– মোশারফ হোসেন মুন্না।
বাংলার ঘরে ঘরে, প্রতিভা বসৎ করে,
বিশ্বকে দেখাতে চাই,
গানকে ভালোবেসে, গানের সাথে মিশে
আজীবন বেচেঁ আছি তাই।
সঙ্গীতাঙ্গনে, বিশুদ্ধ সঙ্গীতে, আমরাই
সাজাবো দেশ,
গানে গানে, বাংলাদেশ।।
গানের দেশ প্রাণের দেশ। শেখ মুজিবের সোনার দেশ বাংলাদেশ। এই দেশের প্রায় সবই সঙ্গীত পাগল মানুষ। গানকে যে কোন ভাবে তারা লালন করে মনে। মনে একটু আনন্দে এলেই গলা ছেড়ে গান গাইতে মন চায়। কষ্ট পেলেও মানুষ গানকে কষ্ট ভুলে থাকার ঔষধ বানায়। গান মনের কথা বলে। গান বাংলার ও বাংলার মানুষের কথা বলে। সেই গানকে আরো বিশুদ্ধ ও মন মাতানোর জন্য, লোক-লোকান্তরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মিষ্টি কন্ঠগুলোকে এক সাথে করে, সঙ্গীতাঙ্গন আয়োজিত গানে ‘গানে বাংলাদেশ’ প্রতিযোগীতামূলক অনুষ্টানের ফাইনাল রাউন্ডডে যারা চলে এসেছে তাদের সম্পর্কে জানবো আজকের এই প্রতিবেদনে।
প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক ঢাকার নারায়ণগঞ্জের ডি এল বিজয়ের কথা। বিজয় মা বাবাহারা এতিম একটি ছেলে। গানকে সঙ্গী করে তার পথ চলা। মা মুক্তি রানী বাবা গোবিন্দ দাস এর চলে যাবার পর আপন বলতে গানকে বেছে নিয়েছেন বিজয়। তিনি একটা চাকরী করেন। তিনি বলেন, গান করাটা আমার নেশা তবে আমি মন থেকে চাই, গান করাটা আমার পেশা বানাতে। তাই ছোট বেলাতেই আমি গান শিখি। গান করি। শ্রদ্ধেয় এন্ড্রোকিশর, আব্দুল আলীম, সৈয়দ আব্দুল হাদী’র মত শিল্পীরাই আমার আদর্শ। তিনি বলেন, আমি খুব ছোটবেলা থেকেই গান পছন্দ করি। আমার গানের প্রথম গুরু শ্রদ্ধেয় বিরেন্দ্রনাথ রায় ওনার কাছ থেকে হাতে খরি। তারপর শ্রদ্ধেয় এস.এম.সেলিম ও শ্রদ্ধেয় আমজাদ হাসান স্যারের কাছ থেকে তালিম নিচ্ছি। মা,বাবাকে হারিয়ে বড় একা হয়ে গেছি। তারপরও গানকে জীবনের সঙ্গী করে আপন করে নিয়েছি। সঙ্গীতাঙ্গন এর ভালোবাসা নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। বাংলা সঙ্গীতকে সমৃদ্ধ করতে চাই।
পশ্চিম কাজিপারা মিরপুর থেকে মোঃ মিরাজুর রহমান, গীতিকবি। তিনি ফেসবুকে বিঞ্জাপন দেখে ‘গানে গানে বাংলাদেশ’এ যোগাযোগ করেন। এবং তিনি ফাইনাল রাউন্ডে দর্শকদের গান পড়ে শোনাবেন। মিরাজ বলেন, সে অনেক বড় গীতিকবি হতে চান।
চট্রগ্রাম জেলার পটিয়া থেকে আছেন তুষার মল্লিক রকি। তিনি বলেন, আমি চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে সংগীতের তালিম নিচ্ছি। চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির বর্তমান শিক্ষক জনাব মোঃআবদুর রহিম স্যারের কাছে। হাসন, লালন, ভাটিয়ালি, রবীন্দ্র, নজরুল, আধুনিকসহ বিভিন্ন বাংলা গানের তালিম খুব যত্ন সহকারে তালিম দিচ্ছে। আমার বাবা, মা, আামার গান করাকে খুব বেশি ভালোবাসেন। বাংলাদেশের অনেক চ্যানেলের রিয়ালেটি শোতে আমি অংশ গ্রহণ করেছি। আমার স্বপ্ন আমার আশা আমি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রিয়ালেটি শো গানে গানে বাংলাদেশের হাত ধরে বাংলা গানকে বাংলাদেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেব। আহসানুল হক ভাইয়া যে
এতো সুন্দর একটা পরিবেশে আমাদের মতো ক্ষুদ্র শিল্পীদের সুযোগ করে দিয়েছে তার কাছে আামি তুষার মল্লিক রকি চির কৃতজ্ঞ। আমি আমার পরম করুনাময় দয়ালু সৃষ্টি কর্তার কাছে এবং আমার দেশবাসীর কাছে আশীর্বাদ ও দোয়া কামনা করছি। সবাই তুষারের জন্য দোয়া করবেন।
তারপর আসুন পরিচিত হই সোহেল রানা জয় এর সাথেটাঙ্গাইল থেকে। গানে গানে বাংলাদেশে বাছাই পর্বে ভালো ভালো গান উপহার দিয়েছিলেন। রানা বলেন, আমার পেশা আমি মিউজিক করি, আর পাশাপাশি লেখা পড়া করি এবং গান গাই। আমার ভবিষ্যতে চিন্তা চেতনা হলো আমি একদিন সফল গায়ক জেনো হতে পারি, সেই আশা ভরসা নিয়ে সংগীতকে মনের মাঝে লালন পালন করছি। আমি যখন খুব ছোট তখন বাবার কাছ থেকে গান শুনতাম এবং বাবার মুখ থেকে শুনে তা পুনরায় আমি গাইতাম এবাবেই আমার শিশু কাল কেটেছে। পরবর্তী সময় যখন একটু বড় হই তখন আমি একটি হারমোনিয়াম কিনি
তখন থেকে গান শিখতে শুরু করি, আর সকল দুঃখ সুখ নিয়েই আমার এই ছোট জীবন, একটা কথা আমার জীবনে এই গানের পিছনে আসার অনেক কাহিনী আছে, যেটা এখানে বলে আমি শেষ করতে পারবো না, তাই বলতে গেলে গান গেয়ে মনের মাজে আনন্দ পাই, সবাইকে খুশি করার চেষ্ঠা করি, সকল ব্যাথা ভুলে থাকি সব গানের মাধ্যমেই। তাই এই আমার স্বপ্ন এবং মা বাবার স্বপ্ন পুরন করার জন্য আমার সংগীত জীবনে আশা। সবার দোয়া কামনা করি।
তারপর যার কথা বলতে যাচ্ছি সে হলো নরসিংদী থেকে ফাতেমা আক্তার স্মৃতি। বাছাই পর্বে যার গান শুনে মুদ্ধ সবাই। ফাতেমা বলেন, হঠাৎ একদিন ফেসবুকে দেখতে পাই যে, গানে গানে বাংলাদেশ নামক একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে সঙ্গীতাঙ্গন…দেখে খুব ভালো লাগলো…তারপর দেখি কিছু প্রতিযোগী অডিশন দিচ্ছে এটাই হয়ত প্রথম অডিশন…পরে আমিও একটি গান আপলোড দিয়েছিলাম গানে গানে বাংলাদেশ ফেসবুক পেইজে…এভাবেই আসা। বাউল আব্দুল করিমের ভাষায়, আর কিছু চায়না মনে গান ছাড়া…এই গানই যে আমার স্বপ্ন, সাধনা…তাই গানকে ভালোবেসে এখানে আসছি গান গাইতে। ভবিষ্যতে আমি একজন ভালো গায়িকা হতে চাই, সকলের মন জয় করতে চাই এবং ভালো গায়িকা হয়ে আমার মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে চাই। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।
আমাদের ফাইনাল রাউন্ডের আরো একজন মেধাবী প্রতিযোগী বাউল শাহীন শাহ। তিনি নিজেই নিজের পরিচয় দিচ্ছে – আমি বাউল শাহীন শাহ। আমার ঠিকানা, কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা থানার কাজিহাটা গ্রামে। পোস্ট অফিস সাতবাড়িয়া । আমি বাউল গানকে হৃদয়ে লালন করি। আমি এই বাউল গানের মাধ্যমে জীবনে অনেক কিছু শিক্ষা লাভ করেছি। সঙ্গীতাঙ্গন পত্রিকার কিছু গুণী মানুষের সহযোগিতায় এবং আমার মনের প্রচেষ্টায় প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমি গানে গানে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতায় সেরা ১৫ জনের মধ্যে আছি। গানে গানে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমি মহৎ এর বাণী সাঁইজির সত্যবাণী সারা বিশ্বে প্রচার করতে চাই আমার জন্য আপনারা সকলেই দোয়া করবেন।
ফোক ঘারানার গানের আরেক প্রতিযোগী কিরন আহাম্মেদ। ময়মনসিংহের ঘোষপাড়া গ্রাম থেকে এসেছেন গানে গানে বাংলাদেশের পঞ্চকন্ঠের একজন হতে। তিনি বলেন, গানে গানে বাংলাদেশে, বাংলা গানের প্রকৃত সুর আর মাধুর্যতা এবং ভালোবাসা পেয়েছি। এবং আমাদের গানের পূর্ণ রুপ খুজেঁ পেয়েছি। তাই গানে গানে বাংলাদেশে অংশ গ্রহন করেছি। আমি গানে গানে বাংলাদেশের এই সুনাম নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গীত জগৎকে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিতে চাই। অবাক পৃথিবী চেয়ে দেখুক, আামদের বাংলার সঙ্গীত জগৎ কতোটা প্রসারিত।
আরেকজন প্রতিযোগী হলো কোতআলি কুমিল্লা’র ফরহাদ সরকার। বাবা বীর মুক্তি যোদ্ধা আব্দদুস সামাদ। তিনি বলেন, আমি গানে গানে বাংলাদেশে ২০১৮ সালে প্রথম গান আপলোড করে গানে গানে বাংলাদেশের ফেসবুক পেইজে দেই ওইখান থেকে আমার গান বিচারকরা শুনে, আমাকে অডিশনে সুযোগ দেয়, তারপর আমি অডিশনে গান গেয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে সফলতা অর্জন করি, এখন ফাইনাল রাউন্ড, চেষ্টা করবো ভালো করবার জন্য, ভবিষৎ পরিকল্পনা, একজন ফোক শিল্পী হওয়ার, যাতে মানুষ আমাকে ফোক আইকন হিসেবে জানে।
প্রতিযোগী আবির হেসেন। তার স্বপ্ন গানকে নিয়ে অনেক বড়। তিনি বলেন, এক সময় স্বপ্ন ছিলো গান গেয়ে সারা দেশ মাতাব কিন্তু পারিপার্শ্বিক কারনে তা আর হয়ে উঠলো না। বার বার হেরে গেছি স্বপ্ন পুরন করতে গিয়ে। অনেক বাঁধার সম্মুখীন হয়েছি। কিন্তু তবুও হাল ছাড়িনি। একদিন হঠাৎ চোখ পড়লো গানে গানে বাংলাদেশ ফেইসবুক পেজে। সব কিছু দেখে ভালো লাগলো পরে একটি গান পাঠালাম আর ভাবছিলাম এখান থেকেও হয়তো আমার স্বপ্ন পুরন হতে পারে। আর সেই আত্মবিশ্বাস নিয়েই এগোচ্ছি। আর এখান থেকেই আমার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবো ইনশা আল্লাহ। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমি যেন গান গেয়ে সকলের হৃদয় স্থান করে নিতে পারি। এইটাই আমার মুল আশা। আমরাও দোয়া করি আবির অনেক বড় শিল্পী হোক।
আরও একজন প্রতিযোগী যার গানে আছে বাংলার শিকরের সন্ধান। হামিদ গানে টান দিলে দেহের ভেতর থেকে কলিজা যেন বের হয়ে আসতে চায় তার দরদ ভরা কন্ঠের টানে। আর তিনি হলেন, মোহাম্মদ হামিদ। অনেক সুন্দর কন্ঠ। ফোক গান তার গলা বেশ মানায়। তিনি বলেন, জীবনে নিয়ে এলো নতুন এক অধ্যায়। আমরা পরিচিত হয়েছি যার মাধ্যমে তার নাম সঙ্গীতাঙ্গন। আমার জন্য সবার কাছে দোয়া চাই। ভালো গান উপহার দিয়ে যেন সবার মন জয় করতে পারি।
সঙ্গীতাঙ্গন এর পক্ষ থেকে সব প্রতিযোগীর জন্য দোয়া করি। সবাই ভালো করুক। সঙ্গীতাঙ্গনের সাথে থাকুন, বাংলা গানকে জানুন।