত্রিম সংকটও দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে করোনা নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে শোবিজের অনেক বড় বড় তারকাকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সচেতনামূলক বিভিন্ন পোস্ট করতে দেখা যাচ্ছে। এ থেকে আরও একটু এগিয়ে এলেন সঙ্গীতশিল্পী সিঁথি সাহা। তিনি সাধারণ মানুষের কাছে বিনামূল্যে মাস্ক বিলি করতে নেমে গেলেন রাস্তায়। গত ১৭ই মার্চ মঙ্গলবার সিথিকে দেখা গেছে শহরের রাস্তায়। তিনি সারা শহর ঘুরে ঘুরে নিজ হাতে মাস্ক বিলি করেছেন। ধানমণ্ডি, সংসদ ভবন এলাকা, কাওরান বাজার ও বাংলা মটর এলাকার ট্রাফিক পুলিশ, সাধারণ পথচারী ও ভাসমান দোকানি যারা এই পরিস্থিতিতে মাস্ক ব্যবহার করছেন না তাদের হাতে মাস্ক তুলে দেন তিনি। এ প্রসঙ্গে সিথি সাহা বলেন, আমি সবসময় নিজের সাধ্যনুযায়ী মানুষের বিপদে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি। দেশের এমন পরিস্থিতে আমাদের একে অন্যের পাশে দাঁড়ানো উচিত বলে আমি মনে করি। বিশেষ করে শিল্পীদের আরও বেশি প্রয়োজন। একজন শিল্পী হিসেবে দায়িত্বশীলতার জায়গা থেকেই এই কাজটি করেছি আমি। দেশের নাগরিক হিসেবে একা একা ভালো থাকা সম্ভব নয়। সবাইকে নিয়েই আমাদের ভালো থাকতে হবে এমন প্রেরণা থেকেই নিজে মাস্ক নিয়ে রাস্তায় নেমেছি। হাতে হাতে বিলি করেছি। এদিকে যখন সারা দুনিয়ায় চলছে করোনা ভাইরাস তথা কোভিড-১৯-এর প্রকোপ। এই অণুজীব থেকে রক্ষা পাবার জন্য সংস্পর্শ এড়ানো ছাড়া যে কাজটি করার জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে তা হল বারংবার ভাল করে হাত ধোঁয়া। গায়িকা গেইনর তার ভক্তদের পরামর্শ দিয়েছেন তারা যেন কোরাস করে তার ১৯৭৮ সালের হিট গান ‘আই উইল সারভাইভ’ গানটি। সারাবিশ্বে যখন কোভিড-১৯-এর মহামারী চলছে তখন বিশেষজ্ঞরা অন্তত ২০ সেকেন্ড হাত ধোয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। গেইনর ২০ সেকেন্ড এই গানটি গেয়ে এই কার্যক্রমের সঙ্গে কণ্ঠ মেলান। গায়িকাটি হ্যাশ ট্যাগ আই উইল সারভাইভ কার্যক্রম বিমুক্ত করার সময় একটি চীনা শর্ট-ভিডিও মেকিং অ্যাপে তার ১৯৭৮ সালের ডিস্কো গানটির ২০ সেকেন্ড রেকর্ড করেন। তিনি ক্যাপশনে লিখেছেন : রক্ষা পাবার জন্য মাত্র ২০ সেকেন্ড ব্যয় করতে হবে। শুধু শিল্পী সমাজ নয়। আমাদের সবার উচিত এই সময় মানুষকে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। সঙ্গীতাঙ্গন এর পক্ষ থেকে এই প্রতিবেদনটি হয়তো একটু হলেও সবার কাজে লাগবে। সবাই ভালো থাকুন। নিরাপদে থাকুন। সবার সুস্থ্য সুন্দর জীবন কামনায় সঙ্গীতাঙ্গন।